কথায় আছে আগুন নিয়ে খেলা করা ঠিক নয় কিন্তু আমরা ছোটবেলা থেকেই একটা জিনিস আমাদের গ্রামে লক্ষ্য করে আসছি। সেই জিনিসটা মূলত আগুন নিয়ে খেলা করার মতোই একটা জিনিস। যদিও আপনাদের সবার কাছে আমার এই পোস্টটি কেমন লাগবে তা আমি জানিনা তারপরও আমি চেষ্টা করছি আমাদের গ্রামের ঐতিহ্যবাহী একটা জিনিস আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। ছোটবেলা থেকেই লক্ষ্য করে আসছি বিশেষ করে ঈদের আগের দিনে আমাদের গ্রামের ছেলেরা এই ধরনের আগুন নিয়ে খেলায় মেতে ওঠে। আমাদের গ্রামের ভাষায় এই জিনিসটাকে বলা হয় হাউই।

এই জিনিসটি তৈরি করার জন্য খুবই বড় আকৃতির পাতার প্রয়োজন হয়। এটা করার জন্য প্রথমে একটা বড় আকৃতির পাতা সংগ্রহ করা হয় এবং তারপরে সে পাতাটির মধ্যে ছোট ছোট কিছু ছোট করা হয় যেন ছোট ছোট গুলোর মধ্য দিয়ে আগুনের ফুলকি বের হতে পারে। তারপরে আগুন জ্বালানো হয় পাটকাঠির মধ্যে। এই জিনিসটা তৈরি করার জন্য অনেক পাটকাঠির প্রয়োজন হয় কেননা যত বেশি কয়লা পাওয়া যাবে তত বেশি পরিমাণে আগুনের ফুলকি তৈরি হবে।

যখন পাটকাঠি পুড়িয়ে অনেকগুলো কয়লা তৈরি করা হয়ে যায় তখন সেই কয়লাগুলো বড় একটি পাতার মধ্যে রেখে দড়ি দিয়ে খুবই শক্ত করে বেঁধে দেয়া হয়। পাতাটি খুবই সুন্দর ভাবে বাঁধা হয়ে যাবার পরে যে কোন একজন ছেলে সেই পাতাটিকে দড়ির সাহায্যে খুবই জোরে জোরে ঘুরাতে শুরু করে। দড়ি ঘোরানোর প্রথম অংশে আমরা তেমন কোন কিছু লক্ষ্য না করলেও আস্তে আস্তে আমরা লক্ষ্য করতে থাকি ওই পাতার মধ্যে আমরা আগে যে ছোট ফুটো করতে দেখেছিলাম সেই ফুটোর মধ্যে দিয়ে ছোট ছোট আগুনের ফুলকি বের হতে শুরু করছে। যত বেশি সময় অতিক্রম হতে থাকে আগুনের ফুলকির সংখ্যা ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। একপর্যায়ে লক্ষ্য করা যায় প্রচুর পরিমাণে আগুনের ফুলকি পাতার ওই ছোট ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে বের হতে শুরু করেছে। এটা দেখে মনে হয় যেন অনেকগুলো জোনাকি পোকা একসাথে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। বিশেষ করে একটু অন্ধকারাচ্ছন্ন রাতে করলে সব থেকে বেশি ভালো উপভোগ করা যায়।