নাটক রিভিউ :- ভোম্বল।
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে নাটকের রিভিউ শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
নাটকের নাম | ভোম্বল |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালনা | তাইফুর জাহান আশিক |
চিত্রগ্রহণ | দীপু ইসলাম |
আবহ সংগীত | আপেল মাহমুদ এমিল |
টাইটেল, সম্পাদনা ও কালার | সালাহ উদ্দিন |
অভিনয়ে | মোশারফ করিম, রোবেনা রেজা জুই, নীলা ইসলাম, লিজা খানম, জাবেদ গাজী |
আসলে নাটকটির প্রধান চরিত্র হল মোশারফ করিম। এই নাটকটিতে তার ছদ্মনাম ভোম্বল। আসলে তাকে সবাই ভোম্বল বলে ডাকে। এই ভোম্বল নামের উৎপত্তি হলো ভোম্বল যখন খাবার খায় তখন সে একটানা তিন দিন খাবার খায়। যখন সে স্নান করে তখন একটানা সে তিনদিন স্নান করে। আবার যখন সে গান গায় তখন সে একটানা তিন দিন গান গায়। আবার নাকি সে যখন বাথরুম করে সে তিন দিন বাথরুমে বসে থাকে।
আসলে ভোম্বল কে নিয়ে ভোম্বলের মা-বাবা খুব চিন্তিত কারণ বিয়ের দিন ভোম্বলের কোন খবর নেই তাই মা বাবা মিলে একটু ঝগড়া করে নিল। তখন ভোম্বলের বাবা ভোম্বলকে খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে দেখে সে পুকুরের ভিতরে স্নান করছে। তখন তার বাবা তাকে উঠে আসতে বললে সে বলে বাবা আমি তো সবে স্নান করতে নেমেছি আমার আসতে দেরি হবে। এদিকে ভোম্বল তার বাবাকে একটা চেয়ার দিতে বলল কারণ তার স্নান করতে দেরি হবে এবং তার বাবা পুকুর পাড়ে বসে থাকবে। দুই বাবা ছেলের কথা কাটাকাটিতে তখন ভোম্বল বলে যে তার ম্যাক্সিমাম নাকি ২ থেকে ৪ ঘন্টা স্নান করতে লাগবে। এদিকে তার বাবা রেগে তাকে পুকুরের ভিতর থেকে তোলার জন্য সে নিজেও পুকুরের ভিতরে নেমে গেল।
তারপরে অনেক কষ্টে ভোম্বল কে নিয়ে এসে বাড়িতে বিয়ে দিয়ে দিলেন তার বাবা-মা। মজার ঘটনা হলো বাসর রাত্রে ভোম্বল তার স্ত্রীকে রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। তাই দেখে ভোম্বলের স্ত্রীর মাথা গরম হয়ে গেল। এদিকে ভোম্বলের স্ত্রী ভোম্বলের ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য চোখে জল দিলো। কিন্তু তাতেও ভোম্বলের ঘুম ভাঙলো না। তাই সে দেরি না করে ভোম্বলের মা-বাবার কাছে চলে গেল। তখন ভোম্বলের স্ত্রী ভোম্বলের মা বাবাকে বলল ভোম্বল মনে হয় মারা গেছে। কারণ সে চোখ খুলছে না। তখন ভোম্বলের মা-বাবাও ভোম্বলের স্ত্রীর সাথে তার ঘুম ভাঙ্গাতে গেল ঘরে। তার বাবার চোখে জল দিতেই ভোম্বল ঘুম থেকে উঠে গেল এবং আবোল-তাবোল বকতে শুরু করল। এরপর কথোপকথনের পর সে বাথরুমে চলে গেল।
পরের দিন সকালে ভোম্বল যখন খেতে বসল তখন সে প্রায় চার পাঁচ জনের খাবার একাই খেয়ে নিল এবং এরপরও বলল যে খাবার আছে কিনা ঘরে। তখন ভোম্বলের বাবা রেগে তাকে বলল যে তুই জানিস কতজনের খাবার খেয়েছিস। তারপর ভোম্বল বলল যে তার নাকি পেট অর্ধেক ভরেছে। তাই সে পুরো খাবারটি নিয়ে নিজেই খাওয়া শুরু করল পুনরায়।
এদিকে ভোম্বলের স্ত্রী খুব টেনশনে পড়ে গেল। কারণ সে যে মানুষটাকে বিয়ে করেছে সেই মানুষটা একটু আলাদা প্রকৃতির। তখন ভোম্বলের মা এসে ভোম্বলের স্ত্রীকে শান্তনা দিল যে তুমি কিছু মনে করো না কারণ তার ছেলে কিছুদিন পর ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে ভোম্বল চায়ের দোকানে এসে আরেক কান্ড শুরু করলো। একাই প্রায় আট নয় কাপ চা খেয়ে নিল। তখন দোকানদার টেনশনে পড়ে গেল। তাই দোকানদার ভয়ে চায়ের দোকান ছেড়ে পালিয়ে গেল।
আসলে ভোম্বলের আসল নাম হলো হাশেম। গ্রামের সবাই তাকে ভোম্বল নামে ডাকে। এদিকে ভোম্বলের এক প্রতিবেশী এসে তার স্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসা করলো যে ভোম্বল ভাই কোথায় গেছেন। তখন তার স্ত্রী বলল ভোম্বল কে? যাইহোক পুরো বিবরণ শুনে ভোম্বলের স্ত্রী রেগে গেলেন এবং ঝাঁটা নিয়ে তাকে তাড়া করলেন।
এদিকে ভোম্বল রাতে বাড়ি ফেরার সময় কে যেন ভোম্বল ভোম্বল করে ডাকতে শুরু করল। তখন ভোম্বল তাকে খুঁজতে শুরু করলে দেখতে পায় সে বাঁশের আড়ালে লুকিয়ে আছে এবং ভোম্বল ভোম্বল বলে চিৎকার করছে। তাই দেখে ভোম্বলের মাথা গরম হয়ে গেল এবং সে তাকে ঢিল ছুটতে লাগল। তাকে ধরতে না পেরে ভোম্বল বাড়ির দিকে চলে গেল।
এদিকে ভোম্বলের মা বাবা ভোম্বলকে নিয়ে খুবই চিন্তা করতে লাগলো এবং প্রার্থনা করতে লাগলো যে ভোম্বল যেন ঠিক হয়ে যায়। এদিকে ভোম্বল রাতে না ঘুমিয়ে সারারাত ঘরে ঘোরাঘুরি করতে লাগলো। তাই দেখে ভোম্বলের স্ত্রীর মাথা আবার গরম হয়ে গেল এবং দুজন মিলে কিছুক্ষণ ঝগড়া করলাম এবং ভোম্বলের স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বললেন নিজের বাপের বাড়ি চলে যেতে লাগলো।
এদিকে ভোম্বল গিয়ে তার মা-বাবাকে ডেকে বললেন যে তার সংসার নাকি ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাই ভোম্বলের মা-বাবা ভোম্বলের স্ত্রীকে তার বাপের বাড়ি যেতে বাঁধা দিলেন এবং অনুরোধ করতে লাগলেন।
এদিকে ভোম্বল তার স্ত্রীকে অনুরোধ করে বললেন যে সে ঠিক হয়ে যাবে এবং একসাথে এখন তারা খাবার খাবে। তাই বলে সে পুকুর পাড়ে হাত-পা ধুতে গেল। এদিকে তার স্ত্রী খাবার টেবিলে তার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে লাগলো। তখন ভোম্বলের স্ত্রী এবং মা বাবা মিলে দেখে পুকুর বাড়ে বসে ভোম্বল হাত পা ধুচ্ছে এবং তারা জিজ্ঞাসা করল তার হাত পা ধোয়া কখন শেষ হবে। তাদের প্রতি উত্তরে ভোম্বল বললো তার নাকি হাত পা ধুতে সাত আট ঘন্টা সময় লাগবে।
এদিকে ভোম্বলের মা-বাবা কিছুই চিন্তা করতে না পেরে লিটুস নামের একজন ডাক্তারকে ডাকলেন। তখন ওই ডাক্তার তার মা-বাবাকে বোঝানো শুরু করলেন যে যেটা নাকি একটা মানসিক রোগ। ওই মুহূর্তে ভোম্বলের স্ত্রীও ওখানে উপস্থিত ছিলেন। ডাক্তার তাদের অভয় দিলেন যে ভালো চিকিৎসা করলে নাকি ভোম্বল ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে ভোম্বলের স্ত্রী তার ভাই সবুরকে ফোন করে বললেন যে তার স্বামীর ভালো চিকিৎসার জন্য সে ঢাকায় আসতে চায়। এই কথা শুনে সবাই খুব খুশি হয়। যাইহোক এখানেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
এই পোস্টের সমস্ত ছবি ইউটিউবের থেকে স্কিনশর্ট নেয়া।
নিজস্ব মতামত
আসলে কিছু কিছু অভ্যাস অনেক সময় খারাপ অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। ভোম্বলের এই অভ্যাসটি তার খারাপ অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায় এবং এই অভ্যাসের জন্য সবাই খুব চিন্তিত থাকে। আর তাই তার স্ত্রী তাকে ভালো চিকিৎসার জন্য ভালো জায়গা নিয়ে যেতে চান। আসলে নাটকটি আমার খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে যেসব নাটক মোশারফ করিম থাকে সেসব নাটকে হাসি হবে না এটা তো কখনো হয় না। আর এই নাটকটি ৩২ মিনিটের নাটক।
রেটিংস
আমি এই নাটকটিকে দশে আট দিতে চাই।
নাটকটির লিংক
তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
মোশারফ করিমের নাটক গুলো আমার খুবই প্রিয়। আমিও মাঝেমধ্যে তার নাটকগুলো দেখে থাকি। খুব সুন্দর নাটক করে থাকে সে। আজ আপনি মোশারফ করিমের একটি নাটক আমাদের মাঝে রিভিউ করে দেখিয়েছেন দেখে অনেক খুশি হলাম।
এটা কিন্তু সত্যি, মোশারফ করিমের নাটক গুলো অনেক বেশি হাস্যকর হয়ে থাকে, যার কারণে আমার কাছেও দেখতে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। ভোম্বল নাটকটার রিভিউ খুবই মজা করে পড়েছি। আসলেই কিছু কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো খারাপ অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। মোশারফ করিমের নাটক যদিও অনেকদিন দেখা হয় না, কিন্তু আজকে আপনার রিভিউ এর মাধ্যমে পড়ে ভালো লেগেছে। ভাবছি নাটকটা সময় পেলে দেখব। অনেকদিন তার নাটক দেখা হয় না, সেজন্য অনেকদিন পরে দেখলে বেশি ভালো লাগবে।