জীবন যেন অস্তিত্বের লড়াই||আমার বাংলা ব্লগ [10% shy-fox]
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে একটি ব্লগ তৈরি করতে যাচ্ছি। লেখালেখি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝেই চেষ্টা করি গল্প লিখতে। কখনো জীবনের সাথে মিল রেখে কখনো বা কল্পনা থেকে। তেমনি আজকে আমি জীবন যেন অস্তিত্বের লড়াই নামক একটি গল্প লিখে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
জীবন যেন অস্তিত্বের লড়াই:
![break-gfa68e6a79_1280.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRf9DNbVLaz9DEhvKFp7kJ2oZfX6QJ37NBxehzchbrHrm/break-gfa68e6a79_1280.jpg)
Source
জীবন মানেই যেন অস্তিত্বের লড়াই। ক্ষুদ্র এ জীবনে নিজের অস্তিত্বকে ধরে রাখতে দিনের পর দিন লড়াই করে যেতে হয়। নবনীতা ভালোবেসেছিল অনি কে। একটা সময় অনি নবনীতাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো। অনির পাগলামীর কাছে নবনীতা নিজের ভালোবাসা উৎসর্গ করে দিয়েছিল। অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে নবনীতা অনিকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছিল। ভালোই চলছিল তাদের দিনগুলো। হয়তো বিলাসিতা ছিল না তাদের জীবনে। কিন্তু সুখে ভরে ছিল তাদের জীবন। একমুঠো ভাত ভাগাভাগি করে খাওয়ার মাঝেও যেন তাদের আনন্দ ছিল। নবনীতা জীবন সংগ্রামে হার না মানা একটি নাম। নিজেকে টিকিয়ে রাখতে এবং নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে নবনীতা দিনের পর দিন লড়াই করেছে। হয়তো বেঁচে থাকার লড়াই করেছে। কিংবা নিজের অস্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই করেছে।
তবুও যেন কোথাও কমতি ছিল তার। তারপরও তার পাশে থাকা প্রিয় মানুষটি ধীরে ধীরে বদলে গেল। জীবনের সময়টাকেই বদলে দিল। হয়তো অনির জীবনে নবনীতার প্রয়োজন ফুরিয়ে গিয়েছিল। হয়তো নবনীতা আজ তার জীবনে মূল্যহীন। দেখতে দেখতে চারটি বছর পেরিয়ে গেল। চারটি বছর শুধু হতাশায় কেটেছে নবনীতার। হয়তো স্বপ্ন দেখেছে নতুন পথের। হয়তো স্বপ্ন দেখেছে ভালোভাবে বাঁচার। কিন্তু কখন যে পাশের সেই মানুষটি দূরে চলে গেছে বুঝতেই পারেনি নবনীতা। জীবন যুদ্ধে যে পাশে ছিল সে হঠাৎ করেই পিছুটান দিয়েছে। হয়তো ধীরে ধীরে চলে গিয়েছে, কিংবা হঠাৎ করে। তবুও যেন নবনীতা বুঝতেই পারেনি। কারণ তার সরল মনে শুধু তার জন্য ভালোবাসাই ছিল। কখনো তার প্রিয় মানুষটি তাকে ছেড়ে চলে যাবে সেটা বুঝতেই পারেনি।
এই সমাজের মানুষগুলো বড় অদ্ভুত। সবাই কথা শোনাতে পারে কিন্তু পাশে এসে সহায়তা করতে পারে না। নবদ্বীতা শুরু করেছে এক নতুন লড়াই। হয়তো বেঁচে থাকার লড়াই। কিংবা নিজের অস্তিত্বকে এই সমাজের টিকিয়ে রাখার লড়াই। একটু একটু করে নবনীতা নিজেকে প্রস্তুত করছে। নবনীতা বুঝে গিয়েছে এই সমাজের মানুষগুলো তাকে কষ্ট দিবে। তাই তো সবকিছুকে অপেক্ষা করে নিজের জীবনকে নিজের মতো করে তৈরি করার চেষ্টা করছে। হয়তো সেই অদৃশ্য শক্তি এসে নবনীতা কে শক্তি দিয়ে গেছে। না হলে ছন্ন বিছন্ন হৃদয় নিয়ে কবে নবনীতা হারিয়ে যেত ওই দূর অজানায়। কিংবা বিলীন হয়ে যেত মাটির সাথে। কিংবা চলে যেত ওই দূর অজানাতে।
যাকে ভালবেসে নবনীতা ঘর ছেড়েছিল তাকে নিয়ে সুখের স্বপ্ন দেখেছিল। হয়তো সে অনিকের সুখ দুঃখের সাথী ছিল। দুঃখের দিনগুলো হাসিমুখে পার করেছে নবনীতা। নিজের কষ্টগুলো হাসিমুখেই বরণ করেছে নবনীতা। ভেবেছে প্রিয় মানুষটি যখন পাশে আছে হয়তো সুখ কোনদিন ঠিক ফিরে আসবে। হয়তো এটাতেই সুখ আছে। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন সময়ের সাথে বদলে গেল তার প্রিয় মানুষ তখন নবনীতা নিস্তব্ধ হয়ে গেল। প্রিয় মানুষের বদলে যাওয়া নবনীতা কে ভেঙে চুরে চুরমার করে দিয়েছিল। তবুও নবনীতা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। হয়তো ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। তাই নিজেকে শেষ করে দিতে পারেনি। চাইলেই হয়তো নিজেকে শেষ করে দিতে পারতো কিন্তু এই জীবনের বাস্তবতার কাছে নবনীতা আজ অসহায়। যখন নবনীতা বারবার হার মেনে যায় যখনই নবনীতা নিজেকে শেষ করে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু তখনই ভেসে ওঠে তার পরিবারের আপনজনের মুখগুলো আর তার আপন মানুষগুলোর।
দিন যায় সময় যায় কিন্তু নবনীতা সেই আগের মতই রয়ে যায়। কিন্তু কেন জানি আর এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বাঁচতে চায় না নবনীতা। মনে হয় যেন এই পৃথিবীতে শুধুই যেন অস্তিত্বের লড়াই করতে হচ্ছে। হয়তো বেঁচে আছে নবনীতা। কিন্তু তার জীবনের সব সুখগুলো হারিয়ে গেছে। হয়তো পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নবনীতা আজ বেঁচে আছে। যে পরিবারকে নবনীতা সুখ দিতে পারেনি সেই পরিবারকে কাঁদাতেও চায় না তাইতো আজও প্রহর গুনে তার প্রিয় মানুষটির। মাঝে মাঝে নবনীতা অনুভব করে সে হয়তো বেঁচে আছে কিংবা আজও ভাবে তার অস্তিত্ব টিকে আছে এই পৃথিবীতে। বেচেঁ থেকেও আজ সে মৃত। হয়তো বেচেঁ আছে অস্তিত্বে।
হাজারো নবনীতা বেঁচে আছে নিজের অস্তিত্বের লড়াই করে। হয়তো বেঁচে থাকতে হবে বলেই বেঁচে আছে। হয়তো জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাদেরকেও লড়াই করেই বেঁচে থাকতে হবে। নবনীতারা হারতে শেখেনি। কিন্তু ভেঙে চুরমার হয়েও বাঁচতে শিখেছে।
নবনীতা গল্পটি শুরু দিকে অনেক ভালো লেগেছে। নবনীতা ও অনিক দুজনে অনেক সুখেই ছিল। আসলে আপু সবারই কপালে সুখ সহ্য হয় না। নবনীতা হাজার কষ্টের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে চেয়েছিল কারণ তার প্রিয় মানুষটি যদি ফিরে আসে।সত্যিই তো নবনীতা যুদ্ধ করে বাঁচতে শিখেছে নিজেকে শেষ করে নয়।এখন হয়তো আগের নবনীতা নেই কিন্তু তার অস্তিত্বের লড়াই চলবে আজীবন।
আসলে সুখ হয়তো আমাদের জীবনে ক্ষণস্থায়ী। তাইতো নবনীতা ও অনিকের জীবনেও সুখ নেমে এসে হারিয়ে গিয়েছিল। আসলে সুখ হয়তো সবার কপালে আসে না। যাই হোক আপু আপনার মন্তব্য পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন, আসলে হাজারো নবনীতা রয়েছে যারা নিজেদের অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে। আসলে যদি নিজের সকল ভরসা থাকার উপায় সে যদি অস্বীকার করে তাহলে তো সত্যি বাঁচতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু সে ছাড়াও তো নিজের একটা পরিবার রয়েছে। নিজের পরিবারের মুখের দিকে চেয়ে বেঁচে আছে এটাই অনেক। এটাই বা কয়জন পারে। নবনীতার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো।
সত্যি আপু এভাবে হাজারো নবনীতা নিজের অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে। হয়তো তাদের খবর কেউ রাখেনা। কিন্তু তারা সব সময় নিজের সাথে যুদ্ধ করেই টিকে আছে। ধন্যবাদ আপু মতামতের জন্য।
হ্যাঁ কথাটা সত্য এভাবে হাজারও নবনিতা বেঁচে আছে নিজের সাথে, সমাজের সাথে আর ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ করে। নবনিতারা শুধু ভালবাসতেই জানে ঘৃণা করতে নয়। বেশ ভালই তো কাটছিল, নবনিতা আর অনির জীবন। কিন্তু কেন অনি নবনিতার সাথে এ রকমের আচরণ করলো। কি পেল নবনিতা বলতে পারেন?
ঠিক বলেছেন আপু এরকম হাজারো নবনীতা বেঁচে আছে নিজের সাথে, সমাজের সাথে এবং নিজের ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ করে। হয়তো এভাবেই কেটে যায় তাদের জীবন। হয়তো মাঝে মাঝে তারা জীবনে কিছুই পায় না আপু। তবুও জীবন কেটে যায়।
গল্পের শুরুটা বেশ সুন্দর ছিল কিন্তু শেষের অংশটুকু পড়ে খুব খারাপ লাগছিল। আসলে আমাদের সমাজে এমন অনেক মেয়ে আছে যারা ভালোবাসার মানুষের কারণে পরিবারের থেকে দূরে সরে গিয়ে ভালোবাসার লোকের হাত ধরে চলে যায় কিন্তু একসময় ভালোবাসার মানুষটি তাকে মাঝ পথে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। এভাবে হাজারো নবনীতা নিজের জীবন থেকে ছুটি নিয়ে নেয়।
সত্যি আপু আমাদের সমাজে এমন অনেক মেয়ে আছে যারা ভালোবাসার মানুষটির জন্য নিজের পরিবার থেকে দূরে সরে গিয়েছে। কিন্তু শেষে যখন সেই মানুষটিও হাত ছেড়ে চলে যায় তখন সত্যি অনেক খারাপ লাগে। হয়তো বাধ্য হয়ে হাজারো নবনীতা নিজের জীবন থেকে ছুটি নিয়ে নেয়। আপু আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।