আসুন আজ কবিতা পড়ি। স্বরচিত কবিতা।
।। নমস্কার বন্ধুরা।।
নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত
![]() |
---|
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমার বাংলা ব্লগের জন্মদিন উপলক্ষে যে অনুষ্ঠান চলছে, আজ তার তৃতীয় দিন৷ হাতে গোনা কয়েকদিন হল আমি এই পরিবারের সদস্য। সত্যি বলতে কি প্রথম প্রথম খুবই খটমট লেগেছিল৷ কোথা থেকে শুরু করব কোথায় শেষ করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না৷ কিন্তু ধীরে ধীরে সব কিছু সহজ হয়ে যাচ্ছে৷ ডিসকর্ডে কথা বলতে বলতে কখন যে একে একে চেনা আপনজন হয়ে উঠলেন আজ ভাবি।
এর আগে কবিতা জীবনে অনেক গ্রুপে কথা বলেছি৷ নতুন থেকে পুরনো হয়েছি৷ তাই সবাইকে চিনে নিয়ে খুব যে অসুবিধে হয়েছে তা নয়৷ আজকাল তো ঘুম থেকে উঠেই কাজকর্ম সেরে ফোন হাতে নিলে প্রথম ডিসকর্ডে গিয়ে লিখি 'শুভ সকাল'।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রথমদিন rme দাদার কথা শুনছিলাম কিভাবে আমার বাংলা ব্লগের জন্ম হল৷ উনি কত বাধাবিপত্তি পেরিয়ে এই জায়গায় পৌঁছেছেন৷ টিনটিনের মতো আমার বাংলা ব্লগও ওনার সন্তান৷ দাদা বার বার বলেন কোয়ালিটি পোস্ট করার কথা। সেটাই মাথায় চলতে থাকে। সারাদিন ভাবি লেখাগুলো কিভাবে সাজাবো, কিংবা কিভাবেই পোস্টগুলো পড়ে মানুষ মনে রাখবে। এদিকে ব্লগগুলো যে লিখি রোজই নতুন কিছু শিখি৷ কতটা কোয়ালিটি আনতে পারছি জানি না তবে চেষ্টা করছি সাবলীল গদ্যের ভেতর পাঠকবৃন্দদের ধরে রাখতে৷
![]() |
---|
যাইহোক আজ আমি আপনাদের কবিতা পড়াবো৷ অবশ্যই আমার লেখা কবিতা৷ জানেন কোন ছোটবেলায় লুকিয়ে লুকিয়ে কবিতা লিখতে শুরু করি আমার আজ সেসব মনে নেই। তবে ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত যখন লিখেছি সবই লুকিয়ে রাখতাম। কেউ পড়লেই কী ভীষণ লজ্জা পেতাম বলে বোঝাতে পারব না। কেন কি জানি। আজ আর সে সব মনে হয় না৷ বরং কবিতা নিয়েই কত জ্ঞান কপচাই৷ নিজেও বিশ্বাস করি, আমি যেন লিখতেই এসেছি৷ আমার জীবনের প্রতিটা ধাপে হেরে যাবার পরেও যেখানে সামান্য আলো জ্বলে সেই অংশটুকুই আমার কবিতা, আমার সৃষ্টি।
কবিতায় আমি অনেক ভাঙাগড়া করি৷ তবে আপনাদের সামনে সেই সব ভাঙাগড়া এখনই আনব না৷ কবিতায় আপনারা আমায় ধীরে ধীরেই চিনুন৷ আজ যে কবিতাটি রাখছি তা অবশ্যই বর্তমান ধারায় লেখা। বর্তমান ধারা যাকে আমরা কলকাতার কবিরা আপডেটেড ভার্শন বা উত্তরাধুনিক কবিতা বলে থাকি। এই কবিতার চলন খুব সরল হয়৷ আর লাইনে লাইনে বাঁক থাকে। সর্বপরি যা থাকে তা হল গতি৷ কেউ থেমে নেই৷ তাই কবিতাকেও দাঁড় করিয়ে রাখা যায় না৷ তাকেও গতি দিতে হয়। সেই গতি যা তালে তালে দৌড়োবে খানিকটা নদীর উচ্চগতির মতো। আমি তাকে রফতার বলি। পড়ে বলুন তো আমার কবিতায় ঠিক কতখানি গতি আছে?
![]() |
---|
ভাঙাভাঙি না করে
------------------------------------ নীলম সামন্ত
এসো তবে ভাঙাভাঙি না করে
দরজার বাইরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি৷
অপেক্ষায় মাছি ভনভন করবে,
গুবরেপোকা জায়গা খুঁজবে,
কাক চিলও আসতে পারে।
এসব ভেবে নাক সিঁটকোবার আগে বরং
একটা গঞ্জ ভেবে নিই ;
অবলীলার নদী আর পছন্দের কিছু গাছপালা।
যেখানে শ্যামরঙের কিশোরী নলকূপ টিপে জল খাচ্ছে,
জামার পেছনে চেইন খোলা, সামনের অংশ অনেকটা ঝুলে পড়া দোলনা।
তার সদ্য ওঠা বুক দেখতে দেখতে
একতারা বাজিয়ে গান গায়ে নিচ্ছে হা-ঘরে বাউল।
এসবে আমার কিছু করার নেই।
তাই দূর থেকে দেখি -
গরুর পালানে ধুলো ধরেছে,
উঠোনে নতুন জাল,
একপাল বিচ্ছু সেই জাল ছিঁড়ছে,
তাদের নখ চিরে দিচ্ছে কিশোরীর পিঠ,
গৃহস্থালি কই?
দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।
জানালায় মহুয়া ফুলের গন্ধ।
আহ! নদীতে কে লাফাচ্ছে? কেই বা পদ্মবনে বুক ঠেসে বসে আছে?
সাপ, মাছ, হাঁস
কবিতার মতো সৌন্দর্য দেখিয়ে
ছোবল মেরে যাচ্ছে।
রতিক্রিয়ায় ততক্ষণে পূর্ণিমা নেমেছে,
কলসি কলসি জল,
সার সার চরকা
টারবাইনের গতিতে ঘুরছে -
ঘুরতে ঘুরতে আবছা হয়ে যাচ্ছে আলো,
আবছা হচ্ছে গ্রাম -
ক্রমশ আমি, আমার দুই চোখ।
খুব কি দুর্বোধ্য লাগল? অনেকেই আপডেটেড কবিতার নামে সাপের মণি খুলে বেড়ালের মাথায় লাগাতে গিয়ে ব্যাঙের মাথায় ছুঁইয়ে হাতির ল্যাজে দিয়ে দেয়। তাদের কাছে কবিতা কতখানি কবিতা আমি জানি না তবে খিচুড়ির মহাভোজ একখানা হয়। যদিও আমি এটাও মানি সব খাবার সবার জন্য নয়। যার যেমন ব্রেনের পুষ্টি লাগে সে সেই হিসেবেই খাদ্য খোঁজে। তাই না?
বন্ধুরা কবিতাটি আসলেই কেমন লাগল মন খুলে জানাবেন৷ অপেক্ষায় থাকব।
সাথে অবশ্যই ভালো থাকবেন সব্বাই। আমার বাংলা ব্লগের সবাই জন্য আমার অনেক শুভকামনা। আসুন সকলে মিলে সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিই আমার প্রিয় বাংলাভাষা কোন দূর্বল লতানো গাছ না৷ আমাদেরই পূর্বপুরুষ মহাভারতের স্রষ্ঠা। সৃষ্টি আমাদের জিনে লেগে। ঠিক বলছি তো?
আসি তবে?
টা টা!
সমস্ত ছবিই আমার মুঠোফোনে তোলা কোথাও বা কারোও থেকে ধার করা নয়। তবে হ্যাঁ সামান্য এডিটিং আছে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ বর্তমানে ভারতবর্ষের পুনে তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
প্রথমেই বলবো টাইটেলটি ঠিক দেখে বেশ মুগ্ধ হয়ে গেলাম। তারপর বলবো আপনার কবিতার কথা। দারুন একটি কবিতা আবৃত্তি করলাম। আপনি কিন্তু দারুন একটি কবিতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। মুগ্ধ হলাম আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে।
খুব আনন্দিত হলাম। আপনি পড়লেন আমার কবিতা। ধন্যবাদ দিদি পাশে থাকার জন্য৷ ভালো থাকবেন৷
আপনি নীলম সামন্ত সেটা তো বুঝতে পারলাম কিন্তু যে ফটো আপনার নামের পাশে যোগ করেছেন সেটা দেখেতো আমার চক্ষুদ্বয় নীরব হয়ে গেছে, হা হা হা। কবিতাটি সুন্দর ছিলো।
হা হা হা৷ বেশ সুন্দর না?
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনি পড়লেন৷
আসলেই খুব সুন্দর লাগছে, বেশ কিউট।
হে হে হে।