মানুষের ভিড়ে। কবিতা নং :- ৪৬steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আমি আমার লেখা একটা কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


বর্ষাকাল আমাদের সবার কাছে একটা প্রিয় ঋতু। অনেকের কাছে এটি প্রিয় হলেও সবার কাছে কিন্তু এটি প্রিয় নয়। আমরা সাধারণত বর্ষাকালে জানালার ধারে বসে বিভিন্ন আনন্দের সময় কাটাই এবং বাইরের এই প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করি। কিন্তু আপনারা কখনো কি ভেবে দেখেছেন এই বর্ষাকালে আমাদের এই পৃথিবীতে এই গরিব শ্রেণীর লোকেদের কিরকম অবস্থা হয়। আসলে কোন ঋতুই তাদের কাছে প্রিয় হতে পারে না। কারণ আমাদের মত তাদের ঘরবাড়ি থাকে না।


আসলে আমরা সবাই লক্ষ্য করেছি যে, এসব গরিব শ্রেণীর লোকেরা রাস্তার দুপাশে সাধারণত বসবাস করে। তাদের বাড়িঘরগুলো সাধারণত ভাঙাচোরা হয়। আসলে সমাজ তাকে অনেকটা ঘৃণার চোখে দেখে। তাদের দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য এতই কষ্ট করতে হয় যে তারা তাদের নিজেদের উন্নতির জন্য কখনো চেষ্টা করতে পারে না। আর সব গরিব শ্রেণীর লোকেদের কোন নির্দিষ্ট বাসস্থান থাকেনা। তারা অনেকটা ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়ায় সারা পৃথিবীতে।


আসলে কোন এক জায়গায় বসবাস করতে শুরু করলে সেখানে লোকেরা তাদের সেখান থেকে তুলে দেয়। ফলে তারা অন্য কোথাও গিয়ে আবার পুনরায় নিজেদের থাকার একটুকু বাসস্থান গড়ে তোলে। কিন্তু আমাদের পৃথিবীতে সবথেকে তারাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট করে এসব বর্ষা ঋতুতে। কারণ এই বর্ষাকালে তাদের চোখে সামান্যটুকু ঘুম থাকে না। কখন বৃষ্টি আবার কখনো রোদ। এই প্রতিকূলতার মাঝে তারা কখনো তাদের চোখের দু পাতা এক করতে পারেনা। ফলে তাদের পুরো রাতটাই কেটে যায় নিদ্রাহীন ভাবে।


আসলে এসব গরিব লোকেদের বাচ্চাগুলোও খুব কষ্টে তাদের দিন যাপন করে। আসলে পিতা-মাতার কাছে তাদের সন্তান সবথেকে শ্রেষ্ঠ। তাই তাদের সন্তানকে তারা এই বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষার জন্য তাদের নিজের আঁচলের তলে লুকিয়ে রাখে। আসলে কতক্ষণ বা লুকিয়ে রাখবে। কারণ বৃষ্টির জল তাদেরও আর মায়ের আঁচল থেকে রক্ষা করতে পারে না। আর এর ফলে এসব বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের রোগে মারা যায় প্রতি বছর। যদিও এসব বাচ্চাদের চিকিৎসা করার মতো অর্থ তাদের কাছে থাকে না।


আর আমরা ঘরে বসে বসে বৃষ্টি উপভোগ করি। আসলে পৃথিবীতে এক এক ধরনের মানুষের জীবন যাপন এক এক ধরনের। কারো কাছে কোনটা সুখের হলেও অন্য কারো কাছে সেই বিষয়টা কিন্তু সুখের নাও হতে পারে। আসলে ভগবানের কি সৃষ্টি। সমাজের বৃত্তশালী লোকেরা যদি এসব গরিব লোকেদের পাশে একটু এগিয়ে আসতে পারে তাহলে এসব গরীব শ্রেণীর লোকেদের আর কষ্ট থাকবে না। অনেকেই আছেন যারা সবসময় চেষ্টা করেন এসব গরিব লোকেদের সাহায্যের জন্য।


এছাড়াও সরকার এসব গরীব শ্রেণীর লোকেদের জন্য বিনামূল্যে ঘরের ব্যবস্থাও করেন। যদিও এসব ঘর প্রকৃত গরীব শ্রেণীর লোকেরা কখনোই পায় না। ফলে সে ক্ষেত্রেও তারা পুনরায় বঞ্চিত হয়। আসলে এই গরিব শ্রেণীর লোক কখনো সুখের মুখ দেখতে পায় না। তারা দুঃখটাকে আপন করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করে প্রতিনিয়ত। তবুও তারা তাদের এই কঠোর সংগ্রামে হেরে যায় বারবার। তাইতো হয়তোবা তাদের কাছে সকালের সূর্য উদয় মধুর হয় না। তাদের কাছে সূর্য উদয়টা হয় নিদ্রাহীন উদয়।


তাইতো এই পৃথিবীতে সকল শ্রেণীর লোকের কাছে আমার আকুল আবেদন এই যে তারা যেন এই গরীব শ্রেণীর লোকেদের পাশে একটু সাহায্যের হাত নিয়ে দাঁড়ায়। যদিও একার পক্ষে এই গরীব শ্রেণীর লোকেদের সাহায্য করা বা তাদের উন্নতি করা মোটেও সম্ভব নয়। কারন আমাদের পৃথিবীতে এই গরিব শ্রেণীর লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। যদি সবাই মিলে আমরা একসাথে সাহায্য করি তাহলে অবশ্যই আমরা এই গরিব শ্রেণীর লোকেদেরকে একটু সুখের মুখ দেখাতে পারবো।

✠ গরিবের বর্ষাকাল ✠


পাকা বাড়ির জানালায় বসে,
ভালো লাগে দেখতে বর্ষা।
কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন,
বর্ষায় গরিব মানুষের কি অবস্থা।


তাদের তো আর বাড়ি নেই,
থাকতে হয় রাস্তার পাশে।
কষ্টে তাদের দিন যায়,
পুরোটা বর্ষার মাঝে।


রাতে তাদের ঘুম নেই,
কারণ কখন বর্ষা আসে।
সন্তানদের বুকে জড়িয়ে,
অপেক্ষায় পুরো রাত কাটে।


কর্মব্যস্ত মানুষেরা দিনের বেলায়,
গালাগালি করে তাদের।
রাস্তা কেন দখল করে,
বসবাস কেনো সেই জায়গাতে।


সামান্য একটু ছাউনি দিয়ে,
আরামে থাকবে বলে।
বর্ষা এবং ঝড়ের তেজে,
সব যায় তাদের উড়ে।


ছাউনির খুঁটি ধরে,
ভাবতে থাকে তারা।
কখন বর্ষা শেষ হবে,
দেখবে আকাশে তারা।


তারার তো আর দেখা নেই,
আকাশ ভরা মেঘ।
মেঘের গর্জন শুনতে শুনতে,
ভোরের পাখিরা দেয় সাড়া।


এরকম কষ্ট করে তারা,
কাটায় পুরোটা বর্ষাকাল।
বর্ষার শেষ হতে না হতেই,
শীতকাল এসে দেয় সাড়া।


কবে যে কষ্ট দূর হবে,
ভাবতে নাহি আর পারে।
কারণ তারা সবাই জানে,
এভাবেই দিন তাদের যাবে ।


আশাকরি কবিতাটি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



তো দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

11-20-04-359_512.gif

সবাইকে ধন্যবাদ।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 11 months ago 

খুব সুন্দর ভাবে একটি কবিতা রচনা করে আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যে কবিতার মধ্যে জনসাধারণের অসহায় গরীব দুঃখী মানুষের কথা তুলে ধরেছেন খুব সুন্দর ভাবে। আসলে এভাবে অনেক মানুষ চিন্তা করে না। নিজের বিলাসিতায় মগ্ন থাকে কিন্তু হতদরিদ্র মানুষদের নিয়ে ভাবার সময় পায়না। আপনি খুব সুন্দর ভাবে বিষয়টা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59834.01
ETH 2665.66
USDT 1.00
SBD 2.46