নাটক রিভিউ-দ্বিতীয় আলো||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। নাটক দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। প্রত্যেক সপ্তাহে একটি করে নাটক রিভিউ শেয়ার করি। আজকেও একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করবো। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
নাম | দ্বিতীয় আলো |
---|---|
পরিচালনা | এস আর মজুমদার |
সম্পাদনা | সালাহ্ উদ্দিন |
গল্প | সোলাম সরোয়ার অনিক |
অভিনয়ে | সাবিলা নূর, জুনাইদ ও আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৪২ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- সাবিলা নূর (মিতু)
- জুনাইদ (সোহাগ)
নাটকের শুরুতেই দেখতে পারি একটি মেয়ে তার ড্রেস তৈরি করার জন্য টেইলার্সে গিয়েছে। টেইলার্স থেকে ফেরার সময় তার বাবার সাথে দেখা হয়ে যায়। তার বাবা যখন বাইরে যায় তখন পাড়ার একটি মুরুব্বী উনার কাছে জানতে চায় মিতুর ডিভোর্স হয়েছে কিনা। মিতুর ডিভোর্স হয়েছে এই কথা শুনে সেই মুরুব্বি অনেক আজেবাজে কথা বলে। আর দূর থেকেই সেই কথাগুলোর প্রতিবাদ করে সোহাগ। সোহাগ হলো সেই টেইলার্সের লোকটি। সেই মুরুব্বী লোকটি মিতুর বাবাকে বলে মেয়েকে যেন তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয়। কারণ তার ঘরে আরও একটি মেয়ে আছে।
মিতু নিজে কিছু করতে চায়। নিজে স্বাবলম্বী হতে চায়। ডিভোর্সের পর কারো বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। সেজন্য সে টিউশনি করাতে শুরু করে। সে যখন টিউশনি করাতে যায় সেখানে যাওয়ার তার ছাত্রীর বাবা তাকে নোংরা প্রস্তাব দেয় এবং তাকে বাজেভাবে কথা বলে। ডিভোর্সি হওয়ার কারণে সেই লোকটি তার সাথে খুবই বাজে আচরণ করে। মিতু সেখান থেকে বেরিয়ে আসে এবং টিউশনি ছেড়ে দেয়। এরপর মিতু কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না। তাই গ্রামের অন্য একটি ছোট ভাইয়ের কাছে যায় এবং বলে তাকে যেন অন্য কোন টিউশনি ম্যানেজ করে দেয়। সেই ছেলেটি তাকে টিউশনি ম্যানেজ করে দেয় আর বিনিময়ে সে তার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে চায়। তার কথার ধরন শুনে মিতু বুঝতে পারে ছেলেটির মনে খারাপ চিন্তা ভাবনা এসেছে। তাই মিতু ভীষণ মন খারাপ করে আর তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়।
এরপর মিতু কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছিল না। এবার মিতু সোহাগের সাথে দেখা করে এবং তাকে বলে সে যেন তার টেইলার্সে কাজে নেয়। সোহাগ এই প্রস্তাবে রাজি হচ্ছিল না। এরপর জানায় বিকেলের মধ্যে সে জানাবে তাকে কাজ দিতে পারবে কিনা। এরপর বিকেলে সোহাগ এবং মিতু দেখা করে। সোহাগ তাকে বলে সে যেহেতু ডিজাইন করে ড্রেস তৈরি করতে পারে তাই সে ডিজাইন করে ড্রেস তৈরি করবে। আর মিতু যেন অনলাইনে এটি পেজ খুলে তার তৈরি করা ড্রেস বিক্রি করে। আর লাভের অংশ তারা দুজনেই ভাগাভাগি করে নিবে। মিতু প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। কারণ এই ধরনের কাজ করার অভিজ্ঞতা তার নেই। এরপর সোহাগের উৎসাহে মিতু রাজি হয়ে যায়। সোহগ সবকিছুর ব্যবস্থা করে দেয়।
সোহাগের উৎসাহে মিতুর আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। এবার মিতু নিজ উদ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে লেগে পরে কাজে। কিছুদিনের মধ্যেই সে সফল হয়ে যায়। বিক্রি বাড়তে শুরু করে এবং সবাই তার কাছ থেকে ড্রেস কিনে। এই কাজের জন্য মিতু ভীষণ খুশি হয়েছিল। কারণ সে বেশ সফল হয়েছিল। লাভের অংশের টাকা তারা দুজনে ভাগাভাগি করে নিয়েছিল। ভালোভাবে কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। একদিন হঠাৎ করে সেই গ্রামের মুরুব্বী লোকটি মিতুর বাবাকে আবারও বিভিন্ন রকমের কথা শোনায় এবং বলে সে মেয়ের ইনকামের টাকা খাচ্ছে এবং বিভিন্ন রকমের আজেবাজে কথা শোনায়। এসব শোনার পর মিতুর বাবা খুব রেগে যায়। আর মিতুর সাথে খুবই রাগারাগি করে। এরপর মিতু তার বাবাকে সব কিছু বোঝায়। এরপর ধীরে ধীরে তাদের ব্যবসাটা ভালো পর্যায়ে চলে যায়।
হঠাৎ একদিন সোহাগ এবং মিতু দেখা করে। সোহাগ যেদিন মিতুকে একটি উপহার দেয়। উপহারটি দেখে মিতু অবাক হয়ে যায়। কারণ এটি ছিল তার বিক্রি করা প্রথম ড্রেস। তখন সোহাগ বলে সে মিতুকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য নিজেই ড্রেসটি কিনেছিল। মিতু বলে সে তার জন্য অনেক করেছে। সোহাগ তার কাছে কিছু চায় কিনা এটা জানতে চায়। তখন সোহাগ বলে সে যেটা চায় সেটা চাওয়া হয়তো ঠিক হবে না। কারণ বি.এ পাস একটি মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিষয়টি অন্য রকমের হতে পারে। এই কথা শুনে প্রথমে মিতু মন খারাপ করে। এরপর যখন চলে যেতে শুরু করে হঠাৎ করে পিছনে ফিরে বলে তাকে বিয়ে করতে হলে তার বাবা-মার সাথে কথা বলতে হবে। এরপর দুজনে হাসিমুখে পথ চলতে শুরু করে আর নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
এই নাটকটি আমার কাছে খুবই শিক্ষনীয় লেগেছে। একজন মেয়ে যখন ডিভোর্সি হয় তখন তার চারপাশের মানুষগুলো তাকে অপমান করে কথা বলতে ছাড়ে না। বাজে ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করে সব সময়। সেই সব মানুষগুলোর কাছে ডিভোর্সি মানেই হয়তো চরিত্রহীন কেউ। এই নাটকটির মাধ্যমে সেরকম একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তবে মিতুর পাশে সোহাগ দাঁড়িয়েছিল বলেই মিতু ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে এবং দ্বিতীয় আলোর সন্ধান পেয়েছে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
https://x.com/Monira93732137/status/1838771918268436775?t=aYVzFiTxSQwsazT085Yv6w&s=19
বেশ সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপু৷ আসলেই নাটকটির কাহিনী খুবই সুন্দর এবং শিক্ষনীয়। আমাদের সমাজে ডিভোর্সি নারীদের আসলেই বেশ খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হয়, এবং সুযোগে কেউ কেউ নোংরা ইঙ্গিত করতেও ছাড়ে না। তবে ডিভোর্স মানেই জীবনের শেষ না। নতুন ভাবে নিজেকে সাবলম্বি করে নতুনভাবেও বাঁচা যায়। এক্ষেত্রে পরিবারের মানুষ গুলোরও উচিত বাহিরের মানুষের কথার সঠিক জবাব দেয়া এবং মেয়েটির পাশে দাঁড়ানো।
নাটক দেখতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আর এই নাটকটি সত্যিই দারুন ছিল। অনেক সুন্দর করে সমাজের বাস্তব চিত্র গুলোই তুলে ধরা হয়েছে।
ঠিক বলেছেন এরকম নাটক গুলো প্রায় দেখা যায়। আমি কিছুদিন আগে একদিন রাত্রে এরকম একটি ডিভোর্সি নাটক দেখেছিলাম। আপনি আজকে দেখলাম একটি শিক্ষনীয় নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। ব্যস্ততার কারণে তেমন দেখা হয় না। আজকে আপনার এই ভিডিওটি দেখে ভালো কিছু শিখতে পারবে সবাই।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া ডিভোর্সি মেয়েদেরকে সবাই অনেক অপমান করে। আর এই সমাজের মানুষগুলোর কাছে তারা বারবার আঘাত পায়। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
দ্বিতীয় আলো নাটকের রিভিউ পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।সমাজে ডিভোর্সি নারীদের অন্য চোখে দেখা হয়।বাস্তবিক একটি নাটক ছিল,একদিন দেখার চেষ্টা করব নাটকটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
এই নাটকটি সত্যি অনেক শিক্ষনীয় ছিল। বিশেষ করে সমাজের বাস্তব চিত্র গুলোই তুলে ধরা হয়েছে আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
নাটকের নামটা যেমন সুন্দর নাটকটাও বেশ সুন্দর এবং শিক্ষনীয়। এ ধরনের নাটক গুলো দেখতে আমার বেশ ভালো লাগলো। আসলে আমাদের সমাজের মানুষগুলো বাহির থেকে যা দেখে সেটা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে তবে ভিতরটা বুঝতে চায় না। নাটকের শেষটা বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটা নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু নাটকের নামটি যেমন সুন্দর তেমনি নাটকটি অনেক শিক্ষনীয়। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে নাটকটি।
এই নাটকটার কয়েকটা শর্ট ভিডিও দেখেছিলাম আমি। কিন্তু নাটকটা সম্পূর্ণভাবে দেখা হয়নি। নাটকটা সম্পূর্ণভাবে না দেখা হলেও, আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে সহজেই নাটকের পুরো কাহিনীটা জেনে নিতে পারলাম। আর পুরো কাহিনীটা জানতে পেরে তো অনেক ভালো লাগছে। আর আমি যদি সময় পাই তাহলে নাটকটা দেখারও চেষ্টা করবো।
ভাই আপনি সময় পেলে নাটকটি দেখতে পারেন। আশা করছি আপনার কাছেও ভালো লাগবে। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
আপু আপনি সাবিলা নূরের খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সময়ের অভাবে অনেক দিন ধরে নাটক দেখা হয় না। সাবিলা নূরের অভিনয় খুব সুন্দর হয়েছে। সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আপনি সবসময় আমাদের মাঝে খুব সুন্দর কিছু নাটকের রিভিউ শেয়ার করে আসছেন৷ আজকেও খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন৷ এই নাটকের ছোট ছোট ক্লিপ আমি দেখেছিলাম৷ তবে পুরো নাটকটি দেখার এখনো সময় পাইনি৷ তবে অবশ্যই সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷ আর আজকের আপনার এই নাটকের রিভিউ এর মাধ্যমে নাটকটি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম৷
নাটকটির গল্প আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। বেশ শিক্ষনীয় একটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। আসলে আমাদের সমাজে ডিভোর্সি মেয়েরা নিরাপদ নয়। তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কটু কথা শোনানো হয়। সময় পেলে নাটকটি দেখব। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।