নেটবিহীন ২৪ ঘন্টা
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে নতুন ব্লগ শুরু করলাম।
দুর্ভিক্ষ আসার আগে , আমার জীবনে যেন দুর্ভিক্ষ চলে এসেছে। নেট বিহীন থাকা কত কষ্টকর তা ২৪ ঘন্টায় উপলব্ধি করেছি। এই উপলব্ধিটা কখনো হয়নি আমার। কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম। আমার শ্বশুর আব্বাকে নিয়ে। সন্ধ্যা সাতটার সময় হঠাৎ করেই মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যায়। whatsapp এ বড় ভাইকে কল করতে গিয়ে দেখি নেট শেষ। শশুর আব্বার মোবাইলে নেট ছিল। অনেকক্ষণ পর্যন্ত তার মোবাইল থেকে হটস্পট নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার মোবাইলে হটস্পট ওপেন হয় না। তার মোবাইল থেকে সোনিয়াকে কল করতে গেলে দেখি সেখানেও নেট শেষ। মোবাইল দিয়ে কল করতে গেলাম দেখি টাকা নেই।
হাসপাতাল থেকে যাব বড় আপুর বাসায়। যাওয়ার পুরো পথেই বৃষ্টি অনেক বেশি। গাড়ি থেকে নেমে মোবাইলের নেট ঢুকাবো তাও সম্ভব হয়নি। আপুর বাসায় গিয়ে পৌঁছালাম। রাতে আর মোবাইলের প্রয়োজন হল না। কারণ মোবাইলে চার্জ ছিল না। খাওয়া দাওয়া করে আমি অনেক তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে আমার দুইটি বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা নিলাম। সাড়ে তিনশ টাকা দিয়ে নেট নিব। দেখলাম ২৫ টাকা কম ছিল। ৩৫০ টাকার নিচের অফার গুলো খুবই কম এমবি পাওয়া যাচ্ছিল। আপু বাসার বাহিরে যাওয়ার সময় বললাম আমার মোবাইলে ৩০ টাকা দেওয়ার জন্য। আপু দোকানে যাচ্ছিল তখন।
এর মধ্যে আমার অবস্থা একদমই খারাপ। সারাক্ষণ মোবাইল হাতে নিয়ে বসে আছি কিন্তু কিছুই করতে পারতেছি না। মনে হচ্ছে যেন অনেক কিছু থেকে দূরে রয়েছি। তখন বাসায় কেউ ছিলনা আমি শুধু একা। কাউকে ফোন দিয়ে কিছু একটা বলবো তাও সম্ভব হচ্ছে না। চিন্তা করলাম গোসল করে ফেলি। তাহলে কিছু সময় ব্যয় হবে। এর মধ্যে আপু টাকা পাঠিয়ে দিবে। গোসল করতে গিয়ে দেখি পানি নাই। মাথা একদমই খারাপ হয়ে গেল। কখন বাসার মালিককে গিয়ে বললাম পানি ছাড়ার জন্য। বলার সঙ্গে সঙ্গে কারেন্ট চলে গেল। অসহায়ের মতো ঘরে চলে আসলাম।
কিছুক্ষণ পর দেখি আপু বাসায় চলে আসলো। বললাম আমার ফোনে টাকা দিলি না। সে টাকা দিতে ভুলে গিয়েছে। তার মোবাইল থেকে নিভলু ভাইয়াকে একটি কল দিলাম। বললাম আমার মোবাইলে ৩০ টাকা পাঠানোর জন্য। পুরো কথা বলার আগে আপুর মোবাইলের টাকা শেষ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে দেখি ভাইয়া ২০ টাকা পাঠিয়েছে। অল্প কিছু টাকার জন্য নেট নিতে পারতেছিনা। তাকে পুনরায় আবার কল ও দিতে পারতেছি না। বাসার মধ্যে যেন দম বন্ধ হয়ে আসতেছে। কি করবো তখন কিছুই বুঝতেছি না।
দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে নিলাম, চিন্তা করলাম কিছুক্ষণ ঘুমাবো। কিন্তু প্রত্যেকবার মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি ইন্টারনেট নাই। পোস্টগুলো দেখতে পারতেছি না। আবার পোস্ট করতেও পারতেছিনা। যেন পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। বিকেলে তাদের বাসা থেকে মোবাইল দোকান অনেক দূর। প্রায় ৫০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে দিয়েছি ২০ টাকা ঢুকানোর জন্য। তখন গিয়ে নেট ঢুকালাম। যেন নিঃশ্বাস ফিরে পেলাম। ২৪ ঘন্টার নেটবিহীন থাকা যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত।
প্রায় সময় আমি সবাইকে বলি ব্লগিং আমার নেশা এবং পেশা। 24 ঘন্টা নেট ছিল না , কোন কাজ করতে পারছিলাম না, এজন্য যেন পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। ব্লগিং করতে না পারলে মনে হয় মারা যাবো। দিনটির কথা আমার খুবই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কিছুদিন আগে ঘটনাটি ঘটেছিল। চিন্তা করলাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করলে ভালো লাগবে।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমার নাম নুরুল আলম রকি। আমার steemit I'd narocky71। আমি বাংলাদেশী নাগরিক । বাংলাদেশে বসবাস করি। তার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাগরিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি। আমি বাংলা ভাষাকে ভালবাসি। আমি ফটোগ্রাফি করতে ও ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে জল রং দিয়ে পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই আমার সময় এবং হাতে টাকা থাকে তখন ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়ি। বিশেষ করে আমি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি অনেক বছর আগ থেকে ফটোগ্রাফি করে থাকি। কিন্তু বিশেষ করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি বেশি করা হয়। বর্তমানে তার সাথে আর্ট করতে অনেক ভালোবাসি। বর্তমানে আমি বেশি সময় কাটাই আর্ট শিখতে। বর্তমানে আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো ফটোগ্রাফার, ও একজন ভালো আর্টিস্ট হব। ( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
আপনার পোস্টটি পড়ে আসলেই অনেক আফসোস লাগলো, আসলে সসমস্যা যখন আসে তখন চারদিক থেকেই আসে। গোসল করতে গেলেন পানি নাই, বাড়িওয়ালাকে পানির কথা বলার সাথেই কারেন্ট চলে যাওয়া বা আপু মোবাইলের রিচার্জ করতে ভুলে যাওয়া।সবশেষে ৫০টাকা ভাড়া দিয়ে মোবাইল রিচার্জ করা সব কিছুই কেমন ভাগ্যের প্রতিকূল যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার নেট বিহীন ২৪ ঘন্টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার খুবই স্মরণীয় এজন্য আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
আসলে বর্তমানে নেট ছাড়া যেন আমাদের থাকাটা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যদিও আমার আবার এমনিতে নেটে অপ্রয়োজনীয় কাজ করতে পছন্দ নয়। যদিও আমি ২৪ ঘন্টা নেটের মধ্যে থাকি কিন্তু তাও সবটাই কাজের মধ্যে। তুমি সেদিন এত বেশি ঝামেলা পড়েছ সত্যিই আমার খারাপ লেগেছিল। আমার নিজেরও কিছু করার ছিল না। আসলে সমস্যা আসলে চারদিক থেকে ঘিরেই আসে।
একদমই ঠিক বলেছ নেটবিহীন থাকাটা খুবই অসম্ভব বর্তমানে। সারাক্ষণ মোবাইল হাতে থাকা মানুষটির হাতে যদি মোবাইল না থাকে তাহলে তো সে পাগল হয়ে যাবে।
ইন্টারনেট আমাদের জীবনের সাথে ওতোপ্রত ভাবে জড়িয়ে গেছে। ইন্টারনেট ছাড়া দিন তো আমার কাছে বিভীষিকার মতো এখন।
খুব সুন্দর কথা বলেছেন আপনি। নেটবিহীন থাকাটা এখন খুবই কষ্ট। এ জন্য ওই দিনটির কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছে
ঠিকই বলেছেন ভাই ২৪ ঘন্টা নেট না ব্যবহার করে অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এমন হলে খুবই কষ্ট হয় ভাই। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ
আমাদের জীবনে এমন এক একটা দিন আসে যে মনে হয় সারা ব্রহ্মাণ্ড আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে। আপনার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিলো সেদিন। এরকম মূহুর্তে এক মাতশর হাতিয়ার হল ধৈর্য্য। আর সব কিছু কনসিডার করা গেলেও এই যুগে দাঁড়িয়ে ইন্টারনেট ছাড়া আমাদের চলা ভীষণ কষ্টের।
ঠিক বলেছেন ধৈর্য ধরার কারণেই টিকে ছিলাম, না হয় অনেক কষ্ট হতো। এরপরেও অনেক জিদ হয়েছিল। মন্তব্য জন্য ধন্যবাদ