জেনারেল রাইটিং-বন্যার ভয়াবহতা||

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার


আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে লিখতে আমার ভালো লাগে। তবে এবার যেই বিষয়বস্তু নিয়ে লিখতে বসেছি সেই বিষয়বস্তু সত্যি অনেক ভয়াব।হ বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি অনেক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। তাই তো সেই বিষয় নিয়ে কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি।


বন্যার ভয়াবহতা:

bangladesh-5939912_1280.jpg

Source


বন্যার ভয়াবহতা শুধু তারাই উপলব্ধি করতে পারছে যারা এই পরিস্থিতির মধ্যে সময় পার করছে। বন্যা দুর্গত সেসব অসহায় মানুষগুলো হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। একদিকে না খেয়ে থাকার কষ্ট অন্যদিকে নিজের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়া সবকিছু মিলে যেন জীবন তাদের দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেটে ক্ষুধা আর মুখে হতাশা নিয়ে এক টুকরো মাথা গুজার ঠাই খুঁজছে তারা। মাঝে মাঝে হতাশায় তলিয়ে যাচ্ছে তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায় ভাবে দিন কাটছে তাদের। বন্যার ভয়াবহতা হয়তো না দেখলে উপলব্ধি করা যায় না। আমরা যারা এই পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি তারা হয়তো সেটা বুঝতে পারব না। বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল আর অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম গুলোতে বন্যার ভয়াবহতার কথা শুনে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। খারাপ লাগে সেসব অসহায় মানুষগুলোর জন্য যারা নিজের থাকার জায়গাটুকুও হারিয়েছে।


আমাদের সমাজে এমন অনেক মধ্যবিত্ত মানুষ আছে যারা দু-চারটে গবাদি পশু পালন করে নিজের সংসার চালায়। বন্যার পানি যখন তাদের বসতবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায় তখন সে সব ছোট ছোট গবাদি পশুর মৃতদেহ পানিতে ভেসে ওঠে। হয়তো কিছুই করার থাকেনা। দূর থেকে তাকিয়ে দেখা ছাড়া। নিজের কষ্টে লালিত গৃহপালিত পশু গুলো যখন বন্যার পানিতে ভেসে যায় তখন অসহায় সেই মানুষগুলোর হাহাকার দেখলে হৃদয় কেঁদে ওঠে। অনেক স্বপ্নে লালন করা সম্পদ গুলো যখন পানির নিচে বিলীন হয়ে যায় তখন যেন নতুন করে স্বপ্ন দেখা ধোঁয়াশার মতো মনে হয়। সেই সময় তাদের চোখে মুখে লেগে থাকে হতাশার চাপ। দুমুঠো খাবার পাওয়ার আকাঙ্খায় ব্যাকুল হয়ে ওঠে মন। নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। একবেলা পেট ভরে খাওয়ার মত অবস্থা থাকে না তাদের। অনাহারে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে যখন তারা নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখে তখন হঠাৎ করেই আবারো হতাশা নেমে আসে।


কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাদের অতি যত্নে চাষ করা সবজিগুলো কিংবা ফসলগুলো যখন বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে যায় তখন কৃষকের মন হাহাকার করে ওঠে। চোখের সামনে ভেসে যায় তাদের স্বপ্নগুলো। বন্যার পানিতে ভেসে যায় তাদের মনে লালন করা রঙিন স্বপ্নের ছোঁয়া। সবকিছু যেন ধোঁয়াশা হয়ে যায়। সেইসব দৃশ্য দেখে কৃষক হৃদয় হাহাকার করে ওঠে। আর চিৎকার করে বলতে চায় বাঁচার শেষ সম্বলটুকু যে হারিয়ে ফেললাম। আবার প্রতীক্ষায় থাকে বন্যার পানি চলে যাওয়ার। বন্যা শেষ হতে না হতেই নতুন স্বপ্নে যখন আবারও জাল বুনে ও নতুনভাবে সবকিছু শুরু করতে চায় তখনও নেমে আসে হতাশা। হয়তো আবারও দমকা হাওয়া এসে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বারবার ভেঙে যায় তাদের স্বপ্ন।


হয়তো অনেকেই নিজের জীবন বাঁচাতে প্রিয় ভিটেমাটি ছেড়ে এসেছিল। যখন বন্যার পর তারা নিজের ভিটে মাটিতে ফিরল তখন সবকিছু দেখে যেন চিৎকার করে কাঁদলো। ঘরের অস্তিত্বটুকুও বোঝা যাচ্ছে না ঠিকমতো। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে প্রিয় মানুষের কবরটাও। হয়তো বিলীন হয়েছে পানির স্রোতে। আর বাস্তব জীবনের নির্মমতা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে সেসব অসহায় মানুষদের। হয়তো সময়ের সাথে সাথে তারা আবারও নতুন করে বাঁচতে শিখবে। কিন্তু তাদের সেই কষ্টের সময়টা সারা জীবনের জন্য তাদের মনে দাগ কেটে যাবে। হয়তো কখনো ভুলে যাবে নিজেদের কষ্টগুলো কখনো বা আতঙ্কে দিন কাটবে তাদের।


বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তাই আমরা যদি যে যার জায়গা থেকে নিজেদের আশেপাশের মানুষগুলোকে সাহায্য করি তাহলে তারাও হয়তো একবেলা খেয়ে বাঁচতে পারবে। কিংবা বন্যা পরবর্তী সময়ে যদি আমরা সেসব মানুষের পাশে দাঁড়াই বা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে আমাদের চারপাশের বৃত্তবান মানুষদের উৎসাহ দেই সেসব মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে তাহলে হয়তো তারা আবারও নতুন করে বাঁচতে শিখবে। আবারো নতুন করে ঘর বাঁধতে শিখবে।



আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230828_190629.jpg

আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।

Sort:  
 10 months ago 

আমাদের এদিকে গত দুদিনের বৃষ্টির কারণে বলতে গেলে বন্যার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে আপু। আমাদের পুকুর পানির নিচে তলিয়ে গেছে, খুবই চিন্তিত ছিলাম আসলে। আল্লাহ তায়ালা যেন এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাউকে না ফেলে সেটাই কামনা করছি। তবে যারা বন্যায় ঘরবাড়ি হারায় তাদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত

 10 months ago 

সত্যি ভাইয়া এরকম পরিস্থিতিতে যারা পড়েছে তারা শুধু বুঝতে পারবে এর ভয়াবহতা। ঘরবাড়ি হারানো মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো উচিত ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, কৃষি সমাজের প্রায় অনেকটা অংশই ডুবে যায় বন্যায়। আর যারা এই দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে তাদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়।তাদেরকে যদি আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই তাহলে তারা স্বস্তিতে কিছুদিন চলতে পারবে। আমাদের সবার উচিত নিজেদের জায়গা থেকে বন্যার দুর্যোগ কবুলীতো লোকদের সাহায্য করা। ধন্যবাদ আপু এরকম একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু বন্যার পানিতে কৃষকের ফলানো ফসল গুলো যখন ডুবে যায় তখন দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আর চারপাশে হাহাকার শুরু হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে আপু মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে দেশ।
ছাতার মাথা ফ্লাইওভার আর লুটতরাজ করে দেশ অর্থনৈতিক অবস্থা আজকে চাঙ্গে উঠেছে।
গরিব মানুষ বাঁচলো না বানের জলে ভেসে গেছে দেখার কেউ নেই এদেশে। আমরা শুধু দেখে হতাশার নিঃশ্বাস ফেলতে পারবো আর কিচ্ছু হবেনা এদেশে।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া উন্নয়নের জোয়ারে ভাসতে দেশ। আর সেই উন্নয়নে অনেকে ঘর বাড়িও হারিয়ে ফেলছে। নিঃস্ব হয়ে পথে দাঁড়াচ্ছে।

 10 months ago 

এই বন্যা গ্রামের মানুষের জীবনে চরম বিপর্যয় নিয়ে আসে। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে তারা। নিউজে এরকম ভয়াবহতার ঘটনা গুলো দেখলে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। আসলেই আমাদের সবার উচিত নিজের সাধ্যমত তাদের সাহায্য করা।

 10 months ago 

সত্যি আপু গ্রামের মানুষরা অনেক বেশি কষ্ট করছে বন্যায়। তাদের জীবনে নেমে এসেছে অনেক কষ্ট। আর তাদের বিপর্যয় সবাইকেই কষ্ট দেয়। মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

আপনার কথাগুলো পড়ে বুকের মধ্যে একেবারে হাহাকার করে উঠল আপু। আল্লাহ ঐ লোকগুলোকে হেফাজত করুক। আসলেই বন‍্যায় আমাদের দেশের অসহায় মানুষগুলো একেবারে নিঃস হয়ে পড়ে। ঘরবাড়ি ফসল সম্পদ সবকিছুই হারায়। কিন্তু ঐ যে সবকিছুই নিয়তি।।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

সত্যি ভাইয়া সেসব অসহায় মানুষগুলোর কথা ভাবলে অনেক খারাপ লাগে। আর বন্যা তাদেরকে একেবারে নিঃস্ব করে ফেলে। ফসল ঘরবাড়ি সবকিছুই শেষ হয়ে যায়।

 10 months ago 

জী আপু আপনি ঠিক বলেছেন। বন্যার ভয়াবহতা তারা বুঝে যারা এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। বন্যার সময় সব থেকে বেশি কষ্ট করে গৃহপালিত গবাদি পশু,বাচ্ছারা ও বৃদ্ধরা। আবার খাবার পানির কষ্ট করতে হয়। আপনি বন্যার ভয়াবহতার গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।

 10 months ago 

আসলেই বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। তাই আমাদের উচিত যথাসম্ভব বন্যা দুর্গত মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করা। কারণ তারা বর্তমানে একেবারে অসহায়। বিশুদ্ধ পানি, খাবার, জ্বর ঠান্ডার ঔষধ তাদেরকে সরবরাহ করা উচিত। দেখে সত্যিই খুব খারাপ লাগে কৃষকদের ফসল পানিতে একেবারে তলিয়ে গিয়েছে। গবাদিপশু গুলো মরে পানিতে ভেসে উঠছে। এইসব দৃশ্যগুলো সত্যিই মর্মাহত করে। খুব শীঘ্রই যেন বন্যার পানি কমে যায় সেই কামনা করছি। যাইহোক সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59991.95
ETH 2664.96
USDT 1.00
SBD 2.45