অনু-কবিতা :- ২৬

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আমি আমার লেখা আর একটি অনু-কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


আসলে পৃথিবীতে সবাই সোনার চামচ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। কেউ জন্ম গ্রহণ করে রাজপ্রাসাদ। আবার কেউ জন্ম গ্রহণ করে রাস্তার ফুটপাতে। কিন্তু একটা জিনিস কখনো খেয়াল করে দেখেছেন, রাজপ্রাসাদে যে বাচ্চাটি জন্মগ্রহণ করে তার জীবনে পরিশ্রম খুব একটা বেশি করতে হয় না। কারণ তার মা বাবাই তাদের জন্য এক সুন্দর পৃথিবী আগে থেকেই তৈরি করে রেখেছেন।


কিন্তু একটি গরীব ঘরে যখন কোন সন্তান জন্ম গ্রহন করে তখন সেই দিন থেকেই সেই বাচ্চাটির সংগ্রামে লিপ্ত হতে হয়। কারণ জন্মের প্রথমে তাকে ক্ষুধার সাথে লড়াই করতে হয়। জন্মের কয়েক মাস সে মায়ের বুকের দুধ খেলেও বাকি জীবনটা তাকে অনাহারে থাকতে হয়। তার কষ্টের আর কোন সীমা থাকে না।


আরে কষ্টের ভিতর দিয়ে যেসব সন্তান কঠোর পরিশ্রম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে একমাত্র তারাই গর্ব করে বলতে পারে তাদের মা বাবা নিজেদের কথা চিন্তা না করে তাদের পড়াশোনা করে আজ মানুষের মত মানুষ করেছে। এছাড়া শুধু গরিব মানুষের জন্য অন্নের অভাব তো রয়েছেই সাথে শিক্ষার অভাবও থাকে। একটা গরীব শিশু তাঁর শৈশবকাল থেকে সঠিক শিক্ষা কখনোই পায় না।


কারণ এসব গরিব সমাজে শিক্ষার অভাব সবসময়ই লেগে থাকে। একজন ধনী মা বাবার সন্তান তার জন্মের পর থেকেই একটি সুন্দর পরিবেশে বেড়ে ওঠে। তাদের জন্য পৃথিবীটা অনেক রঙিন। তারা জীবনে কখনো অভাব কাকে বলে এই সংজ্ঞাটি তাদের জানা নেই। তাদের দৈনন্দিন জীবন চলে রাজার মত। কিন্তু এক্ষেত্রে একটা গরিব সন্তানের জীবন যাপন সম্পূর্ণ আলাদা।


একটা গরীব পরিবারের সন্তান তার পড়াশোনার পাশাপাশি তাকে বাইরের জগতে কর্ম করতে হয়। কারণ কর্ম না করলে তার অন্নের যোগান হবে না। আর আমরা মানুষ না খেয়ে কখনোই বাঁচতে পারি না। তাই তাদের জীবন যাপন খুবই কঠিন। বেশিরভাগ এসব গরীব পরিবারের সন্তানেরা বিভিন্ন কুকর্মে লিপ্ত হয়। কারণ তারা ছোটবেলা থেকে সঠিক শিক্ষা কখনোই পায় না।


কিন্তু কিছু কিছু পরিবার রয়েছে যারা খুবই দারিদ্রতার মাঝে বসবাস করেও তাদের সন্তানকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য স্কুলে পাঠায়। তাদের সবসময় চেষ্টা থাকে তাদের সন্তানকে কি করে একটু ভালো স্কুলে ভর্তি করা যাবে। এজন্য সেই পরিবারের মা-বাবার দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে একটু বেশি ইনকামের জন্য। যদিও কোন অনুষ্ঠানে তাদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারে না। তারপরও চেষ্টা করে তার সন্তান যেন একটি ভালো স্কুলে পড়াশোনা করে।


আসলে এসব মা-বাবাদের আমাদের স্যালুট জানানো উচিত। কারণ এসব মা-বাবা কখনোই চায়না যে তাদের সন্তান তাদের মত এত কঠোর পরিশ্রম করে জীবন যাপন করুক। তারা চায় তার সন্তান যেন এই দারিদ্রতার বাঁধন কেটে উন্নত জীবনযাপন করতে পারে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মা-বাবারা ব্যর্থ হয়ে যায় তাদের সন্তানদের পড়াশোনা করানোর জন্য। কারণ বর্তমান সময়ে স্কুলের বেতন অনেকটা বেশি।


তাইতো এসব গরিব পরিবারের সন্তানদের অবশ্যই তাদের লক্ষ্যকে প্রথম স্থির করতে হবে। তাদের এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং একটি কথা তাদের মাথায় সবসময় রাখতে হবে যে তাদের মা-বাবা কিন্তু ধনী নয়। এবং তাদের মা-বাবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তাদেরকেও দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করতে হবে পড়াশোনা করার জন্য।


বহু মনীষীদের আমরা দেখতে পাই যারা খুবই দারিদ্র্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও জীবনে আজ তারা প্রতিষ্ঠিত। তাদের মৃত্যুর পরও তাদের নাম বইয়ের পাতায় স্বর্ণ অক্ষরে লেখা রয়েছে। এছাড়া তারা দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য সব সময় চেষ্টা করেছে। তারা কখনোই তাদের মনোভাবকে ধনী করেনি। বরং তারা সব সময় নিজের মনোভাবকে মানুষের উন্নয়নের কাজে লাগিয়েছে।


আর জীবনের কখনো যদি কোন লক্ষ্য না থাকে তাহলে সেই জীবন হয় খিচুড়ির মত। আসলে লক্ষ্য স্থির না করলে আমরা কখনোই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবো না। তাই জীবনের প্রথমে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য স্থির করতে হবে এবং আমাদের পড়াশোনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমাদের এই জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রচুর বাঁধা আসবে। তবুও আমাদের থেমে থাকলে কিন্তু হবে না। এই সকল বাঁধা-বিপদ থেকে উপেক্ষা করে আমাদের নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।


✠ ০১ ✠


পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে,
অবশ্যই আমাদের জীবনে।
পরিকল্পনা ছাড়া চললে,
ব্যর্থ হবো আমাদের কর্মে।


খেয়াল খুশি মত চললে পরে,
কোন কাজ সঠিক হয় না।
প্লান করে কাজ করলে,
কাজে কোন ত্রুটি থাকে না।


জীবনের লক্ষ্য নিয়ে,
এগিয়ে যেতে হবে সামনে।
যতই বাঁধা আসুক না কেন,
লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।


✠ ০২ ✠


সকল কাজে চাই দৃঢ় প্রত্যয়,
মন দিয়ে করতে হবে সকল কাজ।
আসবে অনেক ঘাত প্রতিঘাত,
তবুও পিছু হাঁটবার নয়।


জীবনের পথ ভাই,
এতটা সহজ নয়।
যারা সোনার চামচ নিয়ে জন্মেছে,
তাদের ক্ষেত্রেই সহজ হয়।


মনোবল নিয়ে আমাদের,
সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
সংগ্রাম করে এই পৃথিবীতে,
সঠিক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।


আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে আজকের পোস্টটি । ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।


আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 last year 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে অনু কবিতা লিখে শেয়ার করেছেন। আপনার লেখা অনু কবিতা আমার কাছে পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই আমাদের জীবনকে পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে। পরিকল্পনা ছাড়া চললে অবশ্যই আমাদের জীবন ব্যর্থর দিকেই বেশি ধাবিত হবে। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর ভাবে কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনার কবিতাগুলা বরাবরই খুব চমৎকার হয়ে থাকে। যেমনটি আগে দেখেছি তেমনটি এখনো চমৎকার ভাবে সে একই দমে কবিতাগুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন।

 last year 

দাদা অনুকবিতা দুইটি দারুন হয়েছে।কবিতাগুলো তে কাজের পরিকল্পনা করে করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে আর মনোবল নিয়ে এগিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একজন মানুষের সফল হতে এই দুটো জিনিসের খুব দরকার।আপনি কবিতার মাধ্যমে তা খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কবিতা দুটো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অসাধারন হয়েছে দাদা। এক কথায় অপূর্ব। অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে কবিতাটি আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার কবিতাটি পড়ে কিছুটা সময় চুপসে ছিলাম। তবে নিচের লাইন গুলো মনে হয় আমাকে মনে করেই লেখা-

জীবনের লক্ষ্য নিয়ে,
এগিয়ে যেতে হবে সামনে।
যতই বাঁধা আসুক না কেন,
লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।

 last year 

আপনার অনু-কবিতা বেশ অসাধারণ হয়েছে।অনু-কবিতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আপনার লেখা অনু-কবিতার ছন্দ গুলো বাস্তব জীবনের সাথে খুবই মিল রয়েছে।

খেয়াল খুশি মত চললে পরে,
কোন কাজ সঠিক হয় না।
প্লান করে কাজ করলে,
কাজে কোন ত্রুটি থাকে না।

এত সুন্দর কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

আপনার অনু কবিতা দুটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। কবিতার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করা যায়। তবে আপনি ঠিক বলেছেন কোন বাচ্চা রাজপ্রসাদে জন্মগ্রহণ করে আবার কেউ ফুটপাতে জন্ম গ্রহণ করে। যদি বাচ্চা কষ্ট করে হলেও মানুষ হলে সেটাই বড় পাওয়া মা-বাবার জন্য। সত্যি আপনার অনু কবিতা দুটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অনু কবিতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আরে বাহ আপনি তো খুব চমৎকার দুটি অনু কবিতা লিখেছেন। আপনার অনু কবিতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে যাদের পরিবার মূলত গরিব তাদের ছেলেগুলো মাথায় রাখতে হবে তাদের মা বাবা গরিব কথাটি ঠিক বলেছেন। অনেক সময় দেখবেন গরিবের ছেলেগুলো লেখাপড়া করে অনেক দূর এগিয়ে যায়। তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকে। তবে আপনার কবিতার লাইনগুলো অসাধারণ হয়েছে। অনু কবিতা দুইটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65546.28
ETH 2666.01
USDT 1.00
SBD 2.90