শিক্ষা মূলক সফর,পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন (কাহরুল,দিনাজপুর)
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
নিয়মিত পোস্ট না করার কারণে এতগুলো গল্প জমা হয়ে আছে সেগুলোর দিকে আমার খেয়ালই ছিল না।আজকে যখন কি পোস্ট করবো ভাবতেছি তখন হটাৎ করেই মনে পড়লো আরেহ কতগুলো স্মৃতি জমা হয়ে আছে আমার গ্যালারিতে সেগুলার গল্প শোনানই তো বাকি রয়ে গেছে আপনাদের।তো আজকে আপনাদের ছোটোখাটো একটা টুরের গল্প শোনাই।
জুন মাসের শেষের দিকে সদ্য মিডট্রাম পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে কলেজ থেকে।আর এদিকে কলেজ নিয়মিতই ক্লাস হচ্ছে।যেহেতু সময় স্বল্প আর অল্প সময়ের মধ্যে শিখতে হবে অনেক কিছু।আর আমারা যেহেতু এবার কলেজ এর লাস্ট ব্যাচ তাই চাপ টাও একটু বেশি।আর আমাদের কাজ গুলও যেহেতু প্রাক্টিক্যালি তাই সবকিছুই আমাদের বাস্তবের সাথে মিলায় শিখতে হয়।কিন্তু করনার কারণে আর সেমিস্টার এর সময় আগায় নিয়ে আসার কারণে আমরা কোনো কিছুই ঠিক সেভাবে শিখতে পারি নি।তারপরেও স্যাররা চেষ্টা করেছেন যতটুকু শেখানো যায়।তো একদিন ক্লাসে স্যার পাওয়ার অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে লেকচার দিচ্ছেন।সেইদিন ক্লাস শেষে সবাই মিলে স্যার কে গিয়ে বললাম, "স্যার আপনি যেগুলো বলছেন সেগুলার সাথে বাস্তবে যদি মেলানোর সুযোগ হইতো তাহলে ব্যাপারগুলো আমাদের বোধগম্য হইতো"। স্যার আমাদের কথা টা বুঝতে পেরে মাথা নাড়ায় বললো তোমরা কাল প্রস্তুত থেকো আমি অধ্যক্ষ স্যার এর সাথে কথা বলতেছি।এদিকে ক্লাস ক্যাপ্টেন সবাইকে এসে গ্রুপে জানায় দিলো যেনো আমরা সবাই কাল 9 টায় কলজে এসে উপস্থিত হই।আমাদের উদ্দেশ্য ছিল "পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন" যাওয়া।মূলত এই পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন এর কাজ হচ্ছে পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন করা।এবং এটার অবস্থান দিনাজপুর জেলার কাহারুলে।
এরপর পরেরদিন সবাই সময় মত এসে পৌঁছে যায়।তারপর কলেজ এর ভাঙ্গা বাসে চড়ে যাত্রা শুরু হয় কাহারুল এর উদ্দেশ্যে।দিনাজপুর থেকে অবশ্য খুব বেশি দূরে না এই ধরেন 13 কি.মি. এর মত হবে।
আমাদের সাথে ছিলো আমাদের ডিপার্টমেন্ট প্রধান স্যার এবং আরো দুইজন ইন্সট্রাক্টর। বাসে উঠে অনেকেই মজা মাস্তি করতেছিল,আমি অবশ্য বসে ছিলাম আসলে রাতে ভালো ঘুম হয় নাই তো এই জন্য।তো ঠিকঠাক ভাবেই যাচ্ছিলাম তো অর্ধেক রাস্তা কেবল অতিক্রম করেছি এই মুহূর্তে গেলো বাসের কার্বুরেটর ফেটে আর বাস গেলো বন্ধ হয়ে।এখন উপায় অন্তর না দেখে বাধ্য হয়ে সবাই মিলে বাস ঠেলে সামনের একটা বাজারে নিয়ে আসলো।এখন সবাই পড়ে গেলো চিন্তায় বাজারেও নাই মেকানিক্স এর দোকান।এখন মাঝপথ থেকে ফিরে যাওয়ায় সম্ভব নয় আবার দেরিতে গেলে ওখানে ঢুকতে দিবে না।তারপর কোনো এক ইঞ্জিনিয়ার হটাৎ একটা আইডিয়া দিলো ব্যাস তার কথামত দোকান থেকে সাবান কিন নিয়ে এসে কার্বুরেটর এর ছিদ্র বন্ধ করা হলো যদিও অল্প অল্প পানি পড়ছিল।তারপরেও ধীরে ধীরে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাইছি।
এটাই হলো সেই সাবস্টেশন।প্রথমে ঢুকেই সেখানে আমাদের কিছু ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হলো।এবং আমাদের গ্রুপে ভাগ করে প্রত্যেক গ্রুপে একজন করে ইন্সট্রাক্টর দেওয়া হলো।এবং এই সাবস্টেশন এর কাজ হলো বিদ্যুৎ ডিস্ট্রিবিউশন করা।এবং এই সাবস্টেশন এর আওতাভুক্ত জেলা গুলো হচ্ছে দিনাজপুর,ঠাকুরগাঁ এবং পঞ্চগড়।এবং এখান থেকে এই তিনটি জেলার বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এখানকার পাওয়ার ক্যাপাসিটি হ 132/33 কেভি।এবং এই বিদ্যুৎ আবার আসে মূল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে।তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিটি এলাকার জন্য বিদ্যুৎ এখান থেকে ডিস্ট্রিবিউট করা হয়।
এগুলা হচ্ছে ট্রান্সফরমার।আর এত বড় বড় ট্রান্সফরমার এর আগে এত কাছ থেকে আমি কখনোই দেখি নাই।যাইহোক আসল কোথায় আসি।মূলত এই ট্রান্সফরমার এর কাজ হলো এই বৈদ্যুতিক শক্তিকে এক সার্কিট হতে অন্য সার্কিটে স্থানতর করা।সোজা ভাষায় বিদ্যুৎ এর ভোল্টেজ এর মান ঠিক রাখার জন্য ট্রান্সফরমার ব্যাবহার করা হয়।যেনো নিদৃষ্টি জায়গায় নিদ্রিষ্ট পরিমাণে বিদ্যুৎ পাঠানো যায়।দেখুন বিদ্যুৎ এর বলে কিন্তু সবসময় আপ ডাউন হতেই থাকে।আর ট্রান্সফরমার ছাড়া যদি এমনই ভাবে চলে তাহলে তাহলে প্রত্যেকটা ইলেকট্রিক ডিভাইস নষ্ট হয়ে যাবে।
এইটা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। এখান থেকেই মূলত সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এখানে ঢুকে খুব বেশি কিছু একটা বুঝি নাই,তাই এই বিষয়ে আর বেশি কিছু না বলাই উত্তম😁
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
অবস্থান | কহারুল,দিনাজপুর |
আজকের মত এখানেই শেষ করছি।দেখা হবে আবার পরবর্তী কোনো পোস্টে।ততদিন সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই বিদায়।
আল্লাহ হাফেজ 🌿
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbHqqT9yDhtpFAUjXitFwCkBuVzXm41m8xBUNMpzVkLn7/IMG_20220606_232300_039.jpg)
আপনাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরে পাঠায়, আমাদের পাঠায় না 🙂। বাস্তবে অনেক কিছু দেখার বাকি। এই বড় বড় সুইচগিয়ার বক্স আর ট্রান্সফরমার আমাদের কলেজেও দেখেছিলাম। যায়হোক, অনেক কিছুই শিখতে পারলেন
আপনাদের কলেজে কিভাবে দেখলেন এগুলা তো কলেজ থাকে না😁
আমাদের কে আরো অনেক জায়গায় নিয়ে যাইত কিন্তু করণার কারণে হয়ে উঠে নি।😢