নাটক রিভিউ || ফাঁদ
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে ফাঁদ। এই নাটকটি সপ্তাহ খানেক আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে মুশফিক আর ফারহান,সামিরা খান মাহি এবং সামন্তি শৌমি। এই নাটকটি ফানি টাইপের হলেও বেশ শিক্ষনীয় একটি নাটক,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। নাটকটি দেখে অনেক হেসেছি। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | ফাঁদ |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | মেহেদী হাসান হৃদয় |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান,সামিরা খান মাহি, সামন্তি শৌমি,আশরাফুল আলম সোহাগ, জেরিন খান রত্না, আমিনুর হক হেলাল এবং আরও অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ |
দৈর্ঘ্য | ৪৭ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের নায়ক ফারহান, মেসে থাকে আশরাফুল আলম সোহাগ এবং আরও অনেকের সাথে। ফারহানের চেয়ে সোহাগ অনেক সিনিয়র। তো সোহাগ সবসময় মেসের সদস্যদের সাথে বলে যে,সে অনেক বড় অফিসে চাকরি করে এবং তার ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। আরও বিভিন্ন ধরনের চাপাবাজি করে। একদিন সোহাগ পত্রিকায় পাত্রী চাই বিজ্ঞপ্তি দেখে রেডি হতে থাকে। ঠিক তখনই ফারহান বলে যে তার একটি চাকরির ইন্টারভিউ রয়েছে। তাই সোহাগ যে শার্টটি পরেছিল, সেই শার্টটি ফারহানের লাগবে। কিন্তু সোহাগ ফারহানকে সেই শার্টটি দেয়নি। যাইহোক সোহাগ রেডি হয়ে পাত্রী দেখতে চলে গেল বাসায়। মূলত সেই মেয়েকে বিয়ে করলে ঘরজামাই থাকতে পারবে এবং আর কখনো চাকরি বা ব্যবসা করতে হবে না। সেই লোভেই গিয়েছিল বিয়ে করতে। কিছুক্ষণ পর ফারহানও সেই মেয়েদের বাড়িতে পাত্রী দেখতে যায়।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
মূলত যারা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, তাদের দুই মেয়ে রয়েছে এবং দুই মেয়ের জন্যই ঘর জামাই খুঁজছে। যাইহোক সোহাগ এবং ফারহান একে অপরকে দেখে, একেবারে অবাক হয়ে যায়। আসলে পাত্রী দুইজন হলো এই নাটকের নায়িকা মাহি এবং শৌমি। যাইহোক দেখা দেখি করার পর ঠিক করা হলো, ফারহানের সাথে মাহির বিয়ে হবে এবং সোহাগের সাথে শৌমির বিয়ে হবে। সাথে সাথে কাজী ডেকে তাদের বিয়ে পড়ানো হয় এবং সেদিন থেকেই তারা ঘর জামাই হিসেবে সেই বাড়িতে থাকতে শুরু করে। এদিকে তাদের শ্বশুর এবং শ্বাশুড়ি অর্থাৎ মাহি এবং শৌমির মা বাবা,তাদের বাড়ির সমস্ত কাজের লোককে বিদায় করে দেয়। তারা ঠিক করে দুই ঘর জামাইকে দিয়ে বাড়ির সমস্ত কাজ করাবে। বাসর রাতেই শৌমি ফুলদানি দিয়ে মেরে সোহাগের কয়েকটি দাঁত ভেঙে ফেলে। এদিকে মাহিও বাসর রাতে ফারহানের উপর অনেক অত্যাচার করে। বিয়ের পরের দিন থেকেই শুরু হয় বাজার করা, রান্নাবান্না করা এবং বাসার সমস্ত কাজ করা।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
মোটকথা তারা দুজন সব সময় কাজের মধ্যেই থাকে। আর এদিকে মাহি এবং শৌমি তাদের জামাইদের উপর অত্যাচার করতে থাকে। এর মধ্যে মজার মজার কিছু ঘটনা ঘটে। যাইহোক ফারহান এবং সোহাগ বুঝতে পারে যে, তারা আসলে ফাঁদে পরেছে। তাদেরকে বিয়ে করাটা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে। একদিন তারা দেখতে পায় তাদের শ্বশুর তাদের শ্বাশুড়ির পা টিপছে। অর্থাৎ মাহি এবং শৌমির বাবাকে দিয়ে তাদের মা পা টিপাচ্ছে। মূলত ফারহান এবং সোহাগের শ্বশুরও তাদের মতো ভুক্তভোগী। মাহি এবং শৌমির মা তার স্বামীকে যেভাবে অত্যাচার করছে, মাহি এবং শৌমিও তাদের স্বামীদের অত্যাচার করে। যাইহোক তারা দুইজন এতো অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু তাদেরকে খোঁজাখুঁজি করে বাসায় নিয়ে আসা হয়। মূলত বিয়েতে ২০ লাখ টাকা করে কাবিন দেওয়া হয় এবং সেজন্য তারা ডিভোর্স দিতে পারছে না। তবুও তারা বলে যে ডিভোর্স দিয়ে দিবে। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
আসলে লোভে পাপ পাপে মৃত্যু, এই কথাটি একেবারে সত্যি। ফারহান এবং সোহাগ লোভে পরে বিয়ে করেছিল দুই মেয়েকে। ভেবেছিল বিয়ের পর তাদের সব সম্পত্তি নিজেদের হবে এবং আরাম আয়েশ করে সারা জীবন পার করতে পারবে। কিন্তু বিয়ের পর সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে তারা দুইজন। আসলে বাস্তবে কিন্তু এমনটা ঘটছে। কিছু কিছু ছেলে লোভে পড়ে বিয়ে করে এবং ঘর জামাই হয়,পরবর্তীতে সারাজীবন দুঃখে কষ্টে জীবন পার করতে হয়। কারণ ঘর জামাইকে কেউ সম্মান করে না। ঘরের মানুষও না এবং বাহিরের মানুষও না। এক কথায় ঘর জামাই হচ্ছে মেরুদণ্ডহীন মানুষ। তাই সব সময় নিজের যোগ্যতায় যতটুকু সম্ভব ততটুকু করা ভালো। অন্তত মানুষের কাছ থেকে সম্মান পাওয়া যায়। অপরদিকে দুই নায়িকার মা তার স্বামীকে ঘর জামাই করে যেভাবে অত্যাচার করেছে, তাদের দুই মেয়েও সেটাই শিখেছে। আসলে একজন সন্তান পরিবার থেকে বেসিক শিক্ষাটা পেয়ে থাকে। আর বাবা মা যদি নেগেটিভ কিছু করে, সেটার প্রভাব সন্তানদের উপর অবশ্যই পড়ে। সুতরাং সন্তানদেরকে ভালো শিক্ষা দিতে হবে সবসময় এবং নিজেদেরকেও ভালোভাবে চলতে হবে। তাহলে সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। নাটকটি বেশ শিক্ষনীয় এবং কমেডি। এই নাটকের কিছু কিছু দৃশ্য দেখে, হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যথা হয়ে গিয়েছিল। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২.২.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
X-promotion
নাটকটি দেখে মনে হচ্ছে হাসির হবে। আর তাছাড়া মুশফিক ফারহান আমার পছন্দের অভিনেতা। সব মিলিয়ে আপনার রিভিউ পরে বেশ ভালো লাগলো। সময় সুযোগ হলে নাটকটি দেখার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু সময় পেলে অবশ্যই এই নাটকটি দেখে নিবেন। যাইহোক রিভিউ পড়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ফারহান এর নাটক গুলো কম বেশি দেখা হয়। ফাঁদ নাটকটি ও দেখছিলাম। নাটকটিতে সবাই অনেক সুন্দর অভিনয় করেছেন। এধরনের নাটক গুলো দেখতে ও ভীষণ ভালো লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া নাটকটি তুলে ধরার জন্য।
এই নাটকটি আপনি দেখেছিলেন, জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক রিভিউ পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ঠিকই বলেছেন এখন মুভি কম দেখা হয়। সময়ের জন্য তবে এই নাটক গুলো দেখতে বেশ ভালই লাগে। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। যদিও নাটকটি দেখা হয়নি। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছে। সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এই নাটকের রিভিউ পড়ে আপনার কাছে খুব ভালো লেগেছে, জেনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম আপু। যাইহোক এমন প্রশংসনীয় মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনি অনেক সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ তুলে ধরলেন, যে নাটকটা রিভিউ পড়তে পেরে আমার কাছে ভালো লাগলো। এরকম নাটক গুলো আমি অনেক পছন্দ করি। ফাঁদ নাটকটা সত্যি অনেক সুন্দর ছিল। যারা বেশি লাভ করে, তাদের সেই লোভ এর কারণেই তাদের জীবনটা ধ্বংস হয়ে যায়। তেমনি ফারহান এবং সোহাগের লোভের ক্ষেত্রেও তাদের সাথে এরকমটা হয়েছে। এত সুন্দর করে পুরো রিভিউটা তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ আপু এই নাটকে ফারহান ও সোহাগ প্রচুর লোভ করেছে এবং তার শাস্তিও পেয়েছে। যাইহোক রিভিউ পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
একটা মুভি দেখতে অনেক সময়ের প্রয়োজন তাই অল্প সময়ের বিনোদনের জন্য আমিও আপনার মতোই নাটক দেখি। এই নাটক গতকাল রাতে দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাই এর কাহিনী বেশি মনে ছিল না।তবে আপনার রিভিউ পড়ে সম্পূর্ণ দেখা হয়ে গেলো। আপনি খুব সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ নাটকের রিভিউ দিয়েছেন। আমার কাছে ফারহান এর নাটক দেখতে খুব ভালো লাগে। তাই সময় পেলেই দেখা হয়। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আপু আপনার মতো আমারও ফারহানের নাটক দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক রিভিউ পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।