বুড়ি পদ্মার সাথে-শেষ পর্ব🦩

Saturday 23 July 2022

IMG_20220421_165616.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

পূর্বাপর
পর্ব ৬ এর শেষ প্যারা

আবার কথা শুরু হল আমাদের দুজনের মোবাইল সম্পর্কে আলোচনা। উনি ওনার মোবাইল টা তে কয়েকটি ছবি ধারণ করলো ।শেষে আমার মোবাইলটা হাতে নিয়ে আমাকে ছবি তোলার কিছু প্রস্তুতি দেখিয়ে, আমাকে ছবি তুলতে বললো ।আমি বললাম প্রত্যেকদিন এমনি ছবি তোলা হয় ।আজকে আমি সেলফি আকারে ছবি তুলব। উনি বললো ঠিক আছে উঠান। আমি বললাম আপনি উঠিয়ে নেন ,বলে ওনার হাতে মোবাইলটা দিলাম ।উনি আমার ওই দিন এই কয়েকটা ছবি তুলল ।আর প্যানোরামার ছবিটি আমি ধারন করলাম।

বুড়ি পদ্মার সাথে-শেষ পর্ব🦩

শেষ পর্ব শুরু

আজকের মত এখানকার আলাপচারিতা ও বেড়ানো শেষ হলে রিক্সায় উঠে আমরা দুজনেই ফরিদপুর শহরের দিকে রওনা দিলাম । শুভ বাবু আমাকে বাজারে নামিয়ে দিয়ে উনি তার বাড়িতে চলে গেলেন। যাওয়ার আগে তার সাথে কথা হল আগামীকাল আমরা স্থানীয় একটি ইউনিয়নের দিকে রওনা দিব ।ওখানে নাকি অতি পুরাতন একটি অশ্বথ গাছ রয়েছে। যা বাপ দাদারা শুনিয়ে আসছে কবে থেকে এরূপ উৎপত্তি হয়েছে তা সঠিক জানা যায়নি।brযথারীতি আমি বাসায় চলে গেলাম পরদিন সকাল ৯ টার দিকে শুভ দত্ত আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিল ,উনি আমার দিকে আসিতেছে। আমি তখনো ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমিও তার সাথে বেরিয়ে পড়ার জন্য রেডি হলাম।brইতিমধ্যেই তিনি সারদা সুন্দরী কলেজের সামনে অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে আমাকে ফোন দিতেছিল ।আমি ততক্ষণে বের হওয়ার জন্য তৈরি ছিলাম।

আমি নিচে এসে দেখতে পেলাম উনি ঠিক আমার গেট বরাবর অটো রিক্সায় বসে আমাকে ফলো করিতেছে ।আমাকে দেখেই উনি ডাক দিল আমিও অটোরিক্সায় চেপে বসলাম।

প্রোগ্রামটি ছিল গতকালকের সাজানো এজন্য এ ব্যাপারে উনি আমাকে কোন কিছুই জিজ্ঞেস করলেন না ।আমিও কিছু জিজ্ঞাসা করলাম না ।অটো ড্রাইভার এর সাথে কুশলে বিনিময় করা হলো।
আমরা যাব জাহিদ মেমোরিয়াল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে দিয়া ।অটোরিকশা যথারীতি জাহিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালের সামনে দাঁড়ালে আমরা সেখানে এক কাপ কফি খাওয়ার চেষ্টা করলাম এবং খেলাম। পান সিগারেট এবং প্রয়োজনীয় কিছু ক্রয় করে পকেটে ভরে নিলাম।

অটো রিক্সা সোজা ডিসি অফিসের সামনে দিয়া রাজেন্দ্র মোহনের কলেজের সামনে গিয়ে উপস্থিত হল। ওখানেও আমাকে কিছু না বলেই উনি অটো রিক্সা দাঁড় করালেন এবং রাজেন্দ্র মোহন কলেজ সম্পর্কে কিছু বললেন এবং বিভিন্ন বড় বড় স্থাপনা গুলোর সাথে পরিচয় করে দিলেন।

অটোরিকশা চলছে। চলতে চলতে আমরা কৈজুরী ইউনিয়ন এলাকায় প্রবেশ করলাম। প্রায় মিনিট পরে ছোট্ট ডোবার মত কিছু একটা দেখতে পেলাম ।সেখানে একটি ছোট ব্রিজ রয়েছে দুপাশে গ্রাম ।ডান পাশে কিছু পশুপাখির ভাস্কর্য। আমরা কিছু ভাবার আগেই দশ গজ সামনে অটোরিকশা দাঁড় করালাম।

উদ্দেশ্য কেন এসব ভাস্কর্য এখানে রাখা হয়েছে এবং ছবি তোলা।

IMG_20220421_164947.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165053.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_164944.jpg

অটোরিকশা থেকে নেমে প্রথমে স্থাপনা গুলো র ছবি তুলতে গিয়ে স্থাপনার নামধাম এবং সাইনবোর্ড সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলাম।এ ধরনের কিছু দেখা গেল না। তবে ঘেরার মধ্যে কিছু লোককে দেখা যাচ্ছে ।বাইরে কোন লোকজন ছিল না ।স্থাপনাগুলো আমার কাছে মনে হল হয়ত বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

IMG_20220421_165600.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165602.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165602~2.jpg

এবার আমি প্রথমে এই ব্যাঙের ভাস্কর্যটির কয়েকটি ছবি তুললাম। এ সময় ভাস্কর্যটির গায়ে প্রচুর পরিমাণে ধুলো ও ময়লা ছিল আশেপাশেও অপরিষ্কার ছিল তার পরেও আমি কয়েকটি ছবি তুললাম যা আপনারা এখানে দেখতে পাচ্ছেন।

IMG_20220421_165616.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165623.jpg

এবার আমি পাশে সুসজ্জিত রাজহাঁসের দুটি ছবি তুললাম ।যা এখানে আপনাদের উপহার হিসেবে প্রদর্শন করছি।

IMG_20220421_165643.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165645.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165642.jpg

পাশে সংরক্ষণ করা সাদা খরগোশের ভাস্কর্য খুঁটে খুঁটে বিভিন্ন এঙ্গেলে ছবি তোলার চেষ্টা করলাম ।এ সময়ও ভাস্কর্যটির গায়ে প্রচুর পরিমাণে ধুলো ময়লা ছিল ।এবং পাশের পরিবেশনও নোংরা ছিল। যা এখানে আপনাদের উদ্দেশ্যে পরিবেশন করা হলো।

IMG_20220421_165704.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_165702.jpg

এবার আমি পাশে সংরক্ষিত হরিণ শাবকের ভাস্কর্যের ছবি নেওয়ার চেষ্টা করলাম এবং হাতেও ধরে দেখলাম। হরিণ শাবকটির একটি শিং ও মুখের কাছে কিছু অংশ ভাঙ্গা দেখা গেল এবং এখানে আরো বেশি ময়লা আবর্জনা ছিল।
এ পর্বে ছবি তোলার সময় শুভ বাবু এবং অটো ড্রাইভার গাড়িতে বসেছিল ।কেননা সামনে প্রায় ৩০ মিটার দূরে রাস্তার গাছ কাটা হচ্ছে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল হতে পারে। আমার ছবি তোলা শেষ। আমি তাদের কাছে চলে গেলাম ।একটু আলাপচারিতা হল ।ফাঁকে ফাঁকে বলা হলো যে সামনে দুপাশে রাস্তার গাছ কাটিতেছে ।একসঙ্গেই পার হতে হবে ।অটো ড্রাইভারকে পরামর্শ দেওয়া হলো আপনি গাড়ি চালিয়ে যান আমরা পিছনে পিছনে আসার চেষ্টা করছি ।যেমন ভাবনা তেমন কাজ অটোরিকশা চলা শুরু করল ।আমরাও রাস্তার ডান পাশ ধরে এগোতে থাকলাম প্রায় পঞ্চাশ ষাট মিটার পার হয়ে আমরা অটোতে চেপে বসলাম।

অটো চলছে তার আপন গতিতে। আমার ছবি তোলা সম্পর্কে শুভ বাবু কিছু মন্তব্য করল আর বলল আপনি দেখি সব কিছুরই ছবি উঠান এত ছবি দিয়ে কি করবেন ।আমি বললাম নতুনত্ব তো তাই ।দুজনেই অনেক হাসাহাসি করলাম অটো চলতেছিল। আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্থান সেই কইজুরির পুরাতন বট গাছের নিচে গিয়ে হাজির হলাম ।পাশে একটি টং দোকান ছিল ।সেখানে অটো রিক্সার দাঁড় করানো হলো। এবার আমরা দোকানে চা খাওয়ার চেষ্টা করলাম ।দেখতে পেলাম দোকানদার একজন ভদ্রমহিলা ।তিনি এ দোকান পরিচালনা করেন ।সামনে বসের বাঁশের টং পাতানো আছে। সেখানে আরো বিভিন্ন বয়সের কয়েকজন লোক বসে চা পান সিগারেট খাচ্ছে ।আমরা চা খাব তাই তাদেরকেও চা খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলো ।সবাই খেয়েছে বলল ।একজন শুধু বলল আমি খাব। আমার খুব ভালো লাগলো। ছেলেমানুষ ছকছক করে কথা বলে ।আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল ।শুভ বাবু পরিচয় করে দিল উনি রংপুর থেকে এখানে বেড়াতে এসেছেন। এতক্ষণে দোকানদার ম্যাডাম বলে উঠলো পানি একটু গরম করে তারপরে পাত্তি মেরে চা দিব ।আপনারা একটু ওয়েট করেন আমরা বললাম ,ঠিক আছে।

IMG_20220421_175513.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_175510.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_175428.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_175516.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_175447.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_175416.jpg

আলোকচিত্র ধারন @mrnazrul

IMG_20220421_175449.jpg

আমরা পাশের সেই হাজার বছরের পুরাতন বটগাছের নিচে ছবি তোলার জন্য গেলাম ।সম্ভবত এটি একটি প্রাইমারি স্কুল হবে কোন সাইনবোর্ড ছিল না ।আমি সাইনবোর্ড দেখতে পেলাম না ।গাছটির দুপাশে ঘর দেখা গেল ।গাছটি পুরাতন হওয়ায় এখানকার আশেপাশের লোকজন এখানে অনেক প্রকার পূজা ও পার্বণ করে থাকে। দেখতে পাচ্ছেন গাছের বিভিন্ন স্থানে লালসালু কাপড় লটকিয়ে রাখা হয়েছে ।পূজার সরঞ্জাম দেখা যায় ।এখানে ছোট ছোট টিলা গুলোতেও পূজা দেওয়া হয় ।মূলত এটি একটি অশ্বথ বা পাকুড় গাছ ।এলাকার লোক এটাকে বটগাছ বলেই ডাকে। গাছটি কতদিনের এ সম্পর্কে কয়েকজনের কাছে জানার চেষ্টা করা হলে ,তারা সবাই বলেছে এটার সঠিক উৎপত্তি সম্পর্কে জানেন না তারা। এভাবেই গাছটিকে দেখে আসছে।

এ সময় শুভ বাবু কয়েকটি ছবি তুললে আমি তার চেয়ে আরো বেশি ছবি তোলার চেষ্টা করলাম যেগুলো এখন আমি আপনাদের উপহার হিসেবে উপস্থাপন করছি

ছবি তোলা শেষ হলে আমরা দুজনই চা খাওয়ার জন্য আবার দোকানের সামনে আসলাম ।এতক্ষণে দোকানি ম্যাডাম আমাদের জন্য চা তৈরি করে রেখেছেন। আমরা একটি দশ টাকার এনার্জি বিস্কুটের প্যাকেট খুলে খেয়ে ফেললাম। সাথে কয়েক গ্লাস টিউবওয়েলের পানি গলদধারণ করিলাম।

চা খাওয়া শেষে আমরা পান সিগারেটের পর্ব শেষ করে স্থানীয় লোকজনের সাথে অনেক ভাল মন্দ নিয়ে কথা বলে, অটোয় চেপে ফরিদপুর শহরের দিকে রওনা দিলাম।

এই ছিল আমার আজকের কৈজুরী ইউনিয়নের হাজার বছর বয়সের বটগাছ পরিদর্শনের কিছু কথা ও ছবি। ও বুড়ি পদ্মার সাথে শেষ পর্ব।

সাথে থেকে সাতটি পর্ব দেখার জন্য আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQXc6bCmgJbQNUch3ntfWyxxzQnLRTyExcFLC6n3i9TXvoAh9VXe2xkakXoqNsUwHUZckGosaii.png

Visit My Another Activists

Blog

Twitter

Facebook

Youtube

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQXc6bCmgJbQNUch3ntfWyxxzQnLRTyExcFLC6n3i9TXvoAh9VXe2xkakXoqNsUwHUZckGosaii.png

Regard By@mrnazrul, Bangladesh
CategoryFlower, Nature Photography.
DeviceHandset
w3wLocation
Beneficiary10% benefit of shy-fox.

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQXc6bCmgJbQNUch3ntfWyxxzQnLRTyExcFLC6n3i9TXvoAh9VXe2xkakXoqNsUwHUZckGosaii.png

77U2.gif

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQXc6bCmgJbQNUch3ntfWyxxzQnLRTyExcFLC6n3i9TXvoAh9VXe2xkakXoqNsUwHUZckGosaii.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

Regard

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64689.90
ETH 3450.92
USDT 1.00
SBD 2.50