পিরিতের ভীষণ জ্বালা, ফলটা বড়োই তিতা |১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের জন্য 🇧🇩
আজ,১৪ অগ্রহায়ণ |১৪২৮, বঙ্গাব্দ | ২৯,ই নভেম্বর|২০২১,খ্রিস্টাব্দ | ২২ ই রবিউস সানি | ১৪৪৩, হিজরি |সোমবার | হেমন্তকাল
আসসালামুআলাইকুম/নমস্কার, আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল সদস্যকে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।আপনারা সকলেই কেমন আছেন? আশা করি, সকলেই ভালো আছেন।আমিও আপনাদের দোয়া এবং আশির্বাদে ভালোই আছি।
মানুষের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রেম বা ভালোবাসা। শুধু মানুষ নয়,পৃথিবীতে হাজারো জীব রয়েছে। প্রাণীকূলের কথা বলছি উদাহরণের স্বরুপ তুলে ধরার স্বার্থে।লক্ষ্য করা যায়, অবুঝ হিসেবে যে প্রাণীকূলকে আখ্যা দেওয়া হয়েছে তারাও তাদের মধ্যে স্নেহ এবং ভালোবাসাকে লালন করে। যেমনঃবাচ্চাগুলির প্রতি প্রত্যেকটি মায়ের মনে থাকে উদার ভালোবাসা।মা প্রাণীগুলো হাজারো ঝুঁকির মধ্যে পড়লেও তাদের বাচ্চাগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে শেষ অবধি চেষ্টা করে যায়।এটা গেল প্রাণীকূলের মধ্য থেকে মা এবং সন্তানের প্রতি আত্মার বন্ধনের একটি সাদৃশ্য।আরেকটি সাদৃশ্য হলো,জোড়াটান।প্রত্যেকটি প্রাণীই একেকটি সঙ্গী নিয়ে সারাজীবন ভর করে চলে।
কারণ, একা কখনোই বেঁচে থাকা যায় না। বাঁচতে হলে সঙ্গী করে নিতে হয় একজনকে। আর এটাই নিয়ম। প্রাণীকূল থেকে জোড়াটানের একটি উদাহরণ দিতে গেলে আমি আমার বাস্তব একটি পরীক্ষার কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরার ইচ্ছে পোষণ করছি। আর তা হলো, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ একটি খাঁচায় বন্দী করে দুটি পাখি পুষেছিলাম। পাখিগুলোর জাতিগত পরিচয় ছিলো বাজারিকা পাখি। ছোটবেলা থেকেই আমি বেশ সৌখিন ছিলাম। আর পশুপাখি পোষা ছিলো আমার অন্যতম প্রধান একটি শখ।যদিও জীবীকার তাগিদে আমার শখগুলি এখন খেয়াল হারানো একটি বিষয়ের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাখি দুটোর কথায় ফিরে আসি।পাখিগুলো আমার খুবই প্রিয় একটি জিনিস ছিলো। মা প্রতিদিন পাখিগুলোর যত্ন নিতেন।নিয়মিত খাবার দিতেন। আর পাখি দুটোও দুজনের মধ্যে একটি ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলো। কারণ, খাওয়া-দাওয়ার সময়টা ব্যাতীত বাকি সময়টা দু'জনে মিলে খেলা করতো। একেঅপরের প্রতি তাদের ভাবের একটা আদান-প্রদান করতো। তাদের মাঝে কখনো রাগারাগি হলে আমি দেখতাম অভিনব কৌশলে পরস্পরকে মানিয়ে নেওয়ার একটা বিশাল কায়দা। একদিন হঠাৎ করে খাবার দিতে গিয়ে খেয়ালের ত্রুটি হওয়ায় খাঁচার ভেতর থেকে একটি পাখি বাইরে বেরিয়ে গেছিলো। মা তৎক্ষনাৎ বুঝতে পারায় খাঁচার দরজা বন্ধ করে দিলো।পরে, আমাকে বললো বাবা তোমার একটি পাখি বাইরে বেরিয়ে গেছে। শুনেই আমি ভীষণ চিন্তিত হলাম। পরে, দেখি একটি পাখি খাঁচার ভেতরে আছে। আর অপরটি বাড়ির ভিতরের একটি বড় গাছে এ ডাল থেকে অন্য ডালে ঘোরাঘুরি করতেছে। যখনই খাঁচার কাছে মানুষ থাকতেছে না ঠিক সেসময়ই পাখিটা কিছুটা কাছাকাছি অবস্থানে চেচামেচি করতেছে। মা প্রথমে বিষয়টা বুঝতে পারছেন। পরে আমাকে বললেন বাবা দেখ তোর পাখিগুলোর অবাক করা কাণ্ড।অতঃপর আমি বুঝতে পেরে মনের ভেতর কেমন জানি একটা কষ্ট অনুভব করতে পেরেছিলাম। যে জোড়ার একটি বন্ধন সৃষ্টিকর্তা তৈরী করে পাঠিয়েছেন পৃথিবীতে সকলের মাঝেই।
পরে, নিজে থেকেই আমি খাঁচার দুয়ারটা খুলে দিলে এই পাখিটাও বাইরে বেরিয়ে আসছিলো। তখন দুজনেই এক জায়গায় অবস্থান করছিলো।এবং কিছু সময় বাড়ির এদিকে ওদিকে ঘোরাঘুরি করতে করতে তারা কোথায় যেন চলে গেছে। সেদিনের পর থেকে তাদেরকে আর দেখতে পাই নি। দেখা না পাই তাতে আফসোস হয় না। কারণ, আমার কাছে মনে হয় পাখিগুলো একসাথে হতে পেরে মনে হয় ভালোই আছে।তবে, আমি সেখান থেকে একটি মূল্যবান শিক্ষা অবশ্য অর্জন করতে পেরে নিজের মধ্যে একটা আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাই।
যাইহোক, আজকের মূল আলোচনার দিকে ধাবিত হচ্ছি।
আজকের গল্পটির শিরোনামে বলা হয়েছে, পিরিতি ভীষণ জ্বালা, পিরিতের ফলটা বড়োই তিতা।
এতক্ষণ ধরে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে প্রাণীজগৎের মধ্য থেকে কিছু কথা তুলে ধরেছি।
এবার বলবো মানুষের জীবনে ভালোবাসার সম্পর্কের প্রভাব নিয়ে কিছু কথা।
মানুষও এক প্রকার প্রাণী।তবে, মানুষ হলো বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন একটি জীব।পার্থক্যটা শুধু এখানেই।
মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়। যদিও আমরা সামাজিকভাবে এটা বৈধতা দিতে রাজি নই। কিন্তু, তারপরও ভালোবাসা একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নাম।কেউ যখন অন্য কাউকে বিশ্বাস করে ভালোবেসে ফেলে অতঃপর সেই সম্পর্কটাকে পারিবারিকভাবে মেনে না নেয়াটাও কিন্তু একজন মানুষের ইচ্ছের বিরুদ্ধে জুলুম করার শামিল।তবে, ভালোমন্দ বোঝার জন্য পরিবার অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। এক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। এটা তো গেল পারিবারিক বিষয়টা নিয়ে অভিমত।
এখন চলে আসছি ভালোবাসার মানুষগুলোর মাঝে কিছু বিষয়ের ওপর দ্বন্দ্ব এবং ত্রুটি নিয়ে কিছু কথা। একটি সম্পর্ক কেবল তখনই বিনষ্ট হয় যখন উভয়ের মাঝখানে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের একটি প্রলয় সৃষ্টি হয়। এটি মারাত্মক একটি সমস্যা। কেউ কেউ ভালোবাসার নামে একপ্রকার ছলনা করে থাকে মানুষের সাথে।এটি একধরনের জঘন্যতম অপরাধ। আপনি একজনের জীবন নিয়ে খুব সহজে খেলা করে হয়তো সাময়িক একটা তৃপ্তি অথবা আনন্দ উপভোগ করতে পারছেন ঠিকই কিন্তু একবারও কি ভেবে চিন্তে দেখেছেন আপনি একজন মানুষের জীবনে কতটা আমাবস্যার কালো ঘনচ্ছায়া এনে দিলেন?
আপনি তো ঠিকই আনন্দে দিনাতিপাত করছেন। কিন্তু, যে মানুষটার কল্পনা-জল্পনা ঘিরে ছিলো শুধুই আপনার বিচরণ আজ যেন তাঁর অকালে মরণ।আপনার মিথ্যা পিরিতের দূষিত হাওয়ায় আজ উল্টো দিকে ঘুরে চলেছে তাঁর জীবনের চাকা।আপনি হয়তো ঠিকঠাক দু'বেলা দুমুঠো খেতে পারছেন স্বস্তির সাথে। কিন্তু একবারও ওই মানুষটির কথা মনে করলেন না যে আজ,আপনার দেয়া যন্ত্রণায় ভরা ব্যাথিত হৃদয় নিয়ে সবটা সময় অর্ধ-উপাসনে থাকে। পাগল পারা হয়ে নিঃস্ব অবস্থায় আজকে পথের দ্বারে ঘুরছে।তাঁর জন্য তো আপনার মোটেও মায়া লাগে না। অথচ এমন ভয়াবহ পরিণতির পেছনের কারণটা হলো আপনাদের মতো কিছু প্রতারক মানুষদের মিথ্যাচার।তবে মনে রাখবেন,কারোর সাথে অবিচার করে কেউ জীবনে কখনো সফল হতে পারে না। সেজন্যই তো আজকের এই আলোচনাটি তুলে ধরা হয়েছে মানুষ যেন প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পারে।
সবার দীর্ঘায়ু এবং মঙ্গল কামনা করছি। সকলেই সুস্থ থাকুন আর অবশ্যই করোনা ভাইরাস থেকে সচেতনতা অবলম্বন করে চলবেন।
ইতি,
আপনার ঘটনাটি পরে খুব মর্মহতো হলাম ভাই ।খুব সুন্দর করে আপনি বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন বুজিয়েছেন আমাদের মাঝে ।আসোলেই যার কষ্ট সেই বোজে অন্য কেউ বোজেনা ।ধন্যবাদ ও দোয়া রইলো ভাই আপনার জন্য ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া
ভাইয়া আপনার পোস্টে উল্লেখিত ঘটনাটি পড়ে আমি সত্যি অনেক মর্মাহত হয়েছি। ভাইয়া জীবনে অনেক দুঃখ মনে বেদনাময় সময় আসবে আমাদের সকলের উচিত ধৈর্য ধরে সেগুলো মোকাবেলা করা। আর আপনি আপনার পোস্টে বিষয়টি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন এবং বুঝিয়ে লিখেছেন। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন অনেক ভালো।
জি ভাই। ভাল মন্তব্য করেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
একজন মানুষ কখনো একা বসবাস করতে পারে না। আপনার গল্পের মূল ঘটনাটি বাস্তব ভিত্তিক ছিল। এরকম অহরহ এখন আমাদের আশেপাশের ছেলেমেয়েদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। বয়ফ্রেন্ড ভালো কিছু করতে না পারলে গার্লফ্রেন্ড তাকে ছেড়ে অন্য কোথাও বিয়ে করছে। যাইহোক খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ভাল মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই