করনায় দোদুল্যমান ছাত্রজীবন,অনিশ্চিত অদূর ভবিষ্যত || 10% for @shy-fox
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
করোনার তাণ্ডবে প্রায় সব কিছু থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। মানব সভ্যতা থেকে শুরু করে বিশ্বের সব কিছু। করোনার রোষানল থেকে বাদ পড়েনি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষার্থী।সব কিছু তো আর ইচ্ছে করেই হয় না হয়তো আমাদের ভাগ্যে এমনটাই ছিলো।কিন্তু করোনার এই ভীতিকে পুঁজি করে যে আমাদের এতটা ধোঁকা দেওয়া হবে সেটাই বা কতজন বুঝতে পেরেছে।এই দেখুন না লকডাউন যেটা করোনার সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী একটি সিদ্ধান্ত যেটা আজকে প্রমাণিত।কিন্ত তারপরেও যে কেনো দেওয়া হলো,আর দিয়েই বা কেনো আমাদের এত বড় সর্বনাশ করা হলো সেটাই বুঝে আসে না।যাইহোক সেদিকে আলোচনা আর না বাড়াই আলোচনা অনেক বড় হয়ে যাবে।
দীর্ঘ একমাস এর মত সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।22 ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় খুলে দেওয়া হবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনটা ঘোষণা দেওয়ার পর আজকে আমি আমার শিক্ষা স্থল দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমি মূলত চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স করছি দিনাজপুরে। হয়তো এতদিনে আমার কোর্স কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু করোনার প্রতাপে আটকে গিয়েছে সব কিছু। কখনো লকডাউন খুলে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে তো আবার কখনো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এইতো কিছুদিন আগেও সেমিস্টার এর সময়সীমা কমিয়ে দিয়ে পুনরায় কলেজ চালু ছিল। এবং বেশ কয়েক দিন আমরা ক্লাস ও করেছি। হঠাৎ করেই অমিক্রণ এর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কি আর করার আবার চলে গেলাম বাড়িতে। এদিকে না হচ্ছে ক্লাস করা,না হচ্ছে কিছু প্রাকটিকাল, না পারছি কিছু শিখতে। দিনশেষে বইয়ের কিছু মুখস্থ পড়া পড়ে দিয়ে আসছি পরীক্ষা তাও কোন রকম। তাতেই নাকি আবার পাশ হয়ে যাচ্ছি। তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন অদূরে আমাদের ভবিষ্যতে কি রয়েছে। বলা চলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং আমাদের ছাত্রীদের বিনাশ ঘটাচ্ছে এই করোনা।
মূলত আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন ছেলে। আর এরকম পরিবার থেকে পড়াশোনার খরচ চালানো বাবা মায়ের পক্ষে কতটা যে কষ্ট সাধ্যের সেটা কেবল তারাই জানে। তারা পারেনা কিছু কইতে, না পারে কিছু সইতে। শুধু মুখটা আড়ালে লুকিয়ে একটু হাসি মুখ করে বলে আচ্ছা বাবা যাও সময়মতো টাকাটা পেয়ে যাবে। কিন্তু আমি তো বুঝি আমিতো তাদের সন্তান মুখটা কোনরকম নিচু করে চলে আসি তাদের সামনে থেকে। তারা হয়তো এটা ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দেয় একদিন আমার ছেলে অনেক বড় হবে আমাদের সব দুঃখ কষ্ট গুলো ঘুচাবে। ভাবার এই কথা আমি ছাড়া আর কেইবা আছে তাদের।তাদের তো সব আশা আকাঙ্ক্ষা শুধু আমাকে ঘিরেই। তাদের আশা তাদের স্বপ্ন আমি একদিন বড় হবো তাদের সব দুঃখ ঘুচিয়ে স্বপ্ন গুলো পূরণ করবো। কিন্তু করোনার কারণে মনে হয় না সেটা আর হয়ে উঠছে । একেতো আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান চাকরির জন্য না পারবো ঘুষ দিতে আবার এরকম ফাকি বাজি পড়াশোনায় না পারব কোন ভালো পজিশনে যেতে। আর করোনার কারণে তো এমনিতে ও অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ অচল হয়ে পড়ে আছে,কমে গেছে অনেক কর্মসংস্থান।অদূর ভবিষ্যতে যে কী আছে এই কপালে ভেবেই কুল হারিয়ে ফেলি।
আজকে বাবা মায়ের সেই পুরনো স্বপ্নকে বুকের মধ্যে লালন করে নতুন উদ্যমে চলে এলাম দিনাজপুরে। আসার সময় আমার মেসের এক ছোটভাই তার সাথে দেখা হয়ে গেলো।আসলে আমি যখন বের হই ওকে ফোন দিয়েছিলাম তুমি যাবা নাকি।তারপর ওকে ফোন দিলাম ও চলে আসলো।তারপর দুইজন মিলে চলে আসলাম দিনাজপুরে।লক্ষ একটাই ডিপ্লোমা কোর্স টা শেষ করা।আসলে জানেন কি কারিগরি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যটাই হচ্ছে হাতেনাতে শিক্ষা অর্থাৎ প্রাক্টিক্যালি সব কিছু শেখানো হয়।এখানে থিওরি এর থেকে প্রাকটিকালকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেনো এই কোর্স কমপ্লিট করে অন্তত নিজে কিছু একটা করে সাবলম্বী হতে পারি।অথচ যেখানে আমাদের কাজ শেখার কথা সেখানে আমরা সেটা থেকেই বঞ্চিত।তাহলে শুধু এই কাগজের সার্টিফিকেট নিয়ে কি লাভ।তারপরেও একটাই আশা ভরসা এই কাগজ দিয়েই যদি কোনোদিন ভাগ পাল্টে।
আজকের মত এই ছিলো আমার উপস্থাপনা।সবার জন্য শুভেচ্ছা রইলো।সবাই ভালো থাকবেন নিরাপদে করবেন এবং আমার জন্যে দোয়া করবেন।
ধন্যবাদ
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmV5Xa3hG15t22KLgTWahqC6vy99pJroRPzFeQqGDKZMg7/IMG_9503.jpg)
টুইটার
করোনার প্রকপে লেখাপড়া যে কত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটা এখন ভালমতো বুজতে পারতেছি ।লেখাপড়া তো শেষ হয়ে যাচ্ছে ,সাথে বয়স , সাথে চাকরিবাকরি হচ্ছে না । একেবারে পুরো জীবন বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে ।তাই কবে যে আবার সব আগের মতো হবে ।সেই অপেক্ষায় রইলাম। আপনি খুব সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন । ধন্যবাদ ভাই সুন্দর বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য ।
জি ভাই যারা ভুক্তভুগী তারাই কেবল বুঝতেছে কত বড় সমস্যা।যাইহোক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই।করোনা ভাইরাসের রোষানলে আজকে আমাদের ছাত্র জীবন করুন অবস্থার মুখে।২২ ফেব্রুয়ারি আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলো।কতদিন যে খোলা থাকবে তারও নিশ্চয়তা নেই।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য।
জি ভাই দেখা যাক সামনে কি হয়।আশা করি আর বন্ধ হবে না।
একসময় ভাবতাম ছুটি পেলেই বুঝি কত মজা এখন বুঝতে পারছি যে এত ছুটি পাওয়ার ফলটা আসলে কোনোভাবেই ছাত্রজীবনের জন্য লাভজনক নয়।
দীর্ঘ ২২ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ব্যাবস্থার অপূরণীয় ক্ষতিসাধন হয়েছে। আমি নিজেও সেটার ফল পাচ্ছি। যত তারাতারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো পুনরায় খুলে দেওয়া হবে তত তাড়াতাড়ি আবার সব আগের মতো হতে শুরু করবে ।
ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দরভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য।
মনে হয় না আগের মত হবে ভাই,এই ব্যাবধান সবসময় আমার জীবনে একটা ব্যাবধান করেই রাখবে।।
ভাই আপনার কথাগুলো সত্যিই বাস্তবিক মন ছুয়ে যাওয়ার মত, করোনা মহামারীতে অনেক শিক্ষার্থীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ আশা-আকাঙ্ক্ষা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থীদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে, এগুলো ভাবলে শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠে। ইনশাল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।
জি ভাই সেই আশায় করি সবকিছু যেনো ঠিক হয়ে যায় আগের মতন।ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্ট টি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া আমি আপনার কথার সাথে একমত পোষন করছি।লকডাউনে লকডাউনে ছোট বড় সবার পড়া লেখা একদম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমিও এক বছরের পল্লি চিকিৎসার একটি
ক্রোস করছিলাম কিন্তু এখনো পরিক্ষা দিতে পারছি না।এখন না তখন এমন করতে করতে ২ বছর 😭।দুআ করি সৃষ্টিকর্তা যেনও আবার আগের মতো সব ঠিক করে দেয়।
ভাইয়া আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ও দুআ রইলো।
জি আপু এই দোয়া ছাড়া এখন আর করার তেমন কিছুই নেই।ইনশাল্লাহ একদিন সব আগের মতন হবে।শুভেচ্ছা রইলো আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
করোনা জীবণ থেকে প্রায় দুই বছর কেড়ে নিয়েছে। এতো দিনে অনার্স পাশ মাস্টার্স এ ভর্তি হতাম কিন্ত করোনার জন্য এখনো চতুর্থ বর্ষে পড়ে আছি। কবে যে আবার মানুষ স্বাভাবিক শ্বাস নিতে পারবে একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন। আপনকে অনেক ধন্যবাদ খুব সুন্দর ভাবে সব কিছু উপস্থাপন করার জন্য।
আপনার এই কষ্ট বুঝতে পারছি ভাইয়া।দোয়া করি আপনার জন্য যেনো আগের মত সব কিছু সাভাবিক হয়ে যায়।ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
ঠিক বলেছেম ভাই। কাজ না শিখতে পারলে সার্টিফিকেট দিয়ে তেমন ভালো কিছু করা যাবেনা। তবে এখনও সময় আছে চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। পড়ালেখা চালিয়ে যান ভালো করে। দোয়া রইল ভাই।
খুব একটা সময় আছে বলে মনে হয় না ভাই।তবুও চেষ্টা করতে হবে দেখি সামনে কি আছে ভাগ্যে।আপনার জন্যেও দোয়া রইলো ভাই।
করোনায় কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার বাস্তব প্রমান আমি। বিগত দুই বছর ধরে বসে আছি। এই স্কুল-কলেজ খুলতেছে আবার এই বন্ধ করে দিচ্ছে। জানিনা আগামীতে আমার কি হবে সেই চিন্তায় আজও আমি চিন্তিত। আশা করতেছি খুব শীঘ্রই এই মহামারী থেকে সারাবিশ্ব মুক্তি পাবে আর সবকিছুই স্বাভাবিক ভাবে চলতে থাকবে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
জি ভাই সেই আশায় আমিও পথ চেয়ে আছি চাতক পাখির মতো কিন্তু।কিন্তু আগের মত হওয়ার খুব একটা সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।তারপরেও চেষ্টা তো চালিয়ে যেতে হবে কি আর করার।আপনার জন্যেও অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো ভাই।
আসলেই করোনা এসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পড়াশোনা টা একদম শেষ হয়ে গেছে। আসলে যে এভাবে কতদিন চলবে কেউ বলতে পারছে না। আসলে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করি।