লাইফস্টাইল পোস্ট || নারায়ণগঞ্জের ৫ নং ঘাট থেকে তাজা মাছ কেনার অভিজ্ঞতা
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। গতকাল সকালে এই প্রথম আমাদের নারায়ণগঞ্জের ৫ নং ঘাট থেকে মাছ কিনেছিলাম এবং সেই অভিজ্ঞতা এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। পরশুদিন রাতে আমার ওয়াইফ বলছিলো ফ্রিজে নাকি মাছ ফুরিয়ে গিয়েছে, তাই কিছু মাছ কিনে আনার জন্য। আমি সাধারণত ১৫ দিনের মাছ একসাথে কিনে আনি। কারণ প্রতিদিন বাজারে যেতে আমার ভালো লাগে না। তাছাড়া ব্যস্ততার কারণে প্রতিদিন বাজারে যাওয়া সম্ভব হয় না। তবে প্রায় সবসময়ই আমাদের মদনপুর মাছ বাজার থেকে মাছ কিনে থাকি। যাইহোক বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে অবস্থিত ৫ নং ঘাটে গিয়ে মাছ কিনবো। কারণ সেখানে নদীর মাছ বেশ ভালোই পাওয়া যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট মাছ পাওয়া যায়। আমাদের বাসার সবাই ছোট মাছ খেতে খুব পছন্দ করে।
কিন্তু আমাদের মদনপুর মাছ বাজারে ছোট মাছ খুবই কম পাওয়া যায়। তাই পরশুদিন রাতে ঘুমানোর আগেই ভেবেছিলাম, যদি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারি,তাহলে ৫ নং ঘাটে চলে যাবো মাছ কিনতে। কারণ ৫ নং ঘাটের মাছ বাজার মূলত অস্থায়ী একটি বাজার। প্রতিদিন সকাল ৮-১০ টা পর্যন্ত মাছ পাওয়া যায় সেখানে। মূলত রাস্তার দুপাশে মাছ বিক্রি করা হয়। কিন্তু বাস কিংবা ট্রাক একটু পরপর আসে বলে,একটু বিরক্ত লাগে আর কি। যাইহোক গতকাল সকালে হঠাৎ করে ৭ টার দিকে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। তাই ফ্রেশ হয়ে ৩০/৪০ মিনিটের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের ৫ নং ঘাটে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে পুরো মাছ বাজার ঘুরে ঘুরে দেখার পর, ভাবলাম কিছু খেয়ে তারপর মাছ কেনা শুরু করি। কারণ ততক্ষণে সকাল ৮.৩০ টার বেশি বেজে গিয়েছে। যাইহোক মাছ বাজারের পাশে থাকা একটি হোটেল থেকে নাস্তা করে মাছ কেনা শুরু করলাম। সত্যি বলতে এমন টাটকা মাছ দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগেছিল।
সত্যি বলতে কিছু কিছু মাছ আমি দীর্ঘদিন পর দেখেছি। যেমন ফলি মাছ,কাজলি মাছ এবং মলা মাছ অনেকদিন পর দেখলাম। ফ্রিজে এমনিতে ইলিশ মাছ এবং চিংড়ি মাছ ছিলো বলে,অন্যান্য মাছ কেনার চেষ্টা করেছিলাম। যাইহোক প্রথমে বড় সাইজের ১ কেজি টেংরা মাছ কিনলাম ৮০০ টাকা দিয়ে। যদিও দোকানদার ১,০০০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি করবে না বলে জানিয়েছিল আমাকে। তবে শেষ পর্যন্ত ৮০০ টাকা কেজি দিতে বাধ্য হয়েছে। টেংরা মাছ গুলোর সাথে ৪/৫ টা মিডিয়াম সাইজের বাইলা মাছও ছিলো। যাইহোক টেংরা এবং বাইলা মাছ কেনার পর, আমি ১ কেজি লাল চেউয়া মাছ কিনলাম ৫০০ টাকা দিয়ে। চেউয়া মাছ গুলো তখনও নড়াচড়া করছিলো। মানে চেউয়া মাছ গুলো একেবারেই জ্যান্ত ছিলো। তারপর কাজলি মাছ কিনলাম ১ কেজি ৪০০ টাকা দিয়ে। এরপর দেশী পুঁটিমাছ কিনলাম ৫০০ গ্রাম মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে। তারপর মলা মাছ কিনলাম ৫০০ গ্রাম ২০০ টাকা দিয়ে। তারপর ফলি মাছ কিনলাম ৪০০ টাকা কেজি। এরপর নদীর আইড় মাছ দেখা শুরু করলাম।
কারণ বাসা থেকে বলে দিয়েছিল নদীর আইড় মাছ কিনতে। বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখলাম যে বড় আইড় মাছ খুব কম রয়েছে। কিন্তু ছোট ছোট আইড় মাছ বেশ কয়েকটি দোকানে রয়েছে। যাইহোক এরপর একটি দোকানে গিয়ে বড় আইড় মাছ নিলাম দুইটা। দুটি আইড় মাছের ওজন হয়েছিল ১,৭০০ গ্রামের কাছাকাছি। তার মানে একটা আইড় মাছের ওজন ছিলো ৮৫০ গ্রামের মতো। যাইহোক দামাদামি করে শেষ পর্যন্ত ৬০০ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হলো এবং দুটি আইড় মাছের দাম আসলো ১,০০০ টাকা। মাছ কিনতে কিনতে পুরো ব্যাগ ভরে গিয়েছে। তাই ভাবলাম বাসায় চলে যাবো। এগুলো খাওয়া শেষ হলে আবারও সেখানে গিয়ে মাছ কিনবো। বাসার সবাই মাছ গুলো দেখে ভীষণ খুশি হয়েছিল। কারণ মাছগুলো একেবারে টাটকা ছিলো। তাছাড়া দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যেই বলা চলে। যাইহোক নারায়ণগঞ্জের ৫নং ঘাট থেকে মাছ কিনে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। আর এই অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | লাইফস্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ৩০.৮.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
নারায়ণগঞ্জের ৫ নং ঘাট থেকে তাজা মাছ কেনার অভিজ্ঞতা দারুন ছিল। আপনার বাসার মত আমাদের বাসায়ও শিবু সহ অন্য সবাই ছোট মাছ খুব পছন্দ করে।
আসলে ছোট মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সবসময়।
পাতা মাছ কিনতে যাওয়ার দারুন অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তবে এ কথা সত্য তাজা মাছ আমরা বরশি দিয়ে ধরি আর রান্না করে খায়। যখন ইচ্ছা তখনই ধরে ফেলতে পারি। যাই হোক বেশ অচেনা একটি বাজার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেলাম এবং বর্তমান বাজারের অবস্থা জানতে পারলাম।
নদী কিংবা খাল বিলের মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা। চাষের মাছ খেতে বিরক্ত লাগে। কিন্তু নিরুপায় হয়ে অনেক সময় খেতে হয়। যাইহোক এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া আমি জানি যে নারায়ণগঞ্জের ৫ নং ঘাটে তাজা মাছ পাওয়া যায়। কিন্তুু আমি অলস সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারি না বলে যাওয়া হয় না। তবে মাঝে মাঝে কোচিং করতে যাত্রাবাড়ি গেলে সেখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে আসি। আপনার আইড় মাছ গুলো ভালোই হয়েছে। ধন্যবাদ।
যাত্রাবাড়ী আড়তেও মোটামুটি ভালোই মাছ পাওয়া যায়। যাইহোক যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।