নাটক রিভিউ || গরীবের মেয়ে
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে গরীবের মেয়ে। এই নাটকটি গত মাসে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে আফজাল সুজন এবং জারা নূর। এই জুটির খুব সম্ভবত প্রথম নাটক দেখলাম আমি। তবে এই দুজনের জুটি মোটামুটি ভালো লেগেছে আমার কাছে। এই নাটকটি বেশ শিক্ষণীয়ও বটে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | গরীবের বউ |
---|---|
রচনা | রুহুল আমিন পথিক |
পরিচালনা | জুয়েল হাসান |
অভিনয়ে | আফজাল সুজন, জারা নূর, ম আ সালাম, শেলী আহসান, রাজা হাসান |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৩ |
দৈর্ঘ্য | ৩৮ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় নাটকের নায়ক আফজাল সুজন, নাটকের নায়িকা জারা নূরকে বিয়ে করে বাসায় নিয়ে আসে। তবে আফজাল সুজনের মা কোনো ভাবেই তাদের বিয়ে মেনে নিতে পারছিল না। কারণ সুজন বলেছে জারা নূর গরীবের মেয়ে। তাই সুজনের মা বলে যে, কোনো গরীবের মেয়ে খান বাড়ির বউ হতে পারে না। তারপর সুজন বলে যে যদি তারা এই বিয়ে মেনে না নেয়, তাহলে সুজন তার গরীব শ্বশুরবাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে থাকবে। তখন সুজনের মা ভাবে যে, তাহলে তো তাদের মান সম্মান একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে। অবশেষে সুজনের মা তাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু সুজনের মা মুখে মুখে মেনে নিলেও, মন থেকে মেনে নিতে পারেনি জারাকে। সুজনের মা ভাবে যে জারা যেহেতু গরীবের মেয়ে, তাকে অত্যাচার করে বাড়ি থেকে বের করে দিবে। কিন্তু ঘটনা একেবারে উল্টো হয়ে যায়। একেবারে শুরু থেকেই জারা নূর, সুজনের মায়ের সাথে অর্থাৎ তার শ্বাশুড়িকে অত্যাচার করা শুরু করে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
শ্বাশুড়িকে দিয়ে বাসার সব কাজকর্ম করায় এবং কারণ অকারণে বেশি পরিশ্রম করায়। সুজনের বাবার কাছে কয়েকবার এই ব্যাপারে সুজনের মা বিচার দিলেও,সুজনের বাবা বিশ্বাস করেনি। কারণ জারা সুজনের বাবার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করতো। এমনকি সুজনের বাবা সামনে থাকলে, সুজনের মায়ের সাথেও খুব ভালো ব্যবহার করতো। সুজন তার বাবাকে বুঝায় যে, তার মা জারাকে বউ হিসেবে মেনে নিতে পারেনি বলে, জারাকে সবার কাছে খারাপ প্রমাণ করার জন্য বিচার দেয়। জারা সুজনের মা কে যে অত্যাচার করে, সেটা সুজনের বাবাকে প্রমাণ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ধরনের কৌশলও অবলম্বন করে। কিন্তু সুজনের মা প্রতিবারই ব্যর্থ হয়। জারাকে কোনো ভাবেই খারাপ বানাতে পারেনি কারো কাছে। মূলত সুজন এবং জারা প্ল্যান করেই তার মা কে এভাবে পরিশ্রম করায়। কারণ সুজনের মা তার দাদীকে এভাবেই কষ্ট দিয়ে তিলে তিলে মেরে ফেলেছে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
সুজনের মা সুজনের দাদীর সাথে অনেক অন্যায় করেছে। বৃদ্ধ বয়সেও সুজনের দাদীকে দিয়ে বাড়ির সব কাজকর্ম করাতো। কিন্তু সুজনের বাবার কাছে তার মা সবসময় খুব ভালো সাজতো। সুজনের বাবা ভাবতো যে,সুজনের মা অনেক সেবা করে সুজনের দাদীর। আসলে ছোটবেলা থেকেই সুজন সব সময় দেখে আসছিল যে, সুজনের মা তার দাদীকে কতোটা কষ্ট দিয়েছে এবং প্রতিনিয়ত অত্যাচার করেছে। সুজনকে তার দাদীর কাছে যেতেই দিতো না তার মা। বলতো যে সুজনের দাদী নাকি নোংরা। সুজনের মা আসলে অনেক অহংকারী। তাই সুজনের মা কে শিক্ষা দেওয়ার জন্যই সুজন জারাকে বিয়ে করে নিয়ে আসে। আসলে জারা নূর হচ্ছে সুজনের বাবার ছোট বোনের মেয়ে। তার মানে সুজন এবং জারা নূর হচ্ছে ফুফাতো এবং মামাতো ভাই বোন। সুজনের মায়ের কারণে কারো সাথেই সম্পর্ক নেই তাদের। তাইতো সুজনের মা এবং বাবা জারা নূরকে চিনতে পারে না। যাইহোক সুজন এবং জারা, তাদের প্ল্যান মোতাবেক শেষ পর্যন্ত সুজনের মা কে শিক্ষা দিতে পেরেছিলো কিনা,সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে নাটকটি অবশ্যই দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
কথায় আছে যেমন কর্ম তেমন ফল। এটা অবশ্যই আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে। আমি যদি ভালো কর্ম করি, তাহলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবো এবং যদি খারাপ কর্ম করি, অবশ্যই সেটার ফলাফল ভোগ করতে হবে। সেটা দুই দিন আগে হোক কিংবা পরে। এই নাটকে নায়ক সুজনের মা উনার শ্বাশুড়িকে অনেক অত্যাচার করে। আর সেজন্য ফলস্বরূপ উনার ছেলের বউ,অর্থাৎ সুজনের বউ তার মায়ের সাথে একইভাবে অত্যাচার করে। যদিও সুজনের বউ তার শ্বাশুড়িকে এসব বুঝানোর জন্য ইচ্ছে করেই এমনটা করে। কিন্তু বাস্তবেও এমন ঘটনা অহরহ ঘটে চলছে। এই নাটকটি একটি শিক্ষামূলক নাটক। যদিও এই নাটকে একমাত্র সুজনের মা ছাড়া, আর কারো অভিনয় ততোটা ভালো লাগেনি। তবে শিক্ষামূলক গল্প ছিলো বিধায়, আমি এই নাটকটি দেখেছি এবং আপনাদের সাথে রিভিউ শেয়ার করেছি।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১২.১.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Twitter Link
গরিবের মেয়ে নাটকটা আমি দেখেছিলাম কয়েকদিন আগে। ব্যস্ততার মাঝে নাটক দেখলে নিজের কাছেই অসম্ভব ভালো লাগে। আর তেমনি আমার কাছেও খুব ভালো লাগে। এই নাটকটার মধ্যে আসলেই শিক্ষনীয় বিষয় ছিল। এরকম অনেক নাটক রয়েছে, যেগুলোর থেকে আমরা অনেক রকমের শিক্ষা নিতে পারি। খুব ভালোভাবে আপনি পুরো কাহিনীটা রিভিউর মাধ্যমে তুলে ধরলেন। আমি ভাবতেছি সময় পেলে এই নাটকটা দেখে নেব। আশা করছি নাটকটা দেখতে ভালো লাগবে।
ভাই একবার যেহেতু নাটকটি দেখেছেন, আবারও সময় পেলে দেখে নিবেন। নাটকের কাহিনীটা আসলেই বেশ শিক্ষণীয়। যাইহোক রিভিউ পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।