অপরাজিতার গল্প||আমার বাংলা ব্লগ [10% shy-fox]
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে একটি ব্লগ তৈরি করতে যাচ্ছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আর এই ভালো লাগার কাজটি করতে বারবার নতুন নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হই। আমার লেখা গল্প গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারলে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তাই তো নতুন একটি গল্প লিখে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আর সেই গল্পের নাম দিয়েছি "অপরাজিতার গল্প"।
অপরাজিতার গল্প:
![girl-gbb50ab61d_1920.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmSjduH9WzUHzVdegRktGdKbrE7enn6JecF6JXp8mVxGor/girl-gbb50ab61d_1920.jpg)
Source
অপরাজিতা নামটি যেমন সুন্দর তেমনি মিষ্টি দেখতে সেই অপরাজিতা। মেয়েটির বাঁকা চোখের চাহনি আর হৃদয় ভুলানো হাসি দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। সব সময় যেন তার মুখে হাসি লেগেই থাকে। অপরাজিতা নিজের ফুল গাছগুলোর ভীষণ যত্ন নেয়। আর পাখিগুলোর দারুন খেয়াল রাখে। তার বারান্দায় সাজানো পছন্দের ফুল গাছগুলোতে অপরাজিতা নিজেই পানি দেয়। আর পাখিদের সাথে আনমনে কি যেন বলে। হয়তো মনে মনে কথা বলে। হয়তো পাখিরা তার মুখের ভাষা বুঝতে পারে। কিংবা পাখিদের ভাষা অপরাজিতা বুঝতে পারে। এভাবেই চলছিল অপারেটর দিনগুলো। অপরাজিতা প্রতিদিনের মতো বিকেল বেলায় বারান্দায় বসে বসে পাখিগুলোকে দেখছিল। হঠাৎ করে দেখল রাস্তার অপর পাশের একটি বাসার বারান্দা থেকে একজন আনমনে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মুগ্ধ নয়নে দেখছে সেই অপরাজিতাকে।
চোখে চোখ পড়তেই অপরাজিতা বেশ লজ্জা পেয়ে গেল। দৌড়ে ছুটে গেল নিজের ঘরে। আজকাল ছেলেটিকে মাঝে মাঝেই দেখতে পায় অপরাজিতা। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আনমনে অপরাজিতার দিকে তাকিয়ে থাকে ছেলেটি। কেন জানি আজকাল অপরিচিতার কাছেও ছেলেটিকে ভীষণ ভালো লাগছে। যখন দেখে ছেলেটি বারান্দায় নেই তখন অপরাজিতা আনমনে তাকে খুঁজতে থাকে। কিংবা চোখে হারায়। হয়তো তার প্রতিও অপরাজিতার দুর্বলতা তৈরি হয়েছে। কিংবা অচেনা কারো প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। অপরাজিতা যখন নিজের পাখিগুলোকে খাবার দিচ্ছিল তখন হঠাৎ করে দেখলো সেই ছেলেটি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে আর হাতে একটি পাখির খাঁচা। ছেলেটিও তার পাখির খাঁচার দিকে তাকিয়ে আনমনে কি যেন বলছিল। আর বারবার অপরাজিতার দিকে তাকাচ্ছিল।
অপরাজিতা মৃদু হেসে তার রুমে চলে গেল। ছেলেটিও তার হাসির মুগ্ধতায় অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল অপরাজিতার দিকে। হয়তো তার পথ পানে চেয়ে রইল অপলক দৃষ্টিতে। এভাবেই কাটতে লাগলো অপরাজিতার দিনগুলো। অপরাজিতা রিক্সার জন্য বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এমন সময় সেই ছেলেটি দৌড়ে তার সামনে এসে দাঁড়ালো। ছেলেটি কিছু বলল না। শুধু তাকিয়ে রইল অপরাজিতার দিকে। অপরাজিতাও বেশ লজ্জা পেয়ে গেল। এরপর দ্রুতই তার গন্তব্যে চলে গেল। এভাবে কেটে গেল আরো কয়েকদিন। অপরাজিতার সাথে আবারও তার দেখা হয়ে গেল সেই ছেলেটির। সাহস করে তার সামনে এসে দাঁড়ালো হাতে একটি লাল গোলাপ আর ছোট্ট একটি উপহার নিয়ে। ছেলেটি অপরাজিতাকে নিজের ভালোলাগার কথাগুলো জানালো। অপরাজিতা কোন উত্তর দিল না। এমনকি একবার ফিরেও তাকালো না।
অপরাজিতার এভাবে চলে যাওয়া ছেলেটিকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছিল। কয়েকদিন থেকে অপরাজিতা ছেলেটি আর বারান্দায় দেখতে পায়নি। ছেলেটা হয়তো অভিমান করে কিংবা কষ্ট পেয়ে বারান্দায় আসা বন্ধ করে দিয়েছে। তবুও যেন অপরাজিতার সেই চোখ দুটো বারবার তাকেই খুঁজছিল। হয়তো অনুভব করছিল তার শূন্যতা। হয়তো তাকে দেখার ব্যাকুলতা বাড়িয়ে তুলেছিল হৃদয়ের তৃষ্ণা। এভাবে কেটে গেল আরো কিছুদিন। অপরাজিতা মনে মনে তাকে খুঁজতে লাগলো। এরপর হঠাৎ করে একদিন ছেলেটির সাথে দেখা হয়ে গেল অপরাজিতার। কিন্তু সেদিন ছেলেটি আর তাকে কিছুই বলল না। অপরাজিতা তার পথপানে চেয়ে থাকলো। ভেবেছিল হয়তো কিছু বলবে। সেই প্রতীক্ষায় চেয়েছিল ছেলেটির দিকে। কিন্তু ছেলেটি তাকে কিছুই বলল না। এবার অপরাজিতার ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেল। কেন জানি ভীষণ কান্না পাচ্ছিল অপরাজিতার। সেই মানুষটির প্রতি অপরাজিতা যে মায়া তৈরি হয়েছে সেই মায়া হয়তো তার জীবন জুড়ে বিচরণ করছে।
ছেলেটির অভিমান যেন আর ভাঙছে না। এরপর হঠাৎ একদিন রোহান অর্থাৎ সেই অভিমানী ছেলেটি দেখলো তার ভাবি বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেয়েটির সাথে ইশারায় কি যেন বলছে। এবার রোহান তোর ভাবিকে জিজ্ঞাসা করল সেই বারান্দায় দাঁড়ানো মেয়েটির কথা। এরপর সে বলল আরে ওর নাম তো অপরাজিতা। অপরাজিতা আমাদের সবার ভীষণ প্রিয়। অপরাজিতা দারুন নাচ করে। তবে অপরাজিতা কথা বলতে পারেন না। এবার রোহানের বুঝতে বাকি রইলো না আসলে অপরাজিতা সেদিন কেন উত্তর দেয়নি। আর কেনই বা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। রোহান তার নিজের ভুল বুঝতে পারল। আজ অপরাজিতার জন্মদিন আশেপাশের সব ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা আজ অপরাজিতার বাসায় এসেছে। তাদেরকে নিয়ে অপরাজিতা ভীষণ আনন্দে মেতে উঠেছে। মনের যত দুঃখ ছিল সব যেন আজ বিলীন হয়েছে। আগে থেকে সবাই প্ল্যান করে রেখেছিল অপরাজিতাকে ছাদে নিয়ে গিয়ে সারপ্রাইজ দিবে। সেই প্ল্যান অনুযায়ী পিচ্চিরা সবাই মিলে অপরাজিতাকে ছাদে নিয়ে গেল। ছাদের চারপাশটা এত সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। এত সুন্দর ভাবে সাজানো দেখে অপরাজিতার ভীষণ ভালো লাগলো। আর অপরাজিতা মনের আনন্দে নাচ করতে লাগলো।
এরপর হঠাৎ করে ফুল হাতে রোহান তার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল। আর বলল আমি যদি তোমার বারান্দার ওই পাখিগুলো আর ফুল গাছগুলোর দায়িত্ব নিতে চাই তুমি কি আমায় তোমার সঙ্গী করবে? আমি তোমার উপর অভিমান করেছিলাম। কারণ তুমি উত্তর দাওনি। এখন আমি আমার প্রশ্নের সব উত্তর পেয়ে গেছি। শুধু তুমি পাশে থাকলেই হবে। দূর থেকেও যদি ভালোবাসা যায় তাহলে আমরা নিজেদের না বলা কথাগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে শেয়ার করতে পারব। আমি তোমায় অন্তর থেকে ভালবেসেছি। আর সারা জীবন তোমার পাশে থাকতে চাই। দুজনে মিলেই না হয় সেই পাখিগুলোর সাথে কথা বলবো। আর মনে মনেই না হয় নিজেদের ভালোলাগাগুলো মনের কল্পনায় সাজিয়ে তুলব। রোহানের কথাগুলো শুনে অপরাজিতার আজ ভীষণ কান্না পাচ্ছিল। আসলে অপরাজিতাও রোহানকে ভীষণ ভালোবাসে। তবে নিজের সেই কথা না বলতে পারার ব্যর্থতা তাকে ভালোবাসা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল। কিংবা ইচ্ছে করেই আড়ালে চলে গিয়েছিল। এবার অপরাজিতা নিজের দুটি হাত বাড়িয়ে দিল রোহানের পানে। এরপর থেকে শুরু হল তাদের নতুন জীবনের পথ চলা।
কিছু কিছু ভালোবাসার পূর্ণতা দিতে ভালো লাগে। যখন ভালোবাসা পূর্ণতা পায় তখন দেখতে ভালো লাগে। প্রতিটি ভালোবাসাই যদি পূর্ণতা পায় তাহলে দুটি হৃদয় সার্থক হয়। আর দুটি মানুষের পথ চলা আরও বেশি সুন্দর হয়। আশা করছি আমার লেখা এই গল্পটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে
অপরাজিতার গল্পটি পড়ে খুব ভাল লাগলো আপু। রোহান ও অপরাজিতা অবশেষে দুজন দুজনকে পেলো। আসলে ভালোবাসাগুলো এমনই হয়।অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
অপরাজিতার গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। রোহান এবং অপরাজিতা শেষে দুজন দুজনকে পেয়েছে এবং তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে। সত্যি আপু ভালোবাসাকে পূর্ণতা দিতে বেশি ভালো লাগে।
অপরাজিতা এবং রোহানের এই মিষ্টি প্রেমের গল্পটা সত্যিই অসাধারণ। প্রথম থেকে গল্পটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছিল আমার কাছে। আসলে এই ধরনের মিষ্টি প্রেমের গল্প পড়তেও ভালো লাগে। বিশেষ করে গল্পের একটা জায়গায় যে টুইস্ট ছিল সেটা হল যে অপরাজিতা কথা বলতে পারে না জন্য রোহানের প্রপোজালের উত্তর দিতে পারিনি প্রথমদিকে। কিন্তু পরবর্তীতে অপরাজিতা তার দুই হাত বাড়িয়ে দেয় রোহানের পানে এবং একটা সুন্দর প্রেমের গল্পের শুভারম্ভ ঘটে। সত্যিই বেশ ভালো লিখেছেন আপু।
অপরাজিতা এবং রোহানের মিষ্টি প্রেমের এই গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে মিষ্টি প্রেমের গল্প লিখতে ভালোই লাগে। বিশেষ করে ভালোবাসা গুলো যখন পূর্ণতা পায় তখন বেশি ভালো লাগে। অনেক সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর একটি প্রেম কাহিনী আমাদের মাঝে উপহার দিয়েছেন। আপনার আজকের এই প্রেম কাহিনীমূলক গল্পটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। গল্পটি পড়তে যেয়ে মনে হচ্ছিল যেন একজন সদৃশ্য চোখের সামনে দেখতে পারছি অনুভবে এবং আমি নিজেই তার মধ্যে ডুবে গেছি। রোহান আর অপরাজিতা এর জন্য শুভকামনা রইল! যাই হোক খুবই ভালো লেগেছে এই গল্প।
ভাইয়া আমি চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে গল্পের কাহিনী তৈরি করে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। আসলে গল্পের মাঝে নতুন নতুন কাহিনী দেখতে ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া নিজের মতামত তুলে ধরার জন্য এবং উৎসাহ দেওয়ার জন্য।