বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৪৩
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।
যেহেতু পাহাড়ি রাস্তা অনেক খাড়া হয় তাই আমাদের উঠতে একটু বেশি কষ্ট হচ্ছিল। আর আগেই বলেছি যে বোনের পায়ে সমস্যা থাকায় তাকে নিয়ে উঠতে আরো বেশি অনেক সমস্যা হচ্ছিল। কারণ সেই বোনটি বেশি পা উপরের দিকে উঠতে পারে না। তার আগেই পায়ে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। তাই সবাই আগে চলে গেলেও আমি বোনকে নিয়ে আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠতে লাগলাম। আসলে যে রাস্তা পাঁচ মিনিট পথ। আমার সেই রাস্তায় বোনকে নিয়ে যেতে প্রায় ৪০ মিনিটের উপরে সময় লেগে গেল। আসলে আমি নিজেই বলেছিলাম অন্যদেরকে যে তারা উপরে আগে চলে যাক আমি বোনকে নিয়ে আস্তে আস্তে উপরের দিকে আসছি। আসলে আমি আমার প্রতিটা বোনকে অনেক বেশি ভালোবাসি।
এরপর আমাকে ফোন করে বলা হলো যে সামনে একটা ছোট রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সেই রেস্টুরেন্টে আমরা দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করব। আর তারাও আমাকে বলল যে, তোরা দুজন এই রেস্টুরেন্টে চলে আসিস। আমি হাঁটতে হাঁটতে দূরে দেখতে পেলাম যে একটা বড় গেট। আসলে এই মাধবকুণ্ড জায়গাটি খুবই সুন্দর একটি জায়গা। চারিদিকের এত গাছপালা সত্যিই মনোরম এক পরিবেশ। এখানে থাকলে আপনার কখন যে সময় চলে যাবে আপনি মোটেও অনুভব করতে পারবেন না। এই পাহাড়ি অঞ্চলের ভিতর একটি মাত্র রেস্টুরেন্ট যেটির নাম হল ঝর্ণা রানীর দেশ। আসলে সামনে একটি ঝর্ণা রয়েছে। এই নাম অনুসারে এই রেস্টুরেন্টের নাম রাখা হয়েছে ঝর্না রানীর দেশ।
যেহেতু এই রেস্টুরেন্ট থেকে আরো প্রায় ১০ মিনিটের পথ সেই ঝর্ণার কাছে যাওয়ার জন্য। যেহেতু আমরা সবাই খুব ক্ষুধার্ত ছিলাম তাই এই রেস্টুরেন্টে ঢুকেই দেখলাম যে কাকারা আমাদের জন্য খাবারের অর্ডার করছিলেন। আর এখানে আরেকটা ভালো জিনিস হলো এখানে আপনি কোন খাবার রেডি পাবেন না। আপনাকে প্রথমে খাবারের অর্ডার দিতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে। কারণ রেস্টুরেন্টের প্রতিটি লোক খাবারের অর্ডার নেওয়ার পর তারা সেই খাবারটা তৈরি করে। আসলে ব্যাপারটা কিন্তু আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। কারণ তারা কোন পুরনো খাবার রাখে না। আর এখানে একদম ফ্রেশ খাবার পাওয়া যায়।
যেহেতু খাবার দিতে দেরি হবে তাই আমরা বাইরের পরিবেশটা একটু ঘুরে দেখতে লাগলাম। কারণ রেস্টুরেন্টটা পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। তাই এই রেস্টুরেন্ট এর চারিপাশেও অনেক বড় বড় পাহাড় রয়েছে। আসলে নিচে থেকে পাহাড়গুলোকে দেখতে ছোট মনে হলেও আসলে গাছ পালার আড়ালে সেই পাহাড়ের উচ্চতা কিন্তু অনেক বেশি বড়। তাই প্রথমে গিন্নি আমাকে জিজ্ঞাসা করল যে, এখানে অনেক ছোট ছোট পাহাড় রয়েছে। আমি গিন্নিকে বললাম যে, এখানে ছোট পাহাড় মোটেও নেই কারণ তুমি গাছের আড়ালে এই পাহাড়গুলোর সম্পূর্ণ উচ্চতা তুমি বুঝতে পারছ না।
আসলে রেস্টুরেন্টটি খুব প্লান মাফিক তৈরি করা হয়েছিল। কারণ রেস্টুরেন্টের একদিকে যেমন খাবারের জায়গা রয়েছে এবং অন্যদিকে রয়েছে রান্নাঘর। রেস্টুরেন্টের সামনে রয়েছে অনেকটা ফাঁকা জায়গা যেখানে বাচ্চাকাচ্চারা অনায়াসেই বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতে পারে। এই মাঠের পাশেই রয়েছে, বড় ওয়াল এবং ওয়ালের উপর দিয়ে শুরু হয়েছে পাহাড়। যদিও আমরা একটু বন জঙ্গলের দিকে ঢুকতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু পরক্ষণে একজন ব্যক্তি আমাদের বারণ করল যে আমরা যেন বেশি উপরের দিকে না উঠি। কারণ পাহাড় অনেক খাড়া এবং পা পিছলে একবার পড়ে গেলে যে কোন ধরনের একটা বড় দুর্ঘটনা যে কোন মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে।
এছাড়াও আমরা আরেকটা জিনিস দেখে খুবই অবাক হলাম যে, এই পাহাড়ের ভিতর রয়েছে একটা শিব ঠাকুরের মন্দির। আসলে এমন পাহাড়ি জায়গায় এমন একটি মন্দির সত্যিই দুর্লভ একটা ব্যাপার। আসলে মন্দিরটি হল মাধবেশ্বর মহাদেবের মন্দির। আমরা সবাই জানি যে, আমাদের শিব ঠাকুরের বিভিন্ন নামে বিভিন্ন স্থানে ডাকা হয়। এছাড়াও এই মন্দিরের সিঁড়ির দুপাশে সুন্দরভাবে হাতল দিয়ে দেয়া হয়েছে। যার ফলে বয়স্ক লোক থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চাকাচ্চারা সবাই অনায়াসে এই সিঁড়ি দিয়ে উপরের দিকে মন্দির দর্শন করতে পারেন। যদিও আমরা এত দ্রুত ওই মন্দিরে গেলাম না। কারণ এদিকে আমাদের খাবার একদম রেডি হয়ে গেছে। তাই আমরা দুপুরের খাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 17/11/2022
তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
আপনি তো দেখছি ভাইজান বাংলাদেশে এসে নামকরা স্থানগুলো ভ্রমণ করে গেছেন। একদম শুরু থেকে এই পর্যন্ত প্রত্যেকটা পোস্ট আমি দেখে গেছি। আর খুবই ভালো লেগেছে আমাদের দেশের সুন্দর সুন্দর স্থানগুলো গুলো আপনার ক্যামেরায় বন্দী হয়েছে দেখে।