নাটক রিভিউ || সে বসে একা
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে সে বসে একা। এই নাটকটি সপ্তাহ খানেক আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে ইয়াশ রোহান,খায়রুল বাশার এবং তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এই ধরনের নাটক দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে, কারণ এমন নাটকগুলোতে টুইস্ট থাকে। এমনিতেও মিজানুর রহমান আরিয়ান এর পরিচালিত নাটকগুলো সবসময়ই দুর্দান্ত হয়। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | সে বসে একা |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | মিজানুর রহমান আরিয়ান |
অভিনয়ে | ইয়াশ রোহান,খায়রুল বাশার, তানজিম সাইয়ারা তটিনী,জাহিদুল হক অপু,শাহবাজ সানি,নাঈমা জাহান নিশু,মো: নাজিম,ডিভাইন এবং আরো অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ৯ ই নভেম্বর ২০২৩ |
দৈর্ঘ্য | ৪৪ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের এক নায়ক ইয়াশ রোহান ফিল্ম প্রোডাকশন হাউসে চাকরি করে। নাটকের অপর নায়ক খায়রুল বাশারের একটি স্টেশনারি শপ রয়েছে, এককথায় সে স্টেশনারি দোকান চালায়। নাটকের নায়িকা তানজিম সাইয়ারা তটিনী এমনিতে স্টুডেন্ট, তবে সে সিনেমার রোমান্টিক গল্প লিখে এবং তার ইচ্ছে তার গল্প নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা হবে। যাইহোক রোহানের বস অর্থাৎ ডিরেক্টর বেশিরভাগ থ্রিলার টাইপের মুভি বানায়। তো রোহান একদিন তার বসকে বলে রোমান্টিক মুভি বানাতে। এতে করে ডিরেক্টর রাজি হয়,কিন্তু রোমান্টিক গল্প খুঁজে বের করার জন্য রোহানকে দায়িত্ব দেয়। রোহানকে অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে ৩০০+ রোমান্টিক গল্প পাঠায়। তো এর মধ্যে নায়িকা তটিনীর গল্প নির্বাচিত করা হয়। তারপর রোহান, তটিনীর গল্পটি প্রিন্ট আউট এবং ফটোকপি করার জন্য খায়রুল বাশারের দোকানে যায়।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
খায়রুল বাশার রোমান্টিক গল্পটি কিছুটা পড়ে এবং দেখে যে গল্পের মধ্যে কবিতা লিখা আছে। তার ভীষণ ভালো লাগে কবিতাটি পড়ে। কারণ খায়রুল নিজেও অনেক কবিতা লিখে থাকে। যাইহোক গল্পের কাগজের মধ্যে তটিনীর মোবাইল নম্বর লিখা ছিলো। খায়রুল মোবাইল নম্বরটি কাগজ থেকে নিয়ে তটিনীকে কবিতা পাঠায় ম্যাসেজ এর মাধ্যমে। তটিনী ভেবেছিল হয়তোবা ডিরেক্টর তার লেখা গল্পটি পছন্দ করেছে এবং সেজন্য তাকে এভাবে ম্যাসেজ দিয়েছে। কারণ তটিনীর গল্পের মধ্যে যে কবিতা লিখা ছিলো, সেই কবিতার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই তাকে ম্যাসেজের মাধ্যমে কবিতা পাঠানো হয়েছে। যাইহোক তটিনী ম্যাসেজের মাধ্যমে খায়রুলের কাছ থেকে পরিচয় জানতে চেয়েছিল,কিন্তু খায়রুল পরিচয় দেয়নি। যাইহোক যেহেতু ডিরেক্টর তটিনীর গল্প পছন্দ করেছে, সেজন্য তটিনীকে অফিসে ডেকে পাঠায়। তটিনীকে প্রথম দেখায় রোহান ভালোবেসে ফেলে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তটিনী ডিরেক্টর এবং রোহানকে অপরিচিত নম্বর থেকে ম্যাসেজ আসার কথা জিজ্ঞেস করে। কিন্তু তারা বলে যে এই নম্বর তাদের কারোরই নয়। তখন রোহান তটিনীর কাছ থেকে সেই নম্বরটি নেয় এবং বুঝতে পারে যে এটা খায়রুল বাশারের মোবাইল নম্বর। তারপর তটিনীকে বলে যে, সে চিনে লোকটা কে এবং পরের দিন তাদের দেখা করিয়ে দিবে। তটিনী তো ভীষণ খুশি হয়। তারপর রোহান খায়রুল বাশারের দোকানে গিয়ে তার মোবাইল নিয়ে নেয় এবং বলে যে তার গার্লফ্রেন্ডকে যেন আর বিরক্ত না করে। আসলে তটিনী এবং খায়রুলের যেন যোগাযোগ না হয়,সেজন্য রোহান এই কাজটি করেছিল। পরের দিন রোহান এবং তটিনী একটা জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তটিনী রোহানকে বারবার জিজ্ঞেস করছিল কখন সেই লোক আসবে। এক পর্যায়ে রোহান তটিনীকে বলে যে, রোহান নিজেই তটিনীকে ম্যাসেজ পাঠাতো।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
যাইহোক এভাবেই তাদের প্রেম চলছিল। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতো। একদিন খায়রুল বাশার তটিনী এবং রোহানকে বাহিরে ঘুরাঘুরি করতে দেখে ফেলে। তারপর রোহানের অফিসে গিয়ে খায়রুল বাশার তার মোবাইলটা ফেরত নিয়ে আসে। এরপর তটিনীকে ফোন করে সবকিছু খুলে বলে। তটিনী যেন আকাশ থেকে পড়ে খায়রুল বাশারের কথা শুনে। কারণ তটিনী ম্যাসেজের মাধ্যমে কথা বলতে বলতে এবং কবিতা পড়তে পড়তে খায়রুল বাশারকে ভালোবেসে ফেলেছিল। কিন্তু এই কয়েকদিন রোহানের সাথে ঘুরাঘুরি করে তাকেও ভালোবেসে ফেলেছে। তটিনী উভয় সংকটে পড়ে যায় কি করবে। সে ভীষণ কষ্ট পায়। তটিনীর এই অবস্থার জন্য রোহান এবং খায়রুল দায়ী। আসলে পরিচয় লুকিয়ে তারা দু'জনেই অপরাধ করেছে। সেজন্য তটিনীর কাছে তারা দুইজন সমান অপরাধী। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
অনেক সময় ফোনের মাধ্যমে অপরিচিত মানুষের সাথেও আমাদের সম্পর্ক হয়ে যায়। কাউকে না দেখে না চিনে শুধুমাত্র কথা বলা বা চ্যাটিং করার মাধ্যমেও সম্পর্ক হয়ে যায়। আসলে ভালোবাসা বলে কয়ে আসে না। এই নাটকেও প্রথমে এমনটাই ঘটেছে। সবকিছু মোটামুটি ঠিকঠাকই চলছিলো, কিন্তু রোহান মিথ্যা বলে তটিনীর সাথে সম্পর্কে জড়ায়। এটা অনেক বড় একটি প্রতারণা। কারণ কারো মন নিয়ে খেলার অধিকার কারো নেই। কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকে না,একদিন না একদিন সেটা অবশ্যই প্রকাশ পায়। আবার অনেকে বলে যে ভালোবাসায় সব কিছুই ফেয়ার। কিন্তু আমি মনে করি মিথ্যা দিয়ে শুরু করা ভালোবাসা বেশিদিন টিকে থাকে না। যাইহোক সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করলাম।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১৭.১১.২০২৩ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
নাটকটি কিছুদিন আগে আমি দেখেছি । আসলে নাটকের গল্পটা একদমই ভিন্ন ছিল । আর মিজানুর রহমান আরিয়ান সব সময় ভিন্ন ধরনের নাটক উপস্থাপন করে থাকে । বিশেষ করে নাটকের শেষটা খুবই চমৎকার ছিল আসলে । আপনি খুব সুন্দর করে রিভিউ করেছেন ভাইয়া । অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
আসলেই ভাই নাটকের গল্পটা বেশ ইউনিক ছিলো। যাইহোক রিভিউ পড়ে এমন প্রশংসনীয় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভাইয়া কয়েক দিন আগে এই নাটকটি দেখেছি। নাটকটির গল্প একটু ভিন্ন রকম ছিলো। তটিনী কষ্ট পেয়ে দুজন কে ছেড়ে চলে যায় খুব খারাপ লাগে। ভালো লাগলো আপনার রিভিউ দেখে।
হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিক বলেছেন, তটিনী দুজনের কাউকেই বেছে নেয়নি। আমার কাছেও ফিনিশিংটা খারাপ লেগেছে। যাইহোক যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Twitter Link
নাটক রিভিউ কিন্তু আমার খুবই পছন্দের। আর নাটক দেখতে খুব ভালো লাগে। বিনোদনের জন্য হলেও নাটক দেখা প্রয়োজন। কারণ কাজের ফাঁকে একটু বিনোদন নেওয়াও জরুরী। আসলে এটা সত্যি ফোনের মাধ্যমেই
অপরিচিত মানুষদের সাথেও সম্পর্ক হয়। আসলে ভালোবাসা মন থেকে হয়ে যায়। অনেক সময় নিজের অজান্তেও। আসলে মিথ্যা একদিন না একদিন সবার সামনে অবশ্যই আসে। তেমনটা এখানেও হয়েছে। আমি এই নাটকটা দেখেছিলাম। যার কারণে রিভিউটা এখন পড়ে ভালো লেগেছে।
আপনিও এই নাটকটি দেখেছিলেন,জেনে খুব ভালো লাগলো আপু। আসলেই মিথ্যা কখনো চাপা থাকে না। যাইহোক নাটকের রিভিউ পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার মত আমার নিজেরও একসময় অনেক বেশি মুভি দেখা হতো। তবে এখন দেখা হয় না ব্যস্ততার জন্য। আসলে যত দিন যাচ্ছে ততই যেন ব্যস্ততা বেড়ে চলেছে এরকমটাই মনে হচ্ছে। সে বসে একা এই নাটকটা আমি দেখেছিলাম কয়েকদিন আগে। তবে এই নাটকের কাহিনীর সাথে বাস্তবিক কিছু কাহিনী মিল রয়েছে। যার মধ্যে একটা হচ্ছে, একটা মানুষ অন্য আরেকজনের মন নিয়ে খেলা করে তার অধিকার এর প্রতি না থাকলেও। তবে এই মিথ্যাটা দেরি করে হলেও সামনে আসে।
হ্যাঁ ভাই বাস্তবের সাথে এই নাটকের মিল রয়েছে অনেকটা। যাইহোক যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
মাঝে মাঝে নাটক দেখতে আমারও বেশ ভালো লাগে। আমাদের দেশের কিছু কিছু নাটক এর গল্প বেশ সুন্দর থাকে । তাই দেখতে বেশ ভাল লাগে। আপনার নাটকের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে নাটক এর গল্পে একটা টুইস্ট আছে। আর অভিনেতারাও অভিনয় বেশ ভালই করেছেন। নাটকের রিভিউ পরে নাটকটি দেখার ইচ্ছে হচ্ছে। দেখে নেবো নাটকটি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু আমাদের দেশের বেশিরভাগ নাটকের গল্প খুব সুন্দর লাগে। যাইহোক রিভিউ পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আমি এমনিতেও খুব নাটক দেখি। বাংলাদেশের নাটক গুলো খুব ভালো লাগে। আজকে যে আপনি নাটক রিভিউ দিলেন সেটির কাহিনীটি দারুন। তটিনীর লাষ্টে কি করে সেটা তো আপনি বলেননি তবে আমার মনে হয় রোহানকেই বেছে নিবে। ধন্যবাদ।
না ভাই তটিনী অবশেষে কাউকে বেছে নেয় না। কারণ দুজনেই অন্যায় করেছে তটিনীর সাথে। যাইহোক রিভিউ পরে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।