জেনারেল রাইটিং-আগুনের ভয়াবহতা||

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার


আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে লিখতে আমার বেশ ভালো লাগে। তবে এবার যেই বিষয়টি নিয়ে লিখতে চলেছি সেই বিষয়টি নিয়ে লিখতে গিয়ে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছে। আসলে আগুনের ভয়াবহতা আমরা হয়তো সকলেই উপলব্ধি করতে পারি। আর যখন এই ভয়াবহতা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি তখন হৃদয়ের মাঝে ক্ষত তৈরি হয়। তাইতো আমি আগুনের ভয়াবহতা নিয়ে কিছু কথা উপস্থাপন করতে যাচ্ছি।


আগুনের ভয়াবহতা:

IMG_20240301_230044.jpg


গতকাল থেকে একটি নিউজ বারবার চোখের সামনে ভেসে আসছে। রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এটা হয়তো আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার কথা হয়তো আমরা সেভাবে বুঝতে পারছি না। কিন্তু যারা তাদের নিজেদের সজন হারিয়েছে তারা সেই কষ্ট হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে পারছে। হয়তো অনেক মানুষের আর্তনাত ছিল সেই অগ্নিকাণ্ডের মাঝে। হয়তো তাদের চিৎকার কারো কানে পৌছায়নি। হয়তো ছোট্ট শিশুটি বুঝতেই পারেনি কিভাবে তার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। হয়তো কোন বাবা তার সন্তানকে নিজের চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখেছে। আর সেই করুন দৃশ্যগুলোর কথা ভাবতেই দুচোখে জল চলে আসছে।


যেহেতু এই ভবনটি একটি মার্কেটপ্লেস ছিল তাই অনেক লোকের সমাগম ছিল। হয়তো অনেকে তাদের প্রয়োজনে সেখানে গিয়েছিল। হয়তো অনেকে সন্তানের ইচ্ছে পূরণের জন্য সেখানে গিয়েছিল। কেউবা পরিবারের আবদার পূরণের জন্য সেখানে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের আর ফেরা হলো না। হয়তো ঘরে তাদের আপনজন অপেক্ষায় ছিল কখন তারা ফিরবে। কিন্তু সন্তানের ইচ্ছে পূরণ করে সেই বাবা হয়তো আর ঘরে ফিরতে পারল না। আর সন্তানের হাসি মুখ দেখতে পেল না সেই পরিবারের মানুষগুলো। যখন তারা বাসা থেকে বের হয়েছিল তখন হয়তো জানতোই না এই বের হওয়াই তাদের জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াবে। হয়তো তাহলে তাদের জীবনটাও বদলে যেতে পারত। কিন্তু জীবন চলে জীবনের মতই। কখন কোথায় জীবন থমকে দাঁড়াবে আমরা কেউ জানি না।


যখন অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা চোখের সামনে আমরা দেখি তখন হয়তো চিৎকার করার ভাষা থাকে না। হয়তো চিৎকার করার ভাষা হারিয়ে যায়। কারণ সেই আগুনের মাঝে জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছে হাজার মানুষের স্বপ্ন। হয়তো সেই আগুনের শিখায় হাজার মানুষের স্বপ্নগুলো নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। হয়তো বা কারো সাজানো শখের ঘর পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগুনের এই ভয়াবহতা দেখে নিজেকে সামলে রাখা অনেক বেশি কঠিন। আর যারা নিজেদের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলে তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হয়তো জানা নেই। তবে সেই মানুষগুলোর মনের অবস্থা কি হতে পারে এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। যারা নিজেদের আপন মানুষগুলোকে হারিয়েছে তাদের অনুভূতিটা কেমন এটা ভাবতেই দু চোখের কোনে জল চলে আসছে।


আগুনের লোলিহান শিখা যখন চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে তখন হয়তো হাজারো মানুষ বাঁচার আর্তনাদ করেছে। হয়তো তাদের চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি। যে যার মত নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে আবারো আটকে যায় সেই অগ্নিকাণ্ডের মাঝে। হয়তো প্রাণ বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয়ে নিজেকে সঁপে দেয় সেই আগুনের শিখার মাঝে। আর শেষ হয়ে যায় তাজা প্রাণ। আর শেষ হয়ে যায় তাদের হাজারো স্বপ্ন। সেই সাথে একটি পরিবার স্বপ্ন দেখতে ভুলে যায়। কারণ স্বপ্ন পূরণের সেই মানুষগুলো তাদের জীবন থেকে হারিয়ে যায়।


যখন সংবাদপত্রে কিংবা বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো দেখি তখন সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। আর বর্তমানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যেন একেবারে বেড়েই চলেছে। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদেরকে আরো বেশি কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে। হয়তো আর একটু সচেতনতা আমাদের চারপাশের মানুষগুলোকে ভালো রাখতে পারতো। কিংবা যারা এই অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছে তাদেরকে ভালো রাখতে পারতো। হয়তো কিছু কিছু মানুষের অসচেতনতাই সেই সব অসহায় মানুষগুলোকে শেষ করে দিল। সেই সাথে শেষ হয়ে গেল সেই সব পরিবারের স্বপ্ন আর বেঁচে থাকার অবলম্বন। তবুও হয়তো আমরা সবটা মেনে নিতে বাধ্য হই। কারণ মানিয়ে নেওয়ার নামই জীবন। আমরা সবাই দোয়া করি যারা এই অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার শিকার হয়েছেন তারা যেন পরপারে ভালো থাকেন। আর যারা অগ্নিকাণ্ডের সাথে লড়াই করে জীবন রক্ষা করতে পেরেছেন তারা যেন জীবনের ভয়াবহ স্মৃতিগুলো মুছে ফেলে নতুনভাবে নতুন স্বপ্নে বাঁচতে পারে এই প্রত্যাশাই করি।



আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230828_190629.jpg

আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।

Sort:  
 4 months ago 

বেইলিরোডের অগ্নি দুর্ঘটনায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার জন্য শান্তি কামনা এবং যারা দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি তারা যেন সুস্থ হতে পারে। আসলেই আপু বর্তমানে অগ্নি দুর্ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের কারণেই এসব হচ্ছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

অগ্নিকান্ডের এই ভয়াবহতা দেখে সত্যিই অনেক খারাপ লেগেছে ভাইয়া। ঠিক বলেছেন ভাইয়া অগ্নিকান্ড দিনের পর দিন বেড়ে যাচ্ছে।

 4 months ago 

আসলেই আপু এমনটা হতে পারে হয়তো কিছু মানুষের অসচেতনতার কারণে এতগুলো মানুষের তাজা প্রাণ ঝরে গেল আর মানুষগুলোর স্বপ্নটা থেমে গেল। হ্যাঁ সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু কিছু সংবাদ শুনতে গিয়ে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি এতটা খারাপ লেগেছে।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

সত্যি ভাইয়া কিছু মানুষের অসচেতনতা হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। আর শেষ হয়ে যায় অনেক পরিবার।

 4 months ago 

এই ঘটনাটার কথা আমি গতকালকে শুনেছিলাম এবং কি ফেসবুকে এইটা দেখেছিলাম। আসলে এই বিষয়টা শোনার পর আমার কাছে সত্যি খুব খারাপ লেগেছিল। অনেক আপন মানুষকে অনেক আপনজন পুড়তে দেখেছে। আর এই সব কিছু সত্যি অনেক বেশি কষ্টকর ছিল। আর এসব কিছু ভাবতে আসলেই চোখে জল চলে আসতেছে। আজকে আপনি সেই আগুনের ভয়াবহতা নিয়ে পোস্ট লিখেছেন। আসলে প্রত্যেকটা মানুষকে সচেতন থাকা উচিত। কারণ কোন সময় কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারে আমাদের জীবনে, এটা আমরা কেউই জানিনা। ওই মানুষগুলো আগুন লাগার এক মিনিট আগে পর্যন্ত না তাদের জীবনে এক মিনিট পর কি হতে চলেছে।

 4 months ago 

এই খবরটি চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাইতো সবাই খুবই কষ্ট পাচ্ছে। তাইতো আমিও নিজের অনুভূতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আপু।

 4 months ago 

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যতবারই দেখছি ততবারই যেন কষ্ট লাগছে। এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় যারা মারা গিয়েছেন তাদের জন্য অনেক দোয়া করি৷ যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তারা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়৷ এরকম ঘটনা প্রতিনিয়ত শোনা যায় এবং এই ঘটনাগুলোর পিছনে মানুষের অসচেতনতা সবচেয়ে বড় কারণ৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে এই পোস্টটি পড়ে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

 4 months ago 

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের খবর যতবার দেখি ততবারই খারাপ লাগে। আর অসহায় মানুষগুলোর কথা মনে হলে হৃদয় কেঁদে ওঠে। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

জি আপু৷ আমারও। ওই ঘটনার কথা শুনলে আমার মনের মধ্যেও অনেক কষ্ট লাগে।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আসলে গতকাল যখন অগ্নি দূর্ঘটনার খবরটি বার বার দেখছিলাম আর নিজের কাছে ভীষণ খারাপ লাগছিল। সবথেকে বড় ব্যাপার এতবড় একটা দালান কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যাবস্থা ছিল না। যাইহোক উপর ওয়ালা হয়তো তাদের নিয়তিতে এটাই লিখেছিলেন কিন্তু তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো যদি আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যাবস্থা থাকতো। যাইহোক আমরা আমাদের অবস্থানে সতর্ক থাকবো এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। ধন্যবাদ আপু নিজের অনুভূতিগুলো গুছিয়ে লিখার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

সত্যি ভাইয়া বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের খবরটা শোনার পর থেকেই ভীষণ খারাপ লাগছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল না জন্যই আরো বেশি সমস্যা হয়েছে।

 4 months ago 

আসলে হঠাৎ করে যদি এরকম কোন দুর্ঘটনার কথা শুনি, তখন নিজের মনের মধ্যে অন্যরকম কষ্ট লাগে এবং কি গা শিউরে ওঠে। ওই মানুষগুলো জানতো না কিছুক্ষণ পরেই তাদের সাথে এরকম কিছু ঘটবে। আগুনটা এরকম ভাবে লেগেছিল যে, অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল এই আগুনের কারণে। আমি দেখেছিলাম এই দুর্ঘটনার কারণে প্রায় 43 জন মানুষ মারা গিয়েছিল। সব সময় এরকমটাই দোয়া করি, যেন এরকম দুর্ঘটনা সম্মুখীন কোন মানুষ না হয়। কারণ আপনজন হারানোর কষ্টটা সত্যি খুবই কষ্টকর হয়ে থাকে। নিজেকে কন্ট্রোল করা যায় না যদি এরকম একটা ঘটনার কথা হঠাৎ করেই শুনি।

 4 months ago (edited)

সেই সব মানুষগুলোর কথা মনে পড়লে দুচোখে পানি চলে আসে। কত পরিবার তাদের আপনজন হারিয়েছে। কত মানুষ প্রিয় মানুষকে হারিয়েছে এটা ভাবতে কষ্ট লাগে।

 4 months ago 

নিউজে যখন অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনছিলাম তখন খুব খারাপ লেগেছে। ওই বিল্ডিং এ আমিও বেশ কয়েকবার গিয়েছি। তাছাড়া মানুষের মৃত্যু কত কাছে তাই মনে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসচেতনতার কারণেই এত বড় বড় অগ্নি কান্ড গুলো ঘটে। কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে পরে গিয়ে। যাই হোক ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে।

 4 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু মানুষের মৃত্যুর খুবই কাছে। কখন কার মৃত্যু হবে আমরা কেউ জানিনা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

 4 months ago 

ঢাকা শহরে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ঘটেই চলেছে। তবে জানিনা এর শেষ কোথায়। বেইলি রোডের এই অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দেখলে ভীষণ খারাপ লাগে। কতগুলো প্রাণ কিভাবে নিঃশেষ হয়ে গেলো। শিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছে। কিন্তু সেই ভবনটিতে এতগুলো গ্যাসের সিলিন্ডার বোতল না থাকলে,আগুন এতো দ্রুত ছড়িয়ে যেতো না। যাইহোক যারা অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন, তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক, সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 4 months ago 

বেইলি রোডের এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারটা আমি বেশ কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছি আপু। আসলে আমি নিজেও চিন্তা করছি, যে সন্তানগুলো তার বাবাকে হারালো, মাকে হারালো কিংবা যে পিতা-মাতাগুলো তাদের সন্তান হারালো, এখন তারা কি অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আমি এই অগ্নিকাণ্ডকে মোটেই দুর্ঘটনা বলবো না, এটা কিছু মানুষের অসচেতনতার কারণেই হয়েছে। আসলে স্বজন হারানোর যে কি কষ্ট, সেটা শুধুমাত্র তারাই অনুভব করতে পারবে যারা তাদের পরিবারের লোকজনকে হারিয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58559.96
ETH 3156.41
USDT 1.00
SBD 2.44