বিলুপ্তপ্রায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা
আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন
আমি @mostafezur001 বাংলাদেশ থেকে
আজকে শনিবার , অক্টোবর ১৫/২০২২
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে যে খেলাটি সম্পর্কে মতামত শেয়ার করতে চলেছি সেই খেলাটি সাথে আপনারা হয়তোবা অনেকেই পরিচিত। অনেকে এলাকায় এই খেলাটিকে গাদি খেলা বলা হয় আবার অনেক এলাকায় এটাকে গাদান খেলাও বলা হয়ে থাকে। সত্য কথা বলতে এই খেলাটির প্রকৃত নাম আমার জানা নেই কিন্তু আমাদের এলাকায় এটাকে গাদি খেলা বলা হয়ে থাকে। খেলাটি হচ্ছে আমার শ্বশুরবাড়ি ঠিক পাশেই তাই আমি প্রতিদিন বিকেলে সেখানে খেলা দেখতে চাই। ছোটবেলায় এই খেলাটা আমরা স্কুলে থাকাকালীন সময়ে খেলতাম অনেক দিন পরে এই খেলাটি পুনরায় দেখতে পেরে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে আমার কাছে। আর বিকেলে খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় তাই আমরা সকল বন্ধুরা একত্রিত হয়ে খেলা দেখতে চাই।
সত্য কথা বলতে এই খেলাটা বর্তমান সময়ে গ্রাম অঞ্চল থেকে অনেকটাই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় এই খেলাটিকে পুনরায় জাগ্রত করার লক্ষ্যে মূলত সহড়াবাড়ি গ্রামের মানুষেরা এই খেলার আয়োজন করেছে। খেলা দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে মানুষের আগমন হয় এইখানে। খেলা দেখার জন্য দর্শকের সংখ্যা কেমন হয় তা হয়তো বা আপনারা আমার শেয়ার করা ছবিগুলো দেখেই বুঝতে পারছেন।
এই খেলাটি খেলার জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম অনুসরণ করা হয়। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অবশ্যই প্লেয়ারকে খেলার ঘরের মধ্যে থাকতে হবে। আর গাদি দিতে হলে অবশ্যই তাকে লবণ খেয়ে গালি দিতে হবে। যদি কোন প্লেয়ার লবণ না খেয়ে গাদি দেয় তাহলে সেটা বাতিল বলে ঘোষণা করা হবে।
এই খেলাটি পরিচালনা করার জন্য অনেক পরিচালকের প্রয়োজন হয়। একজন প্রধান পরিচালক অর্থাৎ রেফারি থাকে এই খেলায়। আর সেই রেফারিকে সহযোগিতা করার জন্য প্রত্যেকটি দাগের দুপাশে একজন করে সহকারী রেফারির প্রয়োজন হয়। আসলে এই খেলাটিতে এত বেশি পরিচালক রাখার সব থেকে বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে যেন এই খেলাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়।
কেননা এখানে শহরের খেলা গুলোর মত বড় বড় ক্যামেরার কোন ব্যবস্থা নেই। শুধুমাত্র মানুষের চোখের দেখার উপর ভিত্তি করেই যে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর সেই সিদ্ধান্তগুলো যেন ভুল না হয় তার জন্য অধিক সংখ্যক পরিচালকের প্রয়োজন হয় এই খেলায়। আর একটা জিনিস আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে সেটি হচ্ছে এই খেলা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে রেফারি অন্য ধরনের একটা নিয়ম অনুসরণ করছে সেটি হচ্ছে যে দল ফিল্ডিং করছে তাদের হাতে রং মাখিয়ে দেয়া হচ্ছে। যেন তাদের স্পর্শ করা বিপরীত দলের প্লেয়ার কে খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায়। রং দেয়ার ফলে খুব সহজে কেউ এখানে মিথ্যা কথা বলতে পারবেনা আর সঠিকভাবে খেলাটি পরিচালিত হবে। ব্যক্তিগতভাবে অনেকদিন পর গ্রাম বাংলার এই হারিয়ে যাওয়া খেলাটি দেখতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমি এখন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রত্যেকদিন বিকেলে এখানে যে খেলা দেখব। আমার এই পোস্টটি যদি আপনারা পছন্দ করে থাকেন তাহলে চেষ্টা করে যাব প্রতিনিয়ত আপনাদের মাঝে এই খেলার আপডেট শেয়ার করতে। গ্রাম বাংলার এই হারিয়ে যাওয়া খেলাটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের এলাকায় এই খেলাটি কি নামে পরিচিত সেটাও আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের মূল্যবান মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।আজকের মত এ পর্যন্তই পরবর্তী সময়ে আপনাদের মাঝে দেখা হবে নতুন আরো একটা পোষ্টের মাধ্যমে।
আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় বসবাস করি।আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশকে খুবই ভালোবসি।বর্তমানে আমি গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরী স্কুলের একজন শিক্ষক।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমি বিশ্বাস করি, আমার এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার সৃজনশীল কাজটি সার্থক হবে। তাই আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সৃজনশীল জিনিস নিয়ে উপস্থিত হতে।
আমার কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুক টুইটার
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সেটা আপনি ঠিক বলেছেন অঞ্চল ভেদে হয়তোবা খেলাটির নিয়মের পার্থক্য থাকতে পারে
ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো। আপনি ঠিকই বলেছেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো এখন প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে । গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো এখন আর দেখাই যায় না। তবে আপনার আজকের খেলা টি আমি আজই প্রথম দেখলাম। আমি এর সঙ্গে একেবারেই পরিচিত না। গাদি বা গাদান খেলার নামটিও প্রথম শুনলাম। তবে খেলাটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে । খেলার বেশ কিছু নিয়ম কানুন আছে যেটি আমার কাছে ভালো লেগেছে । রেফারি এবং সহকারী রেফারি থাকবে এবং প্লেয়ারদের হাতে রং মাখিয়ে দেওয়া সত্যিই অন্যরকম ছিল। বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি দেখে।
মূলত বিলুপ্ত প্রায় খেলা গুলোকে পুনরায় জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন করা হয়েছে
উফ কতদিন পর দেখলাম এই খেলা।আগে আদের গ্রামে প্রায় এই খেলা খেলা হতো কিন্তু এখন কালের বিবর্তনে এই খেলা হয় না বললেই চলে।আর আমাদের এইদিকে এই খেলাকে কাবাডি খেলা বলা হয়।
ঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া এই খেলাটি অনেকদিন পরেই আমরা দেখতে পাচ্ছি কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া সেই খেলাগুলোই পুনরায় ফিরে আনার চেষ্টা চলছে।
ভাইয়া খেলাটি ভাল ভাবে বুঝার জন্য আপনার পোষ্টটি ভাল ভাবেই পড়লাম। কিন্তুু খেলাটি খেলতে কয়জন মানুষ লাগে বা কিভাবে পয়েন্ট হিসাব করা হয় এই সব বিষয়ে পূর্ণ ধারনা পেলাম না। আশা করি পরের বার সব তথ্য উল্লেখ করে পোষ্ট করবেন। কারণ খেলাটির নাম প্রথম শুনলাম। তাই জানার আগ্রহ বেশি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক আছে ভাইয়া আমি পরবর্তী পর্বে সকল বিষয়গুলো আপনাদের মাঝে সঠিকভাবে ধারণা দেবার চেষ্টা করব।
এই ধরনের খেলা দেখেছে কিনা আমার মনে পড়ছে না। আর এই খেলাটির নাম গাদি খেলা এটাও প্রথম শুনেছি। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে খেলাটা বেশ জমজমাট। আসলে এখন তো মাঠে-ঘাটে খেলার প্রচলন উঠে গেছে। ছেলে মেয়েরা শুধু মোবাইলে খেলতেই ব্যস্ত। মাঠে-ঘাটে এই ধরনের খেলা গুলো সত্যি আমাদের জন্য প্রয়োজন। আর এই খেলার নিয়ম টা আমার কাছে বেশ অদ্ভুত লাগলো। খেলায় এই ধরনের নিয়ম মনে হচ্ছে প্রথম শুনলাম। কিন্তু বেশ ভালোই উপভোগ করেছি। আমাদের জন্য এটি নতুন একটি বিষয় পেয়ে বেশ ভালো লাগলো।
আপু এই খেলাটা ইউটিউবে অনেক ভিডিও রয়েছে আপনি চাইলে সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন, অথবা আমি পরবর্তী পর্বে চেষ্টা করব আপনাদেরকে সুন্দরভাবে সকল বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেবার জন্য।