বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৪৭

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230108_081943.jpg


চারিদিকের কুয়াশায় আমরা পরিবেশটা উপভোগ করতে পারছিলাম না বলে আমাদের সবার মন একটু খারাপ ছিল। যাইহোক আমিও আমার ফোনের ব্লুটুথ দিয়ে গাড়িতে গান বাজাচ্ছিলাম। আসলে অনেক দূরের পথ তাই কিছুক্ষণ পরপর আর গান শুনতে ভালো লাগছিল না। কারণ গান শুনতে শুনতে বারবার ফোন দেখতে হচ্ছিল। তাই আমি গান শোনা বাদ দিয়ে চারিদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশটা উপভোগ করতে লাগলাম। এছাড়াও রাস্তার কুয়াশাটা মাঝে মাঝে এতই বেশি ছিল যে রাস্তার সব যানবাহনকে তাদের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছিল।


IMG_20230108_082107.jpg


এই কুয়াশের ভিতর হেড লাইট না জ্বালিয়ে চললে যেকোনো সময় বড় ধরনের একটা বিপদ ঘটে যেতে পারে। দূর থেকে হেডলাইট গুলোকে ছোট মিটিমিটি করে বাতি জ্বলার মতো মনে হচ্ছিল। যদিও গাড়িগুলো কাছে আসলেও গাড়ির সেই আলোর প্রখরতা এই কুয়াশাকে ভেদ করে বাইরে বের হতে পারছিল না। আমাদের ড্রাইভার দাদা খুবই আস্তে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কারণ গাড়ির কয়েক ফুট সামনেও কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।


IMG_20230108_082113.jpg


আসলে গাড়ির ড্রাইভার দাদা একদম সামনের দিকে এক নজরে তাকিয়ে রইলেন। কোন দিকে চোখ ফেরানোর তার সামান্য টুকু সময় ছিল না। কারণ সামনে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কিছুক্ষণ পর ড্রাইভার দাদা রাস্তার সাইডে গাড়িটি রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে লাগলেন যে কুয়াশা কিছুটা কমে কিনা। যাই হোক উনি মোটামুটি কিছুক্ষণ পর পর রাস্তার পাশে সাইড করে দাঁড়াতে শুরু করলেন। কারণ মাঝে মাঝে কুয়াশার প্রখরতা এতটাই বেড়েই গিয়েছিল যে আমরা মোটেও কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না।


IMG_20230108_082736.jpg


আসলে আমাদের যে রাস্তা রয়েছে তাতে করে আমরা এভাবে থামতে থামতে গেলে মনে হয় আমরা বাড়িতে মাঝ রাতে পৌঁছাব। এদিকে আমাদের সময় থেকে জীবনের দামটা অনেক বেশি। তাই আমরা অত তাড়াহুড়া না করে আস্তে আস্তে করে সামনের দিকে এগোতে শুরু করলাম। যখন আশেপাশের কোন ছোটখাটো শহরের দেখা মেলে তখন কুয়াশার পরিমাণটা অনেকটা কম হয়। আবার যখন আমরা ফাঁকা রাস্তায় চলে আসি তখন আবার কুয়াশার পরিমাণটা অনেক বেশি থাকে।


IMG_20230108_082915.jpg


কিছুক্ষণ পরে ভিতর থেকে বোন বলে উঠল যে তার নাকি খুব বমি পাচ্ছে। আসলে এমন রাস্তা বমি পাওয়াটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ বারবার গাড়িকে ব্রেক করতে হচ্ছে এবং আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে করে আমাদের গাড়ির সবার খুব অস্বস্তিকর লাগছিল। যাইহোক পরবর্তী ড্রাইভার দাদা রাস্তার একপাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বোনকে গাড়ি থেকে বাইরে নিয়ে আসা হলো। যদিও বাইরে এসে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে তার বমি বমি ভাবটা একদম চলে গেল।


IMG_20230108_083242.jpg


এরপর আমরা আরও একটু সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই ড্রাইভার দাদা একদম পুনরায় একটা পেট্রোল পাম্প দেখে সেখানে গাড়িটা রাখলেন। কারণ কুয়াশার পরিমাণটা তখন এতটাই বেশি ছিল যে আর মোটেও গাড়ি নিয়ে সামনের দিকে যাওয়া যাচ্ছিল না। যদিও সেই সময়টিতে আমরা আমাদের সঙ্গে করে নিয়ে আসা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে শুরু করলাম। এছাড়াও পেট্রোল পাম্পে বাথরুমের সুব্যবস্থা থাকায় আমরা সবাই ফ্রেশ হয়ে আসলাম বাথরুম থেকে।


IMG_20230108_083448.jpg


যাইহোক আমরা গাড়িতে গান জোরে বাজিয়ে সবাই মিলে নাচানাচি করতে লাগলাম এবং খুব মজা করতে লাগলাম। আসলে এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় আমাদের এক ঘন্টা সময় কেটে গেল। এক ঘন্টা পর কুয়াশা সামান্য একটু কমলে আমরা তখন আবার পুনরায় গাড়ি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আসলে এবারও আমাদের আস্তে আস্তে যেতে হচ্ছিল। যদিও আমরা গাড়ির ভিতরে তেমন হইচই করলাম না কারণ এতে ড্রাইভার চালক দাদার কন্সেন্ট্রেশন নষ্ট হতে পারে।


IMG_20230108_083918.jpg


কারণ তার গাড়ি চালাতে অনেক বেশি অসুবিধা হচ্ছিল। তারপর যদি আমরা এতই চিৎকার চেঁচামেচি করি তাহলে তার গাড়ি চালাতে আরো বেশি অসুবিধা হতে পারে। যাইহোক যাইবার দাদা খুব সাবধানের সহিত আস্তে আস্তে গাড়ি চালাতে লাগলেন। এরপর হঠাৎ করে আমরা রাস্তার দুপাশে এক ঝাঁক শিয়াল দেখতে পেলাম। যদিও আমি ছবি তোলার আগেই শিয়াল মহাশয় গুলো একদম দৌড় দিয়ে পাশের জমিতে নেমে চলে গেল। তাই তাদের আর ছবি আমার তোলা হলো না।


IMG_20230108_084341.jpg


আসলে এরপর যেতে যেতে প্রায় আমরা তিন ঘন্টা জার্নি করে ফেললাম। আসলে আমাদের এক ঘন্টার পথ যেতে আমাদের প্রায় তিন ঘন্টা সময় লেগে গেছিল। কারণ রাস্তায় এতটাই কুয়াশা ছিল যে ড্রাইভার চালক দাদা মোটেও গাড়ি বেশি স্পিডে চালাতে পারছিল না। যদিও রাস্তা পুরোটাই ফাঁকা ছিল তাও আমাদের আসতে অনেকটা দেরী হয়ে গেল। আর এর ফলে আমরা সবাই খুব ক্লান্ত হয়ে পড়লাম। অনেকে আবার গাড়ির ভিতরেই একটা ঘুম দিয়ে নিল। আমার অবশ্য কখনোই গাড়ির ভিতরে ঘুম হয় না।



IMG_20230108_084354.jpg


আসলে গাড়ির ভিতরে আমি যদি চোখ বন্ধ করি তাহলে আমার মাথা ঘুরায় এবং বমি বমি ভাব পায়। আর কোথাও ঘুরতে গেলে আমি অবশ্য ঘুমটাকে মোটেও প্রাধান্য দেই না। আমি তখন মেতে থাকে চারিদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। যাইহোক আমি এবং ড্রাইভার দাদা বাদে গাড়ির ভিতরে সবাই একটা গভীর ঘুম দিয়ে নিল। যদিও আমার একটু ঘুম পাচ্ছিল তাও আমি আমার ঘুমকে কন্ট্রোল করে চারিদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং কুয়াশাটাকে উপভোগ করতে লাগলাম।


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 18/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 11 months ago 

ভ্রমণের মুহূর্তগুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করেছেন। সত্যি ভ্রমণের এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। কুয়াশা মাখা সৌন্দর্যময় দৃশ্য গুলো দেখে মুগ্ধ হলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

ওয়াও দাদা বাংলাদেশ এসে বেশ সুন্দর কুয়াশাচ্ছন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করেছিলেন দেখছি। তবে ড্রাইভার দাদা গাড়িটা বেশ ভালো চালিয়ে ছিলো অবশ্যই। এরকম কুয়াশার ভেতর গাড়ি চালানোটা অনেক কষ্টের ব্যাপার। অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিত ভাবে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76535.07
ETH 2962.73
USDT 1.00
SBD 2.65