স্টুডিওপাড়া-তে উঁকিঝুঁকি।। অলস সকালে ফোন গ্যালারি থেকে গোটাকতক ভালোলাগা।। ফটোগ্রাফি পোস্ট

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago (edited)

☘️🌼☘️নমস্কার বন্ধুরা☘️🌼☘️

🙏🙏🙏

নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত

🌷🌹🌷🌹🌷


1000188456.jpg

সুপ্রভাত বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশাকরি আপনারা বেশ ভালোই আছেন, সদ্যই আমার বাংলা ব্লগের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান শেষ হল, আর এখন চলছে তারই পুরস্কার বিতরণ। প্রত্যেকেই কম বেশি স্টিম পাচ্ছেন, সেই হিসেবে দেখতে গেলে মন সবারই কম বেশি ফুরফুরে। আচ্ছা, বন্ধুরা ঈদ উৎসব আপনাদের নিশ্চই খুব ভালো কেটেছে? জানেন বহুবছর হল বাঙালি উৎসবগুলো আমি বাঙালিদের মতন করে পালন করতে পারি না, আমার কাছে সে সবই স্মৃতি। শুধু স্মৃতি না সুখস্মৃতি। যা জড়িয়ে দিব্যি কেটে যায় দিনের পর দিন, রাতের পর রাত৷ খুব খারাপ কাটে বলব না, নানান জায়গার সংস্কৃতি দেখে দেখে আমিও বেশ অ্যাডজাস্ট করতে শিখে গেছি। ভাবি, ভাগ্যিস এদিক ওদিক হই, নইলে ভারতের এতো বৈচিত্র্যময় যাপন জানতেই পারতাম না৷ দেখলেন, এভাবে কেমন না-বাচক টা হ্যা-বাচক হয়ে যায়৷

এতো বক বক করছি মানে আমিও বেশ ভালোই আছি। ঠান্ডা লেগেছে, গলা বসে গেছে, প্রচন্ড সর্দিতে মাথা ভার। কিন্তু আমাকে থামিয়ে রাখবে কার সাধ্যি? চলে এলাম আপনাদের গল্প বলে মাথা নষ্ট করতে। হে হে হে।

বন্ধুরা, আজ কোন বিশেষ গল্প না, ক্যাপশন দেখে বুঝতেই পারছেন ফটো অ্যালবাম খুলব। হ্যাঁ, সকাল থেকে কি খাই কি করির মতো অবস্থা হওয়াতে বসে বসে মোবাইলের গ্যালারি দেখছিলাম৷ নিজের তোলা ছবিগুলো নিজেকেই অবাক করে জানেন। আমিই কি তুলেছি? কবিতা লেখার সময়ও এমনটাই মনে হয়, আমিই কি লিখেছি! নিজেকে চিনতে না পারার এও এক কৌশল। তাই না? আচ্ছা, বকবক ছেড়ে ফটো দেখাই চলুন।

ফটোগ্রাফি ১

1000188416.jpg

আলোঘর

ছবিটি অ্যাগোডা ফোর্টের লাইটহাউসের। অ্যাগোডা ফোর্টটি পর্তুগীজদের তৈরি, গোয়ার ক্যান্ডোলিমে সিনকুইরম বিচের ওপর অবস্থিত৷ এক সময় এখানে লাইট জ্বললেও আজ আর জ্বলে না৷ তবে পাশের একটি নতুন আরও উঁচু লাইটহাউস তৈরি হয়েছে৷ ২০২৫ এর একদিন বর্ষার মেঘ মাথায় নিয়ে ঘুরে এসেছিলাম৷ জানেন, এই ফোর্ট যাবার পথে আমি জীবনে প্রথমবার হাইওয়েতে ৮০/১০০ স্পীডে গাড়ি চালিয়েছি৷ শুরুতে একটু ভয় লাগলেও পরের দিকে বেশ মজা লাগছিল।

ফটোগ্রাফি ২

1000188418.jpg

এক পশলা ঠাঁই

ছবিটি বেটুল ফোর্ট থেকে তোলা। সমুদ্রের ধারে বিচটা এরকমই একটুখানি ল্যাজ এর মতো বেরিয়ে থাকা। এই অংশটাতে একটা ছোট্ট মোহনা রয়েছে। সে কারণে বৃষ্টির একদিকে খুব বড় বড় ঢেউ এলেও মোহনার দিকটাতে ঢেউ খুবই কম। গোয়ার এই বিচটিতে লোকজনের আনাগোনা প্রায় নেই বললেই চলে। থাকলেও গুটিকয়েক বিদেশি টুরিস্ট। আর এদেশিও যারা গেছেন, তারা বেশিরভাগই প্রি-ওয়েডিং বা পোস্ট-ওয়েডিং ফটোশুট করাতে৷ দূর থেকে কী অপূর্ব দেখতে বিচটা তাই না?

ফটোগ্রাফি ৩

1000188417.jpg

ক্লান্তির চোখেও লেগে মানবজাতি

ছবিটি আজিনকেতারা ফোর্টে যাওয়ার পথে তোলা। পাহাড় চড়ার যাত্রাপথ ছিল প্রায় দেড় ঘন্টার। কিছুটা ওঠার পর স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্তি আসে, আমরা সকলেই বসে পড়ি, সামনে চেয়ে দেখি ব্যস্ত মানবজাতি নিজেদের কাজে মুখ ডুবিয়েছে। ঘরগুলো ভাবলেশহীন দাঁড়িয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে অনন্তের চাট্টি মুহুর্ত।

ফটোগ্রাফি ৪

1000004252.jpg

জীবিকা নির্বাহের কোন সন্ধে নেই

এই জায়গাটি মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার হরিহরেশ্বর বিচ। এই অংশটা বেচের ঠিক উল্টোদিকে পাহাড় ও পাথুরে অংশের উপর। এখানে মানুষ জাল ফেলে মাছ ধরে কিংবা সামুদ্রিক গাঁইতি জাল, বড় হুইলও ফেলে। মাছ কতটা আছে ওরাই জানে আমরা যতক্ষণ ছিলাম কারোরই জালে মাছ পড়তে দেখিনি। ঠিক সূর্যটা ডোবে ডোবে সেই মুহূর্তেই ছবিটি তুলেছিলাম। কী সুন্দর না?

ফটোগ্রাফি ৫

1000002975.jpg

দরজার অনুরণন

এটি খুব সম্ভবত পানহালা ফোর্টের খাদ্যশালার ভেতরে গিয়ে তুলেছিলাম। এই ফোর্টটি কোলহাপুর, মহারাষ্ট্রে অবস্থিত। এখানে অনেক দিনের খাবার একসাথে মজুত থাকত। ওখানের এক গাইড বলেছিলেন, এই ফোর্টেই শিবাজী মহারাজ সব থেকে বেশি দিন ছিলেন৷ তাঁর তো অনেক ফোর্ট, মানে অনেক বাড়ি৷ মহারাষ্ট্রে এরম তিনশ'র বেশি ফোর্ট রয়েছে, যার বেশিরভাগই ভগ্নপ্রায়। তবে প্রতিটিই পাহাড়ের ওপরে। শিবাজী মহারাজ ভাবতেন ওপরে থাকলে শত্রুর আক্রমন থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে৷ তাই প্রতিটি ফোর্টই পাহাড়ের ওপরে। আজও দেখতে হলে হেঁটেই যেতে হয়।

ফটোগ্রাফি ৬

1000000837.jpg

ফাঁকফোকরের সূর্য

এই ছবিটি মহারাষ্ট্রের কারনালা ফোর্টে ওঠার সময় রাস্তায় তুলেছিলাম। এত খাড়াই পথ ছিল, আমার বেশ মনে আছে ছবিটি তোলার সময় শুয়ে পড়েছিলাম। আসলে পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্য ঢুকে পড়ার পর অন্ধকার রাস্তাটাতে এত সুন্দর রঙিন আলোর খেলা জমে ছিল তাই দেখে আমি লোভ সামলাতে পারিনি। ছবিটা ভালো হয়েছে বলুন?

তো বন্ধুরা, আজ এই পর্যন্তই থাক। পরের দিন আসবো আরো একটা নতুন ব্লগ নিয়ে সেখানে অন্যকিছু দেখাবো, অন্য গল্প করব। ততক্ষণ আপনারা ভীষণ ভালো থাকুন। আনন্দে থাকুন। আমার সমস্ত ধনাত্মক দিক দিয়ে আশা করব আপনাদের চলার পথ আনন্দ মুখরিত হোক। আজ আসি?

টাটা!

ফটোগ্রাফি ডিভাইস লোকেশন
১. আলোঘর স্যামসাং F54 গোয়া
২. এক পশলা ঠাঁই স্যামসাং F54 গোয়া
৩. ক্লান্তির চোখেও লেগে মানবজাতি স্যামসাং F54 পুণে, মহারাষ্ট্র
৪. জীবিকা নির্বাহের কোন সন্ধে নেই iPhone 7 রায়গড়, মহারাষ্ট্র
৫. দরজার অনুরণন স্যামসাং M1৪ কোলহাপুর, মহারাষ্ট্র
৬. ফাঁকফোকরের সূর্য iPhone 7 কারনালা, মহারাষ্ট্র


~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ বর্তমানে ভারতবর্ষের পুনে তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


Sort:  
 2 months ago 

ছবিগুলো বেশ শৈল্পিক কায়দায় তোলা হয়েছে, বিশেষ করে যে দিকটা দৃষ্টিনন্দন ও অর্থবহ তা হলো - সবাইই তো কমবেশি ছবি তোলে। তবে মূল যে বিষয়টা উপজীব্য থাকে ছবির ভেতরে, একটা জীবনদর্শন বা ভাবব্যন্জনা তাইই ছবিয়ালকে আলাদা করে, বিশেষায়িত করে।

অবাক লেগেছে দেখে যে আপনি বেশ অনেকগুলো আলাদা জায়গা থেকে ঘুরে ঘুরে ছবি সংগ্রহ করেছেন। এগুলো সত্যিই পরিশ্রমের এবং ভ্রমনপিয়াসুদের জন্য একটি দারুন আকর্ষনীয় ধাঁচের বিষয়।

আরো এরকম ছবির ঝাঁপি দেখতে পারবো আশা করি।

 2 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া, আমি খুবই বেড়াতে ভালোবাসি। দেশ বিদেশ অলিগলি। মানুষ দেখতে তাদের জীবন দেখতে আমার ভালো লাগে৷

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো ভালো মন্তব্য করলেন।

 2 months ago 

প্রথমেই তো টাইটেল পড়ে ভ্যাবাচিকা খেয়েগিয়েছিলাম। তারপর তো পোস্টের ভিতরে ঢুকে মাথাই ঘুরে গেল। ওমা এ তো দেখছি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। কেমন করে এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেন দিদি। একটু তো শিখতে হয়। এক কথায় অসাধারণ।

 2 months ago 

শখে করি৷ তবে খুব ছবি তোলার বাতিক নেই। যেটুকু তুলি সেটা ভেবেচিন্তে তুলি।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর করে বললেন৷ শুভেচ্ছা জানবেন৷

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 60343.62
ETH 2490.29
USDT 1.00
SBD 2.53