✳️দিনশেষে সব পাখি ঘরে ফিরে কিন্তু সব জেলেরা ঘরে ফিরে না || ১০% লাজুক -খ্যাকের জন্য✳️

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

আসসালামুআলাইকুম


আজ- ৪’রা কার্তিক | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | ২০ই অক্টোবর | ২০২১ খ্রিস্টাব্দ |১২ ই রবিউল আউয়াল |১৪৪৩হিজরি | বুধবার |শরৎকাল



আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই ও বোনদের প্রতি আমার পক্ষ থেকে হৃদয় নিঙড়ানো ভালোবাসা ও প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনারা সকলেই কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।



আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আজকে আমি আপনাদের সামনে জেলেদের করুন জীবন কাহিনী এই গল্পটি শেয়ার করলাম।গল্পটি পড়লে আমি অবশ্যই উপকৃত হব।



জেলেদের করুন জীবন কাহিনীঃ



জেলেদের জীবনটা পৃথিবীর সংগ্রামী জীবনগুলোর মধ্যে একটি। জেলেদের কষ্টময় জীবনী সম্পর্কে মূল আলোচনা একটু পরে করছি। তার আগে আনুষাঙ্গিক কিছু কথা না বললেই নয়। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। শুধু নদীমাতৃক নয় বলা যায় নদীই এদেশের প্রাণ।এদেশে বেশ কয়েকটি বড় বড় নদী আছে। নদীগুলো হচ্ছেঃপদ্মা,মেঘনা,বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী,যমুনা ইত্যাদি। এছাড়াও সারাদেশে এগুলোর অসংখ্য শাখা-প্রশাখা বহমান আছে। তাছাড়াও কিছু ছোট নদীও আছে। নদীগুলোর বুকে জোয়ার-ভাঁটার খেলা। অপরুপ বৈচিত্র্যময়। একেকটি বড় নদীগুলোর তীরে দাঁড়িয়ে চোখ দুটি মেলে দিলে ধরা পড়ে কতগুলো মোহনীয় দৃশ্য। সত্যিই স্রষ্টার অপার মহিমায় মহিমান্বিত। নদীর ধারের সাদা সাদা কাশবন,নদীর দুই ধারের সবুজ ক্ষেত,সকাল বেলায় নদীর পানিতে বুনোহাঁসের খেলা, সাদা বকের পাল,মাছরাঙা পাখির শিকার ধরার উদ্দেশ্যে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা, নদীর স্রোতধারা,নদীর পাড়ের জনজীবন সবমিলিয়ে অপূর্ব। এছাড়াও নদীর অনেকগুলো গুণাগুণ রয়েছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্যগত দিক থেকেও নদীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে, এই নদী তার পাড়ের জনজীবনের জন্য মাঝে মাঝে কাল হয়েও দাড়ায়।
কারণ, খরস্রোতা নদী যেন আর বাধা মানে না।তার স্রোতের প্রখর ধারা অনেক সময় পাড়ের ছোট ছোট বস্তি বা গ্রামগুলিকে ভেঙে চূর্ন-বিচূর্ণ করে দেয়। এজন্যই তো কাব্যকথায় প্রচলিত যে,'নদীর এ পার ভাঙে ও পার গড়ে এই তো নদীর খেলা। 'যাইহোক, নদী যখন খরস্রোতা হয়ে ওঠে তখন অগণিত মানুষ গৃহহারা হয়ে পড়ে। হাজারো মানুষ বাস্তুহারা হয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। অনেক কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করে তাঁরা। তারপরও অব্যাহত বেচে থাকার প্রচেষ্টা।
প্রকৃগত দিক থেকে এটাই স্বাভাবিক এবং বাস্তবতা। প্রত্যেক জিনিসেরই ভালো এবং মন্দ দুই দিকেই বিদ্যমান।

জেলে নামটি পেশাগত একটি ভূষণ। জেলে বলতে বোঝায়,যাঁরা মাছ শিকার করে জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। আসলে জেলে জীবন প্রকৃত অর্থে একটি সংগ্রামী জীবন। কারণ, হাজারো প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে জীবন পাড়ি দিতে হয় জেলেদেরকে।
সাধারণত নদীর পাড়ে বসবাস করে থাকে জেলেরা। নদী অঞ্চলগুলোতে গেলেই তার প্রমান মিলে। সেখানে গেলে দেখা যায়, নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট জেলে পল্লী। জেলেদের জীবন যখন নদীনির্ভর তাই নদীর পাড়েই এসব পল্লী গড়ে ওঠে। নদীতে বর্ষাকাল এলে বন্যা ওঠে সেজন্য সামান্য কিছু খড় অথবা টিনের ছাউনি এবং কিছু বাঁশের খুঁটি দিয়ে নির্মিত তাদের ঘরবাড়ি। বাড়িঘরের ভিতরে ধনীদের মতো হয়তো কোনো বিলাসবহুল আসবাবপত্র নেই। তার বদলে হয়তো একগুচ্ছ জাল রাখা আছে। আছে জীবন নির্বাহের জন্য সামান্য কিছু জিনিসপত্র। তবুও তাদের কিন্তু পারিবারিক চাহিদাগুলো মেটাবার জন্যই সেখানে তারা বসবাস করে।সবসময় নদীত মাছবহুল থাকে না। বছরের কোনো কোনো সময় মাছবিহীন অথবা সংকটয় অবস্থার সৃষ্টি হয়।সেই সময়গুলোতে যখন মাছ ধরার মাধ্যমে দিন চলার মতোও সাধ্য জুটে না তখন তাঁরা অনেক সময় নৌকার মাধ্যমে মানুষজন পারাপার করে জীবন চালায়।সেই নৌকা তৈরি করাও নির্ভর করে নিকটবর্তী নদীর আকার-আকৃতি, নদীর পানিপ্রবাহ,গাছের প্রাপ্যতাসহ ইত্যাদি নানা বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে। তাছাড়াও সেসময় তাঁরা পূর্বের সংরক্ষিত মাছ শুকিয়ে তৈরিকৃত শুটকি বিক্রিও করে থাকে। আবার জেলেরা কিন্তু যেসময় নদীতে মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় সেই সময়গুলো তাদের অনেকটা ভালোভাবে পার হয়।তবে পুরোপুরি নয়।তখন জেলেরা একটা নৌকায় করে সাথে কতগুলো জাল নিয়ে শুরু করে জীবনের পথচলা। মাছ ধরার উদ্দেশ্যে দীর্ঘপথে ধাবমান হয়।বলা যায়, তাঁরা পরবাসী জীবন যাপন করে সেসময়টাতে।নদী থেকে নদী এমনকি সমুদ্র পর্যন্ত তাঁরা পাড়ি দেয়। এসময়টায় তাঁদের বাড়িতে ফেরা অনেকটাই অনিশ্চিত। কারণ, মাছ তো ধরতেই হবে। নাহলে জীবন চলবে কিভাবে? জেলেবাড়ির গৃহীণীও যেন বেদনাবিধুর সময় পার করে তখন। কারণ, পুরুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতা ছাড়া একটি গৃহ বা সংসার পরিচালনা করা একজন নারীর পক্ষে সত্যিই অনেকটা কষ্টের ব্যাপার। এভাবে অগোছালোভাবেই তাঁদেরকে জীবনযাপন করতে হয়।জীবনের তাড়না কেবল তাঁদেরকে দেখলেই বোঝা যায়। এদিকে, যেসব জেলেরা ঘরে ফিরে আসার চিন্তা না করে জীবনের তাগিদে শতকষ্টের পর মাছ বাজারজাত করার চিন্তা করে তখন তো আড়তদারদের ভেজাল আছেই।কেননা,আড়তদাররা তখন মাছের সঠিক মূল্য দিতে চায় না। এটা জেলেদের পক্ষে একটা কঠোর জুলুমের স্টিমরোলার। অতএব, বোঝাই যাচ্ছে যে, কতটা মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় জেলেদের। না পারছে দিনশেষে ঘরে ফিরতে,না পাচ্ছে পরিশ্রমের সঠিক মূল্য।যেহেতু জেলেরা আমাদের জাতিগত পরিচয় বা ঐতিহ্য বহন করে তাই জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলেরই কিছু দায়িত্ব পালন করা দরকার। জেলেদের জীবনীর কষ্টগুলোকে উপলব্ধি করার জন্যই উপরে বলা হয়েছে যে,দিনশেষে সব পাখি ঘরে ফিরলেও সব জেলেদের ঘরে ফিরা আর হয়ে ওঠে না।

এই করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে আমরা অবশ্যই স্বাস্থবিধি মেনে বাহিরে চলাফেরা করব। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের প্রত্যেক ভাই ও বোনদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি। সকলেই ভালো থাকবেন।

Sort:  
 3 years ago 

সত্যি ভাই খুব ইমোশনাল একটা পোস্ট হয়েছে। তারা সত্যি কষ্ট করে। আমরা আসলে মানুষ এর মূল্যায়ন গুলি ভুলে গেছি বললেই চলে এটাই আফসোস লাগে। আপনার সব পোস্ট কোয়ালিটি পোস্ট হয় ভাই।

 3 years ago 

আসলে জেলেদের প্রশংসা করে শেষ করা যায় না। জেলেরা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। জেলেরা আমাদের আমিষের চাহিদা পূরণ করে। জেলেদের জীবন কাহিনী আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

🙏🙏🙏🙏🙏🥺🥺🥺🥺

 3 years ago 

👍👍👍👍👍💕❤️

 3 years ago 

ভালোবাসা অবিরাম অন্তহীন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাকে। ভালো একটি কমেন্ট করেছেন আপনি।

 3 years ago 

আমার আম্মুর কাছে শুনেছি অনেক জেলেরা নাকি আর বাড়িতে ফিরে না। কারণ নৌকা ডুবে যায় অথবা অনেক কিছু হয়ে যায়। আসলে তাদের জীবনটা যে কতটা কষ্টের তা আমরা এভাবে ঘরে বসে বুঝতে পারবো না। আপনার পোস্টটা পড়ে সত্যিই খারাপ লাগল। আসলেই তাদের জীবনটা কতটা কষ্টকর, তারা যে আমাদের জন্য কতটা কষ্ট করে তা আসলে আমরা টের পাই না।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে আপু। খুব সুন্দর একটি কমেন্ট করেছেন আপনি।

 3 years ago 

খুবই সুন্দর একটি বেদনাদায়ক পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাই। খুবই কষ্ট লাগলো আপনার পোষ্ট পরে। আসলে জেলেরা এমনই তাদের আয় খুবই কম তারা সারা দিন মাছ ধরে যদি মাছ পায় তাহলে সংসার চলে আর যদি না পায় তাহলে অর্ধাহারে বা অনাহারে জীবন পার করে। সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 3 years ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 59165.12
ETH 2617.93
USDT 1.00
SBD 2.43