ভিন্ন রকমের একটা অভিজ্ঞতা অর্জন
আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন
আমি @mostafezur001 বাংলাদেশ থেকে
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন, সত্য কথা বলতে আমি খুব একটা বেশি ভালো নেই। গত কয়েকদিন যাবত খুবই সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছি যার ফলে আপনাদের মাঝে খুব একটা ভালোভাবে সময় দিতে পারছি না। পৃথিবীতে এখনো প্রচুর মানুষ রয়েছে যাদেরকে আমাদের চেনা বাকি রয়ে গিয়েছে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ভিন্ন রকমের একটা কাহিনী শেয়ার করবো।
গত কয়েক সপ্তাহ থেকে দেখছিলাম আমাদের গ্রামের কিছু ছেলেরা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরির জন্য ঘোরাফেরা করছে ,শুনেছিলাম তারা সেখান থেকে ট্রেনিং ও করে এসেছে। তাদের এই চাকরির খবর শোনার পরে আমাদের গ্রামের বিভিন্ন লোকেরা আমাদের বয়সের ছেলেমেয়েদেরকে বলতে শুরু করলো তোমরা কি করছ এত বড় হয়ে গিয়েছো আজ পর্যন্ত ভালো কোন চাকরি করো না দেখো ওরা এত অল্প শিক্ষিত হবার পরেও কত টাকা বেশি বেতনের একটা চাকরি পেয়ে গেল । যখন তাদের কথাগুলো শুনছিলাম মনের মধ্যে অন্য রকমের একটা রাগ চলে আসছিল ভাবছিলাম যদি আমিও ওদের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি করতে পারতাম তাহলে হয়তো বা মানুষেরা এই কথাগুলো আমাকে আর বলতে পারতো না।
যেমন চিন্তা তেমনই কাজ আমাদের গ্রামের ওই সকল ছেলে-মেয়েদের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করলাম যারা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরির জন্য ট্রেনিং করে এসেছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করার পরে জানতে পারলাম আমাদের পাশের গ্রামের একজন মানুষ তাদের সবাইকে চাকরি দিয়েছে তারা নাকি বিভিন্ন বড় বড় পদের অফিসার হয়ে গিয়েছে। তাদের কাছ থেকে নাম্বার নিলাম ওই বড় ভাইয়ের দু একদিন পরে দেখতে পেলাম সেই বড় ভাই আসলো আমাদের গ্রামে সবার সাথে দেখা করার জন্য। আমিও গেলাম সেখানে তাদের সাথে দেখা করতে দেখতে পেলাম সেই ভাই তাদেরকে কাজ বোঝাচ্ছে কিভাবে কি কাজ করতে হবে।
আসলে কথায় আছে দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথা তার কথা শুনে আমিও বলে গেলাম। আমিও চিন্তা করতে শুরু করলাম স্কুলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে আমিও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরির জন্য যাব। সেই হিসেবে বাড়িতে এসে কথা বললাম আর বাড়ি থেকেও সম্মতি দিয়ে দিল কেননা কোন সময় আমার বাড়ি থেকে আমাকে কোন কাজে বাধা দেয় না। আর এটাই ছিল আমার জীবনের বড় একটা ভুল। তখন আমি সেই ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলাম এবং সে আমাকে সকল ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে বলল একই সাথে সে আমাকে এটাও বললো যে প্রত্যেকের মত আমাকেও দশ হাজার টাকা জামানত হিসাবে জমা দিতে হবে। তখন আমি কোন খোঁজ খবর না নিয়েই আমাদের গ্রামের ওই সকল ছেলেদের উপর বিশ্বাস করে তাকে ১০ হাজার টাকা জমানোর হিসাবে দিয়ে দিলাম। পরবর্তীতে জানতে পারলাম আমাদের গ্রামের প্রায় ১৫ জন যুবক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরির জন্য যাবার জন্য ১০ হাজার টাকা করে জামানত দিয়েছে। প্রথমত ব্যাপারটি জানার পরে আমার কাছে ভালই লাগলো আমরা চিন্তা করতে থাকলাম যে আমরা সবাই একত্রিতভাবে একটা জায়গায় কাজ করব তাহলে তো কাজের সাথে সাথে মজাও হবে অনেক বেশি।
কিন্তু আসল ঘটনা আসলো যেদিন আমাদের চাকরিতে যাবার কথা সেদিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন আমরা চাকরির জন্য বের হব তখন জানতে পারলাম আমাদেরকে যে বড় ভাই চাকরির জন্য নিয়ে যাবে সে একজন চিটার। আসলে সে আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে আর তার মোবাইল ফোন বন্ধ। ঘটনাটি শোনার পরে প্রচুর পরিমাণে রাগ হয়ে গেল আমরা সকলে ছুটে চলে গেলাম ওই ভাইয়ের বাড়িতে। সকলে তার বাড়িতে যেয়ে অনেক কথা শুনে আসলাম আর সাথে কিছু হুমকিও দিয়ে আসলাম। আজ কয়দিন হয়ে গেল সেই ভাই আর তার মোবাইলটা খুলছে না আমরা তো সবাই দিশেহারা হয়ে গিয়েছে যদিও প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছে এটা খুব একটা বড় সংখ্যা না কিন্তু সবার টাকা একত্রিত করলে সেটা একটা বড় সংখ্যায় রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে। আজকে বিকেলেও আমরা সবাই তার বাড়িতে গিয়েছিলাম খোঁজখবর নেয়ার জন্য সেখানে যাবার পরে জানতে পারলাম সে একজন সত্যিকারের বড় বাপের চিটার। এর আগেও সে এমন করে অনেক জায়গা থেকে টাকা নিয়ে এসেছে।
এই চিটার কে যদি ধরতে পারি তাহলে কি করব আপনারাই বলে দিন।
আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় বসবাস করি।আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশকে খুবই ভালোবসি।বর্তমানে আমি গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরী স্কুলের একজন শিক্ষক।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমি বিশ্বাস করি, আমার এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার সৃজনশীল কাজটি সার্থক হবে। তাই আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সৃজনশীল জিনিস নিয়ে উপস্থিত হতে।
আমার কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুক টুইটার
আসলে গ্রামে বেশিরভাগ সময় এরকমটাই হয়ে থাকে। একজন কিছু একটা করল তো ওনারা সবাই ওর কথা বলে উপহাস করতে থাকে। কিন্তু এসব কিছুই পাল্লায় পড়া একদম উচিত নয়। কিন্তু আপনিও গ্রামের সবার কথা শুনে এরকম একটা চিটারের পাল্লায় পড়লেন। আসলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি পাওয়াটা অতটা সহজ বিষয় নয় যে শুধুমাত্র দশ হাজার টাকা দিলেই চাকরি হয়ে যাবে। ১৫ জন থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছে চিটার। এর জন্যই গ্রামের ছেলেরা কিছু করতে চাইলেও করতে পারে না। চিটার কে ধরতে পারলে সবাই আছে মতো পিটা দিয়েন। তাহলে এই মনের একটুও জ্বালা মিটবে।
অপেক্ষায় রয়েছি তার সাথে যদি একবার দেখা হয় তারপরে বোঝাপড়া হবে
আপনার লেখাটা পড়ে খুবই খারাপ লাগলো ।এ ধরনের চিটারের পাল্লায় পড়লে সত্যি মনটা ভেঙে যায়। তবে প্রথমে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত ছিল ১০ হাজার টাকা জামানত চাকরির আগে কেন দিতে হবে ?এ ধরনের জামানত দেয়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগই মিথ্যে প্রমাণিত হয়। তবুও ভালো যে আপনার কম টাকার উপর দিয়ে গিয়েছে ।তবে সবার টাকা একত্রিত করলে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে লোকটি পালিয়েছে যেটা একটা বড় এমাউন্ট। লোকটিকে ধরতে পারলে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত।
লোকটি কতদিন আর পালিয়ে থাকতে পারবে একদিন না একদিন তো তার ধরা পাবই
আপনার আজকের বাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন আমিও হয়ে গিয়েছিলাম প্রায়। তবে সেই অভিজ্ঞতার দ্বারপ্রান্তে যেয়ে ফিরে এসেছিলাম যার জন্য আফসোস একটু কম। হয়তো হতাশাগ্রস্ত হয়েছি তারপরেও এতটা ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি। তবে সচেতন হতে পেরেছি।
আপনার ভাগ্যটা অনেক ভাল ছিল না হলে আপনিও আমাদের মত ভোগান্তির শিকার হয়ে যেতেন না