ক্রিয়েটিভ রাইটিং || একজন কৃপণ ব্যক্তির গল্প (প্রথম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একজন কৃপণ মানুষের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। তবে গল্পটি কোনো কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে লেখা নয়,বরং একেবারে বাস্তব। আমরা জানি যে অতিরিক্ত কৃপণতা করা মোটেই ঠিক না। আবার অপচয় করাও উচিত নয়। তাই এমনভাবে চলা উচিত যাতে করে কৃপণতা না করা হয়,আবার অপচয়ও না করা হয়। তবে অতিরিক্ত কৃপণতা করলে নিজের আত্মাও অভিশাপ দেয়। তেমনই একজন কৃপণ মানুষের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। ঘটনাটি বেশ কয়েকবছর আগের। আমাদের পাশের মহল্লার একটি লোক, নাম তার সুজন। তিনি দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে বসবাস করেছিলেন। আমরা যখন হাইস্কুলে পড়তাম, তখন থেকেই তিনি সিঙ্গাপুরে থাকতেন। সিঙ্গাপুরে বেশ ভালোই ইনকাম করতেন তিনি।


people-2568886_1280.jpg

Source


তবে প্রচন্ড কৃপণ প্রকৃতির লোক ছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থায় তিনি নাকি বাসা থেকে সহজে বের হতেন না, বাড়তি খরচ হয়ে যাবে সেটা ভেবে। তিনি প্রায় ১৮ বছর সিঙ্গাপুরে ছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। আমার এক বন্ধু ২০১০ সালে সিঙ্গাপুর যায়। আমার বন্ধু সিঙ্গাপুর যাওয়ার সময় সুজন ভাইয়ের পরিবারের লোকজন সুজন ভাইয়ের জন্য কিছু জিনিসপত্র দিয়ে দেয় আমার বন্ধুর কাছে। যাতে করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে আমার বন্ধু সুজন ভাইকে সেসব কিছু দিয়ে দেয়। আমার বন্ধু সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর সুজন ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে তার জিনিসপত্র গুলো দিয়ে আসে। ২০১৪ সালে সুজন ভাই বাংলাদেশে আসে ছুটিতে। ছুটি শেষ করে সিঙ্গাপুর যাওয়ার সময় আমার বন্ধুর পরিবার বন্ধুর জন্য কিছু জিনিসপত্র সুজন ভাইয়ের কাছ দিয়ে দেয়।


কিন্তু সুজন ভাই সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর আমার বন্ধুকে ফোন দিয়ে বলে যে, সেই জিনিসপত্র গুলো সুজন ভাইয়ের বাসার কাছে গিয়ে নিয়ে আসতে। কারণ সুজন ভাই বাসা থেকে বের হয়ে জিনিসপত্র গুলো আমার বন্ধুকে দিয়ে আসতে পারবে না। কারণ সুজন ভাই প্রচুর কৃপণ টাইপের একজন লোক। সেটা পরিচিত সকলেরই জানা। যাইহোক সুজন ভাইয়ের কথা শুনে আমার বন্ধুর মেজাজ খুব খারাপ হয়ে যায়। তারপর কি আর করার বন্ধু সুজন ভাইয়ের বাসার সামনে গিয়ে সেই জিনিসপত্র গুলো নিয়ে আসে। আপনারা বুঝতেই পারছেন সুজন ভাই কতোটা কৃপণ প্রকৃতির লোক ছিলেন। যাইহোক সুজন ভাইয়ের বর্তমান বয়স ৪৫ এর কম হবে না। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ছুটিতে এসে বিয়ে করেন। সুজন ভাইয়ের ওয়াইফ অনার্সে পড়তো তখন।


তবে সুজন ভাইয়ের ওয়াইফ খুবই চালাক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। বিয়ে করে সুজন ভাই আবারো সিঙ্গাপুর চলে যান অল্প কিছুদিন থেকে। এরইমধ্যে সুজন ভাইকে তার ওয়াইফ বলে যে, যা বেতন পাবে এখন থেকে সব টাকা যেন সুজন ভাই তার ওয়াইফ এর কাছে পাঠায়। সুজন ভাই ওয়াইফ এর প্রতি এতোটাই দুর্বল ছিলো যে,সুজন ভাইকে তার ওয়াইফ যা বলতো সে তাই করতো। আগে সুজন ভাই নিজের একাউন্টে টাকা জমিয়ে রাখতো। কারণ সুজন ভাইয়ের বাবা মা কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছিল। দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে ছিলো এবং বেশ ভালোই বেতন পেতেন সুজন ভাই। সেই হিসেবে বেশ ভালো টাকা জমেছে সুজন ভাইয়ের একাউন্টে। যাইহোক সুজন ভাই তার ওয়াইফ এর কথা অনুযায়ী টাকা পাঠাতে থাকলো সুজন ভাইয়ের ওয়াইফ এর একাউন্টে। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিক্রিয়েটিভ রাইটিং
রাইটার@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ১৭.৯.২০২৩
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG_20220605_234413_388.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 
 11 months ago 

কি আর হবে বুঝতেই পারছি সুজন ভাইয়ের বউ সব টাকা নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে ভেগেছে। যা হয় আরকি। যাই হোক আমার মতামত জানলাম।তবে অতিরিক্ত কৃপণ লোকের টাকা থাকে না একভাবে না একভাবে বেরিয়ে যায়।বেশ ভালো ছিল গল্প টি।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ।

 11 months ago 

আসলে কৃপণ লোকদের সাথে এমনটাই ঘটে। কখনো এতো কিপ্টামি করা ভালো নয়। টাকা ইনকাম করে মানুষ খরচ করার জন্য। যাইহোক পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 11 months ago 

এতটা কৃপণতা ও ভালো নয়। আসলে অনেক সময় দেখা যায় কৃপণ লোকদের টাকা কোন দিকে চলে যায় তার টেরও পাওয়া যায় না। যাইহোক সুজন ভাই তার বউয়ের কথা মতো সব টাকা তার বউয়ের একাউন্টে পাঠাতেন ।পরবর্তীতে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 11 months ago 

আসলেই আপু কৃপণ মানুষের টাকা এদিক সেদিক চলে যায়। যাইহোক পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 11 months ago 

আসলে কৃপণতা খুব একটা ভালো লক্ষণ নয় বলে আমি মনে করি। আপনি এখানে যে সুজন ভাইয়ের কথা উল্লেখ করেছেন সে একটু বেশি কৃপণ বলে মনে হচ্ছে যদিও এই কৃপণতা করাটা মোটেও উচিত নয়। মোটামুটি ভাবে সেই বিদেশ গিয়ে অনেক টাকায় জমিয়েছে বোঝা যাচ্ছে বিয়ের পরে এসে বউয়ের কথায় চলছে এবং তার ওয়াইফের একাউন্টে টাকা ও পাঠাচ্ছে এ ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। স্বামী স্ত্রীর মাঝে মিল মহব্বত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। পরবর্তী পর্বে অবশ্যই পুরো ব্যাপারটা জানাবেন আমার জানার খুবই ইচ্ছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

ভাই স্বামী স্ত্রীর মিল মহব্বত থাকাটা ভালো, তবে কিছু কিছু লোভী প্রকৃতির মেয়ে আছে, যারা মানুষকে একেবারে নিঃস্ব করে দেয়। যাইহোক পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 11 months ago 

কৃপন ব্যক্তি এবং অতিরিক্ত অপচয় কারী ব্যক্তি আমার একদমই পছন্দ নয়। আপনার আজকের পোস্টের কৃপণ ব্যক্তির গল্পটি পড়ে পরবর্তী পার্টের গল্প পড়ার আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে গেল।পরবর্তী পার্টের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

হ্যাঁ আপু কৃপণ এবং অতিরিক্ত অপচয় কারী মানুষ আমারও একেবারে পছন্দ না। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 11 months ago 

শেষে পর্যায়ে আপনার সুজন ভাইয়ের স্ত্রী কী করল সেটার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু আপনি ঐ জায়গা টাই এপিসোড টা শেষ করে দিলেন হা হা। যাইহোক পরবর্তীতে পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। যদিও এইসব কৃপন লোকের পরিণতি খুব একটা ভালো হয় না হা হা। ধন্যবাদ আপনাকে।।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

ভাই এই পর্বটি শেষ করার সময় একটা সাসপেন্স রেখে দিলাম। যাতে করে পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য আপনাদের মনে আগ্রহ সৃষ্টি হয় 😂। যাইহোক আপনার মন্তব্য পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 11 months ago 

আসলে কৃপণ লোকদের কোন মান সম্মান থাকে না। এই সুজন ভাইও সেই প্রকৃতির লোক মনে হচ্ছে। আপনার বন্ধু ঠিকই সুজন ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দিয়ে এসেছে। কিন্তু সে টাকা খরচ করার ভয়ে আপনার বন্ধুর জিনিসগুলো দিতে রাজি হয়নি। আবার সেই লোকই বউয়ের কথায় সব টাকা বউয়ের একাউন্টে পাঠাচ্ছে। না জানি বউ এই টাকা নিয়ে কি করে। অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের।

 11 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু, কৃপণ লোকদের আসলেই কোনো মান সম্মান থাকে না। তারা টাকার জন্য অনেক নিচে নামতে পারে। যাইহোক পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। পোস্ট পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59596.75
ETH 2659.83
USDT 1.00
SBD 2.45