ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা-মা||আমার বাংলা ব্লগ [10% shy-fox]
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে একটি ব্লগ শেয়ার করতে যাচ্ছি। বাবা-মা এই শব্দ দুটো খুবই ছোট। তবে এই শব্দ দুটোর মাঝে মিশে আছে অনেক অনেক আবেগ, অনুভূতি এবং ভালোবাসা। তাই আজকে আমি বাবা-মা নিয়ে আমার কিছু অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। আশা করছি আমার এই পোস্ট সকলের পছন্দ হবে।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা-মা:
![man-gc132afa09_1920.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTkcs5k5kQXbepuMB5Xswc7acy53ahrPYUQarLZfc7WX4/man-gc132afa09_1920.jpg)
Source
বাবা-মা শব্দটি সত্যি অনেক মধুর। তবে এই মধুর শব্দটির পিছনে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সন্তানের প্রতি ভালোবাসা সত্যিই অমূল্য। যার মূল্য আমরা কখনোই দিতে পারবো না। বাবা-মার অক্লান্ত পরিশ্রমের পেছনের গল্প হয়তো সন্তানদের অজানা। তবে একটি সন্তানের সফলতার পিছনে মিশে আছে বাবা-মায়ের পরিশ্রমের ঘামের গন্ধ। একজন সন্তান সফলতা অর্জনের জন্য যেমন অক্লান্ত পরিশ্রম করে তেমনি তার সফলতার একধাপ এগিয়ে দিতে তার বাবা-মায়ের ঘামের গন্ধ মিশে থাকে। বাবা মায়ের অনুপ্রেরণা এবং তাদের ভালোবাসায় একজন সন্তান সফলতার পথে এগিয়ে যায়। বাবা মায়ের চাওয়া পাওয়া গুলো খুবই অল্প। তারা হয়তো সন্তানের কাছে কিছুই আবদার করে না। তারা শুধু চায় তাদের সন্তান ভালো থাকুক এবং সুখে থাকুক। তবে আমরা সন্তানরা বড়ই স্বার্থপর। আমরা শুধু বাবা মায়ের কাছে কাছে নিজের দাবিগুলো উপস্থাপন করি। নিজেদের বিলাসিতা গুলো পূর্ণ করার চেষ্টা করি। আর আমাদের বাবা-মা তাদের সাধ্যের বাইরে গিয়েও আমাদের বিলাসিতার আবদার গুলো পূর্ণ করার চেষ্টা করে। কারণ তারা সন্তানের হাসি মাখা মুখ দেখতে চায়। কিন্তু এর পেছনে তাদের কতটা কষ্ট হয় শুধু সেই বাবা-মাই জানে। হয়তো সন্তানকে কখনো বুঝতেও দেয় না। হয়তোবা আমরা সন্তানরা সেই কষ্ট টুকুর ভাগীদার হতে চাই না। আমরা শুধু নিজের বিলাসিতা উপভোগ করতে চাই।
সন্তানের খুশির জন্য বাবা-মা কতটা পরিশ্রম করে এবং কষ্ট করে তা কাছ থেকে উপলব্ধি না করলে কখনোই বুঝতে পারা যায় না। একজন সংগ্রামী বাবা তার সংসার পরিচালনার জন্য নিজের জীবনের সব সুখগুলোকে বিসর্জন দিয়ে দেয়। নিজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চাওয়া পাওয়া গুলোকে হাসিমুখে উড়িয়ে দেয়। সে চায় তার পরিবারের মানুষগুলো যেন ভালো থাকে এবং তার পরিবারের মানুষগুলো যেন খুশিতে থাকে। আসলে বাবা নামক শব্দটি বড়ই অদ্ভুত। হয়তো বাবাকে উপর থেকে অনেকটা কঠোর মনে হয় কিন্তু ভেতরে ভেতরে তাদের মনেও যে কষ্ট লুকিয়ে থাকে তা আমরা বুঝতেই পারি না। যখন কোন বাবা তার সন্তানকে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় তখন সে কতটা পরিশ্রম করে সেটা শুধু একজন বাবাই বলতে পারে। আসলে সন্তানের মুখের হাসি দেখার জন্য একজন বাবা কতটা পরিশ্রম করতে পারে তা শুধু সেই বাবাকে দেখলেই বোঝা যায়। বাবা নামক শব্দটি বড়ই অদ্ভুত মনে হয়। যেই মানুষটি সন্তানদের সুখের কথা ভেবে নিজের সব চাওয়া পাওয়া গুলোকে বিসর্জন দিয়েছে তারই নাম বোধহয় বাবা। সন্তানের সুখের জন্য বাবাদের যত আয়োজন আর সেই সন্তান বড় হয়ে বাবার মুখে হাসি ফুটাতে কতটা ব্যস্ত তা আমাদের বাস্তবতাই প্রমাণ। হয়তো অনেক ক্ষেত্রেই সেটা ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু আমরা সন্তানরা শুধু নিতে জানি দিতে জানি না। এই দোষ শুধুই আমাদের। আমি এমন কোন বাবাকে দেখিনি যিনি সন্তানকে সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসেননি। কিন্তু আমি এমন কোন সন্তানকে দেখিনি যে তার বাবাকে সর্বস্ব দিয়ে ভালোবেসেছে এবং আগলে রেখেছে। আমরা সন্তানরা যদি আমাদের বাবা মাকে তাদের মত করেই ভালোবাসতাম তাহলে হয়তো বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠত না। আমরা যদি তাদের ভালোবাসার মূল্য দিতে জানতাম তাহলে হয়তো বাবা-মার দুচোখে জল পড়তো না।
মা নামক এই ছোট্ট শব্দটির সাথে মিশে আছে আমাদের জীবনের অনেক আবেগ এবং অনুভূতি। মা আমাদের অনুপ্রেরণা। মায়ের কাজ থেকে আমরা ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা পাই। বাবা যেমন আমাদের পাশে থেকে সাহস যোগান তেমনি মা আমাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগান। আসলে বাবা মা নামক শব্দ দুটি আমাদের পাশে আছে বলেই আজ আমরা এতটা বড় হতে পেরেছি। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যেই মানুষগুলো নিজে না খেয়ে আমাদেরকে খাইয়েছেন সেই মানুষগুলো খেয়েছেন কিনা এই কথাটি কিন্তু আমরা একবারও জানতে চাইনি। আমরা অনেক সময় বুঝতেওই পারিনি তারা নিজেদের পছন্দের খাবারগুলো আমাদেরকে খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু আমরা বড় হয়ে তাদেরকে তাদের পছন্দের খাবারগুলো খাওয়াতে পারি না। কারণ আমরা তাদেরকে সত্যিকারের ভালোবাসতেই পারিনি। হয়তো আমাদের এই জীবনে আমরা আমাদের বাবা-মায়ের কাছে অনেক কিছুই প্রত্যাশা করি। হয়তো অনেক ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। কিন্তু এই বাবা-মায়ের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও ভালোবাসা সব ভুল বোঝাবুঝির মাঝে একেবারে হারিয়ে যায়। আমরা একবারও নিজের ভুলগুলোকে শুধরানোর চেষ্টা করি না। কারন আমরা স্বার্থপর সন্তান।
হয়তো তারা আমাদের কাছে খুব বেশি কিছু চায় না। শুধু চায় আমরা ভালো থাকি এবং সুখে থাকি। কিন্তু তাদের সুখের কথা আমরা কখনোই চিন্তা করতে চাই না। কারণ আমরা বড়ই স্বার্থপর। এই জীবনের বাস্তবতায় অনেক দেখেছি হয়তো অনেকেই নিজের মা-বাবাকে একেবারেই ভুলে যায়। তাদের থেকে দূরে সরে যায়। কিন্তু যেই মানুষগুলোর জন্য আজ আমরা সফল সেই মানুষগুলোকে যদি আমরা ভুলে যাই তাহলে আমরা কিসের মানুষ। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা সত্যি অনেক অদ্ভুত। যারা নিজের সর্বস্ব দিয়ে আমাদেরকে ভালোবেসেছেন তাদেরকে আমরা এক বিন্দু ভালোবাসা দিতে পারলাম না। বাবা-মা তোমাদের ভালোবাসি এই কথাটিও কখনো বলতে পারলাম না। ভালোবাসি কথাটি বলতে আমাদের কেন এত সংকোচ এটা বুঝি না। তারা যদি আমাদের জন্য এতটা করতে পারে আমরা কেন আমাদের বাবা-মায়ের ভালো থাকার জন্য তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনা।
হয়তো আমাদের কাছে বাবা মায়ের কোন চাওয়া পাওয়া নেই। তবে তারা যতই বৃদ্ধ হয় ততই শিশুদের মত হয়ে যায়। তারা আমাদের ভালোবাসা পেতে চায়। তারা আমাদের সান্নিধ্য পেতে চায়। তারা চায় আমরাও যেন তাদেরকে ভালোবেসে আগলে রাখি। হয়তো এর মাঝেই তাদের প্রশান্তি। হয়তো জীবনের শেষ দিনগুলোতে তারা ভালো থাকতে চায় এবং তারা আমাদেরকে নিয়েই সব সময় ভালো থাকতে চায়। তাদের চাওয়া পাওয়ার মাঝে হয়তো কোন স্বার্থ লুকিয়ে নেই। কিন্তু তাদের চাওয়া পাওয়ার মাঝে শুধু আছে একটুখানি আকাঙ্ক্ষা। সেটা শুধু আমাদের কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং আমাদের ভালোবাসা পাওয়ার অপেক্ষা। তাই সবাই নিজের বাবা মাকে ভালোবাসুন এবং বেশি করে যত্ন নিন। তবুও সব শেষে একটি কথাই বলতে চাই ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা-মা।
আপু খুব সুন্দর লিখেছেন, আসলে আমরা বাবা মা ঋণ কখনোই শোধ করতে পারবো না।তারা আমাদের জন্য কত কিছুই না করেছে,অথচ তাদের সামান্য চাহিদা গুলো পূরন করতে আমরা পারি না।তারা চাই একটু খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য,কিন্তু আমরা কয়জনই বা এতটুকু পালন করি।ভালো লিখেছেন।ধন্যবাদ
একদম ঠিক বলেছেন আপু বাবা মায়ের ঋণ কখনো শোধ করতে পারব না আমরা। তবুও আমরা সকলেই চেষ্টা করব নিজের বাবা-মার প্রতি নিজের দায়িত্ব গুলো পালন করার জন্য। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।