|| প্রাকৃতিক ফটোগ্রাফি || মধুমিতা নদী || সন্ধ্যা নদী || স্বরূপকাঠি ||

আসসালামু-আলাইকুম,

হ্যালো স্টিমিটবাসী, কেমন আছেন আপনারা? আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। অনেকেই ছুটি শেষ করে তাদের কর্ম জীবনে ফিরে গিয়েছেন, অনেকেই যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার সেই যান্ত্রিক জীবন, অফিসের সহকর্মী, রাস্তার যানজট, ক্রেতা-বিক্রেতা। আশা করছি সবার ঈদের দিনগুলি অনেক সুন্দর কেটেছে। আজ আমি বারো দিন পরে পোস্ট লিখছি। এর আগেও আমি একই কাজ করেছিলাম।তখন রূপকদাকে কথা দিয়েছিলাম এমনটা আর হবে না। কিন্তু একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটালাম। হ্যাঁ, জানি আমি অন্যায় করেছি, শাস্তি আমার প্রাপ্য। আমি ছোটবেলা থেকেই আমি একটি সমস্যায় ভুগছি, আমি কোন কিছুতে স্থির হয়ে থাকতে পারিনা। তার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, প্রতিটা কাজ করার পূর্বেই আমি একটু পরিকল্পনা করি। সেই কাজটি করার সময় যদি আমার পরিকল্পনার বাইরে কোন কিছু চলে যায় বা পরিকল্পনা বাইরে গিয়ে কিছু করতে হয় তখন আর সে কাজটি সঠিক সময়ে সম্পন্ন করতে পারিনা। আর স্থান পরিবর্তন আমার কাজে গতির উপরে অনেক প্রভাব ফেলে। আমার সত্যিই মাঝেমধ্যে মনে হয় আমি হয়তো কোন মানসিক রোগে আক্রান্ত। আমার চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

রূপকদা আপনাকে বলছি, আমি জানি আমি অন্যায় করেছি, আমি ভুল করেছি। আমি আপনার কোন অনুরোধ করব না। আমি এখন থেকে নিয়মিত চেষ্টা করবো। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি না কারণ আমি নিজের কথা নিজে রাখতে পারিনি। আর আপনার যদি মনে হয় আমি আপনাদের সুন্দর কমিউনিটিতে থাকার যোগ্য নই তবে সরাসরি বলতে পারেন।

আজ আপনাদের সাথে কিছু ফটোগ্রাফ শেয়ার করব যেগুলো আমি নিজে আমার মোবাইলে ধারণ করেছি। এগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্যাপচার করা।

20220713_185316.jpg
শেষ বিকেলের মধুমিতা নদী। একটি আকাশে একসাথে অনেকগুলো রং দেখা যাচ্ছে যা পরিবেশ করে তুলেছে আরো সুন্দর এবং মনমুগ্ধকর। যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি নীল আকাশ তার বুকে সাদা মেঘ, কালো মেঘ, সূর্যের লালচে আভা, কিছুটা কমলার রং, কিছুটা হলুদ।

১৪ই জুলাই আমি আমার একজন বড় ভাই এবং বন্ধুর সাথে বাগেরহাট জেলার চিতলমারি বাজারে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের কিছু পুরাতন সহকর্মীদের সাথে দেখা করতে। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি ছিল ঠিক মধুমতি নদীর পারে। নদীর পাড়ে কংক্রিটের ব্লক দিয়ে বাধ দেওয়া আছে। আমরা শেষ বিকেলে গিয়ে পৌঁছেছিলাম সত্যিই সময়টা অসাধারণ ছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা সবাই নদীর পাড়ে বসে ছিলাম।

20220627_132209.jpg

20220627_132113.jpg
ফুচকা
গত ২৪শে জুন থেকে ৩রা জুলাই পর্যন্ত আমি বরিশাল স্বরূপকাঠিতে ছিলাম। সেখানে স্বরূপকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে আসার সময় আমি ফুচকার দোকানটি দেখতে পাই। দোকানটি দেখে আমার স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেল। আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন প্রতিদিন এই ফুচকা গুলো খেতাম। আজ ফুচকা দেখে লোভ সামলাতে পারিনি। মামাকে বললাম বানাতে। অল্প করে দশ টাকার বানিয়ে দিল। আমি মামাকে জিজ্ঞেস করলাম, এত কম কেন? মামা বলল, খেয়ে দেখেন যদি ভালো লাগে আবার বানিয়ে দিব। আমি খেলাম, যদিও ছোটবেলার সে স্বাদ পায়নি তবে স্বাদ মোটামুটি ভালোই ছিল।মামাকে বললাম, দেন আমাকে আরো বিশ টাকার বানিয়ে দেন। আমি বিশ টাকার ফুচকা খাওয়া শেষ করে পরবর্তীতে মামার থেকে ফুসকার আরো কিছু গুড়া নিয়ে টক নিয়ে আবার মিক্স করে খেয়েছিলাম। সেটার জন্য যদিও মামা কোন টাকা নেয়নি। লিখতে লিখতে আমার জিভে জল এসে যাচ্ছে। ইচ্ছা করছে যদি এখন আবার খেতে পারতাম।

20220629_180659.jpg
এটি স্বরূপকাঠি মডেল হাই স্কুল মাঠ। কম করে হলেও ১০০ মানুষ মাঠের ভিতরে আছে। মাছের পাশে একটি শহীদ মিনার আছে। যেখানে অনেক মানুষ বসে আছে। মূল মাঠে বড়রা ফুটবল খেলছে আর মাঠের পাশে ছোটরা স্যান্ডেল দিয়ে গোলপোস্ট বানিয়ে ফুটবল খেলছে। সত্যিই দৃশ্যগুলো অসাধারণ। আবার পাশে দেখলাম ছোট্ট একটা বাচ্চা ৫-৬ বছর বয়স হবে। ফুটবল প্র্যাকটিস করছে। সে তার কোচের কাছ থেকে বিভিন্ন কায়দা কানুন রপ্ত করছে। মাঠের এক পাশ দিয়ে গিয়েছে সন্ধ্যা নদী। অন্যপাশ দিয়ে সন্ধ্যা নদীর সাথে যুক্ত হওয়া একটি খাল। সত্যি পরিবেশকে অসাধারণ মনোমুগ্ধকর। আমি আসলে ভাষা খুজে পাচ্ছি না যে কোন ভাষা ব্যবহার করলে এই পরিবেশেটাকে সঠিক ভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারব।

20220627_121548.jpg
দূরে দেখা যাচ্ছে সন্ধ্যা নদী আর এটি হল সংযোগ খাল। এই খালের দুধ পারে কাঠ বাজার। এই বছরের দৈর্ঘ্য আমার মনে হয় প্রায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার হবে। স্থানীয় মানুষের মুখে শুনলাম এটি নাকি বাংলাদেশের সব থেকে বড় কাঠ বাজার।

আমি ৮ দিন স্বরূপকাঠিতে ছিলাম। এই ৮ দিন প্রকৃতি আমায় এতটা মুগ্ধ করেছে মনে হচ্ছিল প্রকৃতি সৌন্দর্য নিঙড়ে নিঙড়ে দেখাচ্ছে। বরিশালকে বলা হয় বাংলার ভেনিস। সত্যিই বাংলার ভেনিস, প্রতিটি রাস্তার পাস দিয়ে খাল না হয় নদী। আর নদীতে অসংখ্য নৌকা আর লঞ্চ।

  • ফটোগ্রাফার: @mynulshovon আমি নিজে
  • ডিভাইস: samsung M21s 48MP ক্যামেরা

ধন্যবাদ সকলকে। আপনাদের দোয়া এবং সহযোগিতা কামনা করছি।

Sort:  
 2 years ago 

আমারও ঈদ ভালোই কেটেছে ভাইয়া। যদিও কোরবানির ঈদ কাজের উপর দিয়ে যায় 😁। আপনি কি ভুল করেছেন তা জানি না। তবে আশা করি মডারেটরদের দেওয়া নিয়মগুলো পরবর্তীতে মেনে চলবেন ‌‌
যাই হোক আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল ভাইয়া। নদীর পাড়ে খুব সুন্দর সময় অতিক্রম করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল। আর ফটোগ্রাফি পোস্টে অবশ্যই লোকেশন দিতে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করলে শেয়ার করার জন্য শুভকামনা রইল।

জি ঠিকই বলেছেন, কোরবানির ঈদ কাজ করতে করতেই চলে যায়। আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago (edited)

নদীমাতৃক বাংলাদেশে অসংখ্য নদীর থাকায় দেশের সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বর্ষার সময় কিছু কিছু নদী মানুষের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। যাইহোক সে সমস্ত নদীর মধ্যে থেকে একটি নদীর সুন্দর কিছু দৃশ্য এছাড়াও প্রাকৃতিক দৃশ্য কিছু স্থানে দৃশ্য, ফুচকা আলা ভাইয়ের কর্ম ব্যস্ততা দৃশ্য সব মিলিয়ে দারুন একটি পোস্ট তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে আমার খুব ভালো লাগলো।

কথায় আছে, নদী একুল ভাঙ্গে ওকূল গড়ে। তবুও নদী প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য। আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

 2 years ago 

দেখে মনে হচ্ছে অনেক ঘুরাঘুরি করেছেন। আপনার ফুচকা খাওয়ার মুহূর্তটা আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে। আমারও তো আগের দিনের কথা মনে পড়ে গেল। আমার খুবই লোভ লেগে গেছে আপনার ফুচকা খাওয়ার মুহূর্ত দেখে ‌। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

ঘুরতে আমি খুবই ভালোবাসি। নতুন জায়গা আর মানুষ সম্পর্কে জানতে আমার অনেক ভালো লাগে। আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

 2 years ago 

আপনি খুবই চমৎকার ভাবে প্রকৃতিক ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন নদীর পাড় থেকে নদীসহ আকাশের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

খুব ভালো ফটোগ্রাফি আমি পারি না। তবে চেষ্টা করি। প্রকৃতি এমনিতেই অপরূপ। শুধু সে রূপ দেখার জন্য মনের সৌন্দর্যের প্রয়োজন। আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকমনা।

 2 years ago 

আপনি অনেক সুন্দর আপনি প্রাকৃতিক ফটোগ্রাফি করেছেন। দেখতে খুব অসাধারণ অনেক সুন্দর হয়েছে ।এবং আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

মোবাইল হতে নিয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য বন্দী করার চেষ্টা। আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 90099.44
ETH 3096.91
USDT 1.00
SBD 2.93