প্রবাস জীবন। ✈️
শুভ রাত্রি,
আসসালামু আলাইকুম,
আমি @nazmul01 ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ থেকে।
হ্যালো "আমার বাংলা ব্লগ" পরিবার। কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে হাজির হলাম জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে। আশাকরি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করি।
প্রবাস জীবন সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? যারা প্রবাসী,দেশের বাহিরে থাকে দেশের মানুষের জন্য টাকা পাঠায় এবং নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে পরিবার-পরিজনের সুখের চিন্তা সব সময় করে তারাই মূলত প্রবাসী। প্রবাস জীবন অনেক কষ্টের জীবন, তারা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারে না। কেননা তারা প্রবাসী। তারা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে দেশের মানুষদের সুখে শান্তিতে এবং ভালো রাখার চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু আমরা কি একবারও মনে করি তাদের কষ্টের কথা। হয়তোবা দূর থেকে তাদের কষ্ট আমরা দেখতে পারিনা। কিন্তু প্রবাসী ভাইয়েরা ও বোনেরা তাদের সন্তান এবং মা-বাবার জন্য বছরের পর বছর একাকিত্বের মাঝে জীবনকেও উৎসর্গ করে দেয়। আমরা শুধু মাস গেলে টাকার চিন্তা করি কখন টাকা পাঠাবে। কিছু মানুষ তো এমনও রয়েছে যারা কিনা শুধু টাকাকে ভালোবাসে। যে ব্যক্তি এত কষ্ট করে আমাদেরকে সুখে দেখেছেন তার প্রতি আমাদের কতটুকুইবা ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা রয়েছে।
আমাদের সমাজে এমন মানুষ রয়েছে যারা কিনা প্রতি মাসে টাকা ছাড়া আর কিছুই বুঝতে চায় না। কোন সমস্যার কারণে তার স্বামী যদি এক মাস টাকা না পাঠায় তাহলেই সৃষ্টি হয় অশান্তি। কিন্তু আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করা উচিত যে ব্যক্তি স্ত্রী সন্তানকে ছেড়ে একাকিত্বের মাঝে কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন তার কথা আমরা একটিবারও মনে করি না। শুধু ভিডিও কলের মাধ্যমে সমস্ত ভালোবাসা প্রকাশ করা ও মানসিক শান্তি দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রবাসী ভাইটি অসুস্থ হলে সেখানে পাশে থেকে সেবা করার মতো কেহ থাকে না। হয়তো কিছু মেডিসিন ধারা শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু মানসিক সুস্থতার প্রয়োজন সব সময়। যাইহোক আমরা প্রবাসী ভাই ও বোনদের শারীরিক পরিশ্রম এবং ধৈর্যের কারণে আমরা হয়তো সুখে শান্তিতে আছি।
আমাদের বর্তমান অবস্থা খুবই হতাশাজনক। কিছুদিন আগে আমাদের এলাকার পাশে একটি ঘটনা ঘটেছে, এই ঘটনাটি কেন্দ্র করে আমার আজকের এই পোস্ট করা। এই ঘটনাটি শুনে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। মানুষ কতটা নিষ্ঠুর এবং পাষাণ হতে পারে আমার আগে জানা ছিল না। এ ঘটনাটি শুনে নিজের কাছে খুব খারাপ লেগেছে। একজন ভদ্রলোক প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে করে বিয়ের এক বছর পর স্ত্রীকে রেখে বিদেশে চলে যায়। তারপর থেকে ওই প্রবাসী ভাই প্রতি মাসে তার স্ত্রীর কাছে টাকা পাঠায়। প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছু ওই প্রবাসী ব্যক্তি তার স্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন। তার স্ত্রীকে কখনো অভাব বুঝতে দেয়নি। যখন যা চায় সবকিছু সঠিক সময় পাঠিয়ে দেয়। এইভাবে চলতে থাকে পাঁচটি বছর।
প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী এই সুযোগে সব কিছু নিজের নামে করে নিয়েছে। এবং টাকা পয়সা সবকিছু নিজের একাউন্টে জমা করতো। তার স্বামীকে মিথ্যা আশ্বাস দিত। হঠাৎ করে ওই প্রবাসী ব্যক্তির বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রীর কাছে টাকা চায়। কিন্তু তার স্ত্রী একটি টাকাও দিতে রাজি হলো না। অবশেষে টাকার অভাবে চিকিৎসা ছাড়া তার বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিন্তু তার স্ত্রী এ বিষয়টি গোপন রাখেন। তার বাবার মৃত্যুর খবর তার স্বামীকে জানাই নি। তার স্ত্রী ভেবেছিল আমি যদি এই খবরটি আমার স্বামীকে জানাই তাহলে সে বিদেশ থেকে চলে আসবে। এবং আমার টাকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর থেকে মা বাবার সাথে কথা বলতে চাইলে তার স্ত্রী কথা বলতে দিত না। নানা অজুহাত দেখিয়ে পাস কাটিয়ে যেত। তারপর থেকে তার স্ত্রীও তার ফোন ধরে না, বিষয়টি প্রবাসী ভাইয়ের কাছে সন্দেহজনক মনে হলো। ভদ্রলোক অবশেষে দেশে ফিরে আসেন, এসে দেখে তার স্ত্রী অন্য একটি ছেলের সঙ্গে টাকা পয়সা সব কিছু নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। ওই ব্যক্তির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। সব চাইতে কষ্টের বিষয় হলো তার বাবার মৃত্যুর সংবাদটি জানতে পারল না। যার জন্য সবকিছু করল সে তাকে ধোকা দিয়েছে।
আমি বলতে চাই না সব মানুষ এক। কিছু কিছু মানুষ লোভী ও নিচু মন মানসিকতার আছে বলেই সমাজে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। যাইহোক আমি প্রবাস জীবনের বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি । আমি নিজের মতো করে লেখার চেষ্টা করেছি। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন। আশাকরি আমার জেনারেল রাইটিং আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। কেমন লেগেছে তা অবশ্যই জানাবেন? আপনাদের সবার মতামত আশা করছি। আজকের মত এখানে বিদায় নিলাম। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ💞।
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং। |
---|---|
ডিভাইস | শাওমি রেডমি ৯। |
বিষয় | প্রবাস জীবন। |
লোকেশন | ময়মনসিংহ সদর, বাংলাদেশ। |
রাইটার | @nazmul01। |
আমি মোঃ নাজমুল হাসান, আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং ঢাকা বিভাগের ময়মনসিংহ জেলায় থাকি। আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি বাঙালি। বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে আমি গর্ব বোধ করি। আমি একজন শিক্ষার্থী এবং অনার্সে অধ্যয়নরত। আমি বর্তমানে বাংলাদেশে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করছি। ফটোগ্রাফি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। তাছাড়া কবিতা,আর্ট করা,ঘুরতে যাওয়া এবং রান্না করা আমার খুবই প্রিয়। প্রিয়জনদের সাথে ঘুরতে যাওয়া এবং বাহিরে খাবার খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। নতুন রেসিপি শেখার আমার খুব আগ্রহ রয়েছে। আমি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে স্টিমিটে জয়েন হয়েছি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটি একটি পরিবারের মতো। আর এই পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আমি অনেক খুশি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য | এখানে ক্লিক করেন |
---|
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাইজান। যারা প্রবাসী রয়েছে তারা খেটেও মরে আবার এদিকে কথা শুনে মারেন। কোন সমস্যার কারণে যদি টাকা পাঠাতে না পারে তাহলে পরিবার তার সাথে খারাপ আচরণ করে কিন্তু বুঝতে চায় না সেটাও একজন মানুষ তারও সমস্যা থাকতে পারে।
আপনার মন্তব্য পেয়ে খুশি হলাম ভাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
প্রবাস জীবন নিয়ে বাস্তবতা সম্পুর্ন একটি পোস্ট তুলে ধরেছেন। এধরনের ঘটনা গুলো এখন কয়েক দিন পর শোনা যাচ্ছে। তবে তার বাবার মৃত্যুর খবর না জানিয়ে অনেক বড় অপরাধ করেছে। এজন্য অনেক বেশি খারাপ লাগলো। এধরনের মেয়েদের আসলে কপালে সুখ নেই। দেখবেন হয়তো কিছুদিন পর আবার ঐ ছেলেকে রেখে চলে গেছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য।
আমার কাছেও খারাপ লেগেছিল ঘটনাটি শুনে। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আপনার মতামত পেয়ে খুশি হলাম ভাই।
হ্যাঁ সবার মন মানসিকতা এক রকম হয় না তবে আপনি যে ঘটনাটি শেয়ার করেছেন এরকম ঘটনা প্রায়ই লক্ষ করা যায়। এজন্যই তো মেয়েদেরকে সবাই বিশ্বাস করতে চায় না।
পাশে থেকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই, আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ভাই মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা মানুষ পশু বানিয়ে দেয়। বিয়ের এক বছর পরে তার উচিত হয়নি বউকে রেখে ১০ বছর বিদেস করা। এরা বিদেশ যায় শুধু নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য।দেশে পরিবারের সাথে ডাল ভাত খেয়ে দিন জাপন করলে তো সমস্যা নাই।আপনার পোস্ট পরে খুবই খারাপ লাগলো।
বিদেস
বিদেশ হবে ভাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
https://twitter.com/nazmulhasanbd01/status/1791909303080906911?t=LDbrTNCIpHpbYRhUfL0q0A&s=19
এখনকার সময়ে এই ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। আসলে কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে নেই। তবে এধরনের ঘটনা থেকে শেখার ব্যাপার রয়েছে।
প্রবাসীদের সত্যিই অনেক কষ্টের জীবন। যাইহোক লিখাটি বেশ গুছিয়ে উপস্থাপন করেছো, তবে বানানের দিকে যত্নশীল হতে হবে।
আমাদের এই ধরনের ঘটনা থেকে কিছু শিক্ষা নেওয়া উচিত। আপনার মন্তব্য পেয়ে খুশি হলাম ভাই। আমি বানানের দিকে যত্নবান হওয়ার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে পাশে থাকার জন্য।
আমরা যারা প্রবাসে থেকে টাকা উপার্জন করি, শুধু তারাই জানি প্রবাশে টাকা উপার্জন করা কতটা কঠিন। আপনি আজকে আপনার পাশের এলাকার একজন প্রবাসীর করুন ইতিহাস আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।প্রবাসীর ইতিহাস গুলো পড়ে আমার কাছে অনেক খারাপ লাগলো। আমরা যারা মনে করি প্রবাসীরা খুবই সহজে টাকা ইনকাম করে, তারা কখনোই প্রবাসীর দুঃখ কষ্ট সম্পর্কে অবগত নই।
আমার পোস্ট ভিজিট করে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।
আসলেই প্রবাসীদের জীবনে অনেক বেশি কষ্ট। তারা নিজেদের কথা চিন্তা না করে শুধুমাত্র পরিবারের কথা চিন্তা করে পরিশ্রম করে যায়। তবে সেই পরিবার যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে আর জীবনে কি থাকতে পারে। আমি যে লোকটার কথা বললেন তার কথা শুনে খুবই খারাপ লাগলো। এতগুলো বছর ধরে পরিশ্রম করে টাকা পাঠালো, অথচ তার বাবার মৃত্যুর কথাটা পর্যন্ত তার স্ত্রী জানালো না। প্রবাস থেকে ফিরে এসে কিছুই তো আর ফিরে পেল না। শুধুমাত্র একা একজন মানুষ ছাড়া আর কিছুই রইল না। বিষয়টা সত্যিই দুঃখজনক।
এই ঘটনা জানতে পেরে আমিও অনেক কষ্ট পেয়েছি। আপনার মতামত পেয়ে খুশি হলাম আপু।
আসলে প্রবাসী যারা তাদেরকে আমাদের সব সময় শ্রদ্ধা এবং সম্মান এর চোখে দেখা উচিত । তাদের কষ্টের কথা ভেবে সে বিষয়টি অনুভব করা উচিত। তারা অনেক কষ্টে টাকা উপার্জন করে যার মূল্য হয়তো অনেকেই দেয় না । প্রবাসী ভাইদের অনেক সময় পরিশ্রম করে টাকা উপার্জনের পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার হতে হয় । যেগুলো ইউটিউবে ফেসবুকে দেখতে পাই । সেজন্য আমাদের উচিত শ্রদ্ধা এবং সম্মান করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ছিল।
আমার পোস্ট আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তাতেই আমি খুব খুশি। আপনার মতামত পেয়ে খুশি হলাম ভাই। আশাকরি সব সময় পাশে থাকবেন।