জেনারেল রাইটিং-ঈদের আনন্দ ও একটু সহানুভূতি||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে একটি ব্লগ তৈরি করতে যাচ্ছি। প্রথমে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি "ঈদ মোবারক"। ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে এই প্রত্যাশাই করি। দেখতে দেখতে রোজা শেষ হয়ে গেল। আর চলে এলো খুশির দিন। ঈদের এই খুশির দিনে আপনাদেরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবো না তা কি করে হয়। আপনারা হলেন আমার অন্য একটি পরিবার। তাইতো সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ঈদ মানে কারো কাছে আনন্দ কারো কাছে বা কান্না। ঈদ মানে কারো কাছে খুশির জোয়ার কারো কাছে বা হতাশা। তবুও প্রত্যাশা করি ভালোভাবে ঈদ কাটুক সবার। এই নিয়ে কিছু কথা আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি আমার লেখাগুলো পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
ঈদের আনন্দ ও একটু সহানুভূতি:
Source
হয়তো আমাদের জন্য ঈদ অনেক আনন্দের। তবে আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের কাছে ঈদ মানে শুধুই হতাশা। হয়তো আমরা ঈদের খুশিতে আত্মহারা। কিন্তু তারা ঈদের দিন পরিবার নিয়ে ভালো-মন্দ খেতে পারবে কিনা সেই চিন্তায় দিশেহারা। আমাদের কাছে ঈদের আনন্দ হয়তো শুধুই খুশির। আর আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যারা ঈদের দিনে দু চোখের পানি মুছে। ছোট ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বাবা আড়ালে গিয়ে কাঁদে। ছেলেটির জন্য ওই লাল পাঞ্জাবি সে কিনতে পারেনি। ছেলেটির মুখে ভালো-মন্দ খাবার তুলে দিতে পারেনি। কারণ তারা দিনমজুর। ছেলেটি ওই পাশের বাড়ির দরজায় গিয়ে মাঝে মাঝেই দাঁড়িয়ে থাকে। সেই দৃশ্য যখন তার বাবা দেখে তখন দু চোখের পানি মুছে। হয়ত কিছু পাবার আশায় কিংবা ঈদের আনন্দ উপভোগ করার আশায় ছোট্ট অবুঝ ছেলেটি ঘুরে বেড়ায়।
মেয়েটির গায়ে আজ ছেঁড়া জামা। তাইতো সে বাড়ির বাহিরে যায়নি। মন খারাপের মাঝেও সে বাবা-মাকে সান্তনা দিতে হাসিমুখে ঈদ উদযাপন করছে। কিন্তু আড়ালে গিয়ে ঠিক মায়ের আঁচলে চোখের জল মুছে। হয়তো মায়ের চোখ ফাঁকি দিতে সে পারেনি। তবে সবার চোখ ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ঈদের দিন হয়তো সেও চেয়েছিল একটি নতুন জামা। কিন্তু পরিস্থিতি সবকিছু থেকেই তাকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। তার হতদরিদ্র বাবা-মা তার জন্য একটি জামা কিনে দিতে পারেনি। তাতেও তার কোন দুঃখ নেই। কারণ সে তার বাবা-মায়ের বুকভরা ভালোবাসা পেয়েছে। এসব মানুষরা হয়তো অল্পতেই সন্তুষ্ট। কিন্তু আমরা তবুও যেন তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে চাই না। আমরা নিজেদের জন্য হাজার হাজার টাকা দিয়ে জামা কিনি কিন্তু আমাদের চারপাশের সেই অসহায় মানুষদেরকে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে ছোট্ট উপহার দিতে পারি না। হয়তো তাদের ঈদ আরো ভালো হতে পারতো। শুধু দরকার ছিল আমাদের সহানুভূতির।
রহিমার মা পাশের বাড়ির সেই ইট পাথরের দালালের মাঝে সারা জীবন ধরে কাজ করেছে। হয়তো অর্থের বিনিময়ে কাজ করেছে। কিন্তু তার কাজের মাঝে কখনো কমতি ছিল না। ঈদের দিন সবাই যখন নতুন কাপড় পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তখন রহিমার মায়ের খোঁজ কেউ রাখেনি। কেউ পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলেনি আজ না হয় সবাই ভাগাভাগি করে কাজ করলাম। তোমারও তো ঈদ আছে। তোমারও তো পরিবার আছে। তুমি না হয় আজ একটু পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন কর। হয়তো কখনো কেউ পাশে এসে জানতে চায়নি আজ তোমার পরিবারের জন্য ভালো মন্দ কিছু রান্না করেছো কিনা। নিজের হাতে রহিমার মা কত খাবার রান্না করে। আর খাবারের দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবে সেই ছোট্ট নাতনীর কথা। বাপ মা মরা নাতনীটা তার ভালো মন্দ খায় না কতদিন। সেই বড়লোক মানুষগুলো পারত একটা দিন অন্তত সবাইকে দাওয়াত দিতে। এতে হয়তো মনের আনন্দে রহিমার মা রান্না করত আর সবার সাথে তার ছোট্ট নাতনীটাকে খাওয়াতে পারতো। হয়তো এটাই হতো তার ঈদের শ্রেষ্ঠ উপহার। আমাদের একটু সহানুভূতি হয়তো রহিমার মাদের মত মানুষদের মনে ঈদের আনন্দ তৈরি করত। কিংবা তার হৃদয়ে ছড়িয়ে পড়তো ঈদের অনাবিল আনন্দ। শুধু প্রয়োজন ছিল একটু সহানুভূতির।
আমার বাড়িতে আজ পোলাও মাংস রান্না হবে। অথচ পাশের বাড়িতে ভাত রান্না করার মত চাল নেই। আমি ঈদ উদযাপন করব আর আমার পাশের কেউ না খেয়ে থাকবে এটা দেখতে বড্ড বেশি বেমানান লাগে। কিন্তু আমরা কেউ কারো খোঁজ রাখি না। একবারও গিয়ে বলি না হাড়িতে তোমার ভাত আছে কিনা। একবারে বলি না আজ না হয় সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খাব। একবারো বলি না এক বেলা আমার বাসায় খেও। আমরা যদি তাদের সহানুভূতি না দেখাই তাহলে সেই অসহায় মানুষগুলোর ঈদের আনন্দ একেবারেই মিছে হয়ে যায়। আমরা হয়তো চাইলেই তাদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে পারি। সেজন্য প্রয়োজন সহানুভূতির। আমাদের একটু সহানুভূতি কিছু কিছু মানুষের ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণ করে দিবে
তবুও একটি কথাই বলতে চাই আমরা যে যার জায়গা থেকে যদি আমাদের আশেপাশের মানুষদের পাশে দাঁড়াই তাহলে হয়তো তারাও ঈদ ভালোভাবে উদযাপন করতে পারবে। হয়তো আমাদের একটু সহানুভূতি তাদের মনে আনন্দ এনে দিবে। হয়তো আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাই তাদেরকে খুশি করবে। যে যার জায়গা থেকে আমাদের সবারই উচিত সেসব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। সবাই মিলে যদি ঈদের আনন্দ উদযাপন করা না যায় তাহলে ঈদের আনন্দই মাটি হয়ে যায়। তাই আমরা সবাই চাইবো যে যার জায়গা থেকে ঈদের আনন্দ সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে। সবাইকে আবারো ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি "ঈদ মোবারক"।
ঈদ মোবারক আপু। আপনি ঈদ নিয়ে খুব সুন্দর কিছু কথা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন খুব ভাল লাগলো। আপনি ঠিক ই বলেছেন, আমাদের পাশের মানুষটির খবর আমাদের কে রাখতে হবে।সবাই মিলে আনন্দ করার মজা অন্য রকম। আমাদের সবাইকে যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে যেতে হবে।ধন্যবাদ আপু।
আপু আমি চেষ্টা করেছি ঈদ নিয়ে কিছু কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।আমাদের আশেপাশের মানুষদের খবর রাখার কর্ত্তব্য আমাদের। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
আপু আজকে ঈদের দিনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা শেয়ার করেছেন। কথা গুলো পড়ে হৃদয়টা ভারি হয়ে গেল। কথা গুলো বাস্তবতার সাথে মিল রয়েছে। ধন্যবাদ আপু।
ভাইয়া আমি চেষ্টা করেছি গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা শেয়ার করার জন্য। সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া মতামতের জন্য।
আসলে ঈদের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যদি আমরা পরস্পরের সাথে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করতে না পারি তাহলে ঈদ উদযাপন করাটাই আমাদের জন্য অনর্থক হয়ে যায়। আসলে আপু রহিমার মায়ের বিষয়টি জানতে পেরে বেশ খারাপ লাগলো আমার। আমাদের সকলের উচিত মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং মানুষের সাথে সুন্দর আচার-আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করা।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া ঈদের মতো একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যদি আমরা পরস্পরের সাথে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করতে না পারি তাহলে ঈদ উদযাপন করাটাই আমাদের জন্য অনর্থক হয়ে যাবে। আমাদেরকে সহানুভূতিশীল হতে হবে।
আসলেই আপু ঈদ হয়তো সবার জন্য আনন্দের না।ধনী গরীব এর এই সমাজে জীবন সবার জন্য সহজ না।কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের দেখলেই অনেক খারাপ লাগে।আমাদের সমাজে এরকম রহিমার মা তাদের দুঃখ গুলো আর দিনমজুর বাবার মনের কষ্ট গুলোও একদিন ঠিক হয়ে যাবে।হয়তো আল্লাহ একদিন নিরাময় করে দিবেন সব হতাশা।ভালো লেগেছে আপু আপনার লেখাটি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া ঈদ সবার জন্য আনন্দের না। অনেক মানুষ আছে যারা ভালোমন্দ খেতে পায়না। আমাদের সকলের উচিত সহানুভূতিশীল হওয়া।