নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে অন্যরকম এর একটি আত্ম প্রশান্তি রয়েছে
আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন
আমি @mostafezur001 বাংলাদেশ থেকে
আজকে শুক্রবার, জুন ২৪/২০২২
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে যে পোস্ট শেয়ার করব সেটা আপনাদের কাছে কেমন লাগবে তা আমি জানিনা। কিন্তু আমি মনে করি বাস্তব জীবনে আমাদেরকে নিজেদের কাজ নিজেরাই করা উচিত। এই বিষয়ে কোন এক কবি একটি কথা বলেছিলেন।
চল কোদাল চালাই ভুলে জ্ঞানের বড়াই
কোদাল চালানো কোন খারাপ কাজ নয়। আমরা একটু শিক্ষিত হয়ে গেলেই এই ধরনের কাজ গুলোকে অনেক ছোট মনে করি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নিজেদের কাজ নিজে করার মধ্যে অন্য রকমের একটি প্রশান্তির রয়েছে। যখন আপনারা নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে শুরু করবেন তখন দেখবেন আপনাদের মনের মধ্যে একটি আত্ম প্রশান্তি চলে আসছে। কিছুদিন থেকেই দেখছিলাম আমাদের স্কুলের খেলার মাঠের একপাশে মাটি জমে রয়েছে আর এই মাটি জমে থাকার ফলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলা করতে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। পরে আমি এবং @sumon09 স্যার দু-একজন ছাত্রকে নিয়ে লেগে পড়লাম সেই মাটি ঠিক করার কাজে। হয়তোবা আমাদের এই কাজ দেখে অনেকেই মনে মনে হাসছিল আবার অনেকেই আমাদেরকে হয়তোবা পাগল ভাব ছিল। কিন্তু আমি মনে করি নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে যে প্রশান্তি রয়েছে তা অন্য কোথাও থেকে পাওয়া যায় না।
প্রথমে আমি এবং সুমন স্যার সিদ্ধান্ত নিলাম আজকে এই মাটি ঠিক করে ফেলব। তাই আমরা দুজন আগে থেকেই দুটো কোদাল সংগ্রহ করে রেখেছিলাম। আর ওই দিন আমরা স্কুলে একটু সকাল সকাল গিয়েছিলাম কাজ করার জন্য। স্কুলের যথারীতি সময় শুরু হবার আগেই আমরা অনেকটা কাজ শেষ করে ফেলেছিলাম।
আমাদের কাজ করা দেখে একজন ম্যাডাম চলে আসলো আমাদের সাথে কাজে হাত লাগানোর জন্য। আর বাকি শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছিল এমনকি ছাত্র-ছাত্রীরাও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছিল।
এরপরে আমি দেখতে পেলাম আমাদের স্কুলেরই একজন ছাত্র চলে আসলো আমাদের সাথে কাজে হাত লাগানোর জন্য। যদিও প্রথমে সে একটু ভালো কাজ করছিল কিন্তু কিছু সময় পার হবার সাথে সাথেই দেখতে পেলাম সে একটু ফাঁকিবাজি শুরু করে দিয়েছে। উপরের ছবিটি লক্ষ্য করলেই আপনি বুঝতে পারবেন তার ফাঁকিবাজির ব্যাপারটি। কাজ করতে করতে সে গাছের একটি কোনায় লুকাতে শুরু করলো।
সেই মাটি ঠিক করার জন্য সুমন স্যার অনেক পরিশ্রম করেছিল। পরিশ্রমের ফলে সুমন স্যারের অবস্থা কেমন হয়েছিল তা আপনারা উপরে ছবিটি লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন।
আসলেই এখন বর্ষাকাল হলেও অনেক বেশি গরম পড়ে যার কারণে আমরা খুব একটা বেশি সময় কাজ করতে পারিনি। স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হবার আগ পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করেছিলাম যতদূর সম্ভব কাজ করার জন্য। এমনকি আমরা স্কুল শুরু হবার আগ পর্যন্ত কাজ করেছিলাম। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারলাম আমাদের এই কাজ দেখে উৎসাহিত হয়ে আমাদের স্কুলের পরিচালক এই মাটি ঠিক করার জন্য কিছু শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে। আর তার একদিন পরেই শ্রমিকরা চলে আসলো আর ঠিক করে দিল আমাদের স্কুলের খেলার মাঠ। এখন আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আনন্দের সাথে সেখানে খেলাধুলা করতে পারে। যদি আমরা ওইদিন এমন উদ্যোগ না নিতাম তাহলে হয়ত বা আজ পর্যন্ত আমাদের খেলার মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে থাকতো। এইজন্য আমি একটা জিনিস আপনাদেরকে বলতে চাই কোন কাজই ছোট নয়। আর সেই কাজটি যদি হয়ে থাকে নিজের কাজ তাহলে আমাদের সবারই উচিত নিজের কাজ নিজেই করা।
আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় বসবাস করি।আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশকে খুবই ভালোবসি।বর্তমানে আমি গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরী স্কুলের একজন শিক্ষক।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমি বিশ্বাস করি, আমার এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার সৃজনশীল কাজটি সার্থক হবে। তাই আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সৃজনশীল জিনিস নিয়ে উপস্থিত হতে।
আমার কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুক টুইটার
ওই মুহূর্তে দুইটা গান বলেছিলাম।
১। ধরো কোদাল মারো টান, মাটি কাটার অভিযান। আজকে ফিল্ড সাট হয়ে যাবে।
২। তুমি একবার এসে দেখে যাও, আমি মাটি কাটছি এখন।
দ্বিতীয় গানটা শুনে নয়ন বলেছিল স্যার এই গানটাকি মামি কে উদ্দেশ্য করে বলছেন নাকি?
যাইহোক, খুবই ভাল লাগল। ওই দিনের সেই কর্ম ব্যস্ততাময় মুহূর্তটা পুনরায় দেখতে পেরে।
আসলে আপনার গান দুইটা আমাদেরকে অনেক উৎসাহিত করেছিল কাজ করার সময়
কিছুদিন আগেও আপনাদের এইরকম একটা পোস্ট দেখেছিলাম সুমন ভাইয়ের। স্কুলের মাঠে দাগ কাটতে ছিলেন। দেখা ভালো লাগে ভাই আপনার এই ধরনের কাজ গুলো। নিজের কাজ নিজে করায় ভালো ভাই এটা কোন লজ্জা নাই। সেই সাথে খুব সুন্দর করে সবকিছু বর্ণনা তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আসলে আমরা দুজন সব সময় চেষ্টা করি স্কুলের উন্নতির জন্য কাজ করতে
ভাইয়া আপনার এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ নিজের কাজ নিজে করার মতো পরিতৃপ্তি আর কিছুতেই নেই। অনেকে কিন্তু নিজের কাজ নিজে করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। অন্যকে দিয়ে করালেই মনে করে যে নিজে বড় হয়ে যায়। আসলে এটি ভুল ধারণা নিজের কাজ নিজে করলে সুন্দর ভাবে করা যায় যে অন্যকে দিয়ে করানো যায় না।
আসলে আপু স্কুলের উন্নতির জন্য যত কিছু করার প্রয়োজন তা করতে আমরা দুইজন রাজি রয়েছি
আপনি ঠিক বলেছেন, আমরা একটু শিক্ষিত হয়ে গেলেই আর কাজ করতে চাই না। তখন শারীরিক পরিশ্রমকে আমরা অবজ্ঞার চোখে দেখি। যাইহোক আপনারা দুই শিক্ষক মিলে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা আসলেই প্রশংসার যোগ্য। আর আপনার ছাত্রটিও বেশ। সে যে সাহস করে আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য এসেছে এটাতেই তাকে বাহবা দেওয়া উচিত। ধন্যবাদ দারুন একটি পোস্টের জন্য।
এটাই আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা একটু শিক্ষিত হয়ে গেলেই আমরা আত্মঅহংকারী হয়ে যায়
নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ। নিজের কাজ নিজে করলে কাজের কষ্টটা বোঝা যায় ।আমার সব কাজ আমি নিজে নিজে করার চেষ্টা করি ।আপনাদের নিজের কাজ নিজে করার অনুভূতি দেখে আমি অনেক আনন্দিত। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে যদি কোন কাজের কষ্ট বুঝতে না পারা যায় তাহলে সেই কাজের কোন সার্থকতাই থাকে না
কথাগুলো একদম ঠিক বলেছেন ভাই নিজের কাজের মধ্যে অন্যরকম একটা শান্তি পাওয়া যায় আপনাদের স্কুলের ছাত্র গুলোও দেখছি কাজে লাগিয়েছে বিষয়টি বেশ চমৎকার। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অভিজ্ঞতাটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
ছাত্র গুলোকে আমরা কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম না তারা নিজেরাই এসে কাজ শুরু করে দিয়েছে
আপনার এই কথার সাথ আমি একদম একমত। নিজের কাজ নিজে করার চেয়ে আর কোন শান্তি কিছু নেই। কারণ কোন কাজ কিভাবে করতে হবে সেটা নিজের থাকে কেউ ভালো জানে না। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা থাকলো
এই কারণেই আমরা সব সময় চেষ্টা করে নিজেদের কাজ নিজেরা করতে