মাছের সন্ধানে বৈশালীতে অভিযান পর্ব
এই মাছ নিয়ে দিল্লী আসার পর থেকে ঝামেলা লেগেই আছে। চিত্তরঞ্জন পার্ক থেকে মাছ আসার পর দু একটা দিন যা হোক নিশ্চিন্তে খাওয়া দাওয়া চললো । তারপর আবার সেই একই সমস্যায় পড়লাম। অনলাইনে সার্চ করলাম, আমাদের ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার এর কাছে খোঁজ নিলাম বললো খানিকটা দূরে একটা মাছের বাজার আছে। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম ওখানে ই আজ যাবো দেখি কোনো মাছের সন্ধান পাওয়া যায় কি না?
যা ভাবা তাই কাজ।
সন্ধ্যার একটু আগে আগে ছুটলাম মাছ বাজারের উদ্দেশ্যে। এখানে আবার একটু আগে ই সন্ধ্যা নামে। বিকেলের পর আর খুব বেশি দেরি হয় না। আমরা যে এপার্টমেন্ট এ আছি সেখান থেকে একটা অটো তে উঠলাম। অটোওয়ালা কে জিজ্ঞেস করলাম " হার সওয়ারী কিৎনা ?অটোওয়ালা বলল "হার আদমি দশ রূপিয়া"। আমি বললাম "ঠিক হে , চলিয়ে"।
অটোটা হেলতে দুলতে পৌঁছে গেল মহাগুন মেট্রো মল এর পাশে। শুনেছিলাম মহাগুন মেট্রো মলের ওপাশে মাছের বাজার। আমরা সে দিকেই যাত্রা করলাম। মলের প্রথম গেট দিকে সোজা পিছনের গেট পার হয়ে মলের পাশে র রাস্তা দিয়ে হাটতে শুরু করলাম। কিন্তু কিছুতেই মাছ বাজারে র সঠিক রাস্তা টা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
পাশেই দেখলাম কয়েকটা ছোট ছোট দোকান ।একজন দোকান দার কে জিজ্ঞেস করলাম "মছলি মান ডি কিধার হে?
উত্তর এ সে বলল "সোজা উছি লাইট মে চলে যাও"
আমরা ও লাইট এর সোজা হাটতে শুরু করলাম। লাইট এর সোজা গিয়ে দেখলাম সর্ব সাকুল্যে একটি মাত্র মাছের দোকান দেখা যাচ্ছে। আশে পাশে এদিক ওদিক খোঁজার চেষ্টা করলাম অন্য কোনো দোকান চোখে পড়ে কি না, কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না। যা হোক সেই দোকানেই ঢুকে পড়লাম। দোকানের মালিক কে জিজ্ঞেস করলাম "মোছলি হে? দোকান দার বলল
আজ সে মাছ দিতে পারবে না তবে অর্ডার করলে সে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারবে। যা হোক ওই দোকান থেকে একটা দেশি মুরগি কেনা হলো। এখানে আবার একটা জিনিস আমার খুব ভালো যা কিছু কেনা হয় তা প্রসেস করেই দোকান থেকে দেয়।
মুরগি কেনা শেষ হলে আমরা আবার এদিক ওদিক খোঁজার চেষ্টা করলাম আর কোনো দোকান দেখা যায় কি না? খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে দেখলাম পাশেই একটি দেওয়াল তার ওপাশে কিছু দোকান দেখা যাচ্ছে। আর ভিতোরে দেখার একটি পথ ও চোখে পড়লো। ওই পথ দিয়ে সামনে এগিয়েই দেখলাম বেশ কয়েকটি মাছ, মুরগি এসবের দোকান। তা আট দশ টি দোকান তো হবেই। বেশ ভালো ভালো মাছ সাজানো। দোকানগুলো খুব বড় না হলেও অনেক পদের মাছ ছিল ওখানে।
আমরা দেখে শুনে বেশ বড় বড় চিংড়ি আর বড় একটা কাতল মাছ কিনে ফেললাম।
ফাঁকে ফাঁকে আমি মাছ বাজার এর কিছু ছবি ও তুলে ফেললাম।
চিত্র:১
ছবিতে যে কাতলা মাছটি দেখছেন এটি আমরা কিনেছিলাম।বেশ বড় ছিল তিন কেজির মতো ওজন হয়েছিল।এবং সুস্বাদু আর টাটকা ছিল মাছটি।
এই দোকান টায় মোটামুটি বড়ো সাইজের বেশ কয়েকটি মাছ ছিল। মাছ বিক্রেতার আচরণ ও বেশ ভালো ছিলো। খুব সুন্দর করে উনি আমাদের মাছ টি কেটে দিলেন।
এই বাজারে মাছের পাশাপাশি কিছু মুরগি র দোকান ও আছে।ফার্ম এর মুরগির সাথে সাথে দেশি মুরগি ও পাওয়া যায়। দামে ও বেশ সস্তা।
কাতলা মাছ টি কাটতে কাটতে আমরা দেড় কেজি মতো চিংড়ি মাছ কিনে ফেললাম। চিংড়ি গুলো অনেক বড় আর স্বাদেও ভালো ছিলো। মাছ কেনা শেষ করে আমরা পুনরায় বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
ছবি: মাছ বাজার, বৈশালী
ছবির মাধ্যম: SamsungS20ultra
ছবি তোলার স্থান: বৈশালী, দিল্লী
ছবি তোলার তারিখ: ১৪-১১-২১
কোন একটি জায়গার সম্বন্ধে পুরোপুরি ধারণা না থাকলে সেই জায়গাটি খুঁজে পেতে অনেক কষ্টকর হয়। আপনার ক্ষেত্রেও সেটি হয়েছে। মাছ বাজার না চেনার কারণে আপনার খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে। যাই হোক সবশেষে যে আপনি মাছ বাজার পেয়েছেন এটি অনেক ভালো লেগেছে। আর আমাদের এখানেও বাজার থেকে মাছ মাংস এগুলো প্রসেস করে আনা যায় এর জন্য অনেক সুবিধা হয় ।
ঠিক বলেছেন আপু। কোনো স্থান সম্পর্কে জানা না থাকলে খুবই প্রবলেম।
ওরে বাবা এত বড় একটা কাতলা মাছ। কাতলা মাছ কিন্তু আমাদের কমবেশি সবারই খুব পছন্দের। আপনার আজকের এই মাছের অভিযান এর গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আশা করছি এভাবেই আপনার আরো নতুন নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন ।অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
কাতলা মাছের সাইজ দেখেই বুঝা যাচ্ছে মাছটি অনেক বেশি সুস্বাদু হবে। আর চিংড়ি মাছ তো আমার সব সময়ই অনেক ফেভারি। যেহেতু আমরা বাঙালি সেহেতু মাছ না হলে আমাদের কোন ভাবেই চলবে না তা আবারও প্রমাণিত হলো আপু। তবে ভালো লাগলো যে আপনারা কষ্ট হলেও খুঁজে পেয়েছেন। কারণ তা না হলে আসলেই আপনাদের খাওয়ার খেতে খুব কষ্ট হতো। কারণ মাছ মাংস ছাড়া আসলে বাঙালির খাবার জমে না।
দিদি আপনার এ পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। সবচাইতে বেশি ভালো লাগলো যে শেষপর্যন্ত আপনি মাছ পেয়েছেন। আসলে দিদি কোন স্তর সম্পর্কে ধারণা না থাকলে সেই স্থান খুঁজে পেতে সত্যি অনেক কষ্ট হয়। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য আমাদের সাথে।
হ্যাঁ, অবশেষে মাছের সন্ধান পেলাম।
নিজের অনুভূতিকে এত সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে। আর বিশেষ করে কোনো লোকেশন যানা না থাকলে যে কি রকম বিপত্তি হয় বোঝায় যাচ্ছিলো বেশ,যাই হোক অবশেষে মাছ পেয়েছেন। শুনে ভালো লাগলো। আপনাদের ওপার বাংলায় অনেক কম দামেই দেখি অনেক কিছু পাওয়া যায়, আমাদের এইদিকে পুরো উল্ট চিত্র। আমার খুব ভাল্লাগে ওপার বাংলার কোনো অনুভূতি যখন শেয়ার আর আমি সেইটা পড়ি। অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো দিদি আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
মাছটি বেশ বড় ।বড় মাছের স্বাদই আলাদা খুব টেস্ট হয় ।আপনার পোষ্টি পরে খুব ভালো লাগলো কিছু ধারনা পেলাম মাছ কেনার ধন্যবাদ আপু ।
অনেক ধন্যবাদ ।
অবশেষে যে মাছ কিনতে পেরেছেন সেটাই ভাগ্য। নতুন যায়গায় কোনো কিছু খুজে পাওয়া খুবই মুশকিল। তবে আপনার ভ্রমণও হয়ে গেল এক দিকে। অনেক ধন্যবাদ আপু।