প্রতিযোগিতা-আমার সাজানো বেদে কন্যা||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির চলমান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। "আমার বাংলা ব্লগ" সব সময় ভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। আসলে ছোটবেলায় যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় অনেকবার অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই স্মৃতিগুলো হারিয়ে গেছে। আবার যখন এই দারুণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তখন ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছিল। আর আমি সাজের মাঝে একটু ভিন্নতা রাখতে চেয়েছিলাম। তাই ছোটবেলার দেখা সেই বেদে সম্প্রদায়ের মানুষগুলোর সৌন্দর্য উপস্থাপন করার জন্য এবং তাদের সাজ উপস্থাপন করার জন্য ভিন্নভাবে আমার চাচাতো বোনকে বেদে কন্যা সাজানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
আমার সাজানো বেদে কন্যা:
আমার সাজানো ছোট্ট এই বেদে কন্যাটির নাম রাইসা। রাইসা কে হয়তো আপনারা অনেকেই চিনেন। রাইসার ফটোগ্রাফি আগেও শেয়ার করেছিলাম। রাইস আমার ছোট চাচার মেয়ে। যখন আমি ভাবছিলাম এই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করব তখন ভেবে পাচ্ছিলাম না কি করব। হঠাৎ করে মনে হল আমার ছোট্ট বোনটিকে বেদে কন্যা সাজাই। গ্রাম গঞ্জে এখনো সেই বেদে সম্প্রদায়ের মানুষগুলোকে দেখতে পাওয়া যায়। তারা সাপ খেলা দেখায় এবং বিভিন্ন রকমের খেলা দেখায়। ওদের সাজগোজ আমার কাছে বেশ ভালোই লাগে। আসলে ছোট মানুষকে সাজানো যে এতটা ঝামেলার সেটা বলে বোঝানোর মত নয়। একটু পরপর সবকিছু খুলে ফেলে দিচ্ছে। আবার নষ্ট করে ফেলছে। আবার তো কিছুক্ষণ পরপর বলছে আমাকে একটু চকলেট দাও😆। এই ছোট বেদে কন্যাটিকে সাজাতে গিয়ে অনেকটা সময় লেগেছে। আসলে কোন কিছু না ভেবেই আমি সাজানো শুরু করে দিয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না শেষ পর্যন্ত বেদে কন্যার সাজ পূর্ণতা পাবে কিনা। তবুও নিজের মতো করে সাজানোর চেষ্টা করেছি। নীল শাড়ি আর খোপার ফুল দিয়ে বেদে কন্যার সৌন্দর্য আরো বেশি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। জানিনা কতটুকু পেরেছি। তবে চেষ্টা করেছি। এবার চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে আমি এই ছোট্ট বেদে কন্যাটিকে সাজিয়েছি আর কি কি উপকরণ ব্যবহার করেছি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
১. নীল শাড়ি
২. ব্লাউজ
৩. পেটিকোট
৪. ঝুড়ি
৫. বিন
৬. আলতা
৭. টিপ
৮. নুপুর
৯. খোপার ফুল
১০. ঝিনুকের বিভিন্ন উপকরণ
১১. লিপস্টিক ও অন্যান্য সাজ সজ্জার জিনিস
১২. চুড়ি
ধাপ সমূহ:
ধাপ-১
ছোট্ট বেদকন্যাটিকে সাজানোর জন্য প্রথমে আমি সবকিছুই প্রস্তুত করে নিয়েছি। এরপর রাইসার মুখে একটু হালকা ফেস পাউডার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেহেতু ছোট মানুষ তাই একটু হালকা করে পাউডারটা ব্যবহার করেছি।
ধাপ-২
এবার সুন্দর ভাবে চোখের উপরে কাজল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। একটু হালকা করে দিয়েছি। যাতে করে এলোমেলো হয়ে না যায়। প্রথমে তো ভীষণ নড়াচাড়া করছিল। এরপর বললাম রাইসা তুমি যদি এভাবে নাড়াচাড়া কর তাহলে তোমার সাজ নষ্ট হয়ে যাবে আর সবাই ভূত বলবে। এরপর শান্তিতে একটু চোখটা সুন্দর করতে দিয়েছিল আর কি। এরপর উপরে একটু হালকা নীল রঙের সেডো দিয়ে দিলাম। যেহেতু নীল শাড়ি পরবে তাই হালকা ভাবেই দিলাম।
ধাপ-৩
এবার সে চিল্লাচিল্লি শুরু করেছে লিপস্টিক দেবে। আমি ভেবেছিলাম লিপস্টিক পড়ে দিয়ে দিবো। কারণ একটু পর পর যেভাবে চকলেট খাচ্ছে তাতে করে লিপস্টিক এমনিতেই মুখে চলে যাবে🤣🤣। তবে কি আর করার দিয়েই দিলাম।
ধাপ-৪
এরপর যখন অন্যান্য সাজ শেষ হয়ে গেল তখন তার বেদে কন্যার রূপ আনার জন্য চোখের কোনায় ফোটা ফোটা দিয়ে দিলাম। আর থুতনিতে তিন ফোটা দিলাম। ছোটবেলায় যখন দেখতাম বেদেরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতো তখন দেখতাম তারা এভাবে সাজতো। এরপর শুরু করতে চলেছিলাম দ্বিতীয় যুদ্ধ তার মানে শাড়ি পরানো🤭🤭।
ধাপ-৫
শাড়ি পড়াতে গিয়ে পড়েছিলাম আরো এক ঝামেলায়। যেহেতু শাড়িটা অনেক বড় ছিল তাই কিছুতেই পড়াতে পারছিলাম না। এরপর ভাঁজ করে নিয়ে পড়ানোর চেষ্টা করেছি।
ধাপ-৬
এরপর ছোট ছোট চুলগুলো সুন্দর করে বেঁধে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। যাতে করে খোপা করতে সুবিধা হয়।
ধাপ-৭
এবার চুলের খোপা আরো বেশি সুন্দর করার জন্য কিছু ফুলের ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। সেই সাথে কিছু ঝিনুকের সাজ সামগ্রী ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি।
ধাপ-৮
এবার ক্লিপ দিয়ে সুন্দর করে ফুলগুলো আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেহেতু ফুলের খোপা করার চেষ্টা করেছি তাই সুন্দর করে ফুলগুলো সেটিং করে নিয়েছি।
ধাপ-৯
এবার পিচ্চিটাকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছি। যাতে করে আলতা দিতে সুবিধা হয়। এরপর সুন্দর ভাবে হাতে আলতা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
ধাপ-১০
এবার ধীরে ধীরে পায়ে আলতা দেয়ার চেষ্টা করেছি। সত্যি কথা বলতে আলতা দেওয়ার পর হাত এবং পা দেখতে আরো বেশি সুন্দর লাগছিল।
শেষ ধাপ
এবার অন্যান্য কিছু কাজ সুন্দর করে করার চেষ্টা করেছি এবং সবকিছু ঠিকঠাক করার চেষ্টা করেছি। এরপর বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছি।
উপস্থাপনা:
যখন আমি রাইসাকে সাজিয়ে দিচ্ছিলাম তখন ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। আর সেই সাথে রাইসার দুষ্টুমি গুলো দেখে আমারও সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। অবশেষে চকলেট আর আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে তার সাজ কমপ্লিট করতে পেরেছিলাম😆😆। এরপর মনে হয়েছে বাঙালিরা চকলেট কিংবা আইসক্রিমে আটকায় 🤣। বলেছিলাম তুমি যদি ভালো করে সাজাতে দাও তাহলে পুরস্কার পাবে। আর সেগুলো দিয়ে তোমাকে চকলেট কিনে দিবো। এরপর একটু শান্তিতে ছবি তুলতে পেরেছিলাম আরকি। ছোটদের সাজানো যে কতটা ঝামেলার যে সাজিয়েছে সেই শুধু জানে। তবে যাই বলুন না কেন সবমিলিয়ে সময়টা কিন্তু দারুণ কেটেছে। হয়তো অনেকে সময় লেগেছে। তবে রাইসাকে সাজাতে গিয়ে নিজের ছোটবেলার স্মৃতিচারণ হয়ে গেছে। আর অনেক আনন্দ করেছি। সবাই মিলে দারুন সময় কাটিয়েছি। আশা করছি আমার সাজানো বেদে কন্যাকে সবার ভালো লাগবে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
প্রথমে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য। আসলেই সুযোগ সব সময় আসে না। এই ধরনের সুযোগ বিশেষ করে স্কুল সময়ে বেশি করা হয়। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এমন একটি সুন্দর সুযোগ করে দিলেন আমাদের। সবার মাধ্যমে বেশ সুন্দর সুন্দর সাজগোজ দেখতে পাচ্ছি। আপনি আপনার চাচাতো বোনকে বেদে সম্প্রদায়ের সাজ দিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন অনেক ভালো লাগলো।
সত্যি আপু এই ধরনের প্রতিযোগিতায় যখন ছোটবেলায় অংশগ্রহণ করতাম তখন অনেক ভালো লাগতো। আর নতুন ভাবে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে।
প্রথমে আপনাকে জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে আপনার সাজানো বেদে কন্যা অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। সত্যি যে কোন মানুষকে যেকোনো রূপে সাজানো অনেক কঠিন একটি কাজ। আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে পায়ে আলতা দেওয়া এবং মাথায় ফুলের খোপা দেওয়া সত্যি বেশ দারুন ছিল। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
পায়ে আলতা এবং খোপায় ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজানোর চেষ্টা করেছি ভাইয়া। আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে সত্যিই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে আপনার চাচাতো বোনকে খুব সুন্দরভাবে আপনি বেদে কন্যা সাজিয়েছেন। দেখতে চমৎকার লাগছে।বেদে কন্যা সাজাতে যেয়ে অনেক কষ্ট করেছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে আপু। দেখে মনে হচ্ছে মিষ্টি একটি কিউট বেদে কন্যা। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন আপু। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি চেষ্টা করেছি সুন্দর করে বেদের মেয়ে সাজানোর। আসলে ছোট্ট এই বেদে কন্যাকে সাজাতে আমার বেশ ভালো লেগেছে।
রাইসাকে বেদে কন্যা সাজানোর পদ্ধতিটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এ ধরনের বেদে কন্যা সাজাতে অনেকটা সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট তৈরি করে চলমান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
রাইসা কে সাজানোর পদ্ধতি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাইয়া। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য।
প্রথমে আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আপনি আপনার চাচাতো বোনকে খুব সুন্দর ভাবে বেঁধে কন্যা সাজিয়েছেন। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে বেঁধে কন্যা সাজাতে আপনি অনেক কষ্ট করেছেন। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপু আমি চেষ্টা করেছি ছোট্ট পিচ্চিটাকে সুন্দর করে সাজানোর। আপনার ভালো লেগেছে জেনে সত্যিই ভালো লাগলো।
প্রথমে আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। বাচ্চাটাকে একগাদা চকলেট হাতে ধরিয়ে দিয়ে কাজটা করতেন।😂
যাইহোক বেদের মেয়ে সাজটা অনেক সুন্দর হয়েছে। মেয়েটাও বেশ কিউট।
এটা একদম ঠিক বলেছেন আপু একগাদা চকলেট হাতে ধরিয়ে দিলেই কাজ হয়ে যেত। তবে একটু পর পর যে হারে খাওয়া-দাওয়া শুরু করেছিল তাতে করে মুখের লিপস্টিক সব পেটে চলে গেছে। 🤣
বাহ আপু চাচাতো বোনকে বেদে কন্যা সাজিয়ে দারুণভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেন। দেখে বেশ ভালো লাগলো ।আসলে এই বেদে কন্যা একটা সময় বেশ দেখা যেত এখন আর তেমন টা দেখা যায় না ।তবে আপনি কিন্তু দারুন সাজিয়েছেন। বেশ ভালো লাগলো দেখে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আমি চেষ্টা করেছি চাচাতো বোনকে সুন্দর করে সাজিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার। আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো আপু।
খুব সুন্দর সাজিয়েছেন আপু। আর বেদে কন্যাকেও খুব মিষ্টি দেখাচ্ছে।
আমার সাজানো বেদে কন্যাকে আপনার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এবং মন্তব্য করেছেন দেখে সত্যিই ভালো লেগেছে আপু। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ আপনি তো খুব সুন্দর সাজাতে পারেন!আপনার চাচাতো বোনকে অনেক সুন্দর করে বেদের মেয়ে সাজিয়েছেন। ওকে দেখতে একেবারে বেদের মেয়ের মতো লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
আপু আমি চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে সাজিয়ে উপস্থাপন করার। আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে আমার সাজানোটা সার্থক হয়েছে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার চাচাত বোনকে তো দেখছি খুব সুন্দর করে বেদের মেয়ে জোস্না সাজিয়ে দিয়েছেন খুব সুন্দর হয়েছে। আসলে বেদের মেয়েরাও কিন্তুু বাংলার ঐতিহ্য। বেশ ভালো লাগলো সাজানোর প্রতি টি ধাপ।শুভ কামনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।
আপু আমি চেষ্টা করেছি বোনকে সুন্দরভাবে বেদের মেয়ে সাজানোর। একদম ঠিক বলেছেন আপু বেদের মেয়েরা আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য।