পরগাছার মতো পরাধীন জীবন মানে এক নির্মম পরিহাস || ১০% প্রিয় লাজুক -খ্যাকের জন্য 🇧🇩
আজ-১৯,কার্তিক |১৪২৮ বঙ্গাব্দ |২৭শে রবিউল আউয়াল| ১৪৪৩ হিজরি|৪ নভেম্বর ২০২১ইং|বৃহস্পতিবার |হেমন্তকাল
আসসালামুআলাইকুম, আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল সদস্যদের আমার পক্ষ থেকে প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া এবং আশির্বাদে ভালোই আছি।
পরগাছাঃ
পরগাছা মানে একধরনের উদ্ভিদের নাম। যে উদ্ভিদ মূলত অন্য একটি উদ্ভিদের দেহে জন্মগ্রহণ করে থাকে। এই পরগাছার একটি নিজস্ব ধর্ম আছে। এটি যদিও অন্য একটি উদ্ভিদের ওপর বসবাস করে তবুও এটি কোনো রাক্ষস জীব নয়।আমাদের মাঝে এই বিষয়টা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। পরগাছা হয়তো অন্য উদ্ভিদের দেহে অবস্থান করে। কিন্তু অন্য উদ্ভিদকে ধ্বংস করে না বা তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে খেয়ে ফেলে না।তবে, অন্য উদ্ভিদের ওপর এটি জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। বৈজ্ঞানিক ভাবে যেটা জানা যায়,মূলত প্রকৃতিতে বিচরণকৃত কোনো পশুপাখির মলত্যাগ কোনো উদ্ভিদ অথবা কখনো কখনো দেখা যায় কোনো পুরনো স্থাপনার উপরও পরগাছা জন্ম নিয়ে থাকে।
তবে উদ্ভিদের ক্ষেত্রে, পরগাছা তার বাসকৃত উদ্ভিদের কোনো ক্ষতি করে না।তাদের দেহ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যরস শোষণ করে থাকে। পরগাছায় অপুষ্টি থাকায় এটি সম্পূর্ণভাবে বিকাশলাভ করতে পারে না।এমনকি অনেকাংশেই পরগাছা জীবকে ধ্বংস করা হয়।যেন অকালেই জীবন-মরণের খেলা।
পরগাছা এবং পরাধীন জীবনের মেলবন্ধন ও মর্মান্তিক নির্মমতাঃ
১ নম্বর সূত্রঃ
পরাধীন জীবন হলো খাঁচায় বন্দী পাখির জীবনের মতো।খাঁচায় বন্দী পাখির খাদ্যের কোনো কমতি নেই। কিন্তু স্বাধীনতার রয়েছে প্রচণ্ড অভাব। কারণ, একটি পাখির জন্য চাই উন্মুক্ত পরিবেশ। খোলা আকাশের নিচে উড়ে বেড়ানো যার স্বভাব।প্রকৃতিতে সে বিচরণ করবে কোনো বাধা ছাড়াই। মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াবে গাছের এ ডাল থেকে অন্য ডালে।কিন্তু উড়ন্ত পাখি যদি পিঞ্জরে আবদ্ধ থাকে তাহলে সেটা কেমন হয়?পাখির রাঙা পায়ে যদি থাকে শিকলবেঁড়ি তাহলে তার জীবীকা কোন দিকে ধাবিত হয়?অথচ পাখি তার মনিবের কাছ থেকে কম ভালোবাসা পায় না এবং খাবারেরও কোনো কমতি থাকে না।কিন্তু এতে পাখির পক্ষে কতটুকু লাভ হয়?এটা পরাধীন জীবনের নির্মমতার একটি দিক।
২নম্বর সূত্রঃ
বাস্তব জীবনে অনেকেই প্রেম ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়।এটি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার।কারণ, প্রত্যেকটি মানুষেরই একেকটি হৃদয় থাকে। আর হৃদয় থাকলেই ভালোবাসা সেখানে বিরাজমান হয় সৃষ্টিগত নিয়মেই। প্রেম বা ভালোবাসা ছাড়া জগৎ ভিত্তিহীন।এজন্যই ভিত্তিহীন যে ভালোবাসা ছাড়া জগৎের সবকিছুই অচল-অসার।এই ভালোবাসাটা সম্পূর্ণভাবে স্রষ্টার পক্ষ থেকে দানকৃত একটি বিষয়। কেননা, স্রষ্টা নিজেও একজন প্রেমময় মালিক। তাঁর কাছ থেকে ভালোবাসা যদি না থাকতো তাহলে এ পৃথিবী শুধু নয় কোনোকিছুরই সৃষ্টি হতো না।তাঁর পক্ষ থেকে ভালোবাসা নিয়ে এ বিশ্বভূবন পরিচালিত হয়।উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, পৃথিবীতে অগণিত জীব সৃষ্টি করেছেন তিনি। এর মধ্যে কোনো সৃষ্টিই তার রিযিক বা প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হয় না। কেন হয় না? হয়না এজন্যই যে,তার মনিবের কাছে রয়েছে অগাধ ভালোবাসা।
আর সেই ভালোবাসা থেকে কোনো সৃষ্টিই বঞ্চিত হবে না।
ঠিক তেমনি তিনি মানুষকেও সৃষ্টি করেছেন প্রত্যেকটি মানুষের ভিতরে একটি হৃদয় বা অন্তর দিয়ে। আর সেই হৃদয়ে রয়েছে মানুষের প্রতি মানুষের অগাধ ভালোবাসা ও প্রেম।ভালোবাসা ব্যাক্তি বা অবস্থান বা পরিবেশ বিশেষে অনেক প্রকারের হয়ে থাকে।আজকের আলোচনার সাথে সংস্পৃষ্টতা রাখতে আমি ছেলে এবং মেয়ে মানুষ উভয়ের সংমিলিত হওয়ার জন্য যে ভালোবাসা রয়েছে সেই বিষয়ে কথা বলবো। প্রত্যেক ব্যাক্তিই তাঁর প্রিয়জনকে নিজের জীবনের চেয়েও অধিক পরিমাণে ভালোবাসে।আস্তে আস্তে সেই ভালোবাসার সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়ে এতদূর পর্যন্ত গড়িয়ে যায় যে তাঁরা পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভর করতে শুরু করে। ঠিক সেই পরগাছার মতো পরাধীনতাকে প্রাধান্য দিয়ে। কিন্তু অনেক সময় মানুষ পরিবেশ-পরিস্থিতি বা নিজের হৃদয়ে অনিষ্টক্ষেপনশীলতাকে লুকায়িত করে ভালোবাসার মানুষের সাথে প্রতারণা করে। এটি ভালোবাসা নয় ছলনা। এই ছলনার কাছে ধ্বংস হয়ে যায় হাজারো জীবন। যেখানে একজন প্রেমিক তাঁর প্রেমিকার ওপর নির্ভর করে(উভয়ের ক্ষেত্রে) জীবনযাপন করতে চায় সেখানে প্রকৃত ব্যাক্তির জীবনের বাস্তব অবস্থাটা যে কতদূর ধ্বংসের মুখে পতিত হয় তা কেবল ভুক্তভোগীই বুঝতে পারে।আপনার ওপর যে ভরসা করে বাঁচতে চায় তাঁর সাথে এমন অবহেলিত আচরণ কোন ধরনের মানবতার পরিচয় দেয় নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন থেকে গেলো।আসলে আমাদের সকলেরই এমন আচরণ পরিহার করা দরকার অন্তত ভালোবাসার পবিত্রতা রক্ষার্থে।
কারণ, অবহেলিত প্রিয়জনও আপনার ওপর নির্ভর করে চলে ঠিক সেই পরগাছা জীবের মতোই।
এজন্যই তো বলা হয়েছে যে,পরাধীন জীবন মানেই জীবনের নির্মম পরিহাস।
আমি সংক্ষেপে আজকের আলোচনার বিষয়টুকু এখানেই সমাপ্তি করলাম। আশাকরি, সকলের কাছে ভালো লাগবে।
পরাধীনতার শিখল পড়ে আসলে বেশিদূর যাওয়া যায়না। একটা সময় আসে যখন নিজের ভিতরে উপলব্ধি হয় পরাধী। অন্যকে আঁকড়ে বেঁচে থাকার চেয়ে নিজের যোগ্যতায় এক বেলা খেয়ে বেঁচে থাকাতে স্বার্থকতা আছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া। আপনার জন্য সব সময় দোয়া ও আশির্বাদ থাকবে।
আমিও আপনার সাথে একমত একদম। জীবন পরাধীন মানেই সেই জীবনে নির্মমতার শেষ নেই। এই নির্মমতার শেষ কোথায় তা জানা নেই সেই পরাধীন মানুষগুলোর। পরাধীনতায় যতই ভালোবাসা, যত্ন থাকুক। যতই অভাব না থাকুক কিন্তু দিনশেষে একটি অভাবের কারণে সবটাই বিতৃষ্ণা লাগে, সে অভাবটা হচ্ছে স্বাধীনতার। কিন্তু এসবের পরেও যে পরাধীন, যে আমাদের অধীনে আছে তাকে আরো কষ্ট দেওয়া কখনোই উচিত নয়।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু। একটি গুরুত্বপূর্ণ কমেন্ট করার জন্য। আপনার কমেন্টটিও আমাকে একটি তৃষ্ণা জুগিয়েছে। লেখকের মনে তো সেটাই তৃষ্ণা যে,পাঠকরা যেন যথাযথ মন্তব্য করে লেখনীর বিষয় নিয়ে। আপনি সেটা করেছেন। এজন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।