নতুন একটা কার্যক্রম হাতে নিলাম
আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন
আমি @mostafezur001 বাংলাদেশ থেকে
আজকে বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৫/২০২২
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি। আপনারা অনেকেই জানেন আমি পেশাগতভাবে একজন শিক্ষক। আমি সব সময় চেষ্টা করি আমাদের স্কুলটাকে অন্য সকল স্কুল থেকে একটু আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। এই আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা সবসময় নিত্যনতুন কার্যক্রম নিয়ে হাজির হয় যেগুলোর দ্বারা ছাত্রছাত্রীদের মেধার বিকাশ ঘটানো সম্ভব। সেই চিন্তাধারাকে কাজে লাগিয়েই আমরা আরো একটি নতুন কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করলাম। কার্যক্রমটি হচ্ছে এর বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রথম দিন হিসেবে প্রথমে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সকল নিয়ম-কানুন গুলো সম্পর্কে অবগত করলাম। এই বিষয়ে জান্নাতুল ম্যাডাম আমাদেরকে সাহায্য প্রদান করেছেন। আর আমরা বাকি শিক্ষকগুলো সেখানে উপস্থিত থেকে বিষয়টি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করছিলাম।
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে যখন নিয়ম কানুন গুলো ভালোভাবে অবগত করে দেয়া হয়েছিল আমি তাদের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম তারা খুবই মনোযোগ সহকারে কথাগুলো শুনছিল। আসলে এটা তাদের জন্য একটা নতুন অধ্যায় বলে আমি মনে করি। আমার কাছে আরও একটা জিনিস ভালো লেগেছে সেটি হচ্ছে এতোটুকু ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে আমরা এই ধরনের জিনিস শিখাতে চলেছি আর তারাও খুব আনন্দের সাথে এটা শিখতে ইচ্ছুক। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলোতে এই ধরনের কার্যক্রম একেবারেই লক্ষ্য করা যায় না কিন্তু আমাদের স্কুলটা গ্রামের পাশাপাশি হওয়া সত্ত্বেও আমরা এমন কিছু জিনিস চেষ্টা করছি যা আমাদের স্কুলটাকে অন্য দশটি স্কুল থেকে আলাদা করে দেয়।
নিয়ম-কানুন গুলো সম্পর্কে যখন অবগত করা শেষ হয়ে গেল তখন আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ শামসুল হোসেন ছাত্র ছাত্রীদের কে আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে অবগত করে দিলেন।
শামসুল স্যারের কথা বলা শেষ হয়ে যাবার পরে আমাদের স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কিছু বললেন যেন ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি উৎসাহ লাভ করে।
তারপরে আমি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে একটা বিতর্কের বিষয় নির্ধারণ করে দিলাম যেন তারা এই বিষয়টির উপরে উপস্থিত ভাবে বিতর্কে অংশগ্রহণ করতে পারে। আজকেই তাদের প্রথম বিতর্কের ক্লাস ছিল তাই তাদের জন্য আমি একটা সহজ বিতরকের বিষয় নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। আজকের বিতর্কের বিষয়টি ছিল শহরের জীবন অপেক্ষা গ্রামের জীবন আনন্দদায়ক। আসলে আমাদের স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী গ্রামে বসবাস করে তাই সবাই চাচ্ছিল এই বিষয়টির পক্ষে বক্তব্য প্রদান করতে।
পক্ষ দলে ছাত্রছাত্রীদের কে নিয়ে জান্নাতুল ম্যাডাম একটি দল গঠন করে এবং তিনি তাদেরকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন এবং তারা জান্নাতুল ম্যাডামের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বক্তব্য প্রদান করতে শুরু করে।
পরে আমি চিন্তা করলাম বিপক্ষ দলের ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে টিম তৈরি করতে। পরে আমি তাদেরকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে একটু দিকনির্দেশনা দিলাম। পরবর্তীতে আমি দেখতে পেলাম আমার দিকনির্দেশনা অনুসারে বিপক্ষ দলের সকলেই খুব ভালোভাবে বক্তব্য প্রদান করল। প্রথম দিন হিসাবে তাদের এই পারফরমেন্সে আমি খুবই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছে। আমি আশাকরি যে পরবর্তী সময়ে যদি আমরা তাদেরকে এই ধরনের দিকনির্দেশনা প্রতিনিয়ত দিতে পারি তাহলে তারা খুবই ভালো একটা অবস্থানে নিজেদেরকে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
আমরা এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের কে নিয়ে। আপনারাই চিন্তা করে দেখুন এত ছোট বয়সে ছাত্রছাত্রীরা যে এই ধরনের বিতর্কে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য সাহস গ্রহণ করেছে এটা কতটা বড় একটা বিষয়। আমি চাই তাদেরকে নিয়ে আমরা অন্যান্য সকল স্কুলের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই গ্রামের মধ্যে থেকেও অনেক কিছু। আসলে সত্য কথা বলতে একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করে দেখেছি আমাদের স্কুলের এই ধরনের ভালো ভালো কার্যক্রম দেখে পার্শ্ববর্তী সকল স্কুলের শিক্ষকেরা প্রচুর পরিমাণে হিংসা করতে শুরু করে দিয়েছে।
তারপরও আমি এবং আমাদের স্কুলের সকল শিক্ষকেরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন আমাদের এই স্কুলটা আমাদের জেলার মধ্যে একটা মডেল স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে সেই বিষয়ে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে। আপনারা তো অনেকেই আমার শেয়ার করা স্কুলের বিভিন্ন পোস্ট পড়ে দেখেছেন আপনারা অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন নতুন ধরনের এই উদ্যোগটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো। আপনাদের মূল্যবান মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় বসবাস করি।আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশকে খুবই ভালোবসি।বর্তমানে আমি গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরী স্কুলের একজন শিক্ষক।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমি বিশ্বাস করি, আমার এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার সৃজনশীল কাজটি সার্থক হবে। তাই আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সৃজনশীল জিনিস নিয়ে উপস্থিত হতে।
আমার কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুক টুইটার
খুব সুন্দর একটা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন আপনারা ভাই। এটা সত্যি গ্রাম অঞ্চলে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা গুলো একেবারে হয় না বললেই চলে। তবে বিতর্কের বিষয়টাও বেশ ভালো ছিল "শহরের জীবন অপেক্ষা গ্রামের জীবন আনন্দদায়ক" । আপনার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দেখে সত্যি খুব ভালো লাগলো। মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠুক তারা।
দেখা যাক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমাদের স্কুলটা একটু ব্যতিক্রম ভাবে সবার কাছে উপস্থাপন করার জন্য