পিকনিক তো নই যেনো অ্যাডভেঞ্চার।
আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
- পিকনিক
- ০২,মার্চ ,২০২৪
- শনিবার
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। গ্রামের বাড়িতে আসলে এদিক সেদিকে প্রচুর ঘুরাঘুরি হয় । সব থেকে বেশি ঘোরাঘুরি হয় পদ্মা নদীর জল এখানকার পরিবেশ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য আমাদের সবাইকে আকৃষ্ট করে। এ সময়ে পদ্মা নদীতে চড়ে গেলে অনেক ধরনের ফসলের চাষ হয় সেগুলো দেখা যায়। তবে এখন বেশিরভাগ ফসলের শেষ সময়। কৃষকের ঘরে আনন্দের মুহূর্ত । অনেক আগে একবার এই চড়ে ডিম খিচুড়ি দিয়ে পিকনিক করেছিলাম মুহূর্তটা বেশ ভালো ছিলো। তাই এবারও ভাবলাম এমন কিছু একটা আয়োজন করা যায়। যে ভাবা সেই কাজ আমাদের পিকনিক হওয়ার কথা ছিল সোমবারে কিন্তু একটু ব্যস্ততার জন্য আমরা মঙ্গলবারে পিকনিক করতে বের হয়েছি।
আমাদের সময় ছিল দুপুর দুইটার মধ্যে বেরিয়ে যাব কারণ রান্নাবান্না করতে ওইখানে যেতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। সবাই বের হতে হতে আড়াইটা বেজে যায়। এবার বাড়িতে এসে এই প্রথম চড়ে নামব অনুভূতিটা অসম্ভব ভালো লাগছিল। কারণ চলে গেলে প্রকৃতির আসল একটি সৌন্দর্য সেগুলো উপভোগ করা যায়। এখানে মানুষের আনাগোনা কম প্রকৃতির সেজে থাকে তার নিজের রূপে। আমরা চারটা বাইকে নয় জন নেমে যায় চড়ে। এখন চড়ে যেতে হলে অনেক ধুলাবালি পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। কারণ এখন বৃষ্টি নেই ধুলা গুলো সব বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে।
তাই আমরা একটা বাইক থেকে অন্য বাইকের অনেকটা দূরত্ব মেইনটেইন করে যাত্রা শুরু করেছি। যাতে ধুলা কম ওরে আর যেগুলো উড়ে যাচ্ছে সেগুলো যেন বাতাসে অনেক দূরে চলে যায়। আমাদের যেতে হবে অনেক দূরে সেই নদীর ধারে। এ রাস্তা দিয়ে বর্বর ট্রাক্টর চলছে নদী থেকে মাটি নিয়ে আসার জন্য সেজন্য রাস্তাতে অনেক বেশি ধুলা। ধোলা গুলো মিহি পাউডারের মত হয়ে গিয়েছে বাতাস নাই লাগতে উড়ে সবার গায়ে মিশে যাচ্ছে। অনেকটা পথ সবাই একসাথে যাচ্ছিলাম কিন্তু দোলা এত বেশি ছিল যে জামা কাপড়ের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে। তাই আমি সচরাচর যে পথ দিয়ে মানুষ যায় ওই দিক দিয়ে না গিয়ে অন্য রাস্তা বেছে নেই। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর দেখি রাস্তা নেই এখন কি আর করব ফসলি জমির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে এখন কিন্তু ফসল নেই জমিতে সব উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
কিন্তু বড় বড় ঢিলা রয়েছে ধুলাকে এড়িয়ে চলতে এই রাস্তাটাই বেছে নিয়েছি। তারপর যেতে যেতে আমরা অবশেষে রাস্তা পাই। আর আমার মোটরসাইকেলের সাথে বাধানো ছিল মরিচ আর আলু খুব হয়েছিলাম ঝাকিতে ঝাঁকিতে কি ছিড়ে যায়। যে ভয়টাই পারছিলাম সেটাই হয়েছে। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি ব্যাগ চিরে মরিচার আলু পড়ে গিয়েছে। ছেড়ার পরপরই বুঝতে পেরেছে জন্য আমাদের আর বেশি খুঁজতে হয়নি। বাইকটা রেখে অল্প একটু পিছনে যেতেই দেখি সবগুলো পড়ে আছে। সেগুলো এখন গুছিয়ে ব্যাগে করে আবার যাত্রা শুরু করি। তবে আমরা যেখানে প্রথমে পিকনিক করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেখানে গিয়ে অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। এদিক দিয়ে মাটির গাড়ি যাচ্ছে সেজন্য প্রচুর ধূলা তাই আমাদের এখানে পিকনিক করা হবে না আমাদের নতুন জায়গা খুঁজতে হবে। আমরা প্রথমে চলে গেলাম একদম নদীর ধারে পিকনিক করবো কিন্তু প্রচুর বাতাস ছিল। বাতাসের মধ্যে চুলা জ্বালিয়ে রান্না করা অনেক কষ্টসাধ্য।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
তারপর দূরে একটি বড়ই গাছ দেখতে পাই প্রথমে দুই ভাই চলে গেল ওখানকার পরিবেশ দেখতে তারা জায়গাটি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেল। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম আমরা এখানেই পিকনিক করবো। তারপর আমরা সবাই বাইক নিয়ে এখানে গিয়ে আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দিই। তবে বড়ই গাছের বড়ই দেখে আর লোভ সামলাতে না পেরে প্রথমে বড়ই খেতে শুরু করি। বরইগুলো অনেক বেশি টেস্টি ছিল। তারপর আমরা কি দিয়ে চুলা বানাবো সে টেনশন করতে থাকে। হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি আছে বড় বড় ঢিলা যদি নদীর ধার থেকে নিয়ে আসতে পারি তাহলে ওইটা তিনটা রেখে আমরা রান্না করতে পারব। তারপর আমি এবং সোহাগ ভাই বাইক নিয়ে চলে গেলাম নদীর ধারে ঢিলা নিয়ে আসতে। অবশেষে তিনটা ঢিলার মধ্যে দুইটা ঢিলা ব্যাগের ঢুকিয়ে আরেকটা হাতে করে নিয়ে খুব সাবধানতার সাথে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌছালাম।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
তারপর এখানে এসেই চুলা কাটার কাজ শুরু করে দিল। আমি এবং রিপন চলে গেলাম খড়ি সংগ্রহের কাজে। চড়ে আসলে খড়ির কোন অভাব হয় না। পাশে একটি ছোট জঙ্গল মত ছিল আমরা ওইখানে গিয়ে আমাদের রান্নার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খড়ি নিয়ে চলে আসি। আমাদের চুলাকাটা ও শেষ করে খড়ি নিয়ে আসা সম্পূর্ণ হয়েছে এখন রান্না শুরু করার পালা। প্রথমে আমরা ডিম এবং আলু সিদ্ধ করে নিই যেহেতু আমাদের রেসিপি হল আলু ভর্তা আর ডিম ভুনা সাথে খিচুড়ি। আমরা সবাই কাজটাকে ভাগ করে নিয়েছিলাম কেউ খিচুড়ি জন্য মরিচ পেঁয়াজ কেটে রেখেছে আমরা খড়ি আনতে গিয়েছিলাম যাতে আমাদের সময়টা বেঁচে যায়।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
আমাদের রান্নার জন্য প্রথমে আড়াইশো গ্রাম সরিষার তেল নিয়ে আসা হয়েছিল যেহেতু খিচুড়ি রান্না করবো সেহেতু তেলের পরিমাণটা একটু বেশি লাগবে। আমরা সম্পূর্ণ তেলটা খিচুড়ির মধ্যে দিয়ে দিই। এখন ডিম রান্নার জন্য তেল কেনার জন্য আমি আর সুমন ভাই বাইক নিয়ে চড়ের দোকানগুলো খুঁজতে থাকি। তবে দুঃখের বিষয় হলো এরা দিনের বেলা দোকান সেভাবে খোলে না কারণ তারা কাজে ব্যস্ত থাকে। দুইটা দোকান পেয়েছিলাম কোনটাই খোলা পাইনি। একটা দোকানের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেছি কিন্তু কাউকে খুঁজে পাইনি। তারপর আমরা হতাশ হয়ে আবার চলে আসি। কিন্তু আমাদের এক ভাই এখনো আমাদের এখানে আসেনি তাকে ফোন দিয়ে বলা হলো তেল নিয়ে আসতে সে তেল নিয়ে চলে আসলো অবশেষে তেলের চিন্তা মুক্ত হলাম।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
প্রথমে খিচুড়ি রান্নার শেষ হয়ে গেল তারপর ডিম ভুনার পালা একে একে সব রান্না শেষ করার পর ।আমরা যেহেতু খাবার খাওয়ার জন্য কোন প্লেট নিয়ে আসেনি। আমাদের খাওয়ার জন্য এখন কলাপাতাই একমাত্র ভরসা। কলাপাতা তে খেতে অনেক ভালোই মজা লাগে যেহেতু এটি পিকনিক এবং এডভেঞ্চার পূর্ণ পিকনিক ভিন্ন কিছু তো থাকতে হবে। বন্ধু রিপন এবং ছোট ভাইয়ের রাসেল চলে গেল কলার পাতা কাটতে। কলাপাতা নিয়ে আসে রাখল তারপর আমরা সেগুলোকে ধুয়ে সুন্দরভাবে বিছিয়ে দিলাম।
Device : Realme 7
What's 3 Word Location :
তারপর যেহেতু রান্না শেষ হয়ে গিয়েছিল চারিদিকে অন্ধকার ঘনিও আসছিল আমাদের খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাড়ি ফিরতে হবে। সুন্দরভাবে আমাদের খাবার স্থানটা পরিষ্কার করে বিছিয়ে দেয়ার পর খাবারটা পরিবেশন করতে শুরু করি। সবাই মিলে একসাথে এভাবে খাবার খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে। পিকনিকের মজা তাই তো এটা সবাই একসাথে মজা করব এবং খাওয়া-দাওয়া করব। আর এমন পরিবেশে যদি পিকনিক করা যায় তাহলে অনেক বেশি ভালো লাগে। সবার সাথে এমন পিকনিক করতে অনেক বেশি মজা লাগে। আমরা অনেক বেশি ইনজয় করেছিলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে যেন উঠতে পারছিলাম না বসে বসে এত খেয়েছিলাম। এমন পরিবেশে থাকতে অনেক বেশি ভালো লাগে। এই ছিল আমার পিকনিকের পোস্ট । আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।
আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।
ভাই আপনাদের চুলা আর কলা পাতায় খাওয়া টা অসাধারণ।
বড়ই দেখে আমার জিভে পানি চলে আসল।আর পরিবেশ টাও সুন্দর। অনেক দিন হলো পিকনিক করা হয় না। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া বড়ই গুলো অনেক বেশি সুস্বাদু ছিল জিভে পানি আসার মতই। মতামত প্রকাশের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
ওয়াও আসলে সবাই মিলে পিকনিক করার একটা অন্যরকম ফিলিংস কাজ করে ৷ যা হোক প্রথমে ইমন ভাই , তারপর অঙ্কন আর আজকে আপনার পোষ্টে পরলাম ৷সবমিলে পদ্মা নদীর চরে সত্যি দারুন একটা পিকনিক করেছেন ৷ তবে একটা বিষয় ভালো লেগেছে কলা পাতায় করে খাওয়ার দৃশ্যটা ৷
ভালো লাগলো আপনার পিকনিক খাওয়ার অনুভুতি টা শেয়ার করবার জন্য ৷
আমরা ইচ্ছা করেই প্লেট না নিয়ে গিয়ে কলার পাতায় খেয়েছি। অনেক মজা করেছি আমরা ধন্যবাদ মতামতের জন্য
আপনি লোকটাই একটা অ্যাডভেঞ্চার 😄
আপনার এধরনের পোস্টগুলো আমার কাছে বরাবরই ভীষণ ভালো লাগে। আপনি দিক বেদিক ছুটে বেড়ান একটু আনন্দ পাওয়ার জন্য।
যাইহোক আপনাদের পিকনিকের আয়োজন দেখে আমি আমার ছোট বেলায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম। সত্যি বলতে জাষ্ট অসাধারণ লেগেছে আপনাদের এই আনন্দ আয়োজন। এভাবে আপনারা সবসময়ই হাসিখুশি থাকুন এই কামনা করছি 🤗
যে কয়দিন সুযোগ আছে সে কয়দিন তো মজা করতে হবে। আর অ্যাডভেঞ্চার এর পূর্ণ কাজ কাম করতে বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ মতামতের জন্য
ইস্ পুরোটা মিস করেছি, আসলেই পদ্মা নদীর তীরে পিকনিক করতে গেলে সেটা অ্যাডভেঞ্চার মনে হয়। তবে খাবার সময়ে যখন কলার পাতায় খাবার পরিবেশন করে চারদিক থেকে সবাই একসাথে খাওয়া হয় তখন সবচেয়ে বেশি মজা লাগে।
কি আর করব বন্ধু বলো তুমি তো বিজি ছিলা। কলা পাতার খাওয়াটা অনেক বেশি মজা বেশ করে সবাইও একসাথে খাওয়ার মুহূর্ত।
ফটোগ্রাফি গুলো এবং লেখাগুলো পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো দারুন একটি সময় অতিবাহিত করেছেন সবাই মিলে।
আসলে পদ্মা নদীর পারে এই জায়গাটাতে গেলে এরকম খাবার-দাবারের আয়োজন করে সত্যি অনেক ভালো সময় পার করা যায়।
এমন পরিবেশে খাওয়া-দাওয়া করলে বেশ ভালোই লাগে। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশের জন্য
তুমি সত্যি বলেছো গো বন্ধু সেদিনের পিকনিক টা ছিল পুরো এডভেঞ্চার। আসলে এরকম পিকনিক মাঝেমধ্যে করলে বেশ ভালই হয়। আসা-যাওয়ার মুহূর্ত থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া মুহূর্ত সব মুহূর্তই দারুন ছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বিশেষ করে যাওয়ার সময় ধূলাতে সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল মুহূর্তটা অসাধারণ ছিল।
বোঝাই যাচ্ছে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দারুন একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। গ্রামের বাড়িতে গেলেই এরকম পদ্মা নদীর কাছে আপনারা পিকনিক করেন আর এই পিকনিকটা যেন সত্যিই একটা এডভেঞ্চার। অনেকদিন হলো তেমন কোন পিকনিক খাওয়া দেওয়া হয় না তারপরও আপনাদের সুন্দর মুহূর্তটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। খিচুড়ি আর ডিম খাওয়ার অনুভূতিটা শক্তি অন্যরকম। আপনাদের কাটানো সুন্দর মুহূর্ত টা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে পদ্মা নদীর পাড়ে অনেক বেশি মজা করি আমরা। তবে এবার তুমি নাই জন্য একটু কম হয়েছে। অনেক মিস করেছি তোমাকে