গল্প-আজও অনুভূতিতে মিশে আছো তুমি||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। গল্প লিখতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝে গল্প লিখি। নিজের ভালোলাগা থেকে মাঝে মাঝে চেষ্টা করি ভিন্ন ধরনের গল্প লেখার। জানিনা আমার লেখা গল্পগুলো আপনাদের কাছে কেমন লাগে। তবে মাঝে মাঝে গল্প লিখে সবার মাঝে শেয়ার করতে ভালো লাগে। তেমনি আজকে আমি একটি ভিন্ন ধরনের গল্প আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে চলে এসেছি। আশা করছি আমার লেখা গল্প আপনাদের ভালো লাগবে।
আজও অনুভূতিতে মিশে আছো তুমি:
Source
স্বপ্নীল আর নীলিমা নাম দুটো বড্ড বেশি কাছাকাছি। তাই বন্ধুরা মিলে তাদেরকে ভীষণ রকম খেপাতো। প্রথম প্রথম নীলিমা আর স্বপ্নীল অনেক লজ্জা পেতো। এরপর বন্ধুদের সেই কথা থেকেই তাদের মনে ভালোলাগার সূচনা হয়। লজ্জা রাঙা নীলিমার মুখখানি দেখে স্বপ্নীল ভীষণ আনন্দ পায়। তার দু চোখের চাহনি আর লজ্জা রাঙ্গা মুখ নীলিমার সৌন্দর্যকে যেন আরো বাড়িয়ে তোলে। স্বপ্নীল আড়াল থেকে অবাক নয়নে নীলিমার দিকে তাকিয়ে থাকে। হৃদয়ে জমা কথাগুলো আর মুখ ফুটে বলা হয়ে ওঠে না। স্বপ্নীল নীরবে নীলিমাকে ভালোবেসে যায়।
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল তাদের দিনগুলো। ধীরে ধীরে নীলিমা আর স্বপ্নীলের মাঝে বেশ ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়। আর সেই বন্ধুত্ব থেকে ধীরে ধীরে ভালোবাসা তৈরি হয়। হয়তো প্রত্যেকটি সম্পর্কের মাঝেই বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। তেমনি নীলিমা আর স্বপ্নীলের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল বন্ধুত্ব দি। দুজনের নামের মিল থেকেই হয়তো হৃদয়ের মিল খুঁজে পেয়েছিল তারা। এভাবেই কাটছিল স্বপ্নীল আর নীলিমার স্বপ্ন রঙিন দিনগুলো। দেখতে দেখতে কখন যে সময়টা পেরিয়ে গেল তারা বুঝতেই পারেনি। সময়ের সাথে সাথে তাদের ভালোবাসা যেন আরো গভীর হয়ে গেল।
হঠাৎ একদিন নীলিমা জানালো বাসা থেকে তার বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। স্বপ্নীল আর নীলিমা কোন কিছু না ভেবে চুপি চুপি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল। আর তাদের বন্ধুরা তাদের সাথেই ছিল। তারা প্রথম থেকেই তাদের এই মিষ্টি সম্পর্ক দেখেছিল। সবাই মিলে তাদের বিয়ে দিয়ে দিল। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান স্বপ্নীল। নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে আগলে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে সে। এভাবেই কেটে যাচ্ছিল তাদের হাসিখুশি দিনগুলো। হঠাৎ একদিন নীলিমা তাকে সুখবর দিল। নীলিমা মা হতে চলেছে। এই কথা শুনে স্বপ্নীল যেন নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করলো। নতুন স্বপ্নের ভেলায় ভেসে যেতে লাগলো দুজনে। দেখতে দেখতে কেটে গেল কয়েকটি মাস। তাদের সন্তান পৃথিবীতে আসার সময় হয়ে গেল। স্বপ্নীল যখন নিজের অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিল তখন হঠাৎ করে তার কাছে ফোন এলো নীলিমাকে হসপিটালে নিয়ে আসা হয়েছে। সে যেন তাড়াতাড়ি চলে আসে।
কোন কিছু না ভেবে তাড়াহুড়ো করে স্বপ্নীল নীলিমার কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দিল। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে স্বপ্নীল খেয়াল করেনি অপর প্রান্ত থেকে ছুটে আসা সেই গাড়িটি। গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গেল স্বপ্নীল। তাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলো। অন্যদিকে তার স্ত্রী নীলিমা প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল। আর জন্ম দিয়ে গেল ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান। স্বপ্নীল হারিয়ে ফেলল তার প্রিয় মানুষ নীলিমাকে। আর সেই সাথে হারিয়ে ফেলল তার দু চোখের দৃষ্টি। অ্যাক্সিডেন্টের পর এতটাই আঘাত লেগেছিল যে তার দুটি চোখে দৃষ্টি হারিয়ে গেছে। স্বপ্নীল শেষ দেখাটাও দেখতে পারলো না তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে।
দৃষ্টিহীন দু চোখের কোণে যেন অঝরে পানি ঝরছে তার। আর হাত দিয়ে তার ছোট্ট শিশুকে আগলে রাখার চেষ্টা করছে স্বপ্নীল। সেই শিশুটির মাঝে স্বপ্নীল নীলিমাকে খোঁজার চেষ্টা করছে। কারণ নীলিমা আজও তার অনুভূতিতে মিশে আছে। আজও সে নীলিমাকে অনুভব করে। স্বপ্নীল আজও ভাবে নীলিমা তার চারপাশে আছে। হয়তো সে তার দৃষ্টিহীন চোখে নীলিমাকে খুঁজে পাচ্ছে না। অনুভবে আজও সে খুঁজে পায় নীলিমার ছায়া। জানিনা আমার লেখা গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। তবে গল্প লিখতে আমার ভালো লাগে। তাই মাঝে মাঝে গল্প লিখি। ভুল ত্রুটি ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখবেন।
গল্পটি পড়ে ভীষণ কষ্ট পেলাম। স্বপ্নীল ও নীলিমার জন্য বেশ খারাপ লাগলো। স্বপ্নীল তার মেয়ের মধ্যেই নীলিমাকে অনুভব করে। যাইহোক আপু গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
হয়তো এভাবেই একদিন সুন্দর সম্পর্ক বিলীন হয়ে যায়। তবুও অনুভূতিতে সারা জীবন সেই প্রিয় মানুষটি থেকে যায়। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য প্রকাশের জন্য।
এজাতীয় গল্পগুলো বেদনাদায়ক হলেও পড়তে ইচ্ছে করে কারণ এমন অনেক ঘটনা রয়েছে আমাদের জানার বাইরে। তবে আপনি যে গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন এই থেকে একটি বিষয় জানতে পারলাম এবং আপনার মধ্যে লুকিয়ে থাকা ঘটনা সম্পর্কে ধারণা পেলাম। গল্পটি লেখার উপস্থাপনা অনেক সুন্দর ছিল।
মাঝে মাঝে চেষ্টা করি ভিন্ন ধরনের গল্প লিখে শেয়ার করার জন্য। আমার লেখা গল্প আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।