ক্ষণিকের জীবন||আমার বাংলা ব্লগ
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজকে মনটা ভীষণ খারাপ। আমার খুবই কাছের একজন মানুষ এই পৃথিবী থেকে চলে গেছেন। তাই খুব খারাপ লাগছে। নিজের অনুভূতি থেকে কিছু কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি
ক্ষণিকের জীবন:
আমাদের এই ক্ষুদ্র জীবনে আমরা প্রতিনিয়তই আমাদের আপন মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলি। গতকালকে রাতে যখন আপনাদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন হঠাৎ করে শরীরটা ভীষণ খারাপ লাগছিল। তাই দ্রুতই সেখান থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। আর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ করে মাঝ রাতে বাবার ফোনের রিং বেজে উঠলো। আমি বুঝতে পারছিলাম না এত রাতে কে রিং করেছে। হঠাৎ করে রাতে যদি কারো ফোন আসে তখন ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে। মনে হয় এই বুঝি কোন দুঃসংবাদ আসতে চলেছে। এরপর অনেকক্ষণ পর বাবা ফোন রিসিভ করলেন। হয়তো ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। আমিও উঠে বাবার রুমে গেলাম। গিয়ে যেটা শুনলাম সেটা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমার ছোট চাচার শশুর অর্থাৎ রাইসার নানু মারা গিয়েছেন।
হঠাৎ করে মৃত্যুর খবর শুনে সত্যি অনেক খারাপ লেগেছে। মনে হচ্ছিল যেন হাত পায়ে কোন শক্তি পাচ্ছি না। আপনারা হয়তো রাইসাকে অনেককেই চেনেন। কিছুদিন আগে রাইসাকে আমি বেদে কন্যা সাজিয়েছিলাম। ওর নানু ভাই মারা গিয়েছে। খবরটা শুনে আমার ভীষণ খারাপ লেগেছিল। রাইসা তখনও রাজশাহীতে। যখন আমার চাচা খবরটা জানতে পারে তখন বুঝতে পারছিল না কি করে তার ওয়াইফকে বলবে। আসলে বাবা হারানোর কষ্ট সেই বোঝে যে বাবা হারিয়েছে। এরপর বাধ্য হয়ে খবরটা সে জানায়। রাইসার মা তখনই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অনেক কষ্ট করে তারা রাজশাহী থেকে রওনা হয়। তখন রাত দুইটা বাজে। কোন যানবাহন ছিল না। এদিকে বাবা আর আমরা ভীষণ টেনশনের মধ্যে ছিলাম। কি করে তারা বাড়ি ফিরবে।
অনেক কষ্ট করে তারা একটি মাইক্রো পেয়েছিল। আর সেই মাইক্রোতে করেই আসার চেষ্টা করেছিল। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে ঠিক রাখা অনেক বেশি কঠিন। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে রাইসার আম্মু অর্থাৎ আমার চাচী আম্মু জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। অনেক কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত সকাল সাতটায় তারা বাসায় পৌঁছাতে পেরেছে। যেহেতু নানুর মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়েছে তাই সবাই গ্রামের বাড়িতে এসেছে। আর সবার কান্না, হাহাকার দেখে সত্যিই অনেক খারাপ লেগেছে। বিশেষ করে রাইসার কথা শুনে আমার আরো বেশি কষ্ট লেগেছে। বারবার আমাকে এসে বলছে আপু নানু ভাই ঘুম থেকে উঠে না কেন। নানু ভাই তো অনেকক্ষণ থেকে ঘুমাচ্ছে। কখন উঠবে নানু ভাই। আমি নানু ভাইয়ের সাথে বাহিরে যাব। এই কথাগুলো শুনে আমি নিজেকে সামলে রাখতে পারছিলাম না। ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল😭। আসলে ছোটরা হয়তো স্বজন হারানোর ব্যথা সেভাবে বোঝে না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তারাও বুঝতে পারবে চিরদিনের জন্য আপন মানুষটিকে হারিয়ে ফেলল।
আমরা আমাদের এই ক্ষণিকের জীবনে এভাবেই হয়তো আপন মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলবো। কখনো আমাদের কারো আপনজন হারাবে কখনো বা অন্য কারো আপনজন। এভাবেই হয়তো পৃথিবীর নিয়মে এই পৃথিবী চলবে। আর এভাবেই হয়তো নতুন মানুষ পৃথিবীতে আসবে। সেই সাথে পুরনো মানুষগুলো পৃথিবীর বুক থেকে বিলীন হয়ে যাবে। সারা রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি। এরপর সারাটা দিন ব্যস্ততায় কেটেছে। কোন কিছুই করতে ইচ্ছে করছিল না। তবুও নিজের অনুভূতি সবার মাঝে শেয়ার করলাম। ভুল ত্রুটি সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
মৃত্যই একমাত্র সত্য।শোকের পোস্টটি পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল। সত্যি আপু এই পৃথিবীতে মানুষ ক্ষণিকের অতিথি।রাইসার নানুর জন্য অনেক দোয়া ও পরিবারের জন্য সমবেদনা।ক্ষণিকের জীবন শিরোনামে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আসলে আপু আমরা সবাই পৃথিবীতে দুদিনের অতিথি।তবে মাঝ রাতে কোন ফোন এলে সত্যি মনটা খারাপ হয়ে উঠে। আর আপনজন হারানোর শোক সত্যি অনেক কঠিন। জীবন ক্ষণস্থায়ী, পৃথিবীতে আমরা মেহমান হিসেবে এসেছি ডাক পড়লেই চলে যেতে হবে। দোয়া করি আল্লাহ মৃত ব্যক্তির পরিবারকে শোক সহ্য করার ক্ষমতা দান করুন, আমিন ।
আপু বেশ কিছুদিন যাবৎ আমি নিজেও বেশ অসুস্থ্য্। তবে দোয়া করি আপনি তাড়াতাড়ি সেরে উঠেন। তবে আপু মৃত্যুই সত্য। তবুও আমরা যে কিসের পিছনে দৌড়াই। বেশ খারাপ লাগলো আপনার কাছে এমন কথা শুনে। দোয়া করি আল্লাহ সবাই কে শোক মেনে নেওয়ার শক্তি দেক। আর রাইসার নানু যেন জান্নাতবাসি হন।
আসলেই আপু জীবনকে নিয়ে ভাবলে মনে হয় এইতো জীবন। মরে গেলেই জীবনের রঙ শেষ। রাইসার নানুর মারা যাওয়ার খবরটা শুনে খারাপ লাগছে। আল্লাহ তায়ালা উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক আমিন 🌼
মৃত্যু এক চরম সত্য যেটা সবাইকে মেনে নিতে হবে। হ্যাঁ যার বাবা নেই সেই বাবা হারানোর কষ্ট টা বোঝে। আপনার চাচি সেই কষ্টটা বুঝেছে আর এই জন্যই সে কষ্ট সহ্য না করতে পেরে বারবার জ্ঞান হারিয়েছে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এ কষ্ট সহ্য করার তৌফিক দান করুক আমিন।
রাইসাকে দেখেছিলাম আপনার প্রতিযোগিতার ওই পোষ্টের মাধ্যমে, যখন আপনি তাকে বেঁধে সাজিয়েছিলেন। রাইসার নানুভাই মারা গিয়েছে শুনে সত্যি অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। আসলে ছোটরা বোঝেনা প্রিয়জন হারানোটা। তারা তো মনে করে তাদের প্রিয়জন গুলো ঘুমাচ্ছে। বাবা হারিয়ে রাইসার মা অনেক কষ্টে রয়েছে বুঝতেই পারতেছি। রাইসার নানুর জন্য দোয়া করি যেন তিনি জান্নাতবাসী হয়। আসলে ক্ষণিকের এই জীবনে অনেকে আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে। প্রিয় মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলবো সারা জীবনের জন্য।
আসলেই আপন জনের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। ভীষণ কষ্ট লাগে তখন। তবুও কিছু করার থাকে না আমাদের। তবে বাবা হারানোর যন্ত্রণা অনেক বেশি। রাইসার কথাগুলো শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। ছোটবেলায় আমিও দাদীকে হারিয়েছিলাম। ভীষণ কষ্ট লেগেছিল তখন। দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা যেন রাইসার নানু ভাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এই কথাটা যে কতটা ইমোশনাল সেটা শুধুমাত্র তারাই অনুভব করতে পারে, যারা এই অবস্থানে থাকে। আসলে জন্ম, মৃত্যু সবই সৃষ্টিকর্তার হাতে। তবে আমরা কখনোই আপন জনের মৃত্যু মেনে নিতে পারি না। আপনজনের মৃত্যুর ব্যাপারটা মেনে নেওয়া কঠিন সবার জন্যই । যাইহোক, এখানে তো তেমন কিছু বলার নেই আপু, তবে প্রার্থনা করি উনি যেন স্বর্গবাসী হন।