জাদুঘরে একদিন - পার্ট- ২
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশা করি অনেক ভালো আছেন। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর নিয়ে আগের পোস্টে আমি আপনাদের মাঝে কিছুটা শেয়ার করেছিলাম। আজ বাকি আরেকটি অংশ শেয়ার করছি।
গাছপালা, পশুপাখি, সুন্দর পেরিয়ে এবার আমরা ঢুকলাম আমাদের অতীত ঐতিহ্যের দিকে। সেই পুরাতন আমলের রাজা- বাদশাদের ব্যবহার করা খাট আর পালঙ্ক গুলো দেখলে যেকারোরই চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে। এগুলো এতো সুন্দর যে আপনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারবেন না। আগের দিনের কাঠমিস্ত্রীদের প্রতি আপনার মন থেকে শ্রদ্ধা চলে আসবে। সেই সাথে রাজা বাদশাদের সম্ভান্ত্র মনের পরিচয়ও মিলবে।
একেকটি পালঙ্ক যেন একেকটি ইতিহাস জড়িত। এই স্থানে এসে আমি মনে মনে ভাবছিলাম এটি কোন নববধূর লজ্জা মাখা মুখের ছায়া চেনে! এই পালঙ্কে কোন বালিকা বধু বালিশে চাপা দিয়ে তার কান্না আটকে রেখেছিলো বা এটি কোন রানীর দিনশেষে বিশ্রামের প্রয়োজনে নির্মিত।
একেকটি পালঙ্কের পায়ে ছিলো সুন্দরী পরী কাঠ নির্মিত।এটি ছিলো ওখানকার সবচেয়ে বড় পালঙ্ক। এটাতে ওঠার জন্য আলাদা করে সিঁড়িও আছে।
এই পরী দেখে মনে হয় নিশ্চয়ই কোনো এক জীবন্ত পরীর জন্যই নির্মিত এই পালঙ্ক। দুই পরীতে বাস এক জায়গায়।
খাট যুগে যুগে নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছে। তবে এরকম রুচিশীলতা আর চোখে পড়ে না তেমন। কাঠের কারিগররাও যেন অলস হয়ে গিয়েছে। তারা এখন সবাই হয়ে উঠেছে যন্ত্র নির্ভর। তাই আর সেই মাধুর্য কাঠে ফুটিয়ে তোলার সময় সুযোগ হয়তো কারও নেই। আজ আমরা আধুনিক।
এরপর আমাদের চোখে পড়লো কিছু জানলা। পার্টিশন সহ জানালা। সেই আবহমানকালের অপেক্ষা করার স্থান। সেই কান্নাঝরা পথের পানে চেয়ে থাকা জীবনের গল্প গুলো মুহুর্তে আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
জানলা দেখলেই যেন আমার বন্ধ বন্ধ মনে হয়। আর গাইতে ইচ্ছে করে,
সব কটা জানালা খুলে দাও না, আমি গাইবো গাইবো বিজয়েরই গান।
জাদুঘরে জানালার কারুকার্য যখনই আমাদের মুগ্ধ করলো তখনই পাশে দেখলাম এক বিশাল জিনিস। পালকি। বাস্তবে পালকি দেখার সৌভাগ্য আমার হলো। সেই কারুকার্য খচিত পালকি। যার মাঝে বসে থাকে লাল টুকটুকে বউ। শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি যেতে তার কতই না আনন্দ। চার বেহারার পালকি চলে, পালকি চলে গানের সাথে সাথে গ্রাম গঞ্জ পেরিয়ে চলে তারা। অনেক সময় সন্ধ্যা নেমে আসে দস্যুরা হানা দেয় পালকির উপর। বেহারারা পালিয়ে যায়। অসহায় বধুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। তার সমস্ত গায়নাগাটি নিয়ে আবার চলে যা। তবুও পালকি চলে। এখন আর পালকি নেই বললেই চলে। চাকার আবিষ্কারের পর থেকে পালকি আস্তে আস্তে উঠে গেছে। তবে আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য রয়ে গেছে।
কথায় আছে,
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।
বুঝতেই পারছেন এবার কিসের কথা বলবো। এবারে আমাদের চোখে পড়লো কিছি ঢেঁকি। গ্রামে এখনও পিঠাপুলির উৎসবে ঢেঁকির ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে এখানকার ঢেকিগুলো বেশ পুরাতন। দেখতেও নানা আকৃতির। কোনটা কুমিরের মতো কোনটা সরু আবার কোনটা নানা রকমের নকশা কাটা।
ঢেঁকির সাথে কয়েকটি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ বটিও চোখে পড়ার মতো।
আজকের মতো এতোটুকুই আবার নতুন গ্যালারি শেয়ার করবো।সবাই ভালো থাকবেন।
ডিভাইস :Huawei
মডেল:y7pro
ছবিতে:mstnusrat
লোকেশন:(National Museum)
আমার জাদুঘরে যাওয়ার খুব ইচ্ছে আছে কিন্তু এখনো যাওয়া হয়নি। আপনার দেখছি বাস্তবে পালকি দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু আমার এখনো সেই সৌভাগ্যটা হয়ে উঠল না। অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখতে পেলাম। তাছাড়া আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হলাম। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
ধন্যবাদ আপু
আপনার জাদুঘরে পার্ট টু এর গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। বিশেষ করে জাদুঘরের কিছু দৃশ্যমান কাঠের তৈরি খাট পালংকের দেখে অনেক ভালো লাগলো ।যেগুলো ডিজাইন সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাইয়া
আমিও কখনো বাস্তবে পালকি দেখি নাই। যা দেখছি বাংলা সিনেমাতে। তবে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি চোখ জুড়িয়ে গেলো। সব গুলো জিনিস দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক পুরনো আমলের। ধন্যবাদ আপু।।আপনার জাদুঘরের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার জাদুঘর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো সত্যিই আমি ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছি।পালঙ্ক গুলোর মাঝে অসাধারণ শিল্পকর্ম। প্রত্যেকটি পালঙ্ক বা খাটে কারুকাজ খচিত। এত অসাধারন পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মতামতের জন্য।
বাস্তবে পালকি দেখার সোভাগ্য অনক আগেই হয়েছিল রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরেএ কুঠি বারির পাশেই বাসা হওয়াতে আপনি অনেক সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি উপস্থাপনা করেছেন ধন্যবাদ
ধন্যবাদ ভাইয়া।
জাদুঘরে এত সুন্দর সুন্দর খাট থাকে তা আমার জানা ছিল না। প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি খুব ভালো লাগছে, তবে খাটের সুন্দর নকশা আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।