একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর গল্প ||
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
সবার জীবনেই কিছু প্রিও বস্তু থাকে যা অনেকটা সময় ধরে মানুষ মনে রাখে।ঠিক আমার জীবনেও ছিল।তবে সে মানুষ নয় সে একটি নির্বাক প্রাণী।তো হটাৎ করেই আজকে একটা মুভি দেখলাম "777 charli" মুভিটা দেখে আমার সেই পোষা কুকুরটির কথা মনে পড়ে গেলো।তাই ভাবলাম সেই গল্পটি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।
কোনো একসময় আমার একটা পোষা কুকুর ছিল।আর কুকুর কি জানেন তো সে হইলো মানুষের সবচেয়ে কাছের এবং বিশ্বস্ত বন্ধু।একজন মানুষকে ঠিক যতটুকু না বিশ্বাস করা যায় তার চেয়ে বেশি বিশ্বস্ত একটা পোষা কুকুর।ওর নাম ছিল কানু ওকে আমি ওর মায়ের কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে এসেছিলাম।দেখতে একদম গুলুমুলু আর হেভি কিউট ছিল।ওকে দেখেই মনে হয়েছে ওকে নিয়ে গিয়ে বাসায় বড়ো করবো আর ও সবসময় আমার সাথেই থাকবে।কিন্তু বাড়িতে যেই নিয়ে এসেছি অমনি আম্মুর চিল্লাচিল্লি।আম্মুর ভাষ্য হলো আমি ওরে যেখানে পাইছি যেনো সেখানেই রেখে আসি নাইলে আমারেও ঢুকতে দিবে না।এই কথা শুনে মনটা খারাপ করে বাড়ির সনে বসে আছি।ঠিক এইসময় আব্বু আসলো,আব্বু রাগী গলায় বললো এইখানে কেন বাড়িতে জায়গা নাই।আমার কাছে যে কুকুরের বাচ্চা ছিল সেটা দেখে।আমাকে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে আব্বু বাড়িতে গেলো।আমিও কানুরে নিয়ে আব্বুর পিছে পিছে গেলাম।আম্মু দেখা মাত্রই আব্বুর কাছে বলে উঠলো দেখ তোমার ছেলে এগুলা কি।নিয়ে আসছে।আব্বু আর ওইসময় কিছু বলে নাই।কনুরে বাড়ির এক কোনে বেধে রাখছি যেনো পালাইতে না পারে।তারপর বিকেলে আব্বু আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করে ওরে যে নিয়ে আসছো খাবার দিছো কোনো।আর ওই মুহূর্তে কিযে খুশি হইসিলাম বলে বুঝানোর মতো না।তারপর আব্বু পশু হসপিটালে গিয়ে কানুর জন্য কিছু ইনজেকশন, ভেকসিন আর ওষুধ নিয়ে আসে।কারণ সাধারণ কুকুর থেকে অনেক সংক্রামক ছড়াইতে পারে।আর ও যেহেতু এখন থেকে আমাদের সাথেই থাকবে সেই জন্য ওর আর আমাদের বিপদমুক্ত থাকাটা জরুরি।এরপর থেকে কানুর বাইরে যাওয়া নিষেধ।ওকে প্রতিদিন নিয়ম করে গোসল করাই আমি সাথে তিনবেলা খাবার।আর ধীরে ধীরে বড় হওয়া শুরু করলো কানু। ও বড়ো হওয়ার সাথে সাথে কিছু নিয়মকানুন ও শেখাই ওরে।যতদিন যাচ্ছিল ও বাড়ির সবার সাথেই ওর একটা সক্ষতা গড়ে উঠছিল।বাড়িতে কেউ অপরিচিত জন আসলেই শুরু হয় ওর চিল্লাচিল্লি আবার ওকে বুঝায় বললে থেমে যায়।আমি যখন সকালে উঠে দৌড়াদৌড়ি করতাম আমার সঙ্গী হিসেবে ওই থাকতো।মাঝে মাঝে আমার সাথে দুষ্টামি করত আমার জুতা নিয়ে গিয়ে লুকায় রাখতো।আর আমি যখন স্কুলে যাইতাম আমার সাথে সাথে ও দৌড় দিত।আর স্কুল থেকে যখন ফিরতাম একদম আমার গায়ের উপরে এসে লাফাতো তখন মাথায় একটু হাত বুলালেই শান্ত হয়ে যেত। ও আব্বুর ও এতটা প্রিও হয়ে উঠেছিল ও আব্বুর সাথেও যেখানে সেখানে যেত।এভাবে বেশ ভালই যাচ্ছিল কানুর দিনকাল আর আমারও।তো কানুকে খুব একটা আমি বাইরে যেতে দেই না ও বেশিরভাগ সময় বাড়ির মধ্যেই ঘুরাঘুরি করে আর ভুল করে কখনো গেলেও নিজেনিজেই বাড়িতে ফিরে আসে।কিন্তু হটাৎ একদিন রাতে কানু বাড়ি থেকে বাইরে গেলো তারপর আর ফিরে এলো না।আমি মনে করেছিলাম এরকমত প্রায়ই যায় ফিরে আসবে আবার সমস্যা নাই।কিন্তু ঐটাই যে ওর শেষবার ছিল জানলে ওরে বেরোই হতে দিতাম না।
তারপর থেকে ওর কথা মনে পড়লে মনটা এখনো খারাপ হয়ে যায়।দীর্ঘ তিন বছরের পথচলা ছিল ওর সাথে।আসলে ও যতদিন ছিল আমাদের মাঝে ওকে দেখে সবসময় মনে হতো কানুও যেনো আমাদের পরিবারেরই একজন সদস্য।কানুর সাথে দীর্ঘ তিন বছরের যে পথচলা এই সময়টাতে কতশত স্মৃতি আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে সব।তবে আফসোস তার মনিবের ভালোবাসকে উপেক্ষা করে পাড়ি দিয়েছে এক অজানা গন্তব্যে।
খুবই মন খারাপ হয়ে গেল আপনার গল্পটি পড়ে।আসলে বিড়াল,কুকুর এরা অনেকটা পরিবারের সদস্যের মতো।তাই তাদের চলে যাওয়াটা খুবই কষ্টের।এইরকম অভিজ্ঞতা আমার অনেকবার হয়েছে কখনো আমাদের পোষা গরু,শ্বেত ইঁদুর,কুকুর ,পাখি ইত্যাদি প্রাণী।ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যা আপু খুব খারাপ লাগে।তবে আমার এখনো মন খারাপ হয় মাঝে মাঝে।
বাড়ি কোন পোষা প্রাণী যদি এভাবে হঠাৎ করে না ফেরার দেশে চলে যায় তাহলে আসলেই খারাপ লাগারই কথা। আমাদের বাড়িতেও সব সময় কুকুর থাকে। সত্যি সত্যি এরা খুব পূর্বভক্ত হয়। অসাধারণ একটি কথা বলেছেন আপনি, "মানুষের থেকে এদেরকে অনেক অনেক বেশি বিশ্বাস করা যায়। আপনার কালুর জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন সহ আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাই বিষয়টা উপলদ্ধি করার জন্য।
আপনার জন্যেও অনেক শুভকামনা রইলো।