চির বিদায়।

ছবিটি এখান থেকে নেওয়া হয়েছে

শনিবার সন্ধ্যায় আমার দাদুভাই আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এর জন্যই পরিবারের সকলের উপর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দাদা মানে পরিবারের একদম প্রধান কর্তা। আর এর প্রধান কর্তাকে হারানো মানে পরিবারের সবাই অসহায়। আমার দাদা গত বছর থেকে বিছানায় সয়ন ছিলো। এই দুই বছরের মধ্যে কখনো কখনো দাদা হাঁটতে উঠে দাঁড়াতো আবার কখনো একদমই পুরোপুরি বিছানার উপর নির্ভর হয়ে যেত। মাঝে মাঝে মনে হতো দাদা একদম সুস্থ। আবার যখন দাদা একদম নিস্তব্ধ হয়ে যেত বিছানার মধ্যে তখন ভাবতাম এই বুঝি তাতে আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে। শনিবারে সন্ধ্যায় দাদা আমার চোখের সামনে মৃত্যুবরণ করেছে। এমন দৃশ্য আমি আর কখনো সামনে থেকে দেখিনি। দাদার সেই চেহারা আমি এখনো ভুলতে পারছিনা। মৃত্যুর সময় মানুষ মরনের সাথে কিভাবে কষ্ট করে তা একদম কাছ থেকে অনুভব করেছি। দাদা যখন শ্বাস নিতে পারছিল না আমার মনে হচ্ছে আমার স্বাসটুকু দাদাকে দিয়ে দি।

চোখের সামনে যে কি হয়ে গেল। তোমার আম্মু সহ আমার ২ কাকি,আমার দাদু ও আমার এক ছোট চাচাতো ভাই ছিলাম। পাড়া প্রতিবেশী মহিলারাও ছিল । তারা ছিলো পর্দার পিছনে। দাদার মৃত্যুর এক ঘন্টা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম দাদা আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে। আমরা কোরআন শরীফ নিয়ে দাদার চারিপাশে বসে আস্তে আস্তে পড়তে শুরু করলাম। দাদা তার শেষ-নিশ্বাসের আগ পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে ভুলেনি। দাদাভাই কালিমা পড়তে পড়তেই মৃত্যুবরণ করেছে। এই কথা মনে পড়লেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে আলহামদুলিল্লাহ বলি।

আমার ফুফুরা আমার আব্বু আমার কাকা চাচাতো ভাই সবাই ঢাকা থেকে আসতে ও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতে গভীর রাত হয়েছিল। কিন্তু আফলাত আপু অসুস্থ থাকায় রাতে আর রওনা দিতে পারিনি । সে ভোরে রওনা দিয়েছিলো। গাজীপুর থেকে আসতে অনেক লেট হয়েছে। আপু অসুস্থ হওয়ায় দাদাকে আর দেখতে দেওয়া হয়নি কারণ এতে আরো অসুস্থ হয়ে পড়বে। পরবর্তীতে ৯:০০ টায় দাদার জানাজা হয়। এবং প্রায় দশটার দিকে কবর দেওয়া হয়। দাদা আমাদের থেকেও চির বিদায় নিয়ে নেয়। আপনারা সবাই আমার দাদার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা যেন আমার দাদাকে জান্নাত দান করেন।