গল্প কথা: অদ্ভূদ সেই ছেলেটি।

আমার সকল প্রিয় ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা অসীম রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবসময় চাইবো আপনারা ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।

সোর্স

আমি আজ আপনাদের মাঝে আমার দেখা বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে একটি গল্প শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। তাহলে শুরু করছি গল্পটি।

শহর থেকে একটু দূরে বয়ে গেছে একটি বিখ্যাত নদী। নদীরটির নাম হচ্ছে যমুনা নদী। সেই যমুনা নদীর ঘেঁষেই রয়েছে একটি সুন্দর গ্রাম। গ্রামের নাম হচ্ছে গিলাবাড়ী। আকা বাঁকা মেঠো পথ, সারি সারি রয়েছে গাছ। আরও রয়েছে অনেক কিছু। গ্রামটি আরও সুন্দর করে তুলেছে সেই বিখ্যাত যমুনা নদী।

এই গ্রামটির মাঝে একটি বাড়ী ছিল। বাড়ীটি ছিল একেবারে নদীর পাড়ে। সেখান ছোট্ট একটি পরিবার বসবাস করত। সেই পরিবারে সদস্য ছিল মোট তিনজন। মা বাবা ও তাদের একটি পুত্র সন্তান ছিল। বেশ ছোট পরিবার বললে চলে। সেই পরিবারটি মনের দিক দিয়ে তারা অনেক সুখী ছিল। কিন্তু তাদের আর্থি অবস্থা দিক থেকে তারা ভালো ছিলেন না। কারন সেই যমুনা নদী তাদের অর্থ সম্পদ বিলীন করে দিয়েছে। সেই পরিবারটি সব কিছু হারিয়েও তাদের দেখে মনে তারা কিছুই হারায়নি। তাদের দারিদ্র্যতা কাউকে বুজতে দেয়নি। এক দুমুঠো খাবারের জন্য সেই পরিবারটি কারো কাছে হাত পাতেনি।

যাইহোক, সেই পরিবারের ছেলেটির নাম হচ্ছে ইয়াসিন। ইয়াসিন খুব সহজ সরল শান্ত স্বভাবের ছেলে। মাথায় কুড়ানো কুড়ানো চুল। চোখ গুলো ছোট ছোট। সবসময় ঢিলে ঢালা ও লম্বা পোশাক পড়তে পছন্দ করে। ইয়াসিনের গানের গলা খুব সুন্দর। সে গান গাইতে ভালোবাসে। ইয়াসিনের পল্লী গীতি গান গাইতে পছন্দ করে। সে সুখে থাক দুঃখে থাক অবসর সময়ে নদীর পাড়ে বসে গান গাইতো। মুখে সবসময় হাসি লেগেই থাকে। আমার মনে হতো পৃথিবীর সবচেয়ে একজন সুখী মানুষ।

ইয়াসিন লেখা পড়া দিক থেকেও ভালো ছাত্র ছিল। সে স্পষ্ট ভাষায় ইংলিশ বলতে পারে। ইয়াসিনকে স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্র এবং ছোট বড় সবাই পছন্দ করত। সবার প্রিয় হতে হলে মানুষের মধ্যে গুন থাকা প্রয়োজন। ইয়াসিনের মধ্যে সেই গুন গুলো রয়েছে। ইয়াসিনকে কেউ যদি কোন কাজ করতে বলতো। সে নির্দ্বিধায় কাজ করে দিতো। ইয়াসিন এর কাছ কেউ গান শুনতে চাইলে। সে সবাইকে শুনিয়ে আনন্দ দিতো।

ইয়াসিনকে কেউ আঘাত করলে তাকে কখনো কিছু বলতো না। করো কাছে অভিযোগ দিতনা। ইয়াসিন তার মুখের হাসি দিয়ে সবকিছু মিটিয়ে নিতো। ইয়াসিনকে আমি কখন কাদতেঁ দেখিনি। হাজারো দুঃখ বেদনার মাজেইও আমি হাসতে দেখিছি। শুধু একদিন ইয়াসিনকে আমি অঝরে কাদতেঁ দেখেছি।
যেদিন ইয়াসিনের বাবা পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান। সেদিন আমার গলা জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল। আমাকে বলেছিল ভাই আমার মা ছাড়া পৃথিবীতে কেউ রইলো না।

ইয়াসিন আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ। ইয়াসিনকে আমি দেখেছি কেউ অসুস্থ হলে তাকে যদি বলা হতো।
অসুস্থ লোকটির জন্য ওষুধ কিনে আনতে। ইয়াসিন ছুটে যেত সাহায্য করার জন্য গভীর রাতেও তাকে আমি সাহায্য করতে দেখেছি। সে হয়তো অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে পারতো না। কিন্তু শ্রম দিয়ে সবাইকে সাহায্য করে। কারন অর্থ দিয়ে মানুষকে সাহায্য করার মতো তার সমর্থ ছিলো না।

কিছু দিন আগের কথা আমি ঢাকা থেকে দেশের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। আমার যেতে অনেক রাত হয়েছিল। আমি শুধু ফোন করে বলেছিলাম। আমাকে একটু এগিয়ে নিয়ে যেতে। আমাকে রিসিভ করার জন্য রাতের অন্ধকারে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করেছিল।
ইয়াসিন তার কষ্টের প্রতিদান করো কাছে চায়নি। কেউ তাকে ইচ্ছা করে প্রতিদান দেইনি। ইয়াসিন এর করো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। গরীব বলে ইয়াসিন আজও অবহেলায় রয়ে গেল। এখনো তার মুখে হাসি দেখি। আমার কাছে ইয়াসিনকে অদ্ভুদি লাগে।

ধন্যবাদ সবাইকে,

🌹আমার পরিচয়🌹

ধন্যবাদ

@mosarofhosen