লাইফস্টাইল পোস্ট || বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করানোর অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। গত মাসে আমি আমার বাসায় তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করিয়েছি। আজকে সেই অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। যাইহোক বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করবো। কারণ ২/৩ মাস আগে আমাদের পাশের মহল্লার একটি ছেলের বাসায় মোটামুটি বেশ ভালোই ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ছেলেটি আমার পরিচিত। মূলত সেই ছেলেটি কয়েক মাস আগে তার বাড়ির তিনতলার কাজ কমপ্লিট করে এবং বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়। তো একটি ফ্ল্যাটে নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া একজন মেয়ে সহ তার মা বাবা থাকে। তো একদিন দিনের বেলা সেই মেয়েটির মা বাবা বাসায় ছিলো না এবং সেই সুযোগে মেয়েটি তার ৩/৪ বান্ধবীকে বাসায় নিয়ে আসে। তারপর সেই মেয়েটি তার বান্ধবীদের সাথে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
সেদিন রাতেও মেয়েটি বাসায় ফেরেনি এবং তার মা বাবাকেও ফোন করে কিছু জানায়নি। মেয়ের মা বাবা থানায় জিডি করে এই ব্যাপারে এবং থানা থেকে পুলিশ বাসায় আসে তদন্ত করার জন্য। তারপর পুলিশ প্রথমে এসেই আমার পরিচিত সেই ছেলে অর্থাৎ বাড়িওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে বাসায় সিসিটিভি লাগানো আছে কিনা। বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করা ছিলো না বলে,পুলিশ অনেক রাগারাগি করে বাড়িওয়ালার সাথে। তারপর পুলিশ মেয়েটিকে খুঁজতে থাকে, কিন্তু খুঁজে পায়নি। অবশেষে দুই দিন পরে নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েটি নিজে নিজেই বাসায় চলে আসে। মূলত সে তার কয়েকজন বন্ধু এবং বান্ধবী সহ,দূরে কোথাও ঘুরতে গিয়েছিলো। বাসায় না জানিয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে, বাসায় জানালে যেতে দিবে না। যাইহোক এই ঘটনার কিছুদিন পর আমার পরিচিত সেই ছেলেটি আমার সাথে সম্পূর্ণ ঘটনা শেয়ার করে। তখন আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমার বাসায়ও তাহলে সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করতে হবে।
কারণ আমিও আমার বাসায় ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছি। এমনিতে আমাদের এখানে চুরি ডাকাতির তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। যাইহোক আমাদের মদনপুরের একটি দোকানে সিসিটিভি লাগানোর জন্য গেলাম। তারপর বললাম যে অডিও রেকর্ড হবে এমন নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা দেখাতে। তারপর ৩ টি ক্যামেরা,একটি ৪ চ্যানেলের ডিভিআর, হার্ড ডিস্ক ১ টেরাবাইট সহ আরও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র অর্ডার করলাম। ক্যামেরা নিলাম হিক ভিশনের,হার্ড ডিস্ক নিলাম তোশিবা ব্র্যান্ডের। হার্ড ডিস্ক ১ টেরাবাইট দিয়ে মোটামুটি ১/১.৫ মাসের পিছনের ফুটেজও নাকি দেখা যাবে। মূলত ১৮/২০ দিন আগে লাগিয়েছি সিসিটিভি এবং এই কয়দিনের ফুটেজ দেখা যাচ্ছে। যাইহোক পরের দিন টেকনিশিয়ান এসে আমার বাসায় সিসিটিভির সম্পূর্ণ সেট-আপ করে। আমি বাসার এলইডি মনিটরে সেট-আপ করিয়েছি এবং মোবাইল দিয়ে নিয়মিত চেক করতে পারি।
মেমোর বাহিরে শুধুমাত্র ক্যাট ৬ ক্যাবল লেগেছে। সবমিলিয়ে ১২ হাজার টাকা লেগেছে ৩ টি সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করতে। সিসিটিভি ক্যামেরা, ডিভিআর এবং হার্ড ডিস্কের ওয়ারেন্টি মূলত ১ বছর। যাইহোক বর্তমান যুগে সিসিটিভি ক্যামেরার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ সিসিটিভির মাধ্যমে আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পারি। যাইহোক এই ব্যাপারে মোটামুটি ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করিয়ে আসলেই খুব ভালো লাগছে। তাই এই ভালো লাগার বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। কারণ আপনাদের সাথে যেকোনো কিছু শেয়ার করতে পারলে আসলেই খুব ভালো লাগে। তাছাড়া আপনারা কেউ যদি সিসিটিভি ক্যামেরা বাসায় কিংবা অফিসে ইন্সটল করতে চান,সেক্ষেত্রে এই পোস্টটি পড়লে কিছুটা হলেও ধারণা পাবেন এই সম্পর্কে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | লাইফস্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১.৩.২০২৪ |
লোকেশন | মদনপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
খুব সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। বিশেষ প্রয়োজনে অবশ্যই সিসি ক্যামেরা লাগাতে হয়। ঠিক তেমনি ক্যামেরা লাগানোর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই ক্যামেরা লাগানোর বিষয়টা শেয়ার করা দেখে।
হ্যাঁ ভাই প্রয়োজন ছিলো বলেই সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করিয়েছি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি অনেক ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সত্যি ভাইয়া বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করানো থাকলে অনেক ভালো হয়। আপনি অনেক গুরুত্বপূণ একটি কাজ করেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।
হ্যাঁ আপু বর্তমান যুগে বাসা কিংবা অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো খুবই প্রয়োজন। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনি আপনার বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ইনস্টল করেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। আসলে বর্তমানে আমরা কেউ নিরাপদে নেই। আপনি অন্যের সমস্যা দেখে সাথেই সাথেই সিসি ক্যামেরা ইনস্টল করেছেন, এটা অনেক ভালো কাজ করেছেন।বলা যায় না কখন কি অঘটন ঘটে যায়। অঘটন ঘটিয়ে গেলেও সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে সব কিছু বের করা সম্ভব।
হ্যাঁ চারিদিকে শুধু ঝামেলা আর ঝামেলা। কখন কি হয়ে যায়, বলা তো যায় না। তাই সচেতন থাকা ভালো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বেশ সচেতনতা মূলক পোস্ট শেয়ার করেছেন। আজকাল প্রায় প্রতিতি বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগান দরকার। তাহলে অনেক অনাকাংখিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যেহেতু আপনি আপনার পাশের ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছেন তাই সিসি ক্যামারা জরুরী।বেশ ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিসি ক্যামেরা ইন্সটল করে। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু নিচ তলা এবং উপর তলার ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছি বলেই,সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করিয়েছি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
বেশ ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভাই। এখন আসলে যে যুগ পড়েছে প্রতিটা বিল্ডিং এই সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো থাকলে নিজেদেরই সেইফটি হিসেবে কাজ করে।শুধু সিড়িতে নয়, বরং মেইন গেটের সামনেও সিসিটিভি ইন্সটল করা উচিত বলে আমি মনে করি। যাই হোক, আপনার পরিচিত ছেলেটির মতোন পরিস্থিতি আপনার না হোক, সেই দোয়া।
আপু মেইন গেট,সিঁড়ি এবং ছাঁদে মোট ৩ টি ক্যামেরা লাগিয়েছি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে এখন বাসা বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। আশেপাশে বিভিন্ন খারাপ মানুষজন থাকে৷ যারা বাসার কোথায় কি আছে তা দেখে৷ সুযোগ মতো তাদের কাজ করে, বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটায়৷ এর জন্য তারা প্রতিনিয়তই বসে থাকে৷ তবে আপনি একেবারে ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ আপনার বাড়িতে আপনি সিসিটিভি ক্যামেরা ইন্সটল করে দিয়েছেন এবং এর ফলে আপনি বাড়ির সবকিছুই পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে আপনার বাড়ি সিকিউরিটিও অনেক বৃদ্ধি পেয়ে গেল৷
আপনি ঠিক বলেছেন, এখন সবকিছু পর্যবেক্ষণ করতে পারি খুব সহজে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এখন এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ যেভাবে চারিদিকে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম বেড়ে যাচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই৷
আসলে এরকম ঘটনা সব জায়গা কম বেশি ঘটছে। বাড়িতে এরকম সিসিটিভির ক্যামেরা থাকলে কিছুটা শান্তি পাওয়া যায়। যে ঘটনাটি আপনি শেয়ার করলেন মেয়েটির বাবা-মা কতটা টেনশনে ছিল। যেটা সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা। সে জন্য সন্তানদেরকে সবসময় সাবধানে রাখতে হবে কখন কি হয়ে যায়। সিসিটিভির ক্যামেরা ইনস্টল করার অভিজ্ঞতার গল্প পড়ে ভালই লাগলো।
আসলেই ভাই এখনকার দিনে সন্তানদেরকে সবসময় চোখে চোখে রাখতে হয়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।