বৃত্ত ; by mstnusrat ; 10% for shy-fox
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশা করি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন।
আজ আপনাদের মাঝে কথা বলতে আসলাম আমাদের জীবন বৃত্ত নিয়ে। কখনো কি চিন্তা করেছেন, আমাদের জীবন একটি বৃত্ত অনুযায়ী চলে?
শুধু আমাদের কেন ধরতে গেলে পৃথিবীর সকল কিছুরই জীবন একটা বৃত্ত অনুযায়ী চলে। আর পৃথিবীটাও যেন এক বিশাল বৃত্ত। আমরা জীবন শুরু করেছি শূন্য থেকে। যেই শূন্য টাও একটা বৃত্ত। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন এই যে শূন্যের ধারণা, এটা আবিষ্কার করেছিলেন প্রাচীন ভারতীয় রা। শূন্য থেকে সৃষ্টি আবার শূন্যের মাঝেই শেষ। মাঝের কতো কাজ আমাদের একটা ছোট জীবনের জন্য বরাদ্দ থাকে। শিশু থেকে বড় হয়ে, আরেক শিশুকে বড় করার পর আমরা আবার সেই শূন্যে মিশে যাই।
প্রাচীন কাল থেকেই এই বৃত্তের পরিচর্যা হয়ে আসছে। আমাদের প্রতিদিনের কাজও বৃত্ত অনুযায়ী চলে। সকাল সন্ধ্যা আবার সন্ধ্যা সকাল এই করেই চলছে। মাঝে আর যা কিছুই থাকুক সন্ধ্যা সকাল সময়ের মাঝেই চলছে একই নিয়মে।
পানির চক্রের কথা আমরা সবাই জানি হয়তো। বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে যাওয়া। তারপর ঘনীভূত হয়ে মেঘ। মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়ে আবার সেই খাল, বিল নদী, নালা, সমুদ্রে মিশে যায়।
আঁচাপোকা অনেকেই চেনেন। গ্রামে বসবাস রত সবাই জানে এটি আমগাছের পাতায় বিশাল বিশাল আকৃতির হয়ে থাকে। কারো গায়ে পড়লে আর রক্ষে নেই। চিল্লাচিল্লি তে এলাকা মাথায়। আবার এক স্টেজ পার করে সেই আঁচাপোকা যখন সুন্দর রং বেরংয়ের বড় বড় প্রজাপতিতে পরিণত হয়, তখন দেখতে ভারি ভালো লাগে। কারো গায়ে প্রজাপতি বসলে গ্রামে বলে থাকে তার দ্রুত বিয়ে হবে, টাকা পাবে, মেহমান আসবে, সুসংবাদ ইত্যাদি আরও কতো কি। অথচ কদিন আগে সেই একই প্রাণী গায়ে পড়লে -মানুষের ভয়ের অন্ত থাকতো না। এই প্রজাপতি আবার ডিম দেবে, আঁচাপোকা টাইপ বাচ্চা হবে, আবার সেগুলো বড় হয়ে প্রজাপতির রূপ নেবে এটাই এদের জীবন বৃত্ত।
এবার আসুন মৌমাছিদের কথায়। এদের তো ব্যাপারই কিছু আলাদা। এরা কয়েকটি জাতি একসাথে বসবাস করে। একটা রাজ্য চলে এদের ছোট চাকগুলোতে। এরা যে পথে মধু আহরণ করতে যায় স্ত্রী বা কর্মী মৌমাছি গুলো আবার সেইপথ চিনে ঘরেও ফিরে আসতে পারে। এদের মাঝে একজন রাণী মৌমাছি থাকে। রাণী অবশ্য বদল হয়। এদের পাকস্থলী দুইটি। একটাতে খাবার খায়। আরেকটা মধু আহরণের কাজে ব্যবহৃত হয়। মধু তো এক মহৌষধ। এটা কাটাছেঁড়া জায়গায় লাগালে, পেট খারাপ করলে, ত্বকের যত্নে বিভিন্ন রোগে বেশ উপশম করে দিতে পারে। এ-ই মধুতে ডিম দিয়ে তা থেকে বাচ্চা হলে চলে মৌমাছিদের জীবন।
মানুষের জীবনের কথা কী বলব। সকলই প্রাণীদের মাঝে লুকায়িত আছে। মানুষের জীবনের এই চক্রে কখনও কেউ খুব প্রিয় হয়ে ওঠে সেই প্রজাপতির মতো। রাণী মৌমাছির মতো। আবার যখন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তখন হয়ে যায় সেই আঁচা পোকার মতো। মানুষের ভাগ্যের চাকাও তখন আর ঘোরে না। জীবন চাকাও যেন থেমে যায়।
এই চাকাকে সক্ষম করতে হলে মানুষেরও প্রয়োজন প্রাণীদের মতোই কারো কথায় থেমে না গিয়ে, স্থির না থেকে জীবনকে গতিশীল করা। ভাগ্যের চাকাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাহলেই এই বৃত্তের আর কোনো পরিসীমা থাকবে না। এটি নিজের সুবিধা মতো ঘুরতে থাকবে। মনে রাখতে হবে গাড়ি চলার পথে চাকা গুলো মাঝে মাঝে উঁচু নিচু পথের মাঝে আঁটকে যায়। আমরা তাকে ধাক্কা দিয়ে হোক ঠেলে হোক উপরের দিকে ওঠাই। ঠিক এমনি আমাদের জীবন বৃত্ত কখনো স্থির হলে তা গতিশীল করাও আমাদের দায়িত্ব। কেননা দিন শেষে আমাদের বলতেই হবে,
সময় আর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।
ধন্যবাদ সকলকে।
ছবিতে:@mstnusrat
ডিভাইস :Huawei
মডেল:y7pro