নাটক রিভিউ-তোমার প্রেমে বাজি|
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। গতকাল রাতে যখন কিছুই ভালো লাগছিল না তখন এই নাটকটি দেখেছিলাম। তাই ভাবলাম আপনাদের মাঝে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করি। আসলে এই নাটকটি আমার কাছে যতটা ভালো লেগেছিল তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে কখন যে চোখে পানি চলে এসেছিল বুঝতেই পারিনি। আশা করছি নাটক রিভিউ পড়ে সবার ভালো লাগবে।
নাম | তোমার প্রেমে বাজি |
---|---|
প্রযোজক | সুজন মাহমুদ |
পরিচালনা | জাকারিয়া সৌখিন |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান, তাসনিয়া ফারিন ও আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৫৬ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ২৯ মে ২০২২ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- মুশফিক আর ফারহান (রনি)
- তাসনিয়া ফারিন (মিতু)
নাটকের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই গল্পের নায়িকা মিতু হসপিটালে দাঁড়িয়ে আছে। আর তার সামনে দিয়ে একটি ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছেলেটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এই দৃশ্য দেখে মিতুর চোখে জল চলে এসেছে। এরপর তার মনে পড়ে গিয়েছিল সেই পুরনো দিনগুলোর কথা। মিতুর সাথে রনির পরিচয় হয়েছিল হঠাৎ একদিন রাস্তায়। মিতু শীতার্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য ক্যাম্পেইন করছিল। আর তখনই রনির সাথে প্রথম দেখা হয়। প্রথম দেখাতেই রনি মিতুকে ভালোবেসে ফেলে। এরপর রনি মিতুর পিছু পিছু ঘুরতে থাকে। যদিও মিতুকে কিছু বলে না। তবে সব সময় মিতুকে ফলো করতে থাকে। যদি কেউ মিতুকে কিছু বলে তখন তার প্রতিবাদ জানায়।
এভাবেই কাটছিল তাদের দিনগুলো। এরপর মিতুও ধীরে ধীরে বুঝতে পারে সেও রনিকে মনে মনে পছন্দ করতে শুরু করেছে। রনি ছিল অনেক বড়লোকের ছেলে। কিন্তু তার জীবন ধরা ছিল অনেকটা এলোমেলো প্রকৃতির। কিন্তু মিতুকে দেখার পর সে নিজেকে পাল্টে নিয়েছে। ধীরে ধীরে নিজেকে শুধরে নিয়েছে। এবার ধীরে ধীরে মিতুর সাথে রনির বেশ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। হয়তো ভালোবাসি এই কথাটি বলতে পারেনি। তবে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল তাদের। এরপর একদিন মিতুর ভীষণ মন খারাপ ছিল। তখন রনি জানতে পারে মিতুর বিয়ে ঠিক হয়েছে। এই কথা শুনে রানির ভীষণ মন খারাপ হয়ে যায়। মিতু জানায় তার ইচ্ছার অমতেই তার বাবা-মা তার বিয়ে ঠিক করেছে। আর ছেলে দেশের বাইরে জব করে। মিতু অনেকটা বাধ্য হয়ে বিয়েতে রাজি হয়েছে। এই কথা শুনে রনি অনেক কষ্ট পায় এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এরপর মিতুর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ভিডিও কলের মাধ্যমে মিতুর বিয়ে হয়ে যায়।
মিতুর বিয়ের পর আর রনির সাথে সেভাবে কখনো দেখা করেনি। কিংবা কখনো যোগাযোগ হয়নি। একদিন রনি গাড়ি করে যাচ্ছে হঠাৎ করে দেখতে পায় মিতু সাদা শাড়ি পড়ে হেঁটে যাচ্ছে। এটা দেখে রনি অনেক অবাক হয়ে যায়। এরপর মিতুর এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ করে এবং দেখা করে। এরপর সে জানায় আসলে মিতুর স্বামী একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য মিশনে গিয়েছিল। আর সেখানে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়েছে। সবাই ধারণা করছে হয়তো সে মারা গেছে। তখন থেকেই মিতু সাদা শাড়িতে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে। আর তার জীবনটাও বেরঙিন হয়ে গেছে। এই কথা শুনে রনি মিতুর বাসায় চলে যায়। রনিকে দেখে মিতু অবাক হয়ে যায়। এরপর রনি মিতুকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু মিতু এই কথা শুনে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে অনেক কান্না করে।
রনি আবারও মিতুর পিছে পিছে ঘুরতে লাগে। মিতুকে নতুনভাবে জীবন সাজাতে বলে। রনি মিতুর নতুন জীবনের সঙ্গী হতে চায়। কিন্তু মিতু কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। এরপর মিতুর মা মিতুকে অনুরোধ করে সে যেন রনিকে বিয়ে করে। এবার মিতু রাজি হয়ে যায়। এরপর রনি মিতুর জন্য রঙিন শাড়ি কিনে আনে এবং নিজ হাতে তাকে সাজিয়ে দেয়। এরপর তারা ঘুরতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা অনেক সুন্দর সময় কাটায়। আর নিজেদের ছেলে মেয়ের নাম ঠিক করে ফেলে। মিতু জানায় ছেলে হলে নাম রাখবে রংধনু আর মেয়ে হলে নাম রাখবে প্রজাপতি। এটা শুনে দুজনে অনেক আনন্দ পায় এবং অনেকটা ভালো সময় কাটায়।
মিতু বাসায় ফিরে এসে অনেকটা চমকে যায়। কারণ তার হাজবেন্ড সেখানে এসেছে। তার হাজবেন্ডকে জীবিত দেখে মিতু অনেকটা অবাক হয়ে যায় এবং বুঝতে পারছিল না কি করবে। এরপর মিতুর মা মিতুকে অনুরোধ করে যাতে সবকিছুই ঠিকভাবে মেনে নেয়। আর তার হাজবেন্ডকে কোন কিছু বলতে নিষেধ করে দেয়। এই কথা শুনে মিতু ভীষণ কষ্ট পায়। এরপর সে রনিকে সবকিছু জানায় এবং রনির সাথে দেখা করতে চায়। এবার যখন মিতু রনির সাথে দেখা করে তখন মিতু বলে আসলে সে তার জীবনসঙ্গী হওয়ার ভাগ্য নিয়ে জন্মায়নি। হয়তো তাদের কপালে সুখ লেখা নেই। হয়তো তাদের জীবনের পথ চলা আর কখনোই হবে না। এসব বলে মিতু সেখান থেকে চলে যায়। আর রনি অনেক ভীষণ কষ্ট পায়। এরপর অনেকদিন পর রনি এবং মিতুর আবারো দেখা হয়। মিতু ডক্টরের কাছে এসেছিল চেকআপের জন্য। কারণ সে মা হতে চলেছে। আর অন্যদিকে রনি সেই হসপিটালে ভর্তি আছে। সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এরপর মিতু রনির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আর রনি তাকে দেখে চোখের জল ফেলে। মিতু ভীষণ কষ্ট পায় আর সেখান থেকে ফিরে আসে। এভাবেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
নাটক দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে। তবে এই নাটকটি দেখে কখন জানি দু চোখে জল চলে এসেছিল। আসলে আমাদের জীবনের বাস্তবতা অনেক বেশি কঠিন। হয়তো অনেক সময় ভালোবাসলেও প্রিয় মানুষটির সাথে ঘর বাঁধা হয়ে উঠে না। হয়তো জীবনে অনেক সুযোগ আসে কিন্তু পরিবার পরিস্থিতি সেই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে দেয় না। কিংবা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে বাঁচতে দেয় না। অনেক সময় ভাগ্য প্রিয় মানুষটির সাথে জীবন কাটানোর সুযোগ দেয় না। এভাবেই হয়তো হাজারও রনি ভালোবেসে নিজের জীবনটা শেষ করে দেয়। কিংবা মিতুর মত মেয়েরা বুকে কষ্ট নিয়ে অন্যের ঘর করে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রবেশ করি তখন সুন্দর সুন্দর নাটক গুলো দেখা যায়। মাঝে মধ্যে চেষ্টা করি সুন্দর নাটক দেখার যদি সময় সুযোগ হয়। তবে সব সময় দেখার সুযোগ হয় না। আপনি আজকে সুন্দর নাটক রিভিউ দিলেন। তোমার প্রেমের বাজি নাটকটি আমাদের সাথে ফিরিয়ে দিলেন। নাটক রিভিউ দেখে খুব ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন আপু মাঝে মাঝে নতুন নতুন নাটক সামনে চলে আসে। এই নাটকটি দারুন ছিল। তাইতো নাটক রিভিউ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
ফারহান আর ফারিন এর নাটক দেখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনার নাটক রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। এই নাটক এখনো দেখা হয়নি তবে মনে হচ্ছে এর গল্প খুবই সুন্দর। সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। সত্যিই বাস্তবতা খুবই কঠিন। প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক কেন জানি এই সমাজ মেনে নিতে পারে না। তাই তো ভালোবাসলেও অনেক সময় একসাথে ঘর বাঁধা যায় না। আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
ফারহান আর ফারিন আমাদের সবার খুবই পছন্দের। এই নাটকটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছিলো। আপু আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আসলে ভীষণ কষ্টদায়ক নাটকের শেষ মুহূর্তটা। আমি এই নাটকটি দেখিনি কিন্তু আপনার নাটকের রিভিউটি করে বুঝতে পারলাম ভালোবাসার জন্য মানুষ কত কিছুই না করতে পারে। ভাবতেছি আজকে রাতেই নাটকটি দেখব ঘুমানোর সময়। বাস্তবে এরকম টাই নাটকের মত হয়ে থাকে। নাটকগুলো দেখলে আমার নিজেরও চোখের পানি চলে আসে। যাইহোক আপু আপনার নাটকের রিভিউটি সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করেছেন।
নাটকের শেষ মুহূর্তটি অনেক বেশি কষ্টের ছিল। আপু আপনি সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখতে পারেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।
অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ করেছেন ৷ আপনার রিভিউ পড়ে বেশ ভালো লাগলো ৷ মুশফিক আর ফারহানের নাটক গুলো আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ প্রত্যেকটা নাটক দেখার চেষ্টা করি ৷ তবে এই নাটকটি দেখা হয়নি , আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ সময় করে একদিন এই নাটকটিও দেখে ফেলতে হবে ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ৷
ফারহান আর ফারিন দুজনের ভালো অভিনয় করেছে। আপনি নাটক দেখার চেষ্টা করেন জেনে ভালো লাগলো। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
মুশফিক আর ফারহান আমার অনেক পছন্দের একজন নায়ক। আমি তার কম বেশি সব গুলো নাটক দেখছি।আপনার রিভিউ করা নাটক টি দেখছি আমি। খুবই সুন্দর একটা নাটক। আপনি চমৎকার ভাবে নাটকটির রিভিউ শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
মুশফিক আর ফারহান আমারও অনেক পছন্দের অভিনয় শিল্পী। উনার নাটকগুলো বেশ ভালো লাগে। ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমি কিন্তু আপু নাটকটি দেখেছিলাম। আর নাটকটি দেখে অনেক কেঁদেও ছিলাম। দারুন ছিল কিন্তু নাটকটি। আমার নাটকটি দেখে ফারহানের জন্য বেশ মায়া হয়েছিল। অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ করেছেন আপু। আর নাটকটি দেখে কেন জানি ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস টাই কমে গেছে। দারুন করে রিভিউ করেছেন আপু। শুভ কামনা রইল।
এই নাটকটি দেখে আমিও কান্না করেছিলাম। জীবনের বাস্তবতা অনেক বেশি কঠিন আপু। আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
দুজনই আমার খুব পছন্দের ফারহান এবং ফারিন, ফারিনের এজাবৎ কোন নাটক আমি মিস করিনি। গল্পটা বেশ ভালো লাগলো সময় পেলে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব।
মুশফিক আর ফারহান ও ফারিন আপনার পছন্দের অভিনয়শিল্পী যেন ভালো লাগলো। এই নাটকটির গল্প সত্যি দারুন ছিল। সময় পেলে অবশ্যই দেখবেন ভাইয়া।
মাঝেমধ্যে নাটক দেখতে বেশ ভালই লাগে সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। যদি এখনো নাটকটি দেখা হয়নি ।তবে পুরো নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপু আপনি যেহেতু এই নাটকটি দেখেননি তাই সময় পেলে একবার দেখতে পারেন। আশা করছি আপনার কাছে ভালো লাগবে।
আপু আমিও নাটক দেখতে ভীষণ পছন্দ করি।সময় সুযোগ পেলেই নাটক দেখি।আপনার আজকের নাটকের রিভিউটি পড়ে বুঝলাম নাটকটি কষ্টের।ভালোবেসে ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে ফেলা সত্যি ই খুব কষ্টের।আপনি খুব সুন্দর ভাবে নাটকের রিভিউ টি শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ আপু। সময় পেলেই নাটকটি দেখবো আশাকরি।
দারুন একটি নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটকটি রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে মিতু ও রনির ভালোবাসার অভিনয়গুলো অসাধারণ হয়েছে। আসলে নাটকের মধ্যে ভালোবাসার বেদনার সুর দারুন ভাবে ফুটে উঠেছে। সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখবো। এ ধরনের নাটক গুলো দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।