জেনারেল রাইটিং-আহারে জীবন||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। সকাল থেকেই আজ মনটা ভীষণ খারাপ। আমাদের কাছের এক রিলেটিভ গতকাল রাতে মারা গিয়েছেন। আসলে এই ক্ষণিকের দুনিয়ায় আমরা সবাই ক্ষণস্থায়ী। হয়তো সব মান অভিমান কিংবা কষ্টের অবসান একদিন হবে। হয়তো এভাবেই একদিন সবাই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে। তাইতো নিজের অনুভূতি থেকে কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি।
আহারে জীবন:
মাঝে মাঝে জীবনের হিসেব মেলাতে গেলে হিসেবের খাতা শূন্য পরে রয়।কত অভিমান, কত ভালোবাসা কিংবা অবহেলা সবকিছুকে পিছনে ফেলে একদিন সবাইকে চলে যেতে হয়। ঐশ্বর্য, সম্পদ কিংবা অহংকার সবকিছুই একদিন বিলীন হয়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্ত যেন কমে আসে। সময় যত চলে যায় তত বেশি ঘনিয়ে আসে মৃত্যু। জীবন থেকে হারিয়ে যায় মূল্যবান কিছু। হয়তো সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে মৃত্যুর সেই সময়টা আরো বেশি ঘনিয়ে আসে। আর হারিয়ে ফেলি ক্ষনিকের জীবন। এভাবেই হয়তো কেটে যায় জীবনের দিনগুলো। কখনো ভালো থাকি আমরা কখনো বা হতাশায় দিন কাটে।
মাঝে মাঝে মনে হয় ক্ষনিকের জীবনে একটু ভালো থাকাটাও যেন কঠিন হয়ে যায়। আজকে সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে যখন একজন পরিচিত মানুষের মৃত্যুর খবর শুনেছি তখন সত্যিই অনেক খারাপ লেগেছে। কিছুদিন আগেই বাসায় গিয়ে জানতে পেরেছিলাম উনার কিডনির সমস্যা হয়েছে। তাই জমি বিক্রি করে বাহিরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এরপর যখন দ্বিতীয়বার বাড়িতে গেলাম তখন জানলাম উনার ছেলে নাকি মানুষের কাছে ৩৫ লক্ষ টাকা ধার করে কোন এক খেলায় হেরেছে। কথাটা শুনে সত্যিই খারাপ লেগেছিল। একদিকে মানুষটা নিজেই অসুস্থ ছিল অন্যদিকে ছেলের এই কর্মকান্ড সবমিলিয়ে বেচারা একেবারে নাজেহাল হয়ে গিয়েছিল।
মা-বাবা সব সময় সন্তানকে আগলে রাখে। তাইতো সেই চাচা নিজের চিকিৎসার জন্য যোগাড় করা টাকাগুলো ছেলের পাওনাদার দেরকে দিয়েছিল। ভেবেছিল টাকার জন্য যদি ছেলেটার কেউ কোনো ক্ষতি করে ফেলে তাহলে সে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না। আসলে বাবার মন কত কথাই বলে। তাইতো তিনি নিজের চিকিৎসার টাকা দিয়ে ছেলেকে ঋণমুক্ত করেছেন। একমাত্র ছেলেকে আগলে রেখেছেন। হয়তো তখন তার নিজের জীবনের কথা চিন্তায় আসেনি। হয়তো ভেবেছিলেন যে কটা দিন বাঁচবো সেই কটা দিন না হয় ছেলের হাসি মুখ দেখেই বাঁচবো।
কিন্তু মাঝে মাঝে সন্তানরা বড় স্বার্থপর হয়ে যায়। নিজের খামখেয়ালির খেসারত দিতে হয় বৃদ্ধ বাবা মাকে। হয়তো তাদের জীবন দিয়েও সেই ভুল শুধরাতে পারে না তারা। হয়তো তিনিও সুস্থভাবে আবারও বাড়িতে ফিরে আসতে পারতেন। হয়তো আবারও পৃথিবীতে কিছুদিন বাঁচতে পারতেন। কিন্তু নিজের সন্তানের ভুলে তার জীবনটাও অকালে চলে গেল। হয়তো সেই টাকা দিয়ে ওনার ভালো চিকিৎসা হতো। উনি আরো কিছুদিন হাসি মুখে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকতেন। কিন্তু সন্তানের এই অন্যায় আবদার পূর্ণ করতে গিয়ে উনাকে যেমন মানসিক প্রেসারে পড়তে হয়েছিল তেমনি নিজের জীবনটাও দিতে হলো।
আমরা আমাদের এই খনিকের জীবনে যদি একটু ভালো থাকতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের আপন মানুষগুলোকে ভালো রাখতে হবে। তারা যদি হাসিমুখে বেঁচে থাকে তাহলে আমাদের জীবনের সার্থকতা আসবে। হয়তো তাদের হাসির মাঝেই আমাদের জীবনের সব সুখ লুকিয়ে আছে। তাই আমার নিজের উপলব্ধি থেকে বলতে চাই আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের প্রিয় মানুষগুলোকে ভালো রাখার চেষ্টা করব। কারণ জীবন তো একটাই। জীবন প্রদীপ নিভে গেলে আর কখনোই ফিরে আসবে না। আর আপন মানুষগুলো আর কখনোই এই পৃথিবীতে চিরদিন বেঁচে থাকবে না। তাই ক্ষনিকের এই জীবনে সবাইকে ভালোবেসে বাঁচতে হবে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
সত্যি আপু আজকের এই পোষ্টটি অসাধারণ ৷ যদি বলি আমাদের মতো প্রতিটি ছেলের জ্ঞানের আধার হিসেবে কাজ করবে৷ আসলেই মাঝে মধ্যে মনে জীবনের খাতায় কিছুই নেই শূন্য ৷
ছেলের জীবন কিংবা ভালো থাকার জন্য বাবার জীবনটা অকালে চলে গেলো ৷ এ জন্য আমার মাঝে মধ্যে হয় যে টাকা অর্থ সম্পদ এক সময় জীবনকে ধরে রাখতে পারে না ৷
তবে শেষ কথাটি একদম যথার্থ বলেছেন ৷
সত্যি ভাইয়া আমাদের এই ক্ষনিকের জীবনে সবকিছুই মূল্যহীন। তাই সবাইকে ভালোবেসে বাঁচা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সত্যি আপু আমাদের সবারই উচিত জীবনকে ভালোবাসার। আসলে কিছু কিছু ছেলে মেয়েদের জন্য বাবা মার এমন পরিস্থিতি হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি বাবা মা যায় তার সন্তানকে আগলে রাখতে। আর এধরনের কাজের জন্য বাবা মার জীবন একেবারে শেষ।
ঠিক বলেছেন আপু আমাদের সবারই উচিত জীবনকে ভালোবাসা। আর মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তখন সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়।
এমন ঘটনা প্রায় আমাদের কানে এসে থাকে। কিছুদিন আগে ৩৫ লক্ষ না ৩০ লক্ষ এর একটা বিষয় নিয়ে ঘটনা ঘটেছে আমাদের গ্রামেই। অনলাইনে প্রতারনার হাতে স্বীকার হয়েছে শুনেছি। তবে আমার মাথায় কখনো বুঝে আসেনা লোকের কাছে টাকা ধার নিয়ে কোন ভরসায় মানুষ এই কাজে পা রাখে। তবে যাই হোক আপনার এই পোস্ট কিন্তু জনসচেতন মূলক। হয়তো অনেকে এই থেকে সচেতন হয়ে যাবে।
আপনাদের অঞ্চলেও এরকম ঘটনা ঘটেছে জেনে সত্যিই খারাপ লাগলো ভাইয়া। আসলে এই ধরনের ঘটনাগুলো শুনলেও অনেক খারাপ লাগে।
বর্তমানে অনলাইনে এমন কিছু জুয়ার সাইট রয়েছে, এক মুহুর্তের মধ্যেই অনেক টাকা হেরে যায়। আমাদের এদিকেও এমনটা শোনা যায় মাঝেমধ্যে। যাইহোক লোকটার জন্য খুবই খারাপ লাগলো। লোকটা আসলেই খুব ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। নিজের জীবন দিয়ে সন্তানকে ঋণ মুক্ত করলেন। সন্তান যদি এই ভুলটা না করতো,তাহলে লোকটা এই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করে হয়তোবা সুস্থ হতে পারতেন। আসলেই বাবার কোনো তুলনা হয় না। আমাদের সবার উচিত এই ছোট্ট জীবনে পরিবারের সবার সাথে মিলেমিশে থাকা। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে আপু কিছু কিছু মানুষের ভুল যেগুলো তাকে সারা জীবন ধরে পস্তানোর জন্য যথেষ্ট। যে মানুষটা তার নিজের চিকিৎসার টাকা দিয়ে ছেলের ভুল পথে খরচ করা ৩৫ লক্ষ টাকা শোধ করে দেয়, সে নিতান্তই একজন ভালো মানুষ এবং সন্তানের প্রতি তার যে দায়িত্ব সে সেটা অবশ্যই সঠিকভাবে পালন করেছে। কিন্তু তার সন্তান পিতার প্রতি যে দায়িত্ব, সেটা বিন্দুমাত্র পালন করেনি কিংবা চেষ্টাও করেনি। এরকম সন্তানের জন্য পিতা-মাতার এত দরদ থাকে কেন, সেটাই হলো সব থেকে বড় প্রশ্ন। তবে যে মানুষটা এত বড় কনসিডার করে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন, সৃষ্টিকর্তা যেন থাকে স্বর্গবাসী করেন, এটাই প্রার্থনা করি।