অনেকদিন পর কাছের এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়ার অনূভুতি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি যখন দক্ষিণ কোরিয়াতে ছিলাম আমার পরিচিত খুব কাছের এক বড় ভাই ছিল যার নাম হচ্ছে আলতাফ। আলতাফ ভাই খুবই আন্তরিক একজন মানুষ এবং যথেষ্ট পরোপকারীও বটে। কাছের মানুষের আপদ বিপদে তিনি সবসময়ই ঝাপিয়ে পড়তেন। এই যুগে এমন মানুষ খুব কমই আছে বলে আমার মনে হয়। যাইহোক উনি বাংলাদেশে চলে এসেছে কয়েক মাস আগে। বাংলাদেশে আসার পর কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছে আমাদের এবং কয়েকবার দেখা হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সেটা হয়ে উঠেনি। আলতাফ ভাইয়ের বাসা হচ্ছে বনশ্রীতে। আমার বাসা থেকে যেতে প্রায় ঘন্টা খানেকের মতো সময় লাগে। যাইহোক কয়েকদিন আগে আমি আমার ব্যক্তিগত কাজে সকাল ৯ টার দিকে বাসা থেকে বের হলাম মিরপুর গাবতলী মাজার রোডের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার সময় রামপুরা বনশ্রী দিয়েই গাবতলী মাজার রোড গিয়েছিলাম।
তবে যাওয়ার সময় আমি আলতাফ ভাইয়ের সাথে দেখা করিনি। কাজ শেষ করে উনার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে বাসায় যাব সেটা ভেবে রেখেছিলাম। যাইহোক আমি বেলা ১১টার দিকে গাবতলী মাজার রোডের দিকে পৌছলাম। সেখানে গিয়ে আমি আমার ব্যক্তিগত কাজ সম্পন্ন করে নিলাম। কাজ শেষ করতে আমার সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মতো সময় লেগেছিল। কাজ শেষ করে আমি আবার গাড়িতে উঠলাম বনশ্রীর উদ্দেশ্যে আলতাফ ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য। আমি যখন মধ্যবাড্ডার দিকে গেলাম তখন আলতাফ ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম যে দেখা করতে আসতেছি। আর বললাম যে যেহেতু শুক্রবার, জুমার নামাজের পর দেখা হবে বনশ্রীতে। আলতাফ ভাই বললো ঠিক আছে। আমি আগে থেকে ফোন করে দেখা করার কথা বলিনি, কারণ যদি আগে থেকে বলতাম তাহলে উনার বাসায় যাওয়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করবে। কারণ আমার আবার বিকেলে একটু কাজ আছে আমার বাসায়।
আর উনার বাসায় যদি যাই তাহলে অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে,সেটা ভেবেই আমি আগে থেকে জানাইনি দেখা করার কথা। যাইহোক আমি দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে বনশ্রীতে নামলাম। প্রথমে আমি গেলাম বনশ্রী জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার জন্য। কিন্তু যাওয়ার পর দেখলাম মসজিদে একটুও জায়গা খালি নেই, এমনকি নামাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। কারণ আমি এমনিতে নামাজ মিস করি না সহজে, তার মধ্যে জুমার নামাজটা পড়তে পারলাম না সেটা ভেবে খুব খারাপ লাগছিল। যাইহোক পরক্ষণেই দেখতে পেলাম কয়েকজন লোক হাতে জায়নামাজ নিয়ে অন্য একটি মসজিদের দিকে যাচ্ছে। আমি তাদের সাথে হাঁটা শুরু করলাম। তাদের সাথে বাঁশের পুল দিয়ে আফতাবনগরের ভিতরের একটি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলাম। মসজিদটার নির্মাণ কাজ চলছিল তখন। ওজু করে মসজিদের বাহিরে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্টে নামাজ আদায় করে নিয়েছিলাম।
নামাজ শেষ করে পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলাম যে আলতাফ ভাই কয়েকবার আমাকে ফোন দিয়েছে। আমি ফোন করে উনাকে বললাম যে বনশ্রী জামে মসজিদের সামনে আসার জন্য। একটু পরই আলতাফ ভাই চলে আসলো। অনেক দিন পর উনাকে দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমরা কুশল বিনিময় করে কোলাকুলি করলাম। উনি আমাকে উনার বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করলো। কিন্তু আমি বললাম অন্য সময় যাব। তারপর আমরা রিকশায় উঠলাম এবং আলতাফ ভাই আমাকে কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ানোর জন্য তার পরিচিত একটি হোটেলে নিয়ে গেল। আমরা প্রথমে কাচ্চি বিরিয়ানি এবং বোরহানি অর্ডার দিলাম। একটু পর আবার চিকেন চাপ অর্ডার দিলাম। আমরা খাবার খেতে খেতে অনেক পুরনো গল্প করতে লাগলাম। আসলে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে বেশ ভালোই লাগে। আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম এবং আলতাফ ভাই বিল দিয়ে দিল।
তারপর আমরা হোটেল থেকে বের হয়ে গেলাম। এরপর আলতাফ ভাই আমাকে নিয়ে গেল চা খাওয়ার জন্য। দেখলাম যে বিভিন্ন ধরনের চা বিক্রি করে সেখানে। আমরা চা খেয়ে চলে গেলাম আলতাফ ভাইয়ের বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। উনার বন্ধুর একটি গ্যারেজ আছে সেখানে কার ওয়াশ করা হয় এবং গাড়ির মেরামত করা হয়। আলতাফ ভাই এবং উনার বন্ধুরা সেখানেই আড্ডা দেয়। উনার কয়েকজন বন্ধুর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল এবং আমরা সবাই বেশ ভালোই আড্ডা দিলাম অনেকক্ষণ। উনার বন্ধুরাও বেশ আন্তরিক। উনার এক বন্ধু তাদের বাসায় বেড়ানোর জন্য বেশ জোরাজুরিও করল। যাইহোক আমি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বিকেল ৪টার দিকে বনশ্রী থেকে রওনা দিলাম আমার বাসার উদ্দেশ্যে। বিকেল ৫টার পর আমি বাসায় পৌছলাম।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | লাইফস্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১৫.৩.২০২৩ |
লোকেশন | w3w |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
আপনি খুব সহজে নামাজ মিস করেন না শুনে ভালো লাগলো ভাইয়া। যাইহোক আপনার বড় ভাই অনেক পর্বকারী তার সাথে দেখা করে বেশ ভালো সময় অতিক্রম করেছেন । আর সকাল ৯ টায় বের হয়েছেন বিকেল পাঁচটায় বাড়িতে ফিরেছেন পুরোটা দিন আপনি বাহিরে অতিক্রম করেছেন।
জি আপু চেষ্টা করি সবসময় নামাজ পড়ার জন্য। তিনি খুবই পরোপকারী একজন মানুষ। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার আলতাফ ভাইয়ের সাথে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন। আসলে বিদেশে নিজের দেশের মানুষের সাথে পরিচয় হতে ভালো লাগে আর যদি এমন পরোপকারী হয় তাহলে কথাই নেই। যাই বাংলাদেশে দুইজন দুইজনকে দেখে বেশ ভালো লেগেছে। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
জি আপু অনেক দিন পর দেখা হয়েছিল আমাদের এবং আমরা বেশ ভালো সময় কাটিয়েছি। সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বর্তমান যুগে এখনো অনেক মানুষ আছে যারা মানুষের জন্য এগিয়ে আসে। আর আলতাফ ভাইয়ের মত এই ধরনের ভালো মানুষ গুলো আছে বলে পৃথিবীরটা এখনো সুন্দর। আপনি এগারোটার দিকে গাবতলী মাজার রোডের দিকে পৌঁছান এবং আপনার ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে বনশ্রীর উদ্দেশ্য আলতাফ ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য যান। অনেকদিন পরে যেহেতু ভাইয়ের সাথে দেখা তাই কুশল বিনিময় করলেন। কাচ্চি বিরানী খাওয়ার জন্য ভাই তার নিজের পরিচিত একটি দোকানে নিয়ে গেলেন এবং বোরহানি সহ কাচ্চি বিরানী খেলেন। সবকিছু মিলিয়ে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
এটা ঠিক বলেছেন ভাই, পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে বলে পৃথিবীটা এতো সুন্দর। যাইহোক গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন সবসময়।
এরকম মানুষজনের সাথে সম্পর্ক রাখা ভালো।আল্লাহ এমন মানুষকে সবসময় ভালো রাখুক,সুস্থ রাখুক।
ভাইয়ের সাথে ভালো সময় কাটিয়েছিলেন।শুভ কামনা রইলো।
আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ এরকম একজন পরোপকারী ভালো মানুষের কথা শুনে ভীষণ ভালো লাগলো। আর বিশেষ করে তিনি দেশে আসার পর এই প্রথমবার দেখা করেছেন এটা ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে পরিচিত কারো সাথে দেখা হলে কিংবা কথা হলে খুবই সুন্দর সময় কাটানো যায়। তবে দুইজনে একসাথে বিরিয়ানি খেয়েছেন এই বিষয়টা ভীষণ ভালো লাগলো।
জি আপু পরিচিত কারো সাথে অনেক দিন পর দেখা হলে খুব সুন্দর সময় কাটানো যায়। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন সবসময়।
ভাই আপনি আপনার আলতাফ ভাইয়ের সঙ্গে খুব ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। আসলে অনেক দিন পর এমন প্রিয় কোন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলে আগেকার সব কথা মনে পড়ে যায়। আপনারা দুই ভাই মিলে একসাথে কাচ্চি বিরিয়ানি ও বোরহানি খেয়েছেন। শুনে তো আমার লোভ লেগে গেল কারণ দুইটাই আমার খুব পছন্দের। এরপর আবার চা খেয়ে ছেন। আপনারা দুজনে খুব ভালো একটি সময় পার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার পরিচিত বড় ভাইয়ের সঙ্গে কাটানো সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি আপু আমরা অনেকক্ষণ গল্প গুজব করেছি এবং খাওয়া দাওয়া করে, সবমিলিয়ে খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু, পুরো পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া আপনার বড় ভাইয়ার সাথে সময় কাটানোর অনুভূতি গুলো পড়ে অনেক ভাল লাগলো। সেই সাথে আপনার ভাইয়া আপনাকে আমার পছন্দের খাবার কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ালো। বিরিয়ানি হলো আমার প্রেম ভালবাসা। দেখলেই খেতে মন চাই। অসাধারন পোষ্ট ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বিরিয়ানি আমারও খুব পছন্দের খাবার ভাই। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বুঝতে পারছি যেহেতু অনেকদিন পরে আপনার খুব কাছের এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছে তাই তার সাথে কাটানো মুহূর্তটি বেশ ভালোই কেটেছে। আপনি দেখছি সকাল 9 টায় বাড়ি থেকে বের হলেন এবং পাঁচটায় বাড়িতে পৌঁছেছেন। আপনারা দেখছি আপনার ভাইয়ের পরিচিত একটা দোকানে গিয়ে বোরহানি সহ কাছে বিরিয়ানি খেয়েছেন। সম্পূর্ণটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আমার কাছে।
জি ভাই সবমিলিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছি সেদিন। কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদও খুব ভালো ছিল। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন সবসময়।