জেনারেল রাইটিং || ট্রলার দিয়ে বিশ্ব ইজতেমায় যাওয়ার গল্প (চতুর্থ পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি ট্রলার দিয়ে বিশ্ব ইজতেমায় যাওয়ার গল্পের চতুর্থ পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন আমরা অনেক রাত পর্যন্ত হাঁটাহাঁটি করে আমি ও আরো কয়েকজন তাবুতে ঘুমাতে চলে গিয়েছিলাম। বাকি কয়েকজন মসজিদে চলে গিয়েছিলো ঘুমানোর জন্য। আমরা ঘুম থেকে ভোরে উঠেছিলাম ফজর নামাজ আদায় করার জন্য। নামাজ আদায় করে প্রথমে এক কাপ চা খেয়েছিলাম। কারণ মাত্র ৩/৪ ঘন্টা ঘুমিয়ে ছিলাম। তাই মাথা ব্যাথা করেছিলো তখন। চা খেয়ে আশেপাশে একটু হাঁটাহাঁটি করলাম এবং ট্রলার চালককে বললাম তাড়াতাড়ি ট্রলার মেরামত করতে। কারণ কয়েক ঘন্টা পর আখেরি মোনাজাত এবং তারপর আমাদেরকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।
ট্রলার চালক বললো যেভাবেই হোক মেরামত করাবে। আমরা একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকে সবাই মিলে নাস্তা করে নিলাম। তারপর চলে গেলাম বিরিয়ানি রান্না করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে। আমরা মাটন বিরিয়ানি রান্নার জন্য খাসির মাংস কিনলাম এবং পোলাও চাল সহ সবকিছু কিনে ট্রলারে চলে গেলাম। ওরা ৪/৫ জন মিলে রান্না করবে বিধায়,আমরা কয়েকজন অন্য দিকে হাটঁতে চলে গেলাম। কারণ বেশি মানুষ ট্রলারে থাকলে ঝামেলা বেশি এবং রান্না করতেও ঝামেলা হবে। আমরা কয়েকজন হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে গিয়েছিলাম। অবশ্য হাঁটার উদ্দেশ্যও ছিলো। মূলত আমরা গিয়েছিলাম ট্রলার ঠিক কোথায় থামিয়ে রেখে আমরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নিব। আমরা কিছুটা এগিয়ে থাকতে চেয়েছিলাম সামনের দিকে। কারণ আখেরি মোনাজাত শেষ হলে সব ট্রলার একসাথে রওনা দিবে।
তাই সময় বেশি লাগতে পারে। সেজন্য মাইকের আওয়াজ পৌঁছায় এমন একটি জায়গা ঠিক করলাম। সেটা অবশ্য ইজতেমার মাঠ থেকে কিছুটা সামনে। তারপর আমরা চলে গেলাম ট্রলারের দিকে। গিয়ে দেখি রান্না একেবারে শেষ পর্যায়ে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে ট্রলার চালক ট্রলার মেরামত করার কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি। সেজন্য সবার মেজাজ খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। যাইহোক কি আর করার রান্না শেষ হবার পর আমরা সবাই ট্রলারে বসে মাটন বিরিয়ানি খেয়ে নিলাম। মাটন বিরিয়ানির স্বাদ এককথায় দুর্দান্ত হয়েছিলো। একসাথে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করার মজাই আলাদা। আর এভাবে রান্না করে পিকনিকের মতো আয়োজন করলে, সেসব খাবার এমনিতেই বেশি সুস্বাদু হয়। আপনাদের মধ্যে যাদের এই ধরনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা বুঝতে পারবেন তখন অনুভূতিটা কেমন হয়েছিলো।
সবাই বেশ তৃপ্তি সহকারে খাওয়া দাওয়া করার পর আশেপাশে একটু হাঁটাহাঁটি করলাম। তারপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, যেহেতু ট্রলার মেরামত করা সম্ভব হয়নি। সেহেতু ইছাপুরা থেকে যেভাবে আমাদের ট্রলার বেঁধে সামনের ট্রলার নিয়ে আসছিলো ইজতেমার মাঠে,সেভাবেই আমাদের ট্রলার বেঁধে নিয়ে যাবে। তবে যাওয়ার সময় ঝুঁকি একটু বেশি। কারণ এমনিতে দুই ট্রলারে অনেক মানুষ। আবার আখেরি মোনাজাত শেষ করে একসাথে অনেক ট্রলার রওনা দিবে সেজন্য। যাইহোক আমাদের ট্রলারের সাথে বেঁধে সামনের ট্রলার রওনা দিলো, আমরা যে জায়গা ঠিক করে রেখেছিলাম সেখানে। কারণ বেলা ১১টার দিকে আখেরি মোনাজাত শুরু হবে। যাইহোক আজকে এই পর্যন্তই। পরের পর্বে আপনাদের সাথে আরও অনেক কিছু শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।
"চলবে"
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২১.৫.২০২৩ |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Twitter Link
ডলার দিয়ে বিশ্ব ইজতেমায় যাওয়ার চতুর্থ পর্ব। যদিও এটি আমার প্রথম দেখা পোস্ট। পরে বুঝতে পারলাম আপনাদের একটু ট্রলার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই আপনি দ্রুত মেরামত করার জন্য তাকে বলছিলেন। মাথায় ব্যথা করলে চা কিন্তু দারুন কাজ করে। মাটন বিরানির খেতে দুর্দান্ত হয়েছে জেনে বেশি বেশ ভালো লাগলো। যাহোক ভাই পরে পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
হ্যাঁ ভাই ট্রলার নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। তাইতো ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো আমাদের। পরের পর্ব পরবর্তী সপ্তাহে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
ট্রলার দিয়ে বিশ্ব ইজতেমা যাওয়ার গল্প যদিও বা আমি আগের পর্বগুলো পড়িনি, তবে আজকের পর্ব করে খুব ভালো লাগলো। বিশেষ করে মাটন বিরিয়ানি রান্না করে পিকনিকের মত আয়োজন করে খাওয়ার কথা শুনে। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই,এভাবে আয়োজন করে খাবারের স্বাদই আলাদা। যাই হোক ভাই, ট্রলার দিয়ে বিশ্ব ইজতেমা যাওয়ার গল্প সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সময় পেলে অবশ্যই আগের পর্ব গুলো পড়ে নিবেন ভাইয়া। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।