নাটক রিভিউ || সরি স্যার
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে সরি স্যার। এই নাটকটি ২ দিন আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে মুশফিক আর ফারহান এবং কেয়া পায়েল। এই দুজনের অনেক নাটক আমি দেখেছি। এই দুজনের জুটি বেশ ভালো লাগে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | সরি স্যার |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | মোহাম্মদ মিফতাহ আনান |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান, কেয়া পায়েল, বড়দা মিঠু এবং আরো অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ২৮ শে নভেম্বর ২০২৩ |
দৈর্ঘ্য | ৪৬ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের নায়িকা কেয়া পায়েল হচ্ছে এলাকার চেয়ারম্যান এর মেয়ে। সে পড়াশোনায় একেবারেই খারাপ। সারাদিন শুধু ছেলেদের সাথে কথা বলে এবং প্রেম পিরিতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মানে কেয়া পায়েল এর কথা হচ্ছে সে সুন্দরী বলে সব ছেলেরা তার পিছনে ঘুরঘুর করে এবং মাঝেমধ্যে সে তাদের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। মোটকথা সে সারাক্ষণ ছেলেদের সাথে টাইম পাস করে বলে, পড়াশোনার প্রতি তার কোনো মন নেই। কয়েকজন ছেলের সাথে ৪ বার বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর, তার বাবা চেয়ারম্যান তাকে ধরে বাসায় নিয়ে আসে। সে এস এস সি তে দুইবার ফেল করে, তৃতীয়বার কোনরকমভাবে পাশ করে। এরপর ইন্টারমিডিয়েটে দুইবার ফেল করে, তৃতীয়বারের মতো ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। তার বাবা তাকে বিয়ে দিতে পারছে না ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেনি বলে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
বাসায় টিউশন টিচার রাখলে, টিচারের সাথেও প্রেম করে। যাইহোক কেয়া পায়েলের বাবা মুশফিক আর ফারহানকে বলে, কেয়া পায়েলকে বাসায় পড়ানোর জন্য। কেয়া পায়েলের বাবা ফারহানকে কেয়া পায়েলের ব্যাপারে সবকিছুই খুলে বলে। যাইহোক ফারহান কেয়া পায়েলকে বাসায় পড়ানো শুরু করে। কিন্তু কেয়া পায়েল প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা শুরু করে পড়াশোনা না করার জন্য। সে সারাক্ষণ ফারহানের সাথে গল্প করে কোন ছেলের সাথে প্রেম করে এটা সেটা নিয়ে। এতে করে ফারহান খুবই বিরক্ত হয় কেয়া পায়েলের উপর। তবে ফারহানও নাছোরবান্দা, কেয়া পায়েলকে জোর করেই পড়াশোনা করায়। হোমওয়ার্ক না পারলে বকাবকি করে। যাইহোক কেয়া পায়েল হঠাৎ করে একদিন ফারহানের প্রেমে পড়ে যায়।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তখন ফারহানকে সবকিছু খুলে বলে যে, আগে যা করেছিল অন্যান্য ছেলেদের সাথে সেগুলো সব টাইম পাস ছিল। কিন্তু ফারহানকে সে সত্যি সত্যি খুব ভালোবাসে। কিন্তু ফারহান এসবে কান দেয় না। ফারহান কেয়া পায়েলের প্রস্তাবে রাজি হয় না বলে, কেয়া পায়েল নতুন টেকনিক এপ্লাই করে। সে ফারহানকে বলে যে একটি ছেলেকে সে খুব ভালোবাসে এবং সে ছেলেকে একটি চিঠি লিখতে চায়। কিন্তু তার হাতের লেখা খুবই খারাপ বলে, ফারহানকে সেই চিঠিটা লিখে দিতে বলে। প্রথমে ফারহান চিঠি লিখে দিতে রাজি না হলেও, পরবর্তীতে ফারহান রাজি হয় অনেক অনুরোধ করায়। চিঠি লিখে দেওয়ার পর কেয়া পায়েল ফারহানকে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে। মূলত কেয়া পায়েল অন্য কাউকে ভালোবাসে না, শুধু ফারহানকে ভালোবাসে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
ফারহানকে দিয়ে চিঠি লেখানোর জন্য মিথ্যে কথা বলেছিল। কেয়া পায়েল ফারহানকে বলে যে, যদি তার কথা না শুনে ,তাহলে চিঠিটা কেয়া পায়েলের বাবার হাতে দিবে,এমনকি সাংবাদিককে দিবে, থানায় দিবে এটা সেটা বলে ভয় দেখাতে থাকে। কেয়া পায়েল ফারহানের হাতের লেখা চিঠিটা ফটোকপি করে রাখে কয়েকটা। যাইহোক ফারহান কেয়া পায়েলের কথা অনুযায়ী চলতে থাকে। কিছুদিন পর কেয়া পায়েল ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে এবং তার বাবা তার বিয়ে ঠিক করে। তখন কেয়া পায়েল ফারহানকে বলে যে,সে এই বিয়ে করবে না, তাই তাকে ব্ল্যাকমেইল করে বলে যে বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য হেল্প করতে। এভাবেই চলতে থাকে নাটকের কাহিনী। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে অবশ্যই আপনাদেরকে নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
কিছু কিছু মানুষ আছে যারা কয়েকজনের সাথে প্রেমের অভিনয় করে অর্থাৎ টাইম পাস করে। কিন্তু এটা মোটেই ঠিক নয়। কারণ এতে করে অনেক মানুষ ভীষণ কষ্ট পায়। আসলে কারো মন নিয়ে খেলার অধিকার কারো নেই। আবার যারা এভাবে টাইম পাস করে কয়েকজনের সাথে, সে কিন্তু নিজেরও ক্ষতি করছে। এতে করে তার সময়ের অপচয় হচ্ছে,সে যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকে তাহলে নিজের পড়াশোনারও ক্ষতি হচ্ছে। যাইহোক টাইম পাস করতে করতে অনেক সময় মানুষ সত্যিকারের প্রেমেও পড়ে যায়। তখন কিন্তু অনেকে সেটা বিশ্বাস করতে চায় না। এটা স্বাভাবিক, কারণ একজন মানুষ যখন সারাক্ষণ মিথ্যা কথা বলতে থাকে, সেই মানুষটা যদি সত্যি কথাও বলে, তখন কেউ বিশ্বাস করতে চায় না। এই নাটকেও এমনটা ঘটেছে। কেয়া পায়েল ফারহানকে কিন্তু সত্যি সত্যি ভালোবেসেছিল। কিন্তু ফারহান সেটা বিশ্বাস করেনি। কারণ ফারহান জানতো যে কেয়া পায়েল সবার সাথেই টাইম পাস করে। যাইহোক নাটকটা বেশ ফানি টাইপের এবং কিছুটা রোমান্টিক টাইপের ছিলো। তাই নাটকটি দেখতে দারুণ লেগেছিল। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করলাম।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ৩০.১১.২০২৩ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Twitter Link
ফারহান এবং কেয়া পায়েলের নাটকগুলো অনেক ভালো লাগে আমার কাছে দেখতে। তারা দুজন অনেক সুন্দর নাটক করে থাকে। যেগুলো আমি বেশিরভাগ সময় দেখার চেষ্টা করি। এই নাটকের রিভিউটা আপনি খুব সুন্দর করে করেছেন। যা আমার কাছে পড়তে খুব ভালো লেগেছে। এই নাটকটা এখনো পর্যন্ত না দেখা হলেও, সময় পেলে অবশ্যই নাটকটা দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব।
হ্যাঁ আপু ঠিক বলেছেন, ফারহান এবং কেয়া পায়েলের নাটকগুলো আমারও বেশ ভালো লাগে দেখতে। সময় করে নাটকটি অবশ্যই দেখে নিবেন আপু। যাইহোক রিভিউ পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
বুঝিনা আমি। আমি যেই নাটক টাই মনে মনে ভাবী যে রিভিউ করবো। সেটাই দেখি সবাই রিভিউ করে দেয় আগে আগে। আজ আপনিও তাই করলেন। যাক যা করেছেন তা ভালোই করেছেন। তবে বেশ সুন্দর করে নাটকটি রিভিউ করেছেন আপনি। আমার কাছে কেয়া পায়েল এর অভিনয় বেশ ভালোই লাগে। ধন্যবাদ সুন্দর করে রিভিউ করার জন্য।
আগে তো জানতাম না আপনি এই নাটকের রিভিউ দিবেন, তাহলে তো আমি দিতাম না আপু। যাইহোক আপনি এখনো চাইলে এই নাটকের রিভিউ দিতে পারেন। যাইহোক সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এই ধরনের সম্পর্কগুলোর মানুষ জীবনে সার্থক হয় না। তারা মনে করে এভাবেই যেন জীবন পার হয়ে যাবে একসময় তাদেরও খারাপ সময় আসবে তখন বুঝতে পারবে বিষয়টি। সেই বাস্তবিক বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নাটকের মধ্যে ।খুবই সুন্দরভাবে রিভিউ করেছেন ভালো লাগলো একসময় নাটকটি দেখার চেষ্টা করব।
আসলেই যারা মানুষের মন নিয়ে খেলে,তারা একদিন ঠিকই শাস্তি ভোগ করে। যাইহোক যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।