হঠাৎ প্ল্যান করে বন্ধুদের সাথে বারবিকিউ পার্টি করা
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। কয়েকদিন আগে বন্ধুদের সাথে হঠাৎ প্ল্যান করে বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করেছিলাম। বারবিকিউ পার্টি করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। কারণ বন্ধুদের সাথে খাওয়া দাওয়া, আড্ডা, মাস্তি সবমিলিয়ে খুব সুন্দর মূহুর্ত কাটানো যায়। আমি যখন দক্ষিণ কোরিয়াতে ছিলাম, তখন প্রায় প্রতিবছর শীতকালে বন্ধুদের সাথে বারবিকিউ পার্টি করতাম। মাঝে মধ্যে সেখানে সাগরের পাড়েও বারবিকিউ পার্টি করতাম। তবে বাংলাদেশে আসার এই প্রথম বারবিকিউ পার্টি করলাম,তা ও হঠাৎ প্ল্যান করে। যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক,বেলা তখন দুপুর ১টা।
আমার এক বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে বলল যে, আমরা যেখানে মাঝে মধ্যে আড্ডা দেই সেখানে যেতে। আর বলল যে কি যেন গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। আমি ভাবলাম যেহেতু এই অসময়ে যেতে বলছে, তার মানে জরুরী কিছু হবে হয়তো। কিন্তু যাওয়ার পর জানলাম যে তেমন কিছুই না। ওরা আমাকে বলল যে, বারবিকিউ পার্টি করবে তবে সেটা আজকেই। আমাকে এভাবে না ডাকলে আমি এই অসময়ে বের হব না। সেজন্য আমাকে বলেছিল যে জরুরী কথা আছে। যাইহোক আমরা প্ল্যান করলাম ৬ জন বন্ধু মিলে সন্ধ্যার পর বারবিকিউ পার্টি করব। আমার বন্ধুর এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে আমরা বারবিকিউ পার্টি করব, আর তাদের বাসা হচ্ছে আমাদের বাসা থেকে ২৫/৩০ মিনিটের দূরত্বে।
তারপর বললাম ঠিক আছে আমরা তাহলে সব আয়োজন করে ফেলি। এরপর আমি এবং আমার দুইজন বন্ধু মিলে চলে গেলাম, আমাদের বাসার পাশের মাছ-মাংসের বাজারে। প্রথমে মোটামুটি বড় সাইজের একটি তেলাপিয়া মাছ কিনলাম এবং তারপর দুটি সামুদ্রিক মাছ কিনলাম। তারপর খাসির মাংস কিনতে গেলাম। কারণ খাসির মাংসের বারবিকিউ আমার খুব পছন্দ। আমরা ২ কেজি খাসির মাংস কিনলাম ও মসলা এবং বারবিকিউ করতে যাবতীয় সবকিছু কিনলাম। তারপর আমার এক বন্ধুকে বললাম যে বাসায় নিয়ে সবকিছুর প্রসেসিং করতে। মাছ এবং মাংস ৪/৫ ঘন্টা মেরিনেট করে রেখে সন্ধ্যার পর বারবিকিউ করলে খেতে খুব সুস্বাদু লাগবে।
যেহেতু খাসির মাংসে হাড় বেশি থাকে, সেজন্য বললাম যে বাসায় গিয়ে হাড় থেকে মাংস আলাদা করে কেটে, মসলা মেখে মেরিনেট করার জন্য। যাইহোক সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হয়ে সবাইকে ফোন দিয়ে একত্রিত হলাম। আমার এক বন্ধু বারবিকিউ চুলা এবং বারবিকিউ করার শিক নিয়ে এসেছিল। তারপর আমরা সবাই রওনা দিলাম যেখানে বারবিকিউ পার্টি করব সেখানে। আমরা সেখানে যাওয়ার পর প্রথমে চুলায় আগুন ধরাতে একটু কষ্ট হয়েছিল। কারণ বাতাস মোটামুটি ছিল। আর বারবিকিউ করার জন্য কয়লা থাকলে বেশি ভালো হয়,যদিও আমরা কাঠের ব্যবস্হা করেছিলাম। যাইহোক চুলা জ্বালানোর পর আমরা প্রথমে তেলাপিয়া এবং সামুদ্রিক মাছ দুটি বারবিকিউ চুলার উপর দিয়ে দিলাম।
সবাই মিলে আড্ডা দিতে লাগলাম, আর মাঝে মাঝে দেখলাম আগুন জ্বলছে নাকি। আমরা সবাই ছোটবেলার বন্ধু, আর আড্ডা দিতে দিতে কিছু সময়ের জন্য সবাই ছোটবেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের হৈ হুল্লোড় শব্দ শুনে সেই বাড়িতে থাকা দুইজন মুরুব্বি লোক আমাদের সাথে জয়েন করল। তাদের মুখ থেকে অনেক ধরনের গল্প শুনলাম। সবমিলিয়ে মূহুর্তটা বেশ উপভোগ্য ছিল। আমরা নিজেরা মজা করে গান করতে লাগলাম এবং বিভিন্ন ধরনের গল্প গুজব করতে লাগলাম। এরইমধ্যে মাছের বারবিকিউ হয়ে গিয়েছিল। আমরা সবাই খুব মজা করে খেলাম এবং খাসির মাংস গুলো আগেই শিকের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর একজন খাসির মাংস গুলো বারবিকিউ করার জন্য চুলায় দিয়ে দিল।
মাছের বারবিকিউ খেতে সত্যিই বেশ সুস্বাদু লেগেছিল। খাওয়ার পর আমরা আবারও আড্ডা দিতে লাগলাম। রাত প্রায় তখন ১০টা বাজে। এরইমধ্যে দেখলাম খাসির মাংসের বারবিকিউ হয়ে গিয়েছে। তারপর সবাই একটি করে শিক হাতে নিয়ে টমেটো সস দিয়ে খেয়ে ফেললাম। কারণ খাসির মাংস কিছুটা রয়ে গিয়েছিল, আর সেজন্য একটু তাড়াতাড়ি খেয়ে আবারও বারবিকিউ চুলায় শিক দিয়ে দিবে আবার খাওয়ার জন্য। খাসির মাংসের বারবিকিউ এককথায় অসাধারণ হয়েছিল। এরপর হঠাৎ করে বাসা থেকে ফোন আসলো এবং আমার আম্মু বলল তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে। তারপর ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২৮.২.২০২৩ |
স্থান | w3w |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া আমি গান গাইতে, ফটোগ্রাফি করতে এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
কি বলবো ভাই, আপনার এই বারবিকিউ পার্টি দেখে তা বুঝে উঠতে পারছি না। ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে এরকম বারবিকিউ পার্টিতে যোগদান করলে কতটা আনন্দদায়ক হবে তা আপনার পোস্ট পড়ে ও ফটোগ্রাফি দেখে বেশ বুঝতে পারছি। আপনারা শুধু খাসির মাংসের বারবিকিউ খেয়ে ক্ষান্ত থাকেননি, এখানে দেখছি ফিশ বারবিকিউও হয়েছে যা খেতে খুব খুব স্বাদের হয়। আপনার বন্ধুরা আপনাকে জরুরি ভাবে ডেকে ভালোই করেছে, তা না হলে হয়তো এরকম বারবিকিউ পার্টির আয়োজন হতো না, আর আমাদের মাঝে শেয়ারও হতো না। খুব সুন্দর পার্টি করেছেন এবং সুন্দর বর্ণনার মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলেই ভাইয়া ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে আড্ডা ও পার্টি করার মজাই আলাদা। মানুষের লাইফে বিভিন্ন সময় অনেক বন্ধু বান্ধব হয়,তবে ছোটবেলার বন্ধুত্বটা আসলেই অন্যরকম। খাসির মাংস এবং মাছের বারবিকিউ খেতে সত্যিই বেশ সুস্বাদু লেগেছিল। যাইহোক সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যে কোন খাবার নিজেরা প্রস্তুত করে খেতে যে কতটা আনন্দ এবং মজা অনুভব করা যায় সেটা আমি জানি। এবং আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারলাম আপনার আনন্দটা।। শীতের সময় আমরাও মাঝে মাঝে বারবিকিউ পার্টি দিতাম তবে এবার সবাই এলাকার বাইরে থাকার কারণে একটিবারও করতে পারেনি।। তবে আপনার প্রস্তুত করা দেখে খুব লোভ হচ্ছে নিশ্চয়ই খুব মজা করে খেয়েছেন।।
একসাথে কাছের বন্ধু বান্ধব থাকলে অনেক সময় অনেক কিছুই করে ফেলা যায়। আপনার বন্ধুরা এলাকার বাইরে থাকার কারণে, আপনারা এই বছর বারবিকিউ পার্টি করতে পারেননি,এটা জেনে একটু খারাপ লাগলো। যাইহোক খাবারগুলো সত্যিই খুব মজা করে খেয়েছিলাম। সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কয়েকজন বন্ধুবান্ধব এক জায়গায় হলে সেখানে অন্য কোন আয়োজন না থাকলেও অনেক মজা হয়। তবে সাথে যদি এমন বারবিকিউ পার্টির আয়োজন থাকে তাহলে তো কথাই নেই। রীতিমতো সোনায় সোহাগা। মাছের বারবিকিউ এর চেহারা দেখেই মনে হচ্ছে খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়েছিল। দারুন কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া ঠিক বলেছেন, বন্ধুবান্ধব এক জায়গায় হলে এমনিতেই অনেক মজা হয়, আর পার্টি হলে তো আর কোন কথাই নেই। মাছের বারবিকিউ সত্যিই বেশ সুস্বাদু লেগেছিল খেতে। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে সাপোর্ট করার জন্য।
বারবিকিউ আর ছবিগুলো দেখে বেশ লোভ হচ্ছে। আসলেই হুটহাট প্ল্যান করলে সেটা আসলেই পূরন হয়।শীতকালে বারবিকিউ মজাই আলাদা।আপনি দক্ষিন কোরিয়াতে বাবরিকিউ পার্টি করতেন জেনে ভালো লাগলো।তবে আমার খাসির মাংসের বারবিকিউ কখনও খাওয়া হয়নি।সব বন্ধু মিলে বেশ ভালোই মজা করেছেন।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে
ঠিক বলেছেন আপু, হুটহাট প্ল্যান করলে সেটা সত্যিই পূরণ হয়। অনেক সময় অনেক কিছু আগে থেকে প্ল্যান করলে পূরণ হয় না। খাসির মাংসের বারবিকিউ খেয়ে দেখবেন আপু। আশা করি খুব ভালো লাগবে খেতে। যাইহোক সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।